নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোনালী প্রান্তর

সোনালী প্রান্তর › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাবলীগ জামাত ও এর নানা অসঙ্গতি ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪

অনেকেই তাবলীগের বিরুদ্ধে কইলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন । মানুষ মনে করে এরা ইসলাম এর জন্য অনেক কিছু করতেছে । কিন্তু আসলে কিছুই করতেছেনা । কারন এর যা করে তা যে কেউ করতে পারে । আহামরি কিছুই এরা করছেনা । আমি কিছু দিক আমি উল্লেখ করব যা পড়লে বুঝবেন এরা কত বেহুদা দল -

১) এরা সারাদিন আমলের কথা বলে কিন্তু ঈমানের কথা বলেনা । অথচ ঈমান হল মুল । কারন যত আমল -ই করুক ঈমান না থাকলে জাহান্নামি । যার অন্যতম উদাহরন ইবলিশ ।

২) এরা বলে আমলে নাযাত অথচ নাযাত হলা আক্বীদায় আর আমলে হল মর্যাদা ।

৩) এদের নিজের পরিবার পরিজন নামায পড়েনা কিন্তু আর এক জনকে উপদেশ দেয় নামায পড়তে ।

৪) এরা যে নামায নিয়ে এত কথা বলে কিন্তু নামায কবুল হওয়ার যত শর্ত আছে তা এরা বলেনা ,জানেওনা ।

৫) নামযে হুযুরি কি এরা তা জানেনা ।

৬) হারাম হালালের কোন বাচ-বিছার এদের নাই ।

৭) তাবলীগের প্রকারভেদ ও তাবলীগ প্রচারকের প্রকারভেদ এরা জানেনা ।

৮) নিজের এলাকায় মানুষ নামায পড়েনা কিন্তু অন্য এলাকায় যায় মানুষ কে নামাযের কথা বলতে ।

৯) সুন্নত কি এরা তা জেনেনা ।

১০) পর্দা করেনা ।

১১) টিভি দেখে , গান শুনে , খেলা দেখে, ছবি তুলে অতচ এগুলা যে হারাম তা এরা মনে করেনা।

১২) এরা কোন মাসয়ালা জেনেনা । আপনি এদের যদি কোন বিষয়ে ফায়ষালা জানতে চান এরা বলতে পারবেনা ।

১৩) সারা দুনিয়া হারামে ভরপুর কিন্তু এ নিয়ে তারা কোন কথা বলেনা কারন এরা নিজেরাই হারামে মশগুল ।

১৪) আল্লাহ পাক এবং হুযুরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া স্লালাম নিয়ে কাফিরেরা কত অবমাননা করতেছে কিন্তু এদের কোন প্রতিবাদ নাই । অথচ কোরান শরিফ-হাদিস শরিফ অনুযায়ি কেউ যদি এই সময় প্রতিবাদ না করে তাহলে তার ঈমান- ই নাই ।

১৫) যে সরকার -ই ক্ষমতায় থাকুক তাদের অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে এরা কোন টু শব্দ ও করেনা।

১৬) ইসলাম এর কোথাও এরা দেখাইতে পারবে যে পরিবার পরিজন ছেড়ে এভাবে দ্বীনের কাজ করার কথা বলা হয়েছে ?

১৭) ছয় উছুলি তাবলীগের কথা কোথায় লিখা আছে ?

১৮) এদের প্রতিষ্টাতা মাওলানা ইলিয়াছ আলি নিজেই পীরের মূরিদ ছিল কিন্তু এরা এর বিরোধি ।ইহা কি ভন্ডামি নয় ?

১৯) এরা খালি মুরব্বির কথা বলে যে মুরব্বি এই কথা বলেছে ওই কথা বলেছে অথচ আমাদের রেফারেন্স কোন মুরব্বি নয় ইসলামের রেফারেন্স হল কোরান শরিফ ,হাদিস শরিফ,ইজমা, ক্ক্বিয়াস ।

২০) অন্যান্য ফরযের পর হালাল রিযিক তালাশ করাও ফরয কিন্তু এরা ব্যবসা -চাকরি সব ছাইড়া চলে যায় ।



এরকম আরো বহু অসঙ্গতি এদের রয়েছে । কারো জানা থাকলে জানানোর আহবান রইল। আপডেট হবে ।

মন্তব্য ৬৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৭

জেট টু এ বলেছেন: এরা বাতিল ফিরকা ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: সত্যি কথা ।

২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

ধইঞ্চা বলেছেন: রেফারেন্স কই??

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: এদের সাথে কথা কইলেই বুঝবেন ।
এগুলা বুঝার জন্য রেফারেন্স লাগেনা ।

৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

মাসুম মিয়া বলেছেন: এদের মুল দলিল হইল- ‌'তোমরা সৎ কাজের আদেশ কর, অসৎ কাজের নিষেদ কর।' -কুরআন শরীফ
এদের মূল সৎ কাজ হইছে- "ভাই আল্লাহর রাস্তায় সময় দেন। আমরা আজকা আছি একদিন থাকুমনা...." (তশকিল টু গো তাবলিগ)
অথচ এরা আর কোন সৎ কাজের আদেশ দেয় না। আর অসৎ কাজ বা হারাম ও খারাপ কাজ থেইকা নিষেদ করা বা বাধা দেয়াতো ওদের মুরুব্বীরা জীবনে করছে কিনা সন্দেহ। মোট কথা আমার দৃষ্টিতে এরা বোবা শয়তান। পৃথিবীতে বিভিন্ন জায়গায় ইসলামে অবমাননা করতাছে, নবীজীর অবমাননা করে ছবি, কার্টুন করতাছে অথচ সবাই প্রতিবাদ করলেও তবলীগওয়ালাগো কোন চু-চেরা নাই, প্রতিবাদ নাই।
হেইল্যাইগাই কই গাট্টিওয়ালার হইছে বোবা শয়তান।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: আসলেই এরা বোবা শয়তান ।

৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৮

সোনালীমাঠ বলেছেন: হাচা কথা লিখচেন ।
যে কেউ সহজে বুঝতে পারবে ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: জ্বি ।

৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

রঙ্গমঞ্চ বলেছেন: এরা ইসলামের অনেক ক্ষতি করতাছে কারন এদের লেবাস দেখে মানুষ মনে করে যে এরা সহিহ।
এরা যে সহিহ না তার প্রমান হল হক এবং বাতিল কখনও একসাথে চলতে পারেনা। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষীদের কাছেও এরা খুব প্রিয়।আল্লাহ্‌ এদের সহিহ বুঝ দান করুন।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।

৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: এরা শয়তান লেংড়া ইলিয়াসের যমজ

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৮

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ইলিয়াস লেংড়া ছিল ?
তাইলে তো বেটার উপর গযব পড়ছিল ।

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: দৃষ্টি নবীজীর বেলাদত শরিফ ১২ ই রবিউল আওয়াল উদযাপন

রিবেশ বন্ধু বলেছেন: ফরজের চাইতেও বেশি বললে ভুল হবেনা

আল্লাহ যার নামের সাথে নাম মিশিয়ে দিয়েছেন এবং যার খাতিরে সৃষ্টি
সমুদয় পয়দা করেছেন , হেদায়েতের ভার দিয়েছেন , শাফায়াতের কাণ্ডারি বানিয়েছেন এবং সদা সর্বদা দরুদ ছালাম ভেজে থাকেন
অসংখ্য ফেরেস্তা গনকে নিয়ে সেই দয়াল নবীজীর প্রতি বেলাদত ও
তাজিম ঈমানের শক্ত আকিদা
ঈদে আজম ঈদে মিলাদুন্নবি সব ঈদের সেরা
তার রহমত আদায় কর পড় দরুদ জানাও ছালাম মদিনা মনোয়ারা ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৯

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: অথচ তাবলিগ ইহা মানেনা ।
তাইলে এরা কিসের মুসলমান ?

৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: আরো জানতে পড়ুন

৯| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: লেখক বলেছেন: নবীজীর বেলাদত শরিফ ১২ই রবিউল আওয়াল উদযাপন
ঈদে মিলাদুন্নবি সা যথা যুগ্য মর্যাদায় উদযাপন ও আনন্দ প্রকাশ
ইমানদার মুমিন গনের জন্য অসংখ্য রহমত ও সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ এবাদত ।
তার জুতা মোবারকের ছোঁয়ায় আল্লাহর আরশ মহল্লা সম্মানিত
তিনি যে আমাদের জন্য দুনিয়ায় রহমত স্বরূপ প্রেরন হইয়াছেন
তার জন্য আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করা সর্ব শ্রেষ্ঠ নেয়ামত । বিখ্যাত
সাহাবা কেরাম গন তাবেয়িন তাবে তাবেয়িন গন এবং অলি আউলিয়া পির মাশায়েখ কামেল আলেম গন দিনটি মর্যাদার সহিত উদযাপন করতেন ।

আমরা রহমত হইতে বঞ্ছিত হইব কেন ?

