| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কেউ কি কখনো ভেবেছি ফেসবুক/ ব্লগ আমাদের এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের জীবন থেকে কতটা মূল্যবান সময় গিলে খাচ্ছে? বিনিময়ে আমরা কি পাচ্ছি এসব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে? কি শিখছি? মৌলিক কিছুই কি অর্জন করছি পারছি এই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে? পক্ষে - বিপক্ষে অনেক কথাই আসবে। পারষ্পরিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে অতুলনীয়। ফেসবুকে যখন ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন চলে আসল তখন ভাবলাম সহজেই কতকিছু এক মিডিয়ায় পেয়ে যাচ্ছি। আসল ঘটনা অনেকাংশে ঠিক উলটো। অধিকাংশ ফেসবুক সেলিব্রিটি শুধুমাত্র লাইক/ কমেন্ট পাবার জন্য একপেশে জনপ্রিয় ইতিহাস লিখে, সেই ইতিহাসে থাকে খানিকটা নিজের ''আমিত্ব'' ''জ্ঞানী'' ফলানোর সেলফ প্রপাগান্ডা, কিছু উদ্ভট নিজস্ব মতামত যাতে কমেন্টে তুমুল তর্ক বিতর্ক চলে। যত তর্ক বিতর্ক তত লাইক কমেন্ট, তত হিট। মাঝখানে আমরা সত্যটা জানা সত্ত্বেও এসব স্ট্যাটাসে কমেন্ট করি। ভুল কিছু থাকলে ধরিয়ে দেই। এখানে আমাদের লাভ কি হচ্ছে? নতুন কিছু কি জানতে পারছি? অবশ্যই নয়। কিছু ক্যাচাল, কাঁদা ছোড়া-ছুড়ি ছাড়া?
আমরা যারা নিয়মিত অনলাইনে থাকি, বিশেষ করে সন্ধার পর বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে পিসি অন করেই ফেসবুকে ঢুকি ( যারা এখনো ছাত্র তারা ব্যতিক্রম) দেখা যায় ফেসবুক, ব্লগ এসব করেই রাতের খাবারের সময় ১০টা হয়ে যায়। এর পর পুনরায় একই কাজ সেই ফেসবুক, ব্লগ। টানা ৩/৪ ঘন্টা ওখানেই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কেটে যায়। রাতে ঘুমানোর সময় একবারো ভেবে দেখেছেন কেউ প্রতিদিন টানা ৩/ ৪ ঘন্টা ব্লগ/ ফেসবুকে থেকে মৌলিক কি জ্ঞান অর্জন করেছেন? অনেকে হয়ত বলবেন আমরা ফেসবুকে দেশ উদ্ধার করছি। দেশপ্রেম, স্বাধীনতার ইতিহাস এসব নিয়ে ''ফেসবুকার/ ব্লগার'' দের সচেতন করছি আমাদের বিভিন্ন পোস্ট/ ব্লগের মাধ্যমে। সেটা অস্বীকার করার মত নয়। কথা হচ্ছে সেলফ গেইন নিয়ে। এই সেলফ গেইন কি জিনিস? এটা এমন একটা কিছু যা আমাদের নিজের চেষ্টাতেই অর্জন করতে হয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়েছি ক্লাস টেন পর্যন্ত সামাজিক বিজ্ঞান/ ইতিহাস বইতে। যারা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মানবিক বিভাগে ছিলেন তারা ব্যতিক্রম। এর পর ইউনিভার্সিটিতে ঢুকে কয়জন পড়াশোনায় নিজেকে ব্যপৃত রাখি? এখানে পড়াশোনা বলতে সিলেবাস বহির্ভূত বই। ক্লাস, প্রেজেন্টেশন, পরীক্ষা , পিসিতে মুভি দেখা, ফেসবুক, ব্লগ এসবেইতো সময় কেটে যায়। খুব অল্প সংখ্যকই নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করে, নিয়মিত বইয়ের দোকান থেকে সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, নৃ-বিজ্ঞান , চলচ্চিত্র প্রভূত বিষয়ে বই কিনে এবং পড়ে।
ফেসবুক/ ব্লগে আমরা টানা যে সময়টা দেই তা যদি ভালো কোন বই পড়ার জন্য দেই তাহলে দেখা যাবে ৩/৪ দিনেই একটি বই পড়া শেষ হবে। পড়া শেষ হলে আপনি বইটি পড়ার আগের ''আপনি''র সাথে পরের ''আপনি''র তুলনা করেন। আগের অনেক কিছুই নতুন করে মূল্যায়ন করবেন। জানার পরিধি, চিন্তা করার পরিধিও বাড়বে। এটাই সেলফ গেইন। যা আপনি ব্লগ/ ফেসবুকে পাবেন না। এখানে আপনার চিন্তার-ভাবনার জগতে বাধা দেয়ার কেউ নেই। ফেসবুক/ ব্লগের তর্ক বিতর্কের নামে কাঁদা ছোড়া-ছুড়ি নেই। এখানে