নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহা হতাশ আমি মহা উন্মাদ

অর্থহীন চিন্তাবিদ

অর্থহীন চিন্তাবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডার্ক ম্যাটারঃ কল্পনা ও বাস্তবতা, পর্ব ০২

২১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩

এযাবৎ গুপ্ত পদার্থের উপস্থিতির সবচেয়ে সরাসরি প্রমাণ
পাওয়া গেছে বুলেট স্তবক থেকে। সাধারণত দৃশ্যমান ও গুপ্ত
পদার্থ তাদের পারস্পরিক মহাকর্ষের কারণে সর্বত্রই একসাথে
থাকে। কিন্তু বুলেট নামক ছায়াপথ স্তবকটিতে ব্যতিক্রম এক
চিত্র দেখা গেছে। বুলেট স্তবক মূলত দুটি ছায়াপথ স্তবকের
সংঘর্ষরত অবস্থা। সংঘর্ষের কারণে এই স্তবকযুগলের গুপ্ত ও
দৃশ্যমান পদার্থ আলাদা হয়ে গেছে। বুলেট থেকে আসা
এক্স-রশ্মি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর সব গ্যাস
কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থিত। দুটি স্তবক একে অপরের
ভেতর দিয়ে অতিক্রম করা সময় দুটির গ্যাস পরস্পরের
আকর্ষণে ধীর হতে হতে কেন্দ্রের কাছাকাছি থিতু
হয়েছে। মনে রাখতে হবে এসব গ্যাসীয় কণা মহাকর্ষের
পাশাপাশি তড়িচ্চুম্বকীয় বলের মাধ্যমেও একে অপরের
সাথে ক্রিয়া করে। কিন্তু গুপ্ত পদার্থের তেমন সংঘর্ষ বা
মিথস্ক্রিয়ার ক্ষমতা নেই, সে মহাকর্ষ ছাড়া অন্য কোন বলের
মাধ্যমেই ক্রিয়া করে না। এজন্য এক স্তবকের গুপ্ত পদার্থ
অন্য স্তবকের গুপ্ত পদার্থকে পাশ কাটিয়ে পরস্পর থেকে
এবং গ্যাস থেকেও দূরে সরে গেছে। এক্স-রশ্মিতে ৭-৮
কিলো ইলেকট্রন ভোল্টের এসব গ্যাস দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু একই স্তবকের দুর্বল মহাকর্ষীয় লেন্সিং করার পর
দেখা যায় স্তবকের মোট ভরের একটি বিশাল অংশ
কেন্দ্রীয় গ্যাস থেকে বেশ দূরে অন্য একটি স্থানে
অবস্থান করছে। অর্থাৎ এমন স্থানে অধিকাংশ ভর পাওয়া যাচ্ছে
যেখানে কোন আলো বা দৃশ্যমান বস্তু নেই।[৫]
গুপ্ত
পদার্থের এই পর্যবেক্ষণে নিউটন-আইনস্টাইনীয়
মহাকর্ষের কোন আশ্রয়ই নেয়া হয়নি, এটি তাই ছায়াপথের
ঘূর্ণন বক্রের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্ত। এজন্যই অনেক
বিজ্ঞানী এই পর্যবেক্ষণকে গুপ্ত পদার্থের সবচেয়ে
সরাসরি প্রমাণ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এবেল ৫২০ বা ট্রেন-রেক স্তবক নামে পরিচিত আরেকটি
সংঘর্ষরত স্তবকসমষ্টির ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন ফলাফল পাওয়া
গেছে। ট্রেন-রেক ছায়াপথের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে গুপ্ত
পদার্থের আধিক্য দেখা গেছে যার একটি স্থান কেন্দ্রের
কাছাকাছি। কেন্দ্রের এই স্থানটিতে প্রচুর গুপ্ত পদার্থ থাকার
সম্ভাবনা থাকলেও নেই কোন দৃশ্যমান ছায়াপথ। বুলেট
স্তবকের মত এখানেও দৃশ্যমান ও গুপ্ত পদার্থের ছাড়াছাড়ি
ঘটেছে তবে সেটা অতো সরল নয়। এজন্য অনেকে
গুপ্ত পদার্থের কণাগুলো নিজেদের মধ্যে কোন এক
অজানা প্রক্রিয়ায় মিথস্ক্রিয়া করে বলতে চাইছেন।এই
অন্তঃমিথস্ক্রিয়ার মাত্রা কতটুকু হতে
পারে তা নিয়ে গবেষণা
চলছে। এক্ষেত্রে মূল প্রশ্নটি হচ্ছে, গুপ্ত পদার্থের চাপ
আছে কিনা এবং থাকলে তাকে একটি আদর্শ তরল হিসেবে
বিবেচনা করা যায় কিনা। তবে স্পষ্টতই ট্রেন-রেক স্তবক এই
অন্তঃমিথস্ক্রিয়ার পক্ষে কথা বললেও বুলেট স্তবক বেশ
জোরালোভাবেই বিপক্ষে কথা বলে। এরা একসাথে তাই
গুপ্ত পদার্থের মডেলগুলোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে
তোলে। [৬]
বিখ্যাত বুলেট স্তবক হাবল টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা কয়েকটি ছবির সমন্বয়।