রিবেশ বন্ধু বলেছেন: ফরজের চাইতেও বেশি বললে ভুল হবেনা

আল্লাহ যার নামের সাথে নাম মিশিয়ে দিয়েছেন এবং যার খাতিরে সৃষ্টি
সমুদয় পয়দা করেছেন , হেদায়েতের ভার দিয়েছেন , শাফায়াতের কাণ্ডারি বানিয়েছেন এবং সদা সর্বদা দরুদ ছালাম ভেজে থাকেন
অসংখ্য ফেরেস্তা গনকে নিয়ে সেই দয়াল নবীজীর প্রতি বেলাদত ও
তাজিম ঈমানের শক্ত আকিদা
ঈদে আজম ঈদে মিলাদুন্নবি সব ঈদের সেরা
তার রহমত আদায় কর পড় দরুদ জানাও ছালাম মদিনা মনোয়ারা ।

১০| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০১

জুবাইর রেযা বলেছেন: এরা হইছে বোবা শয়তান।যেখানেই পান তাদের বয়কট করুন।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৪

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।

১১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২০

এম এ এইচ মিনা বলেছেন: আপনার সাথে একমত নই । আপনি মারাত্নক ভুল লিখেছেন। যদিও আমি কোনদিন তাবলীগ এ যাই নাই । তবে এটা জানি যে,জামায়াতরা তাবলীগদের পছন্দ করে না এবং তাবলীগরাও জামায়াতদের পছন্দ করে না ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: আপনার কথা ঠিক আছে।
তাবলিগের সাথেও জামাত শব্দ আছে ।

১২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৭

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: দ্বীন ইসলাম’ প্রচার প্রসারের মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ পাক; এই বিশ্বাস হতে প্রচলিত ছয় উছূল ভিত্তিক তাবলীগ জামাতীরা মাহরূম

১৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

হুমায়ুন তোরাব বলেছেন: islamer rukon 5ta r tableuge dr rukun 6ta..
edr moha grontho AL QURAN na,fajayale amal...
tobe jara tableuge kre tardr mddheo pokritw muslim ase..

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪১

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: প্রকৃত যারা যায় তারাও এক সময় তাদের মত হয়ে যায় ।

১৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১০

এম এ এইচ মিনা বলেছেন: আমার মন্তব্য আপনি বুঝতে পারেন নি ।
জামায়াত বলতে আমি বুঝিয়েছি ..বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম
আমি আবারও বলছি আপনার সাথে একমত নই । আপনি মারাত্নক ভুল লিখেছেন।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: জামায়াতে ইসলাম আর তাবলিগ জামাত এক নয় ।

আমি নিজে কয়েকবার তাবলিগ এ গিয়েছি । আমার অভিজ্ঞতা থেকে লিখা । যারা তাবলিগ করে তাদের কাছে একবার যেয়ে জিজ্ঞাসা করে নিন ।

১৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪

নীড় ~ বলেছেন: আপনের মতে তাবলীগ খারাপ বুঝলাম , তাইলে কোন দল ভালো আপনের মতে যদি বলতেন একটু

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১০

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: আহলে সুন্নত অয়াল জামাতে যারা বিস্বাসি ।

১৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৯

আমিনুল ইসলাম সজিব বলেছেন: ভাই ... খামোখা সাধারন মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা কিন্তু কোনো মুসলমানের কাজ না । আজকের মুসলমানরা এত দুর্বল হওয়ার কারন একটাই সেটা হল বিভক্ততা । আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা দেখি দেখেছি , যারা শিবির করে তারা তাবলীগে দেখতে পারে না , আবার এই পীর দেখতে পারে ঐ পীরের মুরিদদের । কিন্তু এমনটাতো হবার কথা না ! ! ! আমরা সবাই এক নবীর উম্মত --- আমাদের সবার ধর্ম এক , কিন্তু কেন আমাদের নিজেদেরই মাঝে এত শত্রুতা ! ! !

কেউ যদি ভালো কোনো ভার্সিটিতে পড়ে চাকরি না করে চুরি বাটপারি করে সেটা ঐ ভার্সিটির দোষনা , দোষ তার নিজের । এমন অনেক ভুরি ভুরি ঘটনা দেখেছি যে , অনেক বদ-খারাপ লোক তাবলীগে গিয়ে একেবারে সম্পূর্ন মাটির মানুষ হয়ে গিয়েছেন । আর আমরাই দেখেননা ---আমরা মুসলমানও হয়ে খারাপ কাজ আবলীলায় করছি । তাই বলে কি ইসলাম খারাপ !!!!!!!!!!!!

যাই হোক ----- তাবলিগের মাঝে কোনো অসংগতি থাকলে তা আপনি তাবলীগের আলেমদের জানান । তাদের বুঝান । তাই বলে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে বিভক্তি-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে আমাদের লাভ কী ? ? ? ?

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৫

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: উম্মতে মুহম্মদি ৭৩ ভাগ হবে । ৭২ ভাগ জাহান্নামি । এর এক দল এরা ।

১৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৪

নিষ্‌কর্মা বলেছেন:
নতুন এসলামি ফুট আসল। বিএসটিয়াই থেকে মান-সন্দ চাই।

Click This Link

১৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৫

বাজেকাম বলেছেন: হাতি ঘোড়া গেল তল
মশা বলে কত জল।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৯

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ভুইলেন না মশা নমরুদের মৃত্তুর কারন হয়েছিল ।

১৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৪৬

তা্নভীর মোরশেদ বলেছেন: লেখাটি এবং সবার কমেন্ট পড়ে বোধ হলো প্রত্যেকে কমবেশী জানেন । আমি জামাত, তা্বলীগ জামাত বা ইসলাম সম্পর্কে অল্পই জ্ঞান রাখি । আগে জানতে চাই । পরে কমেন্ট করব ।
তবে আমি পাঁচ ওয়াক্ত প্রার্থনা করি । সবাই দোআ’ করবেন ।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০০

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: চালিয়ে যান । নামায পড়া বন্ধ কইরেন না ।

২০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৬

প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: শোকেসে....

২১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:৫৯

মাহমুদুর রাহমান বলেছেন: ধর্মীয় বিষয়ে লিখতে নমনীয় ভাষা ব্যবহার করুন।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০১

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ভাই , গরম ভাষা ব্যবহার করলাম কই ?

২২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৩

বিডিওয়েভ বলেছেন: আপনি মারাত্নক ভুল লিখেছেন।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৬

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: কি ভুল লিখলাম ?

২৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৫৯

বন্ধুহারা বলেছেন: ভাই আমি তাবলিগে গিয়া ১৯৯৯ সাল থেকে নামাজ পড়া শুরু করি।ইনশাল্লা এখন চলছে।তাবলিগে গিয়া কত খারাপ মানুষ ভাল হয়ে গেছে।
আপনি হয়ত ২/১ বার ৩দিনের জন্য গেছেন সব ভাল করে না বুঝেই মন্তব্য করে বসলেন।পরের সমালচনা ভালই করতে পারেন নিজের না।

এরা প্রথমেই ঈমানের কথা বলে।পরে অন্য কথা বলে।

এদের নিজের পরিবার পরিজন নামায পড়েনা কিন্তু আর এক জনকে উপদেশ দেয় নামায পড়তে,তাতে দোষের কি?আর নিজের পরিবার পরিজনকে নামায পড়তে বলেনা আপনি বাসায় গিয়া জিগাসা করছেন?

এরা যখন কোন এলাকায় যায় তখন এদের মধ্যে ২/৩ জন অভিগ্গ লোক থাকে ওরাই বাকিদের ঈমানের কথা বলে।
মাসালা আপনি আলেমদের কাছ থেকে জানবেন ওরা তো সাধারন মানুষ।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮

সোনালী প্রান্তর বলেছেন:


فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ [١٠٧:٤]
অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,
﴿٤﴾


الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ [١٠٧:٥]
যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
﴿٥﴾


الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ [١٠٧:٦]
যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে

২৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮

সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: এগুলো কোন কিছুই থিক নয়

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪১

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: কিভাবে ?

২৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

মুখভাঙা০০৭ বলেছেন: এই রকম আলেমগণ যারা সমাজে বাস করেন, তারা নিজের সমাজের কথা ভাবে না, নিজের পরিবারের কথা ভাবে না। ঘরে বউ বাচ্চা কিভাবে থাকতেছে সেদিকে কোন খেয়াল নাই। নিজের ছেলে মেয়ে, ভাই, আত্মীয়রা যদি অন্যের ক্ষতি করেও তা দেখে না। নিজের গ্রামে সকল মানুষদের ভাল পরামর্শ দেয়া তো দূরের কথা বরং তা থেকে মুখ ফিরেয়ে পোটলা পাটলি নিয়া দৌড় দেয়। এমনকি ৪/৫ চিল্লা দিয়ে বাড়িতে এসে অন্যের জমির আইল ঠেলা আমার চোখের দেখা। আর যদি পাশের জমিওয়াল যদি হিন্দু হয় তাহলেতো আর কোন কথাই নেই। আসলে ভেবে দেখে না ইসলাম মানে শান্তি। সমাজে শান্তির জন্য কাজ করাও কিন্তু একটা ইবাদত, আল্লাহর হুকুম পালন করা।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ঠিক বলেছেন কিন্তু এই মুর্খরা তা বুঝেনা ।

২৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১১

আমিনুল ইসলাম সজিব বলেছেন: আপনার লেখা-ভাষা দেখে মনে হয় পেইড ব্লগার । সন্দেহ............






