![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিনিয়ত সৎ থাকার চেষ্টার যুদ্ধে লিপ্ত একসৈনিক
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন সন্ধ্যা নেমে আসছে। শহরের পথগুলোতে যেন জ্বলে ওঠছে তারকারাজি। ব্যস্ত নগরীর আরেটি রূপ যেনো ফুটে উঠছে।বাসের ছিটে মাথা এলিয়ে কি যেন চিন্তাকরছেন ইফতি সাহেব।
---স্যার, নামবেন না?
----- এত তাড়াতাড়ি চলে এলাম??অবাক চোখে জিগ্গাস করলেন ইফতি সাহেব।
----- "না, স্যার। মাগরিবের নামাজের জন্য ব্রেক। কেউ নাস্তা করতে চাইলেও করতে পারবেন, সাথেই একটা হোটেল আছে"।
---- ও। আচ্ছা।
গাড়ির হেল্পার চলে যায়। "এক কাপ কপি খেলে মন্দ হতোনা " ভাবতে ভাবতে বাস হতে নেমে পড়লেন ইফতি সাহেব।কিছুক্ষনের মধ্যেই নামাজ শেষ হয়। নামাজ শেষেসবাই আবার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে গাড়ির দিকে পা বাড়ায়। ইফতি সাহেব হোটেলে বসে কফি পান করছেন। এমন সময় হাত তুলে একজন মধ্যবয়স্ক লোককে ডাক দিলেন "এইযে মিস্টার?? " লোকটি ইফতি সাহেবের দিকে তাকালেন এবং সরণাপণ্ণ হওয়ার জন্য এগিয়ে গেলেন। মুখোমুখি দাড়িয়ে লোকটিকে সালাম দিলেন ইফতি
সাহেব।
--- চিনতে পেরেছেন?? আপনার পাশের সিট
---- ও। লোকটি মাথা নাড়লো।
--- কপি খাবেন?
--- না। এখন খাবো না।
ইফতি সাহেব কপি শেষ করে বাসের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন। লোকটি তার পাশেই ছিলো। সে প্রশ্ন করে- "আপনার নামই তো জানা হলো না। আমি ইফতি মজুমদার, আপনি?" " আমি শিশির । শিশির খন্দকার। " বললো লোকটি।তারা দুইজনেই সিটে গিয়ে বসলো। শিশির খন্দকার জানালার পাশে। "নামাজ পড়েছেন? " জানতে চাইলো শিশির। হঠাৎ এমন প্রশ্নে কিছুটা ইতস্তবোধ করলেন ইফতি সাহেব। যদিও প্রশ্নের উওর দিতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন না।তবুও নিজেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রন করে বললেন "না। বাসায় গিয়ে পড়বো।"আপনি কোথায় নামবেন? "
"আমি চট্রগ্রাম যাবো। আপনি? " বললো শিশির খন্দকার।
"আমি ফেনীতে নামবো।কিছুক্ষণ পর আবার বলে উঠলেন- " আমি ঢাকাতে গিয়েছিলাম। আব্বুর হজ্বের ব্যবস্থা করতে। খুবই ভালো লাগছে আজ। " একটু পর জানতে চাইলো ইফতি সাহেব, "চট্রগ্রাম কি আপনার বাড়ি?" " না। আমি চাকরী করি।আপনার আব্বু কি একা হজ্বে যাবেন নাকি আপনিও সাথে যাবেন? " বললেন শিশির সাহেব। ইফতি সাহেব একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন, "কি যে বলেন। আমার কি হজ্বে যাওয়ার বয়স হয়েছে? এখনো বিয়ে-সাধি কিছুই করিনি। আরো কিছু বয়স হোক তারপর না হয় ভাবা যাবে। আর আমি তো সৌদি আরবই থাকি। যেকোন সময়ে করতে পারবো। একটু থেমে আবার বললেন "আব্বু যাবে হজ্বে। তাই বাড়ি দেখাশুনা করার জন্য আমি দেশে এসেছি"। শিশির সাহেব কি যেন চিন্তা করলেন তারপর ইফতি মজুমদারের মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন " যুবক বয়সে হজ্ব করা ভালো। আমি গতবছর হজ্ব পালন করেছি।" কিছুটা অবাক হয়ে ইফতি সাহেব বললেন"তাইনাকি? আপনাকে দেখে কিন্তু মনেইহয় না।" শিশির সাহেব মুচকি হাসলেন।
"আসলে আমি সংসারের বড় ছেলে। সব দায়িত্ব্যের ভার আমার ওপর। ইচ্ছে থাকলেও সব কিছু করা যায় না। ছোট ভাই এবার ঢাবিতে চান্স পেয়েছে। আর ছোট বোনের আগামী মাসে বিয়ে। তারপরতো আমি সম্পূর্ন ফ্রি"। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বলতে লাগলেন "তারপর
ধর্মকর্ম সবই করবো "বলেই একটা ছোট হাসি হাসলেনন ইফতি সাহেব। শিশির খন্দকার জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছেন সব। চাঁদের আলোতে খোলা জায়গা গুলোকে এক একটা সমুদ্র সৈকত মনে হচ্ছে। গাড়ির গতি সেই দৃশ্যকে আরো গতিময়, অপরূপ করে তুলছে।মনের অজান্তেই তিনি বলে উঠলেন "সুবাহানাল্লাহ।"
২
শিশির সাহেব চোখ খুলে দেখলেন তিনি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছেন। একজন নার্স তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।
--- এখন কেমন বোধ করছেন?
