নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সাধারণ মানুষ

মো. আদম শফিউল্লাহ

I am thinking what I am.

মো. আদম শফিউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাই বলে আমাকে ‘রাজাকার’ ভাববেন না

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৯

সৈকত স্যার কলেজে আমাদের বাংলা পড়াতেন। তখন থেকেই ওনার প্রতি একটা ভাললাগা ছিল। ওনার লেখা বই ও পড়েছি। এখন উনি সংবাদপত্রে নিয়মিত লিখেন। ওনার সব লেখাই ভাল লাগে। সম্প্রতি “প্রজন্ম চত্তর” নিয়ে ওনার এই লেখাটা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না। সঙ্গত কারণেই ওনার লেখার শিরোনামটাকেই আমার ব্লগের শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করলাম। আসুন সবাই একটু স্যারের কথাগুলি বিবেচনা করে দেখি।



সুত্রঃ আমার দেশ, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, পৃষ্ঠা নং-৬

------------------------------------------------------------------

ড. ফজলুল হক সৈকত



সমাজ পরিবর্তনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে; সভ্যতার দায় এবং দাবিও ক্রম-অগ্রগমনের পক্ষে। অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য জেগে-ওঠা তরুণ-প্রজন্মকে অভিনন্দন। ৪২ বছর আগে ঘটে-যাওয়া অপরাধের বিচারের দাবি উঠেছে দেশে। কিন্তু তাই বলে বর্তমানকে ভুলে থাকলে তো চলবে না; প্রতিদিন আমাদের চারপাশের বাস্তবতার ভেতর দিয়ে পথ পারি দিতে হচ্ছে। কাজেই, চোখের সামনে ঘটে-চলা অপরাধগুলো যেন আড়ালে পড়ে না যায়; আজকের অপরাধের বিচারের জন্য যেন আরও ৪২ বছর অপেক্ষা করতে না হয়। শাহবাগের ‘তারুণ্যের জোয়ার’ যেন উত্সবে পরিণত না হয়। বাস্তবে এখানে কতজন তরুণ রয়েছেন, তারা নিজ প্রেরণায় আসছেন, নাকি কর্মী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন তা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। দেশের কতভাগ মানুষ এই ‘আন্দোলনের’ সঙ্গে রয়েছে, যানজটে নাকানি-চুবানি খাওয়া রাজধানীবাসী কী ভাবছে, তারও জরিপ হওয়া প্রয়োজন।



সম্প্রতি শিক্ষকরা বেতনের দাবিতে রাস্তায়, শহীদ মিনারে দাঁড়াতে গিয়ে পিপার স্প্রে আর গরম পানির ছিটা খেয়েছিলেন। পুলিশের ওই রুপালি স্প্রে ও পানির ঢোপ কি খালি হয়ে গেছে? এই তরুণরা (আবাল-বৃদ্ধ-বণিতারাও) কি জানেন, শহীদ পরিবার এবং মুক্তিযোদ্ধারা আজও পাননি যথাযথ সম্মান; স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা প্রদান করেছিলেন সরকারপ্রধান শেখ মুজিব; জেলখানায় বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রথম প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় ৪ নেতা হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও হয়নি; মুজিব হত্যাকারীদের ফাঁসি হলেও চিহ্নিত হয়নি জিয়া হত্যাকারীরা; আশির দশকে এরশাদের শাসনামলে এবং নব্বইয়ের দশকে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে এই ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা রাজপথে আন্দোলন করেছিল?