তাবলীগ জামাত সম্পর্কে অনেকেই আমাকে একটা প্রশ্ন করেন যে তাবলীগ জামাতের লোকেরা যে মসজিদে থাকে এটা ঠিক কিনা ? এর উত্তর হল নফল এতেকাফের নিয়তে মসজিদে থাকা যাবে। নফল এতেকাফ যে কোন সময় করা যায়। যেমন আপনি যোহরের নামায পড়তে মসজিদে গেলেন। তখন আপনি নফল এতেকাফের নিয়তে মসজিদে ঢুকলেন। মসজিদে থাকার সময়টা আপনি নফল এতেকাফের সওয়াব পাবেন। আর নফল এতেকাফ যে কোন সময় করা যায় ও যে কোন সময় ভাঙ্গাও যায়। এতে কোন গুনাহ নেই। যেহেতু তাবলীগ জামাতের ভাইয়েরা নফল এতেকাফের নিয়তেই মসজিদে থাকেন তাই ইসলামী শরীয়তে উনাদের জন্য মসজিদে থাকা খাওয়ার কোন সমস্যা নেই। তবে অনেক জায়গায় আমি দেখেছি যে মসজিদের পাশেই কয়েকটি ঘর করা হয় যেন সেখানে তাবলীগ জামাত আসলে উনারা থাকতে পারেন। হ্যা বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে মসজিদে না থাকাই উত্তম। তবে সারা বাংলাদেশের সব মসজিদের পাশেই তো আর থাকার ঘর করা সম্ভব নয়। তাই তাবলীগ জামাতের একটা বৃহত্‍ অংশকে মসজিদেই থাকতে হবে। তবে নফল এতেকাফের নিয়তে মসজিদে থাকলে এটাতে কোন দোষ নাই। তাবলীগ জামাত নিঃস্বার্থ ভাবে দ্বীন ইসলামের অনেক খিদমত করছেন। তাবলীগ জামাত করা ফরজ না কিন্তু তাবলীগ জামাতের প্রতি ভাল ধারনা পোষণ করা ফরজ। আপনি পারলে তাবলীগে সময় লাগাবেন না পারলে লাগাবেন না। কিন্তু দয়া করে তাবলীগ জামাত কে গালিগালাজ করবেন না।

আবার অনেকেই একটা প্রশ্ন করেন যে তাবলীগ জামাত কেন রাজনীতিতে আসে না ? সত্যিকথা বলতে কি তাবলীগ জামাত যদি একটাও রাজনীতির কথা বলে তাইলে এর পরের দিন থেকে তারা আর বাংলাদেশের কোন মসজিদে থাকতে পারবেন না। কারন বাংলাদেশের মসজিদ কমিটি গুলিতে BNP, আওয়ামী লীগ, জাপা সব দলের লোকেরাই আছে। আর তাছাড়া মুসলিম বিশ্বে তো রাজনৈতিক দলের অভাব নেই। নতুন করে তাবলীগ জামাত নামে একটা রাজনৈতিক দল তৈরী করারও কোন দরকার আমি দেখি না। তাছাড়া মুসলমানদের মাঝে একটা অরাজনৈতিক জামাত/সংগঠন থাকা উচিত যেন সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ঈমান আমল সংশোধন করার জন্য ঐ অরাজনৈতিক জামাতে অংশগ্রহন করতে পারে। একটা রাজনৈতিক দলের সবাই নেতা হতে চাওয়া যেমন ঐ দলটার জন্য বিব্রতকর ঠিক তেমনি সকল মুসলমানেরও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশগ্রহন করা বোকামী। ইসলাম হালাল উপায়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতে উত্‍সাহ দিয়েছে কিন্তু তাই বলে ইসলাম মানেই খালি সারাদিন ব্যবসা বাণিজ্য করা নয় ঠিক তেমনি ইসলামে সিয়াসাত বা রাজনীতি আছে তাই বলে ইসলাম মানেই সারাদিন খালি রাজনৈতিক আন্দোলন করা নয়।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: বাকি বাতিল ফিরকার লোকেরাও ত একই কাজ করে তাই বলে কি তারা সহি ?
ঈমান না থাকলে আমলের মুল্ল নাই যার উদাহরন হল শয়তান ।

২৭| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭

আগুয়ান বলেছেন: নি:সন্দেহে এটি একটি ভালো কাজের অংশবিশেষ।
অসংখ্য পথহারা মানুষকে, বেনামাজীকে সঠিক দ্বীনের বুঝ দান করতে সামর্থ্য হয়েছে।


কিন্তু আমরা যদি তাবলীগকে ইসলাম মনে করি তাহলে আমাদের মস্তবড় ভূল হবে যা সমাজে ইসলামের ভুল ধারণা প্রচার করবে। তাবলীগের সম্পর্কে নিচের প্রশ্নগুলো জানা দরকার, তাহলে সবার ভালভাবে বুঝে আসবে-

১. তাবলীগ কি?
২. এদের কাজ কি?
৩. তাবলীগ কারা করে?
৪. তাবলীগের কার্যপদ্ধতি?
৫. বিশ্বইজতেমা

উত্তর ১.
দ্বীনি আমলের দাওয়াতের কাজ হচ্ছে তাবলীগ।

রাসুল (সা) দাওয়াতের মাধ্যমেই্ ইসলামের প্রচার শুরু করেন। কিন্তু শুধু দাওয়াতের মাধ্যমে আজকের ইসলাম প্রতিষ্ঠা পায়নি। তাহলে তাঁকে নিজ জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে হিজরত করতে হত না। ওহুদ যুদ্ধে দান্দান মোবারক শহীদ হতে হত না।

কাফেররা তো প্রস্তাবই দিয়েছিল যে- হে মুহাম্মদ একদিন তোমার ধর্ম
আমরা পালন করব আরেকদিন আমাদের ধর্ম তুমি পালন করবে।
--এতে করে কি আল্লাহর সাথে শিরক করা হতো না?--

যার পরিপ্রেক্ষিতে সূরা কাফিরুণ নাযিল করে আল্লাহ-তায়ালা এর সুষ্ঠ জবাব দিলেন।


উত্তর ২.
এখানে একটি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত থেকে দাওয়াতি কাজ করা।

আমরা যা দেখতে পাই তাবলীগী ভা্ইয়েরা মহল্লার মসজিদ ভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপন করে দাওয়াতি কাজ করেন।

মূলত নামাজ পড়ার জন্য বুঝানো, ফাজায়েল আমল (বিশেষ আমলের ব্ই, তাদের বিশেষ প্রকাশনা) পড়াতে উৎসাহিত করা তাদের কাজ।

---এর বাহিরে তাদের কাজ নাই- কিন্তু ইসলাম কি নামাজ পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ?
কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত এই ৫টি স্তম্ভ। কিন্তু এতে কি ইসলাম পূর্ণাঙ্গ?

কয়েকটি খুঁটি/পিলার গেথে কি আপনার বাড়ীর কাজ শেষ হয়ে যায়, আপনি তাতে থাকতে পারবেন? নাকি ছাদ দিতে হবে, রং করতে হবে ইত্যাদি অনেক কাজ করতে হবে?

উত্তর ৩.
আমরা যা দেখতে পাই। যারা পরিবারের মধ্যে বয়স্ক, সমাজে কর্মহীন, সমাজের নামধারী ব্যক্তি, কিছু সংখ্যক আছেন শিক্ষিত, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ, বখাটে টাইপ ( উনারা আবার বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের সৈনিক কিন্তু তাবলীগ করার কারণে মনে করেন ইসলামের মহান খেদমত করছেন এবং সমাজ তাদেরকে খোদাভীরু, সৎ লোক বলেই জানে।)

কিন্তু সমাজের বৃহৎ অংশই উনাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী না এবং তারা তাদের কাছে পৌছতে পারেন না (নারীরাতো রয়েছেই)। কারণ তারা ব্যক্তিগতভাবে সমাজে গ্রহণযোগ্য আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী না।


উত্তর ৪.
ক) তৃণমূল কাজ হচ্ছে মহল্লা/মসজিদ ভিত্তিক দাওয়াতি কাজ
খ) নিয়মিত মাস’আলা পাঠ (বিভিন্ন নমাজের পর হয়)

গ) ৩দিনের চিল্লা- সাধারণত অঞ্চলভিত্তিক এক মহল্লা থেকে আরেক মহল্লায় দাওয়াতি কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া (বেডিংপত্রসহ ৩দিন থাকা/খাওয়ার যাবতীয় খরচ নিজ ব্যবস্থায় করতে হয়)

ঘ) ৪০ দিনের চিল্লা সাধারণত জেলাভিত্তিক এক জেলা থেকে আরেক জেলায় দাওয়াতি কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া (বেডিংপত্রসহ ৪০দিন থাকা/খাওয়ার যাবতীয় খরচ নিজ ব্যবস্থায় করতে হয়)

ঙ) ৩/৬ মাসের চিল্লা আন্তর্জাতিক এক দেশ থেকে আরেক দেশে দাওয়াতি কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া (থাকা/খাওয়ার যাবতীয় খরচ নিজ বহন করতে হয়)। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ, সামর্থ্যবান, শিক্ষিতরা অংশগ্রহণ করেন।

চিল্লায় কি হয়? দরছে হাদীস, বিভিন্ন আমলের উপর আয়াত পাঠ, বিভিন্ন দুআ শিখানো, কুরআন শিখানো, দাওয়াতী কাজ।

উত্তর ৫.
তাবলীগ জামাতের সর্ববৃহৎ কার্যক্রম হচ্ছে প্রতিবছর নিয়মিতভাবে সারাদেশের তাবলীগ ভা্ইদের একত্রিত করার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান/বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান। যাতে বিভিন্ন দেশ হতে তাবলীগ ভাইয়েরা অংশগ্রহণ করে থাকে।

এবং ইজতেমা মুসলিম বিশ্বের ২য় বৃহত্তম সমাবেশ


কিন্তু পাঠকগণ আপনারাই বিবেচনা করুণ এত্ইকি ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হল?

