নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মহা হতাশ আমি মহা উন্মাদ

অর্থহীন চিন্তাবিদ

অর্থহীন চিন্তাবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রিপটোলজি: গোপন সংকেতের রহস্য পর্বঃ ০১

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৩

বিজ্ঞানের জগতে ক্রিপ্টোলজি এত চমৎকার এক নাম যে, এর মোহে একবার আটকে গেলে সেখান থেকে বের হয়ে আসা অনেক কষ্টকর! সহজ করে যদি বলি ক্রিপ্টোলজি কি, মূল তথ্যকে অর্থহীন অন্য কিছুতে রুপান্তর করাই হল ক্রিপ্টোলজির মূল উদ্দেশ্য।
Cryptology শব্দটি এসেছে দুটি গ্রীক শব্দ Krytos এবংLogia থেকে যাদের অর্থ যথাক্রমে গোপণ এবং অধ্যয়ন। তাহলে Cryptology শব্দের অর্থ হল গোপণ কিছু মিয়ে অধ্যয়ন করা। আর এই গোপণ সংকেত বা মেসেজের অর্থ উদ্ধারের বিষয়টিকে বলা হয় Cryptanalysis. Cryptology এবং Cryptanalysis একে অন্যের পরিপূরক। কারণ, একটি তথ্য গোপন সংকেতের মাধ্যমে প্রকাশ করা আর গোপন সংকেত থেকে সেটা উদ্ধার করা একে অন্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। Cryptology বুঝতে হলে আরো একটি ধারণায় পরিষ্কার হওয়া জুরুরী। Code এবং Cipher শব্দ দুটির মাঝে পার্থক্য টা জানা দরকার। Code হল গোপনে মেসেজ পাঠানোর এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একটি শব্দকে আরেকটি শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। আর Cipher এ কাজটি করা হয় প্রতিটি বর্ণকে ধরে ধরে।
প্রাথমিক আলোচনা শেষে এবার যাওয়া যাক মূল আলোচনায়। ক্রিপ্টোলজি বুঝার জন্য প্রথমেই শুরু করব Monoalphabetic Substitution Cipher এর তিনটি প্রকারভেদ নিয়ে।
১. Atbash cipher:
এই পদ্ধতিটির প্রথম ব্যবহার শুরু হয় হিব্রু বর্ণণমালায়। মানবসভ্যতাকে যেভাবে ভাগ করা হয় সেভাবে যদি ক্রিপ্টোলজিকে ভাগ করা হয় তাহলে এটি পড়বে ক্রিপ্টোলজির একদম আদিম যুগে। আর এর এনক্রিপশন- ডিসক্রিপশন সিস্টেম এত সহজ যে, যেকেউ এটি উদ্ধার করতে পারবে খুব কম সময়ে। আর এত সহজ হওয়ার কারণেই এটি আজ প্রায় ইতিহাসের পাতায়। কারণ আমি কোডিং করব এটা যদি অন্য কেউ সহজে বুঝে যায় তাহলে কোডিংের সার্থকতা সিদ্ধি হবেনা। জেনে নেই কেমন ছিল এই সিস্টেম। Plain-text আর Cipher-text alphabet একে অন্যের বিপরীত ক্রমে সাজানো থাকে, গণিতের ভাষায় একেবারে ১৮০ ডিগ্রি কৌনিক দূরত্বে। খোলাসা করে বললে, রোমান বর্ণমালার ১ম তিনটি বর্ণ হলঃ A,B,C আর শেষ তিনটি হলঃX,Y,Z. এই কোডিং সিস্টেমে Z নেবে A এর জায়গা, Y নেবে B এর জায়গা আর X নিবে C এর জায়গা। বাকী বর্ণগুলোও এভাবেই ভলতে থাকবে। এভাবেই সাইফার চলবে,আর ডিসাইফার? ঠিক সাইফারের উলটো। হিব্রু বর্ণমালায় Atbash cipher
রোমান বর্ণমালায় Atbash cipher.
২. Pigpen Cipher:
Pigpen Cipher হলো সাবস্টিটিউশন সাইফারের আরো একটি রূপ। তবে এর একটি বৈশিষ্ট হলো,এখানে একটি বর্ণকে আরেকটি বর্ণ দিয়ে প্রতিস্থাপন না করে বরঞ্চ আরেকটি প্রতীক দিয়েপ্রতিস্থাপন করা হয়।
এই Pigpen Cipher-এর রয়েছে এক কৌতূহলোদ্দীপক ইতিহাস। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় যেঅতীতে বিভিন্ন সংঘ তাদের বার্তা আদান-প্রদানের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করতো। আরএদের মাঝে সবচেয়ে কুখ্যাত ছিলো আঠার শতকের ফ্রিম্যাসন সোসাইটি। তারা এই গোপন সংকেতপ্রেরণের পদ্ধতি এতই বেশি ব্যবহার করতো যে অনেক সময় একে Freemasons Cipher-ও বলাহয়ে থাকে।
যা-ই হোক, এবার আসা যাক মূল প্রশ্নে- কীভাবে কাজ করে এই Pigpen Cipher?
শুরুতেই বলেছিলাম- এখানে একটি বর্ণকে একটি প্রতীক দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। আরপ্রতীক নির্বাচনের জন্য আমাদের যে বর্ণ দরকার সেটি ইমেজের যে অংশ দখল করে সেইঅংশের প্রতীকটুকু নেয়া হয়। নিচের চিত্র দেখলে বিষয়গুলো আরো পরিষ্কার হবেঃ

