![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিনিয়ত সৎ থাকার চেষ্টার যুদ্ধে লিপ্ত একসৈনিক
ডাঃ সাহিদা। বিমর্ষ, বিষণ্ণ। একই সাথে চিন্তিতও। মেয়ে হারানোর বেদনার চাইতেও আজ তিনি যেন অসহায় একটা প্রশ্নের কি উত্তর দিবে বা কিভাবে এটাকে এড়ানো যাবে তা নিয়ে। প্রশ্নটা তাকে বিচলিত করে তুলছে। এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে, তা কখনও কল্পনাও করেনি সে । বিশটি বছর কেটে গেছে যে সত্য কেউ জানে না, তা কি আজ সবাই জেনে যাবে। না তা কোন ভাবে হতে দেয়া যাবে না। নিজের মনকে শক্ত করার চেষ্টা করছে সে। এমন সময়ে, ”ম্যাডাম, পুলিশ এসেছে। আপনার সাথে কথা বলতে চায়।” কাজের মেয়ে বললো “আসতে বলো।” পুলিশ একটা চেয়ার টেনে তার কাছাকাছি বসে। কাজের মেয়েটি সাহিদার পাশে বসে। ”লাশ শনাক্ত করতে হলে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।” বললেন পুলিশ অফিসার। সাহিদা চুপ। কি যেন ভাবলেন তারপর বলে উঠেন "কবর দিয়ে দেন। আমি ওর পোড়া মৃত মুখ দেখতে পারবো না।" কথা গুলো বলতে তার গলাটা একটুও কাপঁলো না বরং সে চেয়েছিল মনে প্রাণে যেন তাঁর গলাটা কাঁপে। পুলিশ অফিসার চলে যেতে যেতে বললেন " আমরা প্রত্যেকটা লাশেরই ডিএনএ সংরক্ষক করে রাখছি। আপনি ইচ্ছে করলে পরে তা মিলিয়ে কবর নির্ধারণ করতে পারবেন।" সাহিদার মনে যেন এক প্রশান্তির বাতাস বয়ে গেছে। প্রশ্নটার এত সুন্দর একটি উত্তর দিয়ে তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে তা তার কল্পনারও বাহিরে ছিল। নিজের নিউরণের ক্ষমতা বুঝতে ফেরে সে নিজেই অবাক। মনে মনে আল্লাহকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিলেন।
এক সপ্তাহ পর জুরাইন কবরস্থান। সাহিদা কিছু নতুন কবরের সামনে দাড়িয়ে আছে। "আমাকে ক্ষমা কর, ফাইজা। " মনের অজান্তেই বলে উঠলেন।"ফাইজা, আমি কি ভুল করেছি, তোর সঠিক পরিচয় গোপন করে। যদিও পরিচয় বলতে, দুই নরনারীর অসতর্ক মিলনের অপ্রত্যাশিত ফসল। আর বাকীটা তো ইতিহাস, রাস্তার পাশে ডাস্টবিনে কুকুরের খাদ্য। আমি তোকে বেওয়ারিশ শিশু নামক কলঙ্ক হতে রক্ষা করতে পারলেও বেওয়ারিশই লাশ নামক কলঙ্ক হতে রক্ষা করতে পারিনি।" বুকের কোথায় যেন চিনচিন ব্যথা করতে লাগলো, সাহিদা বুক চেপে বসে পড়লেন। বুকের ব্যথাটা আগের চেয়ে বেশী মনে হয়। ফাইজা যেন অট্টহাসি দিয়ে বলে উঠলো " তুমি কতজনকে এভাবে লুকাবে?? এসব গোপন রেখে আমার বা তোমার কি লাভ হবে? তার চেয়ে জানুক সবাই নিষ্ঠুর মা বাবার কথা। ঘৃণায় ভরে উঠুক পৃথিবীর মানুষের মন। " "ম্যাডাম? " কাজের মেয়ের ডাকে চৈতন্য ফেরে তার। ধীরে ধীরে উঠে দাড়ায়। নতুন কবর গুলোর দিকে ভালো করে তাকায়, “হে, ঐ তো বামের কবরের পাশেই হাসিমুখে ছোট্ট ফাইজা বসে আছে। বাম হাতের আঙুলে কুকুর কামড়ানো দাগগুলো এখনও স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু হাসিটি এত বিদ্রুপ পূর্ণ কেন?” সাহিদা আর ভাবতে পারে না ।
--------------------------০-------------------------------
আমার অন্যগল্পসমূহ::
ব্যঙ্গ-রঙ্গ:: ছোটগল্প:: একচোখা মন্ত্রীর গল্প
ছোটগল্প (সাইকোলজিকল):: আইসক্রীম
গল্প(সাইকোলজিকল) :: টেলিভিশন(১ম পর্ব)
গল্প(সাইকোলজিকল) :: টেলিভিশন(শেষ পর্ব)
ছোটগল্প (সাইকোলজিকল):: চেক
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫২
স্বপ্নবাজ তরী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর অনুগল্প| ভালো লেগেছে
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৫
স্বপ্নবাজ তরী বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো, ধন্যবাদ।