তাহলে রাসুল (সা) এতগুলো যুদ্ধ করেছেন কেন, মদীনা নামক ইসলামী রাষ্ট্রের জন্ম হওয়ার দরকার ছিল কি? মক্কা বিজয় করার দরকার ছিলো কি? খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার দরকার ছিল কি? উমর (রা) এর অর্ধ জাহানের বাদশা হওয়ার দরকার ছিল কি?

সেটা কি ইসলাম ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য নয়? যাতে থাকবে কোরআন ও হাদীসের আলোকে অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা, বিনোদন সহ মানব জীবনের সকল সমাধান।



০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: প্রচলিত ৬ উছূলভিত্তিক তাবলীগ জামায়াতের লোকদের লিখিত কিতাবে এ কথা উল্লেখ আছে যে, মূর্খ হোক, আলিম হোক, ধনী হোক, দরিদ্র হোক, সকল পেশার সকল মুসলমানের জন্য তাবলীগ করা ফরজে আইন।
(হযরতজীর মালফুজাত-৪, পৃষ্ঠা-৭, অনুবাদক- মাওলানা ছাখাওয়াত উল্লাহ; তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব, পৃষ্ঠা-৫৬, অনুবাদক- ইসমাঈল হোসেন; তাবলীগে ইসলাম, পৃষ্ঠা-৩, লেখক- মাওলানা আব্দুস সাত্তার ত্রিশালী; পস্তী কা ওয়াহিদ এলাজ, লেখক- মাওলানা এহ্তেশামুল হাসান কান্দলবী, পৃষ্ঠা-২২)
----------------------------------------------------------------------------------
তাদের উপরোক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন জাগে, তাবলীগ করা কি- ফরজে আইন নাকি ফরজে কিফায়া? কেননা-
যে ইবাদত প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে পালন করা ফরজ তা ফরজে আইন। যেমন- নামাজ, রোজা, ইত্যাদি। আর যে ইবাদত সমষ্টিগতভাবে পালন করা ফরজ অর্থাৎ যে ফরজ কাজ দেশবাসী, শহরবাসী,এলাকাবাসী বা কোন সম্প্রদায় থেকে একজন আদায় করলেই সকলের তরফ থেকে ফরজের হক্ব আদায় হয়ে যায় তা ফরজে কিফায়া। যেমন- কুরআনে হাফিজ হওয়া বা আলিম হওয়া, জানাযার নামাজ ইত্যাদি।
উপরোক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আরো একটি প্রশ্ন জাগে, তাবলীগ করা যদি ফরজে আইন হয়, তবে কার জন্য ফরজে আইন? এবং যদি ফরজে কিফায়া হয়, তবে কার জন্য ফরজে কিফায়া? আর যদি উভয়টাই হয়, তবে সেটাইবা কাদের জন্য?
মূলতঃ তাবলীগ করা ফরজে আইন ও ফরজে কিফায়া উভয়টাই। নীচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
তাবলীগঃ তাবলীগ শব্দের অর্থ হলো প্রচার করা। তাবলীগ সম্পর্কে আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন,
“তোমরা (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত হওয়ার কারণে) শ্রেষ্ঠ উম্মত, তোমাদেরকে মানুষের মধ্য হতে বের করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে এবং আল্লাহ পাকের প্রতি ঈমান আনবে।” (সূরা আল ইমরান ১১০)
উপরোক্ত আয়াত শরীফের মাধ্যমে আল্লাহ পাক তাবলীগ করা তথা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের কথা বলেছেন। তবে সাথে সাথে আরো একটি শর্তও আরোপ করেছেন, সেটা হলো আল্লাহ পাক ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং দ্বীন সম্পর্কে যাবতীয় বিষয়ে সঠিক ও পরিশুদ্ধ ঈমান আনা অর্থাৎ তৎসম্পর্কে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা। অর্থাৎ তাবলীগ করতে হবে আক্বীদা শুদ্ধ রেখে।
সাধারণভাবে দ্বীন প্রচার করাকে তাবলীগ বলে এবং যিনি দ্বীন প্রচার করেন অর্থাৎ তাবলীগের কাজ করেন তাকে মুবাল্লিগ বা দ্বীন প্রচারক বলে।
তাবলীগ ও মুবাল্লিগের প্রকারঃ সাধারণতঃ ইসলাম বা দ্বীন দুইভাবে প্রচার করা হয়ে থাকে-
১) তাবলীগে আম বা সাধারণভাবে
২) তাবলীগে খাছ বা বিশেষভাবে
আবার তাবলীগের ধরণ অনুযায়ী দ্বীন প্রচারক বা মুবাল্লিগও দুইপ্রকার-
১) মুবাল্লিগে আম বা সাধারণ দ্বীন প্রচারক
২) মুবাল্লিগে খাছ বা বিশেষ দ্বীন প্রচারক
মুবাল্লিগে আম ও তার হিদায়েতের ক্ষেত্রঃ মুবাল্লিগে আম বা সাধারণ দ্বীন প্রচারকের দ্বীন প্রচার করতে বিশেষ কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। শুধু দ্বীনি সমঝ বা বুঝ থাকলেই চলবে। তিনি বা তারা খাছ বা বিশেষভাবে যেমন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, ভাই-বোন, ভাতিজা-ভাতিজী ও কর্মচারী তথা তার অধীনস্থ সকলকে দ্বীনি আমলের জন্য তথা দ্বীনদারী হাছিলের তাকীদ বা উৎসাহ প্রদান করবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদেরকে এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন (জাহান্নাম) থেকে বাঁচাও।” (সূরা তাহ্রীম ৬)
আর হাদীস শরীফে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
“সাবধান! তোমরা প্রত্যেকেই (নিজের অধীনস্থদের ব্যাপারে) রক্ষক এবং প্রত্যেকেই তার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, ফতহুল বারী, ওমাদাতুল ক্বারী, তাইসীরুল ক্বারী, এরশাদুস্ সারী, মিরকাত, লুমায়াত ইত্যাদি)
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন,
“তোমরা আমার থেকে একটি আয়াত (হাদীস) হলেও তা (মানুষের নিকট) পৌঁছে দাও।”(বুখারী, ফতহুল বারী, ওমাদাতুল ক্বারী, তাইসীরুল ক্বারী, এরশাদুস্ সারী)
অন্য হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, তখন হযরত সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা নিজেরা পুরোপুরিভাবে আমল করবো, ততক্ষণ পর্যন্ত কি আমরা সৎ কাজের আদেশ দিব না? অথবা যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সমস্ত খারাবী হতে ক্ষান্ত হবো, ততক্ষণ পর্যন্ত কি অসৎ কাজে নিষেধ করবো না? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- “না, বরং তোমরা সৎ কাজের আদেশ দান করবে, যদিও তোমরা নিজেরা পুরোপুরিভাবে আমল করতে না পার। তদ্রুপ মন্দ কাজে নিষেধ করবে, যদিও তোমরা নিজেরা পুরোপুরিভাবে বেঁচে থাকতে না পার।” (তিবরানী শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, “দ্বীন হচ্ছে নছীহত স্বরূপ।”
হযরত সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ জিজ্ঞাসা করলেন, কাদের জন্য? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আল্লাহ পাকের জন্য এবং আল্লাহ পাকের প্রিয় রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য এবং মুসলমানের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের জন্য এবং সাধারণ মুসলমাদের জন্য।” (মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, ফতহুল মুলহিম)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীস শরীফসমূহ মুবাল্লিগে আম ও মুবাল্লিগে খাছ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। অর্থাৎ এর হুকুম কারো জন্য নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। কাজেই যারা মুবাল্লিগে আম, তারা তাদের দায়িত্ব ও ক্ষেত্র অনুযায়ী উপরোক্ত হাদীস শরীফের আমল করবেন। আর যারা মুবাল্লিগে খাছ, তারাও তাদের দায়িত্ব ও যোগ্যতা এবং ক্ষেত্র অনুযায়ী উপরোক্ত হাদীস শরীফের উপর আমল করবেন।
অতএব প্রত্যেক মুবাল্লিগে আম-এর জন্য তার ক্ষেত্র হচ্ছে- তার অধীনস্থগণ। যাদেরকে তার তরফ থেকে দ্বীনের জন্য তা’লীম দেয়া ও তাকীদ করা দায়িত্ব ও কর্তব্য। অর্থাৎ এটা হচ্ছে তাবলীগে খাছ, যা করা- মুবাল্লিগে আম-এর জন্য ফরজে আইনের অন্তর্ভূক্ত। (তাফসীরে মায্হারী, রুহুল বয়ান, ফতহুল ক্বাদীর, খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, ইবনে কাছীর, কবীর)
মুবাল্লিগে খাছ ও তার হিদায়েতের ক্ষেত্রঃ মুবাল্লিগে খাছ বা বিশেষ দ্বীন প্রচারক, মুবাল্লিগে আম-এর মত নয় অর্থাৎ তিনি কেবল তার অধীনস্থদেরই নয় বরং তিনি আমভাবে সকল উম্মতকেই হিদায়েত করার উপযুক্ত। পক্ষান্তরে মুবাল্লিগে আম কেবল তার অধীনস্থদেরই বলার যোগ্যতা রাখে।