ডার্ক ম্যাটার নিয়ে ব্যাখ্যাঃ
সর্পিলাকার ছায়াপথে গুপ্ত পদার্থের বণ্টন সম্পর্কে
সবচেয়ে বেশি জানা গেছে। এটি যে ছায়াপথের চাকতির
অন্তর্ভুক্ত নয় তার পক্ষে বেশ কয়েকটি যুক্তি আছে।
প্রথমত, আমাদের ছায়াপথ তথা আকাশগঙ্গাও একটি সর্পিলাকার
ছায়াপথ। আকাশগঙ্গার তারাসমূহের উল্লম্ব বণ্টন এবং বিচ্ছুরণ
বেগ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর চাকতিতে খুব বেশি
গুপ্ত পদার্থ নেই। দ্বিতীয়ত, গুপ্ত পদার্থই মহাকর্ষ বলের দিক
দিয়ে সবচেয়ে প্রভাবশালী বস্তু। কিন্তু মহাকর্ষের পুরো
ভার একটি সরু চাকতিতে থাকতে পারে না। অন্য কথায় সরু self-
gravitating চাকতি অস্থিতিশীল। তৃতীয়ত, হাইড্রোজেন
চাকতির উপরে ও নিচে বেশ খানিকটা বিস্তৃত। কিন্তু গুপ্ত পদার্থ
চাকতিতে থাকলে তার পক্ষে এত বিস্তৃত থাকা সম্ভব হতো না।
এই বিস্তৃতিকে অনেক সময় hydrogen flaring বলা হয়।
সুতরাং সর্পিলাকার ছায়াপথের একটি সার্বিক চিত্র দাঁড় করানো
যেতে পারে, দৃশ্যমান এবং গুপ্ত পদার্থকে মিলিয়ে। বর্তমান
গবেষণা অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত অনেক ক্ষুত্র বাল্জ ও চাকতি
একটি বিশাল বড় গুপ্ত পদার্থের হেলোর মধ্যে প্রোথিত
আছে। এই হেলোকে গোলকাকার হতে হবে এমন
কোন কথা নেই। এটি কমলালেবুর মত উপর নিচে চ্যাপ্টা বা
এমনকি triaxial ও হতে পারে। ভিরিয়াল উপপাদ্য ব্যবহার করে
জানা গেছে দৃশ্যমান ছায়াপথের তুলনায় গুপ্ত পদার্থের
হেলোর ব্যাসার্ধ্য ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি এবং ভর প্রায়
১০ থেকে ২০ গুণ বেশি। এ কারণে বর্তমানে গুপ্ত পদার্থে
বিশ্বাসীরা মনে করেন, প্রাচীন মহাবিশ্বে প্রথমে গুপ্ত
পদার্থের হেলো গঠিত হয়েছিল এবং পরে সেই হেলোর
মধ্যে দৃশ্যমান পদার্থ জড়ো হয়েছে।[৭]


গুপ্ত পদার্থ দিয়ে ছায়াপথ এবং ছায়াপথ স্তবকের বিভিন্ন
পর্যবেক্ষণের অসামঞ্জস্যতাকে ব্যাখ্যা করাটা বর্তমানে খুব
জনপ্রিয় হলেও গুপ্ত পদার্থের প্রকৃতি সম্পর্কে কিছু জানা
যায়নি এবং এই পদার্থ সরাসরি পর্যবেক্ষণ বা সনাক্ত করার সকল
প্রচেষ্টাই এ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে
পর্যবেক্ষণের অসামঞ্জস্যতাগুলো ব্যাখ্যার জন্য কিছু
বিকল্প অনুকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। বিকল্প
অনুকল্পগুলোকে দুটি বড় শ্রেণীতে ভাগ করা যায়:
সংশোধিত মহাকর্ষ সূত্র এবং কোয়ান্টাম মহাকর্ষ সূত্র।
(আগামী পর্বে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও সংশোধিত মহাকর্ষ তত্ত্ব, ডার্ক ম্যাটার নিয়ে গবেষণার অগ্রগতি, এবং সম্ভবনা নিয়ে আলোচনা করে শেষ করা হবে। )
5. Massay R. Rhodes J. Ellis R. "Dark matter maps reveal cosmic scaffolding" Nature
6.Astrophysical journal 606:819-824
7. Wikipedia

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০

নকশা মাকড়সা বলেছেন: অহেতুক বাংলা পরিভাষা দিয়ে পোস্টটাকে কঠিন করা হয়েছে। গুপ্ত পদার্থ না বলে ডার্ক ম্যাটার আর ছায়াপথ স্তবক এর বদলে গ্যালাক্সি ক্লাস্টার ব্যবহার করবেন। কেননা এই শব্দগুলির সাথেই আমরা বেশী পরিচিত।
আমার ব্যক্তিগত ধারণা ডার্ক ম্যাটার এবং নরমাল ব্যারিওনিক ম্যাটার এর মাঝে খুব বেশী পার্থক্য নেই। কেবল আলো পরে না তাই দেখা যায় না। ডার্ক ম্যাটার এর প্রভাব বোঝা যায় গ্যালাক্সির প্রান্তসীমায় থাকা নক্ষত্রগুলির মহাকর্ষীয় প্রভাবের ফলে সৃষ্ট অস্বাভাবিক ঘূর্ণন থেকে, অর্থাৎ ডার্ক ম্যাটারের ভর আছে। লজিক কি তাই বলে না?

২১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০

অর্থহীন চিন্তাবিদ বলেছেন: আমি নতুন লেখা শুরু করেছি। তাই একটু এরকমম হতে পারে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
জি লজিক তাই বলে ডার্ক ম্যাটার এর ভর আছে। আর ডার্ক ম্যাটার এর প্রথম ধারণাও আসে ভর গনণায় অসামঞ্জস্যতারর কারণেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.