বর্তমান প্রজন্মের প্রতি বিনীত জিজ্ঞাসা, মানবতাবিরোধী অপরাধ কি কেবল ১৯৭১ সালে হয়েছিল? যে দল স্বাধীন দেশে নাগরিকের রাজনীতি করার অধিকার হরণ করেছিল, যারা স্বৈরশাসককে এবং অবৈধভাবে ক্ষমতায়-থাকা তত্ত্বাবধায়ক-কুশীলবদের লালন-পালন করে, তারা কি দেশের শত্রু নয়? জাবিতে ধর্ষণের সেঞ্চুরি-উদযাপনকারী ছাত্রলীগ নেতার কি বিচার হয়েছে? ৫৭ জন সেনা অফিসারকে, সাংবাদিক সাগর-রুনিকে কারা, কেন হত্যা করেছে? গত চার বছরে সারাদেশে শতাধিক পত্রিকা বন্ধ করার পেছনে কী উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে? তরুণরা জেগে উঠুন। দালাল এবং দেশের শত্রুদের চিহ্নিত করুন। অপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন। স্লোগান তুলুন—শেয়ার মার্কেট, হলমার্কের নামে সরকারি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটকারীদের, ডেসটিনি ও গ্রামীণ ব্যাংক উপাখ্যানের খলনায়কদের উপযুক্ত বিচারের দাবিতে।



‘প্রজন্ম চত্বর’-এর তরুণরা শুনুন—দেশে আড়াই লাখ রাষ্ট্রীয় চাকরির পদ শূন্য রয়েছে। মহাজোট তো ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাহলে তরুণদের বেকার রেখে, কেন কিছু মানুষের বিচারের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা? তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কি এই একটি ইস্যুই ছিল? কেন রামুর ঘটনা, সিরিজ-ধর্ষণ শাহবাগে ব্যানার-ফেস্টুনে ভেসে উঠছে না? পদ্মা সেতু দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের যে সুনাম নষ্ট হলো; সুরঞ্জিতের গাড়িতে পাওয়া ৭০ লাখ টাকা আর রেলওয়ে নিয়োগ-বাণিজ্য যেভাবে ধামাচাপা দেয়া হলো; বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে ‘ভিসি বাহিনী’ এবং শিক্ষক-নিয়োগের নামে ‘ক্যাডার নিয়োগ’র ঘটনা ঘটে চলেছে—এগুলো কি মানবতার পক্ষের কাজ? সাংবাদিক বন্ধুদের প্রতি অনুরোধ, সত্য খবর তুলে ধরুন। আলু-পটল-বেগুন; কাপড়-কালি-কলস বেছে-বুঝে কিনতে পারে যে-সব মানুষ, তাদের বোকা ভাবা ঠিক হবে না। সাধারণ মানুষ ভাষার মাসে প্রাণের-উত্সব একুশের বইমেলায় পরিজন নিয়ে আসতে পারছেন না; প্রকাশক-লেখকরা বিক্রির ভাটার টানে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।



কেউ কেউ শাহবাগের ঘটনাকে ‘আরব বসন্ত’ বলছেন। ‘আরব বসন্ত’ সংঘটিত হয়েছে গণতন্ত্রের জাগরণের জন্য। বাংলাদেশে কি তেমন কিছু ঘটছে? আর ‘বসন্ত’ শুধু সময় (কাল) অর্থে নয়, বিপদ (কাল) অর্থেও পরিচিত। তাই, মহামারী বসন্তে যেন হাজার মানুষের প্রাণ চলে না যায়! সব(!) যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবির পাশাপাশি, পরবর্তীকালে কোনো রাষ্ট্রপতি যেন আর কোনো ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করতে না পারেন, সে বিষয়টিও সংশোধিত আইনে যুক্ত করার দাবি উঠেছে সম্প্রতি শাহবাগ থেকে। তবে তো বুঝতে বাকি রইল না—কিসের চাপে বর্তমান রাষ্ট্রপতি ২১ জন ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করেছেন; কেন ‘প্রজন্ম চত্বর’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাতারাতি আইন-সংশোধন করছে সরকার।