আর যারা মুবাল্লিগে খাছ বা বিশেষ দ্বীন প্রচারক, তাঁদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,
“তোমাদের মধ্যে এমন একটি সম্প্রদায় হওয়া জরুরী, যারা (মানুষকে) কল্যাণ-এর (কুরআন-সুন্নাহ তথা ইসলামের) দিকে ডাকবে এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে, আর তারাই মূলতঃ কামিয়াব।” (সূরা আল ইমরান ১০৪)
অর্থাৎ তাঁকে অবশ্যই দ্বীনি বিষয়ে বিশেষ যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে এবং ইল্মে ফিক্বাহ ও ইল্মে তাসাউফে বিশেষ দক্ষতা তথা ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নত পরিমাণ ইল্ম, আমল এবং ইখ্লাছ হাছিল করতে হবে।
এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,
“কেন তাদের প্রত্যেক ক্বওম বা ফিরক্বা থেকে একটি দল বের হয়না এজন্য যে, তারা দ্বীনি ইল্মে দক্ষতা অর্জন করবে এবং তাদের ক্বওমকে ভয় প্রদর্শন করবে, যখন তারা তাদের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে। আশা করা যায়, তারা বাঁচতে পারবে।” (সূরা তওবা ১২২)
আর আল্লাহ পাকের রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“তোমরা দ্বীনি ইল্ম শিক্ষা কর এবং মানুষকে তা শিক্ষা দাও।” (দারেমী, দারে কুত্নী, মিশকাত, মিরকাত, শরহুত ত্বীবী, তালীকুছছাবী, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত ইত্যাদি)
মূলতঃ যাঁরা মুবাল্লিগে খাছ, তাঁদেরকে অবশ্যই উলামায়ে হক্কানী-রব্বানী হতে হবে। আর হক্কানী-রব্বানী আলিমগণের প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন,
“নিশ্চয়ই বান্দাদের মধ্যে আলিমগণই আল্লাহ পাককে ভয় করেন।” (সূরা ফাতির ২৮)
এ আয়াত শরীফের তাফসীর হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “যার মধ্যে যতবেশী আল্লাহ ভীতি রয়েছে, তিনি তত বড় আলিম।”
আর হাদীস শরীফে রয়েছে,
“(জিজ্ঞাসা করা হলো) আলিম কে? উত্তরে বললেন, যাঁরা ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন। পুণরায় জিজ্ঞাসা করলেন, কোন্ জিনিস আলিমের অন্তর থেকে ইল্মকে বের করে দেয়? তিনি বললেন, লোভ (দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইতায়দি হাছিলের আকাঙ্কা)।” (দারেমী, মিশকাত, মিরকাত, মুজাহিরে হক্ব, শরহুত ত্বীবী, তালীক, আশয়াতুল লুময়াত ইত্যাদি)
অর্থাৎ যিনি ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন, তিনিই হক্কানী-রব্বানী আলিম। কাজেই যিনি ইল্ম, আমল ও ইখলাছ হাছিল করেছেন, তিনিই হক্কানী আলিম, আর তিনিই নবী আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের ওয়ারিছ। যাঁদের শানে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
“আলিমগণ হলেন- আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের ওয়ারিছ বা উত্তরাধিকারী।”(আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত, মিরকাত, শরহুত্ ত্বীবী, বজলুল মাজহুদ, উরফুশ্ শাজী, তালীক)
অর্থাৎ আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের দাওয়াত ও তাবলীগ, তা’লীম ও তালক্বীন এবং হিদায়েতের ক্ষেত্র যেমন আম বা ব্যাপকভাবে উম্মদের প্রতি প্রযোজ্য, তদ্রুপ যাঁরা মুবাল্লিগে খাছ, তাঁরা আম্বিয়া আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালামগণের ওয়ারিছ হওয়ার কারণে তাঁদেরও দাওয়াত ও তাবলীগ, তা’লীম ও তালক্বীন এবং হিদায়েতের ক্ষেত্র আম বা ব্যাপকভাবে উম্মদের প্রতি প্রযোজ্য। আর এ আম তা’লীম ফরজে কিফায়ার অন্তর্ভূক্ত। যা অতীতে ও বর্তমানে উলামায়ে হক্কানী-রব্বানীগণ তাছাউফ শিক্ষা দিয়ে, মাদ্রাসায় পড়িয়ে, মসজিদে ইমামতি করে, কিতাবাদী লিখে, ওয়াজ-নছীহত করে ইত্যাদি নানানভাবে দাওয়াত ও তা’লীম-তালক্বীন দিয়ে হিদায়েতের কাজ করে মুবাল্লিগে খাছ-এর দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে, তাবলীগে আম-এর (ফরজে কিফায়ার) ও তাবলীগের খাছ-এর (ফরজে আইনের) খেদমতের আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
মুবাল্লিগে আম-এর জন্য তাবলীগে আম করার হুকুম এবং মুবাল্লিগে খাছ-এর যোগ্যতা ও তাবলীগে আম-এর শর্তঃ
স্মরণীয় যে, যারা মুবাল্লিগে আম অর্থাৎ যাদের জন্য তাবলীগে খাছ করা ফরজে আইনে, তাদের জন্য কোনক্রমেই এবং কষ্মিনকালেও তাবলীগে আম বা ব্যাপকভাবে দ্বীন প্রচার করা (যা মুবাল্লিগে খাছ তথা উলামায়ে হক্কানী-রব্বানীগণের জন্য নির্দিষ্ট তা) জায়েজ নেই।
এ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত রয়েছে যে, একদিন এক লোক তাঁর সাক্ষাতে আসলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি কর?” সে জাওয়াব দিল, দ্বীন প্রচার করি। তখন তিনি তাকে বললেন, “তুমি কি ঐ সকল আয়াত শরীফের আমল করেছ?” যা কুরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে-
(১) সূরা ছফ-এর ২য় আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক বলেন,
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যা করনা, তা কেন বল?”
“তুমি কি এ আয়াত শরীফের আমল করেছ?” সে জাওয়াব দিল, না।
(২) তিনি আবার বললেন যে, আল্লাহ পাক সূরা বাকারার ৪৪তম আয়াত শরীফে বলেছেন,
“তোমরা কি মানুষকে সৎ কাজের আদেশ কর, আর নিজেদের ব্যাপারে ভূলে যাও? অথচ তোমরা কিতাব তিলাওয়াত করে থাক।”
“তুমি কি এ আয়াত শরীফের আমল করেছ?” সে জাওয়াব দিল, না।
(৩) পুণরায় তিনি বললেন, তুমি কি ঐ আয়াত শরীফের আমল করেছ? যা হযরত শুয়াইব আলাইহিস সালাম তাঁর ক্বওমকে বলেছিলেন,
“আমি এটা চাইনা যে, তোমাদেরকে যে কাজ থেকে নিষেধ করি, আমি তার খিলাফ করি। অর্থাৎ আমি যা বলি, তা করি আর যা বলিনা, তা করিনা।” (সূরা হুদ ৮৮)
“তুমি কি এ আয়াত শরীফের আমল করেছ?” সে জাওয়াব দিল, না।
তখন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে বললেন, “তুমি প্রথমে এ আয়াত শরীফসমুহের আমল কর, অতঃপর তুমি দ্বীন প্রচারের কাজে নিজেকে নিয়োজিত কর।”
অর্থাৎ উপরোক্ত আয়াত শরীফের আমল ব্যাতিরেকে তাবলীগে আম করা জায়িজ নেই।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এই প্রমাণিত হলো যে, তাবলীগে খাছ, মুবাল্লিগে আম ও খাছ উভয়ের জন্যই ফরজে আইন। মুবাল্লিগে আম বা সাধারণ লোকদের জন্য তাবলীগে আম করা কখনোই শুদ্ধ হবে না বরং তাদের জন্য তা করা সম্পূর্ণ নাজায়িজ ও হারাম হবে। আর তাবলীগে আম শুধুমাত্র মুবাল্লিগে খাছ তথা হক্কানী আলিমগণের জন্যই প্রযোজ্য, যা তাঁদের জন্য ফরজে কিফায়ার অন্তর্ভূক্ত।
কেননা এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
“সকল মু’মিনদের জন্য একসাথে কোন কাজে বের হওয়া উচিৎ নয়।” (সূরা তওবা ১২২)
ইমাম-মুজতাহিদ তথা আউলিয়া কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ এই আয়াত শরীফ থেকে উছূল বের করেছেন যে, মু’মিনদের জন্য সমষ্টিগতভাবে কোন কাজ করা ফরজে আইন নয় বরং তা ফরজে কিফায়ার অন্তর্ভূক্ত। (তাফসীরে মায্হারী, রুহুল মা’য়ানী, রুহুল বয়ান, ফতহুল ক্বাদীর, আশশাফ, হাশিয়ারে সাবী, যাদুল মাসীর, খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, কবীর, ইবনে কাছীর ইত্যাদি)
অর্থাৎ মুসলামানদের জন্য যেসব কাজ সমষ্টিগতভাবে করতে হয়, সেটা ফরজে কিফায়ার অন্তর্ভূক্ত। তা কখনো ফরজে আইন নয়, যা উপরোক্ত আয়াত শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে।
অতএব, যদি কেউ বলে- মূর্খ হোক, আলিম হোক, ধনী হোক, দরিদ্র হোক, সকল পেশার সকল মুসলমানের জন্য তাবলীগ করা ফরজে আইন। তবে তা সম্পূর্ণই কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমা-ক্বিয়াসের খিলাফ বা পরিপন্থী হবে। আর ফরজে কিফায়াকে ফরজে আইন বলাও হারাম ও কুফরীর নামান্তর, যা থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্যই ওয়াজিব।

