![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের বিভিন্ন শহর, মফস্বল শহর থেকে ঢাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য আসে কিছু ছেলেরা। তারা সবাই সদ্য কৈশোর পার করেছে। একটা নামকরা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে। এক এক জন এক এক বিভাগের ছাত্র। এদের মধ্যে কয়েকজন আবার প্রথম সেমিস্টার থেকেই পরিচিত। দেখতে দেখতে দুইটা বছর পেরিয়ে তৃতীয় বর্ষে পদার্পন করলো একে একে। যৌবন এখন শিরায় শিরায়। বাঁধা না মানা উল্লাস, না মানে দিন, না মানে রাত। একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে কিছু সময় বুঁদ হয়ে থাকা যেন এক অনন্য প্রাপ্তি। সবাই প্রায় মধ্যবিত্ত্ব পরিবারের সন্তান। তাই, যখন পকেটে টাকা থাকে তখন বেনসন আর টাকা ফুরালে উইলস কিং সিগারেট। এদের মধ্যে আবার এক এক জনের বিরাট প্রতিভা। কেউ ভালো পড়াশোনায়, কেউ প্রেমে, কেউ বা অন্যকিছুতে। সব কথা তো আর বলা যায় না। এই বন্ধু মহলে একটা সমস্যা নিত্য বিরাজমান। সেন্টি খাওয়া বা অভিমান করা। তবে এই অভিমান কারো ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট, বা কয়েক ঘন্টা আবার কারো ক্ষেত্রে কয়েকদিন। কিন্তু মজার ব্যপার হলো অভিমান পর্ব চলাকালীন তারা একই কক্ষে বসে সবার সাথে আড্ডা দেয়। কিন্তু অভিমানকারীরা কেউ কারো সাথে কথা বলে না।
সেমিস্টার বাড়ার সাথে সাথেই পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলে হতাশা। সিজিপিএ কেন বাড়ে না? ইচ্ছা করে তো আর ফেল করি না। বাবার পয়সা নষ্ট। বাসার টেনশন সহ আরো উটকো ঝামেলা বাড়ছে দিন দিন। হতাশা যেন খুব কমন ব্যপার। আড্ডার একটা নিত্য টপিক। আর, এই হতাশাকে ধামাচাপা দেয়ার পদ্ধতিটার আবিষ্কারকও এই হতাশগ্রস্থ যুবকেরা। এই হতাশার মূল কারন, সেমিস্টার যায়, ক্রেডীট শেষ হয় না, এইটা না। হতাশা হলো অপর বন্ধু তাদের পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে তাই।
এই বয়সে এমনটা ভাবাই স্বাভাবিক। বয়সটাই এমন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অদূরে সুখ কিনতে পাওয়া যায়। হতাশার ভেতরে ডুব দিয়ে উঠে অলীক সুখের খোজে প্রতিদিন দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে দুইটার মধ্যে এরা সবাই একত্রিত হয়। একত্রিত করার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে আরেক বন্ধু। সে অবশ্য এই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে অন্য আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লেও বন্ধু কি আর ছাড়া যায়?
সব বন্ধুমহলের মতো এই বন্ধুমহলেরও একটা সাধারন দিক রয়েছে। সবারই একটি করে অনন্য নাম রয়েছে। বাবা-মায়ের দেয়া নাম ছেড়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচত হয়ে উঠে বন্ধুদের দেয়া নামে। কারো নাম বাবা, কারো মা। কারো গড ফাদার, কারো চিল, কারো চড়ুই, কারো দাদা, কেউ কেউ আবার অন্য ধর্মাবলম্বী কিংবা গায়ের রঙ কালো হলেও রেসিজম ছাড়ে না। এই বিষয়ে ঐ বন্ধু মহলের একজন বলেন, Sometimes, u have to be resist to address your close friends. কথাটি নেহায়েত মন্দ নয়।
এটি এমন এক বন্ধু মহল, যেখানে পলিটিক্স চলে, বিপ্লব ঘটে, সুখ খোঁজার ছলে কষ্টগুলো, না বলা কথা গুলো ব্যক্ত করে। এই বন্ধু মহলে কম বেশি সবাই মোটামুটি প্রেম করে ব্যর্থ হয়েছে। পরীক্ষা ভালো হলেও সুখ কিনতে হবে। খারাপ হলেও কিনতে হবে। আকাশ মেঘলা থাকলেও যেতে হবে মানসিক হাসপাতালে। আকাশ রোদ্রৌজ্জ্বল থাকলেও যেতে হবে। কতো কথা, কতো আত্মস্বীকার, কতো চোখের জল ঝড়েছে দুইটি কক্ষে। সিগারেট নিয়ে উঠতে হবে যদি আড্ডায় বসতে হয়। তাও সিগারেট নিয়ে ঝগড়া। এক সিগারেট দশ জন মিলে খাওয়ায় যেন অন্য রকম এক সুখ পাওয়া যায়। যা হয়তো মধ্যরাতে একা একা বারান্দায় বসে খেলে পাওয়া যায় না। হয়তো পৃথিবীর সব সিগারেট একদিন ফুরিয়ে যাবে। কিন্তু ঐ নির্ধারিত সময়ে, নির্ধারিত কক্ষে, এই দ্বাবিংশবর্ষী যুবকেরা একটা শেষ বেনসনও ভাগ করে খাবে। আর পিঙ্ক ফ্লয়েড ছেড়ে বলবে, মামা, অনেক বেশি নাই হয়ে গেছি। ভালো থাক। তারা সবাই অনেক অনেক ভালো থাক।
বন্ধু মানে এক সিগারেট সবাই মিলে খাওয়া
বন্ধু মানে টাকা তুলে সুখ কিনতে যাওয়া
বন্ধু মানে রোজ দুপুরে নিত্য নাটক দেখা
বন্ধু মানে এক কাগজেই অনেক ভালোবাসা লেখা।
বন্ধু মানে অসুখ হলে সুখের ধোঁয়া পাঠানো
বন্ধু মানে এক মেয়েকেই দুই বন্ধু মিলে পটানো
বন্ধু মানে রোজার সময় জোর করে রোজা হাল্কা করা
বন্ধু মানে এক আকাশেই হাজার তারা ভরা।
২| ১২ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৩৪
শিশু গাছ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:৩৪
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: লেখায় একটা অন্যরকম ভালোলাগা আছে.... +++
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:১০
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন!