নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমাইতে গেলে যারা খালি এপাশ ওপাশ কাইত চিত হয় তারাই ব্যাচেলর।

ডাক্তার তো জানেনা যে তুমিই আমার হৃদরোগের কারন!

আমিই সোহেল

জীবনের মানেই খুঁজে পেলাম না।।

আমিই সোহেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুমিল্লার সুবিধা বঞ্চিত নারী মুক্তিযোদ্ধা কাজী হেলেন

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রথমে জিবি হাসপাতাল এবং পরে খেলাঘর হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন সাহসী নারী কাজী হেলেন৷ তবে মানব সেবায় একনিষ্ঠভাবে নিয়োজিত থেকেও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি৷

১৯৫৪ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জে জন্ম কাজী হেলেনের৷ পিতা মুক্তিযোদ্ধা কাজী সফর আলী৷ মাতা কাজী আবু জাহান বেবী৷ পিতা ছিলেন ব্রিটিশ শাসনামলের একজন সেনা সদস্য৷ ফলে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি অনেককে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছেন৷ তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক৷ ফলে বাবার বীরত্ব ও সাহসিকতার ছোঁয়া মেয়ে হেলেনকেও অনুপ্রাণিত করে মুক্তিযুদ্ধের কাজে যোগ দিতে৷
‘মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীন দেশে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন কাজী হেলেন’

১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুর সময় নবম শ্রেণির ছাত্রী কাজী হেলেন৷ চা বাগানে মুক্তিযুদ্ধে যেতে আগ্রহী মানুষদের প্রশিক্ষণ দিতেন বাবা সফর আলী৷ তাই পাক সেনারা তাঁদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয় এবং তাঁর বাবা, মামা, মামাতো ভাইসহ একসাথে নয়জনকে হত্যা করে৷ অবশ্য এর আগেই হেলেন এবং তাঁর ছোট-ছোট ভাই-বোনেরা বাড়ি থেকে সরে গিয়ে গোপন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ পরে অনেক কষ্ট করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলার রাজবাড়িতে যান হেলেন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা৷
এসময়ের ঘটনা স্মরণ করে হেলেন বলেন, ‘‘দু'দিন অনাহারে পার করতে হয়েছে আমাদেরকে৷ এমনকি ভাত খাওয়ার জন্য একটি থালাও ছিল না৷ পরে দাদু অর্থাৎ আব্বার দূর সম্পর্কের আত্মীয় কর্নেল রউফ আমাদের জন্য সবকিছুর ব্যবস্থা করেন৷ একটা থালা আর একটা গ্লাস কিনে দিয়েছিলেন৷ মাঠের মধ্যে তখন একটু চিড়া আর মুড়ি খেয়ে কাটাতে হয়েছে৷ এছাড়া অনেক সময় পাক সেনাদের গোলা এসে কাছেই পড়েছে৷ তবুও ভাগ্য ভালো বলেই কোন রকমে প্রাণে বেঁচে গেছি৷''
সেখানে কর্নেল রউফ'এর সহায়তায় তিন মাসের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেন কাজী হেলেন৷ এরপর তাঁকে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত করা হয়৷ পরে তাঁকে মেলাঘর হাসপাতালে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ হবিগঞ্জে জন্ম এবং বড় হলেও মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে পরিচয় হয়েছিল তৎকালীন কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের সাথে৷ ফলে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি কুমিল্লায় এসে আশ্রয় নেন৷ তখন সিভিল সার্জন নূরুন্নবীর কাছে কাজী হেলেনকে হাসপাতালে নিয়োগ দানের জন্য সুপারিশ করেন জেলা প্রশাসক৷ ফলে কুমিল্লা হাসপাতালে তিনি সেবিকার কাজ শুরু করেন৷
হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন সাহসী নারী কাজী হেলেন

সেই থেকে কুমিল্লায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা কাজী হেলেন৷ কিন্তু এতোদিন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট-এ তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷ গেজেট-এ নিজের নাম অন্তর্ভুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছেন তিনি৷ হবিগঞ্জের মেয়ে হওয়ায় কুমিল্লার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা তাঁর নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বাধা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন হেলেন৷ কুমিল্লা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গিয়ে জানা গেছে, কাজী হেলেনের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট-এ অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে৷
একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীন দেশে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন কাজী হেলেন৷ তাঁর অভিযোগ, সিনিয়র নার্স হিসেবে নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও তিনি সিনিয়র স্কেলে বেতন-ভাতা পাননি৷ বিশেষ করে ম্যাট্রন অফিস তাঁকে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে বলে ডিডাব্লিউ'এর সাথে সাক্ষাৎকারে জানান কাজী হেলেন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘একদিকে সিনিয়র স্টাফের পোস্টে কাজ করা সত্ত্বেও আমাকে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়েছে জুনিয়র স্টাফ হিসেবে৷ এছাড়া আমাকে ২৫ বছর ধরে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে এবং শুধু রাত অথবা বিকেলের ডিউটি দেওয়া হতো৷ এভাবে আমার উপর নির্যাতন করা হয়েছে৷ পরে গত ছয় বছর আগে ডেপুটি সিভিল সার্জন নিজে এ ব্যাপারে শক্ত পদক্ষেপ নেন এবং আমাকে ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে প্রথমে মেডিসিন ও পরে ইসিজি শাখায় নিয়ে আসেন৷''
স্বাধীনতার ৪১ বছরে বাংলাদেশের অর্জন ও প্রাপ্তি সম্পর্কে কাজী হেলেন বলেন, ‘‘দেশের ভেতরে যে রাজাকাররা আছে তারাই দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করছে৷ তা না হলে আমাদের এই দেশ খুব শান্তিতে চলতো৷ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি চাই৷''

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৯

আমিই সোহেল বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.