২৮| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

তারেক বলেছেন: ১৫ নং কমেন্টের উত্তরে লেখক বলেছে:

আহলে সুন্নত অয়াল জামাতে যারা বিস্বাসি

বাংলাদেশে যারা আহলে সুন্নত অয়াল জামাত করে তারা তাবলীগকে দেখতে পারে না যেমন জামায়েতে ইসলাম বাংলাদেশ দেখতে পারে না। লেখক যেহেতু আহলে সুন্নত অয়াল জামাতের লোক সেহেতু সে তাবলীগ দেখতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ঠিক বলেছেন ।

যেমন দেখতে পারিনা কাদিয়ানি , শিয়া , ওহাবি , জামাতি, লা-মাঝহাবি , সালাফি সহ যত বাতিল দল আছে তাদের ।

২৯| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

মুহাই বলেছেন:

৩০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬

তারেক বলেছেন: ২৮নং কমেন্টের জন্য:

তাইলে আর কি লাভ হইল। আমি ভাল এটা সবাই বলে।আপনার কথার আর কোন ভ্যালু রইল না।নিরেপেক্ষতা নাই।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৫

সোনালী প্রান্তর বলেছেন: ইসলাম এ নিরপেক্ষতার কোন স্থান নাই ।

৩১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৯

নাঈম আহমেদ বলেছেন: ইলিয়াস রহঃ এর জারি করা পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করা কি শরীয়ত সম্মত? না কি বিদআত?
بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআন হাদীসের দৃষ্টিতে তাবলীগ

তাবলীগ মুসলিম মিল্লাতের অতি পরিচিত একটি শব্দ। যার অর্থ প্রচার ও প্রসার। কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল বিশ্ব মানবের নিকট দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছাবার যে গুরু দায়িত্ব মুহাম্মদ সাঃ কর্তৃক সকল উম্মতে মুহাম্মদীর উপর অর্পিত হয়েছে, পরিভাষায় সেটাকেই তাবলীগ বলে।
মূলত রাসূল সাঃ বিশ্ব মানুষের কাছে দ্বীনের এ দাওয়াত পৌঁছাবার ও প্রচার-প্রসারের মহান দায়িত্ব নিয়েই পৃথিবীতে আগমণ করেছিলেন। যেমন আগমণ করেছিলেন রাসূল সাঃ এর পূর্বে অগণিত নবী ও রাসূল। রাসূল সাঃ কে তাবলীগ করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
{ يَاأَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ [المائدة:67]
হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তা আপনি প্রচার করুন। যদি আপনি তা না করেন তাহলে আপনি আল্লাহর বার্তা প্রচার করলেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৭)
রাসূল সাঃ হলেন সর্বশেষ নবী। তার পর পৃথিবীতে আর কোন নবী আসবে না। তাই বিদায় হজ্বের সময় রাসূল সাঃ বজ্র কণ্ঠের ঘোষণা فليبلغ الشاهد الغائب তথা “পস্থিত লোকেরা যেন দ্বীনের এ দাওয়াত অনুপস্থিত লোকদের কাছে পৌছে দেয়” এর মাধ্যমে সমস্ত উম্মতে মুহাম্মদীই তাবলীগ তথা দ্বীন প্রচারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল হয়ে যায়। যে ব্যক্তি দ্বীন সম্পর্কে যা জানে তা’ই অন্যের কাছে পৌছে দেয়ার দায়িত্বশীল করে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও [মানুষের কাছে] পৌঁছে দাও। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৫৫৭০, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২৭৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬২৫৬, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৬৬৯}
সাহাবায়ে কিরাম রাসূল সাঃ এর উক্ত নির্দেশের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন যথাযথভাবে। পরবর্তীতে সর্বযুগেই উলামায়ে উম্মত “ওলামায়ে কিরামই হলেন নবীদের ওয়ারিস” হাদীসের সফল বাস্তবায়নের জন্য জীবন বাজী রেখে সংগ্রাম করেছেন।
উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস ছাড়াও অসংখ্য আয়াত ও হাদীসে তাবলীগ তথা দ্বীন প্রচার ও প্রসারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:
ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ (النحل: ١٢٥(
আপনি আপনার প্রতিপালকের দিকে আহবান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা এবং সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে উৎকৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন। (সূরা নাহল: ১২৫)
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন
وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ (آل عمران: ١٠٤(
আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম। (সূরা আলে ইমরান: ১০৪)
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ )آل عمران: ١١٠(
তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়কার্যে আদেশ এবং অন্যায় কার্যে নিষেধ কর এবং আল্লাহতে বিশ্বাস কর। (সূরা আলে ইমরান: ১১০)
আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা আরও বলেন:
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُوْلَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ (التوبة: ٧١ (
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা তাওবা: ৭১)
সূরা তাওবার ১১২ আয়াতে, সূরা হজ্জের ৪১ আয়াতে, সূরা লুকমানের ১৭ আয়াতে ও অন্যান্য স্থানেও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহর প্রকৃত মুমিন বান্দাদের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ।
এ দায়িত্বপালনকারী মুমিনকেই সর্বোত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে।
মহান আল্লাহ বলেন:
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلاً مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ )فصلت: ٣٣(
ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলিমদের একজন। ( সূরা ফুসসিলাত: ৩৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
الدِّيْنُ النَّصِيْحَةُ، قُلْنَا لِمَنْ قَالَ للهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلِأئمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتهِمْ. (رواه مسلم)
দীন হলো নসিহত। সাহাবিগণ বললেন, কার জন্য ? বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য, মুসলিমগণের নেতৃবর্গের জন্য এবং সাধারণ মুসলিমদের জন্য। (মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নসিহতের জন্য সাহাবিগণের বাইআত তথা প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন হাদিসে জারির ইবনু আব্দুল্লাহ রা. মুগিরা ইবনু শুবা রা. প্রমুখ সাহাবি বলেন:
بَايَعْتُ رَسُوْل اللهِ صلى الله عليه وسلَّمَ عَلى إقَامَةِ الصَّلاةِ وَإيْتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مسْلِمٍ (رواه البخاري)
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাইয়াত বা প্রতিজ্ঞা করেছি, সালাত কায়েম, জাকাত প্রদান ও প্রত্যেক মুসলিমের নসিহত (কল্যাণ কামনা) করার উপর। (বোখারি)।
এ অর্থে তিনি সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধের বাইয়াত গ্রহণ করতেন। উবাদাহ ইবনু সামিত ও অন্যান্য সাহাবি রা. বলেন:
إنَّا بَايَعْنَاهُ عَلى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ ..وَعَلى الأمْرِ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهيِ عَنِ المُنْكَرِ وَ عَلى أنْ نَقُولَ في اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالى وَلا نَخَافُ لَومَةَ لائِمٍ فيهِ (أحمد صحيح)
আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে বাইয়াত করি আনুগত্যের… এবং সৎকর্মে আদেশ ও অসৎকর্মে নিষেধের এবং এ কথার উপর যে, আমরা মহিমাময় আল্লাহর জন্য কথা বলব এবং সে বিষয়ে কোন নিন্দুকের নিন্দা বা গালি গালাজের তোয়াক্কা করব না। (আহমাদ, বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য সনদে)।

এ সমস্ত আয়াত ও হাদীসের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েই সকল যুগে ওলামায়ে কিরাম আপন দায়িত্ব পালনে সজাগ সতর্ক ছিলেন। অবশ্য সকল যুগে দাওয়াত ও তাবলীগের পদ্ধতি বা ধারা একই ছিল এমনটি নয়। যুগ চাহিদার ভিত্তিতে ওলামায়ে কিরাম কুরআন ও হাদীস বর্ণিত মূলনীতির আলোকে সমাজ ও জাতির জন্য ফলপ্রসু ও কল্যাণকর নতুন পন্থা ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করে মানব জাতিকে রাহনুমায়ী করেছেন হিদায়েতের পথে। কখনো মক্তব-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে। কখনো ওয়াজ ও নসীহতের মাধ্যমে। কখনো লিখনী ও বক্তৃতার মাধ্যমে। কখনো সহীহ হাদীস একত্র করা ও প্রচারের মাধ্যমে। কখনো খানকাহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। দাওয়াত ও তাবলীগের এ সকল পন্থাই কুরআন হাদীস সমর্থিত। সম্প্রতিকালে দারুল উলুম দেওবন্দ ভারতের সূর্য সন্তান হযরত মাওলানা ইলিয়াস রহঃ এর কর্তৃক উদ্ভাবিত “দাওয়াত ও তাবলীগ” নামক দ্বীন প্রচারের এ পদ্ধতিটি সে ধারারই একটি কাজ। ইসলাম প্রচার ও প্রসারে এটি একটি নিরব বিপ্লব ও বটে।

তাবলীগ বিরোধী দু’টি বড় অভিযোগের জবাব

হক বাতিলের সংঘাত মুখর এ পৃথিবীতে বাতিলের সাথে অহর্নিষ সংগ্রাম করেই ইসলামকে সম্মুখে অগ্রসর হতে হয়েছে সর্বকালে। পরিণামে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হককেই বিজিত করেছেন যুগে যুগে। আর বাতিলকে করেছেন নিশ্চিহ্ন পরাভূত করে। তাবলীগ জামাআতের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
বর্তমান পৃথিবীতে এমন কোন বাতিল ফিরক্বা নেই, যারা আল্লাহর পধে আহবানকারী তাবলীগ জামাআতের উপর আক্রমণাত্মক হামলা করেনি। বিশেষ করে লা-মাযহাবী তথা কথিত আহলে হাদীস সম্প্রদায়। তারাই তাবলীগ জামাআতের উপর সবচেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক হামলা করছে এবং তাবলীগ সম্পর্কে সবচে’ বেশি মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে চলছে। শুধু বিরোধিতা করেই ক্ষান্ত হয়নি এ ইংরেজ সৃষ্ট দলটি। সাধারণ মুসলমানদের দ্বীন প্রচারী জামাআত থেকে দূরে রাখতে বিভ্ন্নি প্রকার মিথ্যা ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে ঘৃণ্য পদ্ধতিতে। আল্লাহ তায়ালা সাধারণ মুসলমানদের এ বাতিল দলের প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সহীহ বুঝ দান করুন। ওদের অভিযোগ করা দু’টি অভিযোগের জবাব নিচে বিধৃত হল-

তাবলীগ জামাআত ইসলাম ধর্মে একটি নতুন বিদআত?