--- আমি এখানে?? শিশির সাহেব বললো।
"রাতে বাস একসিডেন্ড হয়। ভাগ্য ভালো। আপনার তেমন ক্ষতি হয়নি। অধিকাংশ গুরুতর আহত হয়। তাই রাতে সবাইকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। " একটু থেমেনার্স আবার বললেন "আর ৫ জন মারা
যায় তাদেরকে এখানেই রাখা হয়। শিশির সাহেব রাতের কথা মনে কররার চেষ্টা করেন কিন্তু তেমন কিছুই তার মনে পড়ছে না। হঠাৎ ইফতি সাহেবের কথা মনে পড়লো। বুকের কোথায় যেন একটা ব্যাথা অনুভব করলেন। তিনি নার্সকে বলে লাশ ঘরে প্রবেশ করেন। সব গুলো লাশ মেঝের মধ্যে সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। লাশ ঘরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি একটি একটি করে লাশের কাপড় সরিয়ে দেখাচ্ছে। সব গুলো লাশের চেহারা এমন বিকৃত হয়েছে চেনার কোন উপায় নাই। হঠাৎ একটা লাশের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলেন তা মুষ্ঠিবদ্ধ। তিনি মুষ্ঠিটা খুললেন। শিশির সাহেবের অজান্তেই চোখের পানি পড়ছে। তিনি কাগজটা নিয়ে হসপিটালের রিসিপসনিষ্টের কাছে জমা দিয়ে বললেন "আরব এয়ার লাইন'স এর টিকেট টা ইফতি মজুমদার নামক লাশের অাত্নীয়দের দিয়ে দিবেন। " একটু থেমে বলল " এটা ওর বাবার হজ্বের টিকেট।" শিশির খন্দকার হসপিটাল হতে বের হয়ে পড়লেন। হাত আর মাথায় ব্যান্ডেজ করা। ধীরে ধীরে তিনি মেইনরাস্তায় উঠে আসেন। "না। আর চট্রগ্রাম গিয়ে কাজ নেই। " মনে মনে ভাবলেন তিনি। একটা ঢাকার গাড়ীতে উঠে পড়েন তিনি। তারপাশের সিটে মধ্যবয়স্ক একটা লোক বসে আছে আর ফোনে কার সাথে কথা বলছে "আগামী সপ্তাহে নতুন কোম্পানির লোগো উম্মেচন করা হবে আপনাকে আসতে হবেই। সব আয়োজন শেষ।" শিশির সাহেব চুপ করে বসে আছেন। গাড়ির মাদকাসক্ত শব্দ তরঙ্গ তার স্নায়ুতন্তু কে দুর্বল করে তুলছে। তার চোখদুটি ভারী থেকে ভারী হচ্ছে। তার কর্ণ যেন বধির হয় যাচ্ছে, আশেপাশের শব্দ তরঙ্গ যেন সরতে সরতে বহু দুরে সরে যাচ্ছে। তার মনে শুধু কয়েকট শব্দই ভেসে আসছে "বাড়ি গিয়ে পড়রে ", "কি যে বলেন ","আমি তো সৌদি আরবই থাকি"।
২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ধার্মিক গল্প!
৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১২
চটপট ক বলেছেন: বানানের দিকে আরও খেলায় দিলে, আপনার মধ্যে একজন ভাল গল্প লেখক হওয়ার গুনাবলি আছে । চালিয়ে যান, আর বানানের দিকে খেয়াল দিন। গল্প লেখকদের কাছে তার প্রতিটা গল্প তার বাচ্চার মত। যত্ন নিন, সময় নিয়ে লিখুন, লেখার পরে কি লিখলেন, তা একবার চোখ বুলিয়ে নিন। তাতে ভুল গুলো চোখে পড়বে ।
শুভকামনা রইল, গল্প লেখা চলুক
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২১
অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: গল্পের শেষে এসে শিক্ষণীয় দিকটি ফুটে উঠেছে। গল্পে বেশ কিছু বানান ভুল আছে। সেগুলো বাদ দিয়ে বললে, গল্পটি ভালো লেগেছে।