আরো একটি চিত্র দেখা যাক:

৩. Morse Code:
একই সাথে বিখ্যাত এবং বহুল প্রচলিত কোনো সাইফারের নাম বলতে গেলে MorseCode এর নাম অবশ্যই বলা লাগে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- এখানে গোপন সংকেত কেবললিখিত রুপেই নয়, বরঞ্চ শব্দ এমনকি আলোর মাধ্যমেও প্রেরণ করা সম্ভব! আর এই সংকেতপ্রেরণের জন্য এই সাইফার সিস্টেমে বর্ণের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় ডট (.) আর ড্যাশ(-)।নিচের চিত্রটি দেখলে এই প্রতীকগুলো সম্পর্কে আমাদের ধারণা স্পষ্ট হবেঃ


এই Morse Code এর অত্যন্ত চমৎকার একটি দিক হলো, একে অডিও সিগনাল রুপে প্রেরণ করাসম্ভব। আর এজন্যই টেলিফোন আবিষ্কারের পূর্বে টেলিগ্রাফের মাধ্যমে মেসেজআদান-প্রদানের জন্য এই কোডিং সিস্টেম ব্যবহৃত হতো। এজন্য প্রতিটি ‘ডট’-কে একটি ছোট‘বিপ সাউন্ড’ দিয়ে আর প্রতিটি ‘ড্যাশ’কে ডটের থেকে তিন গুণ বড় বিপ সাউন্ড দিয়েপ্রকাশ করা হতো।
Morse Code কিন্তু আমাদের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখেছে, বিশেষ করেটেলিকমিউনিকেশন সেক্টরে। অনেক জাহাজ এবং প্লেনে এখনো এর ব্যবহার চালু আছে। আমরাযারা সিনেমা-পাগল মানুষ, তারা কিন্তু বিভিন্ন সিনেমাতেই এই মোর্স কোডের ব্যবহারদেখেছি।
প্রথম পর্বের এখানেই শেষ। বাকী পদ্ধতিগুলো নিয়ে আগামি পর্বে আলোচনা করা হবে। ছোট মানুষ তো কিছু ভূল থাকবে। কেউ যদি ধরিয়ে দেন খুশি হব।
(বিঃ দ্রঃ তথ্যসূত্র শেষ পর্বে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:২০

আলগা কপাল বলেছেন: চমৎকার তো! চালিয়ে যান। সাথে আছি।

কয়েকটা বানান এদিক সেদিক হয়েছে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১

অর্থহীন চিন্তাবিদ বলেছেন: অকা! ঠিক করে দিব। আপনার কমেন্টের জন্য ধইন্যবাদ।

২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

আবিদা সিদ্দিকী বলেছেন: আমি অবশ্য ভালোমতো বুঝতে পারিনি। তবে আগ্রহ নিয়েই পড়েছি।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২

অর্থহীন চিন্তাবিদ বলেছেন: নিজে নিজে এই পদ্ধতিতে কোডিং করলে বুঝতে সুবিধা হবে। সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি এইগুলাহ! সামনে আসছে আরো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.