তাবলীগ জামাআত কোন নতুন দল বা সংগঠনের নাম নয়, বরং নবী করীম সাঃ এর তিরোধানের পূর্ব থেকেই বিদায় হজ্বের পর থেকে ব্যাপক হারে সাহাবায়ে কিরাম রাঃ এবং রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর পর থেকে নিয়ে প্রত্যেক যুগেই কমবেশি সম্মিলিত ও বিচ্ছ্ন্নিভাবে দাওয়াতের এ দায়িত্ব পালিত হয়ে আসছিল।
হযরত ইলিয়াস রহঃ ব্যাপক আকারে ও সংগঠিতরূপে সেটির পুনঃজাগরণের চেষ্টা করেছেন মাত্র। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই যেমন কর্মধারা ও সূচি থাকে, তিনিও তেমনি এ জামাতের জন্য কিছু কর্মধারা তৈরী করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিকভাবে অধিক উপকারী ও জরুরী বিষয় চিন্তা করে। পূর্ণ শরীয়তকে সামনে রেখে এর মাঝে কোন বিষয়গুলো প্রথমে আমলে আনতে পারলে পূর্ণ শরীয়তের উপর পাবন্দ হওয়া সহজ হয়ে যাবে তা চিন্তা করে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন। যা কোনভাবেই শরীয়তের গন্ডির বাহির থেকে নয়। সেই সাথে শরয়ী কোন হুকুমকে অস্বিকার করে নয়।
যেমন বর্তমান মাদরাসা শিক্ষা শরীয়তের মাঝে নতুন কোন সংযোজন নয়, বরং সাহাবায়ে কিরামের মাঝে আসহাবে সুফফার যে জামাআত সার্বক্ষণিক দ্বীন চর্চায় নিমগ্ন থাকতেন সেটাই ছিল সর্ব প্রথম মাদরাসা। যদিও বর্তমান মাদরাসা পদ্ধতি আর আসহাবে সুফফার মাদরাসার মাঝে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। মৌলিকত্বে কোন পার্থক্য নেই। সে সময় কোন সিলেবাস ছিল না। ছিল না কোন ক্লাসিক্যাল অবকাঠামো। ছিল না সার্টিফিকেট দেওয়ার পদ্ধতি। ছিল না বিধিবদ্ধ শিক্ষক ষ্টাফের কোন মূলনীতি। কিন্তু পরবর্তীতে আম ফায়দার জন্য এবং দ্বীন চর্চায় অধিক উপকার অর্জনের নিমিত্তে একটি একাডেমিক পদ্ধতি আবিস্কার করা হয়েছে। যে আবিস্কার কোন বিদআত নয় মর্মে সকল ওলামায়ে কিরাম একমত। তেমনি তাবলীগ জামাআতের বর্তমান সাংগঠনিক ভিত্তি হিসেবে কিছু মূলনীতি নির্ধারণও কোন নতুন বিষয় নয়, বা বিদআত নয়। কারণ মাদরাসা শিক্ষার বর্তমান পদ্ধতিকে যেমন আমরা সওয়াবের কাজ মনে করি না, কিন্তু ইলমী দ্বীন চর্চাকে জানি সওয়াবের কাজ। তেমনি তাবলীগ জামাআতের পদ্ধতিটা মূলত সওয়াবের কারণ নয়, বরং এর দ্বারা যে কাজটি আঞ্জাম দেয়া হয় তথা তাবলীগ সেটি হল সওয়াবের কাজ। এ দু’টিতে কোন পার্থক্য নেই। সুতরাং তাবলীগ জামাআতকে দ্বীন এর মাঝে নতুন সংযোজন বলে বিদআত সাব্যস্ত করাটা বিদআতের সংজ্ঞা ও দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত পর্যায়ের অজ্ঞতার পরিচায়ক। কারণ বিদআত বলা হয়
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমাদের দ্বীনের মাঝে যে ব্যক্তি নতুন বিষয় আবিস্কার করে যা তাতে নেই তাহলে তা পরিত্যাজ্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৬০৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-২৫৫০, সহীহ মুসলিম-৪৫৮৯}
এই হাদিসে লক্ষ্য করুন কি কি শর্তে নব আবিস্কৃত বস্তুকে পরিত্যাজ্য বলেছেন নবীজী সাঃ।
১-সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। যার কোন সামান্যতম প্রমাণ নবীযুগে বা সাহাবা যুগে নাই এমন বিষয় হতে হবে।
২-দ্বীনী বিষয় হতে হবে। সুতরাং দ্বীনী বিষয় ছাড়া যত নতুন বিষয়ই আবিস্কারই হোকনা কেন তা বিদআত নয়। যেমন বৈজ্ঞানিক আবিস্কার। নতুন নতুন আসবাব ইত্যাদী। এসব বিদআত নয়। কারণ এসব দ্বীনী বিষয় নয়। বরং বৈষয়িক বিষয়।
৩-দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার হতে হবে। দ্বীনের জন্য হলে সমস্যা নাই। কারণ দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার মানে হল এটা সওয়াবের কাজ। সুন্নাত, ওয়াজিব ইত্যাদী। আর দ্বীনের জন্য হলে সেটা মূলত সওয়াবের কাজ নয়, বরং সওয়াবের কাজের সহায়ক। যেমন মাদরাসা শিক্ষা একাডেমিক পদ্ধতি নববী যুগে ছিলনা। পরবর্তীতে আবিস্কার করা হয়েছে। এই একাডেমিক পদ্ধতিটি দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার নয়, বরং দ্বীনী কাজের জন্য সহায়ক হিসেবে আবিস্কার হয়েছে। অর্থাৎ দ্বীন শিখার সহায়ক। আর দ্বীন শিখাটা সওয়াবের কাজ। কিন্তু সিষ্টেমটা মূলত সওয়াবের কাজ নয় বরং সহায়ক। তেমনি তাবলীগের বর্তমান পদ্ধতিটি ইলিয়াস রহঃ আবিস্কার করেছেন দ্বীন প্রচারের সহায়ক হিসেবে। তথা দ্বীনের জন্য আবিস্কার। দ্বীন মাঝে আবিস্কার নয়। তাই এটি বিদআত হওয়ার কোন সুযোগই নেই।
যারা বলেন এ পদ্ধতি বিদআত, তারা মূলত দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত অজ্ঞতার পরিচয় দেন এসব কথা বলে।

তাবলীগ জামাআতের কাজ যেহেতু রাসূল সাঃ ও পরবর্তী সাহাবায়ে কিরামের প্রচার করা দ্বীন প্রচারেরই একটি সুসংহত রূপ মাত্র। তাই তাবলীগ জামাআতের কাজের সাথে সেসব ফযীলত শামিল হবে যা কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত দ্বীন প্রচারের ফযীলত। যেমন দ্বীন শিক্ষার ফযীলত প্রাপ্ত হবে বর্তমান একাডেমিক পদ্ধতিতে পড়াশোনা করা মাদরাসা ছাত্ররা।

তাবলীগ জামাআতের ছয় উসুলে পূর্ণ ইসলাম নেই?

এ অভিযোগটিও একটি অজ্ঞতার পরিচয়বাহী ও হিংসাত্মক অভিযোগ। যার কোন ভিত্তি নেই। তাবলীগের ছয় উসুলের মাঝে পূর্ণ ইসলাম আছে একথা কোন তাবলীগী ভাই বলেন নাকি? তারাতো সর্বদা একথার দাওয়াত দেন যে, ছয় উসূলের উপর চললে পূর্ণ দ্বীনের উপর চলা সহজ হয়। একথা কোন তাবলীগী ভাই বলেন না যে ছয় উসূলই পূর্ণ দ্বীন। সাথে সাথে তাবলীগ তথা দ্বীনের দাওয়াত শুধু একথার উপর দেয়া হয় না যে, শুধুমাত্র ছয় উসূল মানতে হবে, বরং দাওয়াত দেয়া হয় পূর্ণ শরীয়তের পাবন্দ হতে হবে। তাই নয় কি? সুতরাং এ দাবি করা যে, যেহেতু ছয় উসূলে পূর্ণ দ্বীন নেই, তাই তাবলীগী ভাইয়েরা অপূর্ণাঙ্গ দ্বীনের দিকে আহবান করে। কারণ ছয় উসুলের দাওয়াতের মাধ্যমে পূর্ণ দ্বীনের দিকেই আহবান করা হয়।
যেমনটি আল্লাহ তায়ালা ছয়টি বিষয়ের অনুসরণ করলে বান্দা সফলকাম হয়ে যাবে মর্মে সূরায়ে মু’মিনূন এ ঘোষণা করেন-
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ (1) الَّذِينَ هُمْ فِي صَلاتِهِمْ خَاشِعُونَ (2) وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ (3) وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ (4) وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ (5) الى اخر- وَالَّذِينَ هُمْ لأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ (8) وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ (9) أُوْلَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ (10) الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (11)
১-নিশ্চয় সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ। ২-যারা তাদের নামাযে আন্তরিকভাবে বিনীত। ৩-যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে। ৪-যারা যাকাত সম্পাদনকারী। ৫-যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। ৮-এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। ৯-এবং যারা নিজেদের নামাযের পরিপূর্ণ রক্ষাবেক্ষণ করে। ১০ এরাই হল সেই ওয়ারিশ। ১১-যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের উত্তারাধিকার লাভ করবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে। {সূরা মুমিনুন-১-১১}