কারও কারও প্রশ্ন, এটা কি গণজাগরণ? নাকি ‘সাজানো খেলা’? বিশ্বজিতের মতো তরুণকে যখন ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল, তখন ‘তরুণ প্রজন্ম’ জেগে উঠতে পারেনি; রংপুর ও কুষ্টিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গায়ে এসিড ছুড়লে-পেটালে, ঢাবি’র আবু বকরসহ বুয়েট-রাবিতে, বগুড়ায়-চট্টগ্রামে ছাত্র-জনতা খুন হলে ছাত্রলীগকে, নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠেনি! আইন প্রতিমন্ত্রী ‘আরও আগে এই গণজোয়ার হলে রায় অন্য রকম হতে পারত’ ধরনের বক্তব্য প্রদান করলেও ‘প্রজন্ম চত্বর’ থেকে তার পদত্যাগের দাবি ওঠেনি। কাজেই ভেবে দেখতে হবে, শাহবাগের (ও দেশের বিভিন্ন স্থানের) চলমান ঘটনা স্বাধীনতার অব্যবহিত পরের ‘একদলীয় শাসন কায়েম’-এর কোনো নতুন ও ‘ডিজিটাল’ সংস্করণ কিনা? যদি তাই হয়, তবে এখন প্রয়োজন সরকার পতনের আন্দোলন। প্রয়োজন একটি গণঅভ্যুত্থান।



লেখক : সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

কালোপরী বলেছেন: ++++++++++++

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৭

মো. আদম শফিউল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

আহমদ বলেছেন: শাহাবাগের জাগরণ মেঞ্চর দশম দিনে আপলোড হওয়া পোস্টি পড়ে মনে হলো সৈকত স্যাররা জাতির সব অনাচারের দায় মোচনের ভার তরুণ প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে চাইছেন, কিন্তু কেন? কিছু দায় আপনারা নেন না কেন? তরুণ প্রজন্ম তো ক্ষমতা দখলের জন্য বা সরকার পতনের জন্য বিদ্রোহ করছে না। এই বিদ্রোহ আপসের রাজনীতি ও কাদের মোল্লার রায়ের আগে শাপলা চত্বর থেকে দেয়া গৃহযুদ্ধের হুংকারের প্রতিবাদ। এই হুংকারের আগে বাচ্চু রাজাকারের ফঁাসি রায় হেয়েছিল। হুংকারের পরে রায় হল জাবজ্জীবন। জনগণ রায়ের মধে আতাতের গন্ধ পেল। তরুণ প্রজন্ম আঁতাতের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলল ফাঁসির দাবিতে......
এছাড়া ইসলামের নামে একাত্তর সালে রাজাকার আলবদররা যা করেছে, তার শাস্তি মৃত্যু দন্ড। যুদ্ধের সময় নারী, শিশু ও ফসলি জমি রক্ষা করা ইসলামের হুকুম। প্রতিহিংসাবশত কাউকে হত্যা ইসলামে নিষিদ্ধ। এসবের দলিল কোরআন হাদিসে রয়েছে। ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক এসবের শাস্তি শিরো”েছদ বা ছাঙ্গেছার।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

মো. আদম শফিউল্লাহ বলেছেন: সব জায়গাতে তরুণদেরই জয়-জয়কার। দায়িত্ব নিতে হবে তরুণদেরই। স্যাররা শুধু নির্দেশনা দিবেন। এটাই নিয়ম।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

বিজন ব্যাথা বলেছেন: না না ভাই জান কি যে বলেন আপনারে বা আপনার স্যার কে রাজাকার ভাবব কেন ? আপনারা সাচ্চা পাকিস্তানি .

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫

মো. আদম শফিউল্লাহ বলেছেন: মাফ করবেন, আমরা সাচ্চা বাংলাদেশি।

৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

কালীদাস বলেছেন: এই কথাগুলা যে বলছে, তার ৭১এ ক্ষতি/হারানোর পরিমাণ কতটুকু? সব যেহেতু সে একই স্কেলে মাপতে চায়, ফাইন; খুনের শাস্তি ২৩দিন জেল, এইটারে সে কোন চোখে দেখে?

৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৭

মো. আদম শফিউল্লাহ বলেছেন: ভাল করে পড়ে মন্তব্য করুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.