আপনি তর্ক করবেন নিজের সাথে, পূর্বের সত্ত্বার সাথে জানার পরিধি-জ্ঞানের পরিধি বাড়ার পরের সত্ত্বার সাথে। যে সিদ্ধান্তে আসবেন সেটাই সেটাই আপনার অর্জন। এই অর্জন আপনার একান্ত নিজস্ব। আমাদের এই সেলফ গেইন খরার সুযোগটি নিচ্ছে কিছু ব্লগ পীর এবং ফেসবুক পীর। আমরা সেসব পীরের মুরিদ। অমুক ভাই এটা লিখেছে। রেফারেন্স হিসেবে দেখিয়ে কৃতিত্ব জাহির করি। নিয়মিত ৩/৪ ঘন্টা ফেসবুক / ব্লগে ঢুকে এসব পীরের পেইজে পড়ে থাকি। পীর সাহেব কখন এরিস্টটলের মত ক্লাসের আসর বসাবেন। কখন বিতর্ক হবে। এসবের জন্য ফেসবুকের স্ক্রিনের দিকে চেয়ে থাকি।
জীবন কি থেমে আছে? আপনার বয়স কি থেমে আছে? এই পৃথিবীতে দেখার, জানার, পড়ার, শোনার এত এত আয়োজন আছে--- আমরা কয়টি দেখার মত জায়গা/ জিনিস দেখেছি, জানার পরিধি কতটুকু বাড়িয়েছি ? একটা সময় আসবে যখন এসব বিষয় নিয়ে আমরা ভাবব। কিন্তু আমাদের করার কিছুই থাকবে না। কারণ ততদিনে আমাদের বয়সটা থাকবে না। সময় থাকতেই যা জানার, দেখার, পড়ার , শোনার কাজটি করে ফেলাটাই উত্তম। এজন্য বর্তমানই উত্তম সময়। তার মানে এই নয়, ইন্টারনেট বাদ দিতে হবে। ইন্টারনেটে সময় দেব যতটুকু না করলেই নয় ততটুকু পর্যন্ত সময়। দিনের কিছু সময় বই পড়া, ভালো ছবি দেখা, ভালো মিউজিক শোনা, ভালো খাবার খাওয়া এসবে ব্যয় করেন। এসবের অর্জিত অভিজ্ঞতা ফেসবুক/ব্লগে শেয়ার করেন। শেয়ার করার পর কমেন্ট কখন আসবে, লাইক কখন আসবে এসবের জন্য অপেক্ষা না করে ওই সময় টুকু অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে সার্চ করেন। যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে ওই ধরণের বিষয়ে। একটা নির্দিষ্ট সময় ব্লগে/ ফেসবুকে ঢুকে আপনার পোস্টের কমেন্টের রিপ্লাই দেন। ২৪ ঘন্টা (ব্যাপক অর্থে) অনলাইনে পড়ে থাকার কোন যুক্তি নেই। এভাবে নিজেকে আস্তে আস্তে পরিবর্তন করতে পারলে দেখবেন ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য জানার জন্য ফেসবুক এবং ব্লগীয় পীরের দরকার নেই। আপনি নিজেই নিজেই পীর। মনের সম্রাজ্যে নিজেই রাজা।
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:০৫
শিরিষ গাছ বলেছেন: ধন্যবাদ banglar_hasan ।
২|
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৪২
বোকামানুষ বলেছেন: সত্যি কথা
সুন্দর পোস্ট
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:০৭
শিরিষ গাছ বলেছেন: ধন্যবাদ বোকামানুষ।
৩|
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ২:৪০
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আসলে তর্কবিতর্ক অবশ্যই দরকার আছে। তবে যেভাবে আমরা দেখি তর্ক বিতর্ক হয়, সেটাই মুসকিল। সমস্যা হচ্ছে, কেউ আসলে আমরা নতুন কিছু শিখতে চাই না। এটার মূল সমস্যা।
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:০৮
শিরিষ গাছ বলেছেন: ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩৭
বাংলার হাসান বলেছেন: খুবই চমৎকার পোষ্ট।
অধিকাংশ ফেসবুক সেলিব্রিটি শুধুমাত্র লাইক/ কমেন্ট পাবার জন্য একপেশে জনপ্রিয় ইতিহাস লিখে, সেই ইতিহাসে থাকে খানিকটা নিজের ''আমিত্ব'' ''জ্ঞানী'' ফলানোর সেলফ প্রপাগান্ডা, কিছু উদ্ভট নিজস্ব মতামত যাতে কমেন্টে তুমুল তর্ক বিতর্ক চলে। যত তর্ক বিতর্ক তত লাইক কমেন্ট, তত হিট। মাঝখানে আমরা সত্যটা জানা সত্ত্বেও এসব স্ট্যাটাসে কমেন্ট করি। ভুল কিছু থাকলে ধরিয়ে দেই। এখানে আমাদের লাভ কি হচ্ছে? নতুন কিছু কি জানতে পারছি? অবশ্যই নয়। কিছু ক্যাচাল, কাঁদা ছোড়া-ছুড়ি ছাড়া? সহমত।