এ আয়াত সমূহে লক্ষ করুন-ছয়টি কাজ করলে আল্লাহ তায়ালা সফলকাম হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সেই সাথে জান্নাতী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। অথচ এ ছয় কাজে রোযার কথা নেই। নেই হজ্বের কথাও। তাহলে কি আল্লাহর বলা সফলকাম হওয়ার জন্য রোযা রাখার প্রয়োজন নেই? নেই হজ্ব ফরজ হলে হজ্ব আদায়েরও। এ দু’টি গুরত্বপূর্ণ ফরজ ছাড়াই কি ব্যক্তি জান্নাতী হয়ে যেতে পারে? কিভাবে?
এর জবাব যেমন-এ ছয়টির মাঝেই পূর্ণ দ্বীন শামিল। তেমনি তাবলীগের ছয় উসূলের দাওয়াতের দ্বারাও পূর্ণ দ্বীনের উপর আমলের দিকেই আহবান করা হয়। যা কিছুতেই দ্বীনকে সীমাবদ্ধ করা নয়, যেমন আল্লাহ তায়ালা সীমাবদ্ধ করেন নি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা
ইমেইল[email protected]
[email protected]

৩২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:২৬

নাঈম আহমেদ বলেছেন: তাবলীগী নেসাব ফাযায়েলে আমালের উপর উত্থাপিত কয়েকটি অহেতুক প্রশ্নের জবাব

তাব্লিগের বয়ানে বলা হয় কোনো মুসলমান ভাইয়ের দাওয়াতের জন্য তার ঘরের
সামনে কিছু সময় অবস্থান করা শব-এ-কদর এর রাতে হাজর-এ-আসওয়াদ পাথরকে সামনে নিয়ে এবাদত করার চেয়েও বেশি দামি এ কথার কোন ভিত্তি আছে কি?

আল্লাহর রাস্তায় একটা আমল করলে ৪৯ কোটি গুন আমলের সওয়াব হয়’ এর দলিল কি?

আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল/এক বিকাল বের হওয়া দুনিয়া এবং দুনিয়ার মাঝে যা আছে এর চেয়েও উত্তম নেকি’ এটা কোন হাদীস?

আল্লাহর রাস্তায় ধুলাবালি গায়ে লাগলে জাহান্নামের আগুন ত দুরের কথা জাহান্নামের ধুয়াও স্পর্শ করবে না’।
এটার দলিল কি?

রাহবার,মুতাকাল্লিম আর মামুর ভাইদের নিয়ে এক জামাত গাস্তে বের হয় আর এক জামাত মাসজিদ এ অবস্থান করে,যেখানে এক ভাই বয়ান করে,একজন জিকির এ থাকে আর একজন এস্তেগবাল এ থাকে।
এইটা কি নবীজি অথবা তাঁর সাহাবীদের মধ্যে প্রচলন ছিলো নাকি নতুন প্রচলন????

৩ দিন,৪০দিন আর ১২০ দিনের হাদিসের দলিল কি???দাওয়াত দেওয়ার জন্য/ইমান শিক্ষা করার জন্য কি দিন নিদিষ্ট করা লাগে ???সাহাবিরা কি এইভাবে নির্দিষ্ট কিছু দিনকে ঠিক করে আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছিলেন নাকি যখনি সময় হয়েছিলো তখনি আল্লাহর রাস্তায় হাজির হয়েছিলেন???

তাবলীগী ভাইয়েরা কুরআন হাদীসের আয়াত না বলে বয়ানে শুধু মুরুব্বীরা বলেন! মুরুব্বীরা বলেন! একথা বলে কেন?

জবাব

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রারম্ভিকা

আজকাল আমাদের সমাজের অধিকাংশ মানুষ আলেম আর গায়রে আলেমের মাঝের পার্থক্য জানে না। হাস্যকর ব্যাপার হল-দু’ একটি বাংলা বা ইংরেজী ভাষায় হাদীসের কিতাব ও কুরআনের অনুবাদ পড়েই এখন অনেকে আল্লামা সেজে যাচ্ছেন। কিছু কিতাবের অনুবাদের রেফারেন্স মুখস্ত করে একের পর রেফারেন্স দিতে পারলেই আমাদের সমাজের সাধারণ লোকেরা বড় আল্লামা বানিয়ে দিচ্ছে লোকটিকে। লোকটির মাঝে আরবী বুঝার ক্ষমতা আছে কি না? অনুবাদ ছাড়াই মূল কিতাব থেকে মাসআলা বের করার যোগ্যতা আছে কি না? কুরআনের আয়াতের শানে নুজুল, শব্দের অলংকার, আরবী ব্যাকরণ, নাসেখ-মানসুখ, শানে ওরুদ, তাফসীর ইত্যাদী সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখে কি না? ইত্যাদি যাচাই করা ছাড়াই অনুবাদের রেফারেন্সদাতাদের যে সমাজ আল্লামার মর্যাদা দিতে শিখে। সে সমাজের লোকেরা আলেমদের কাছে কেন যাবে?
আলেমদের কাছে না যাওয়ার কারণে। যারা কুরআন সুন্নাহকে মূল কিতাব থেকে, তার নাসেখ-মানসূখ, শানে ওরুদ ও শানে নুজুল, তাফসীর ইত্যাদিসহ মাসায়েল বর্ণনা করেন, ব্যাখ্যা দেন, তাদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ না করা আমাদের সমাজে বিভ্রান্তির মূল কারণ।
নিজে নিজেই কিছু অনুবাদ পড়ে আল্লামা সাজার প্রবণতা ইদানিংকালে বেড়ে গেছে। কোন কিতাবের অনুবাদ পড়ে বুঝতে না পারলে, বা কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হলে নিজে নিজেই এর সামাধান খুঁজে। না পেলে প্রচার করতে শুরু করে কিতাবটি ভুল। শিরকে পূর্ণ। আদৌ কি বিষয়টি এমন কিনা? কোন বিজ্ঞ আলেম থেকে তা জেনে নেবার প্রয়োজনীয়তা বোধ না করায় গোমরাহ হচ্ছে এ সমাজের অনেক নতুন প্রজন্ম।
অষুখ হলে বিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে নিজে নিজে চিকিৎসা করাকে কেউ নিরাপদ না মনে করলেও,
বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য ইঞ্জিনিয়ারের কাছে না গিয়ে নিজে নিজেই নির্মাণ শুরু করাকে বুদ্ধিমানের কাজ মনে করলেও, আজকের সমাজের মানুষেরা কুরআন সুন্নাহের মত স্পর্শকাতর বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের শরনাপন্ন হওয়া ছাড়া নিজে নিজেই সব শিখে নেবার মত দুঃসাহস দেখাচ্ছে। আর গোমরাহীর অতলে যাচ্ছে তলিয়ে।
কোন কিতাবের ব্যাপারে কোন প্রশ্ন জাগলে এ বিষয়ে প্রাজ্ঞদের কাছে এর জবাব জানতে চাইতে হবে। নিজে নিজে সমাধান খুঁজে না পেলে বদনাম ছড়ানোটা আহমকীর নিদর্শন। নিজের অজ্ঞতাকে দলিল নেইয়ের উপর প্রমাণ পেশ করাটা বোকামী ছাড়া আর কী হতে পারে?
ফাযায়েলে আমাল ও আকাবীরে দেওবন্দ এবং হক্কানী ওলামাদের উপর উত্থাপিত অভিযোগের অবস্থা তা’ই। কিছু অতি পন্ডিত লোক কোন বিজ্ঞ ব্যক্তির তত্বাবধান ছাড়া নিজে নিজে কিতাবগুলো পড়ে। তারপর প্রশ্ন জাগে। নিজে নিজেই এর সমাধান খুঁজে। উত্তর না পেয়ে ছড়াতে শুরু করে এ কিতাব ভুল। শিরকে পূর্ণ।
ডাক্তারী বই নিজে নিজে পড়ে কোথাও প্রশ্ন জাগলে নিজে নিজে খুঁজে উত্তর না পেয়ে যদি উক্ত পাঠক ডাক্তারী ঐ বইকে ভুল সাব্যস্ত করে, তাহলে বিজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে যেমন বিষয়টি চরম হাস্যকর হয়। তেমনি এ অতি পন্ডিত কুরআন সুন্নাহের অনুবাদ পাঠকদের অভিযোগের ধরণ দেখে হাসি পায় বিজ্ঞ আলেমদের।
ফাযায়েলে আমালের উপর উত্থাপিত এ প্রশ্নটিও তেমনি। যেভাবে প্রশ্নটি করা হয়েছে, মনে হচ্ছে প্রশ্নকারী বিশাল হাদীস বিশারদ। কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে বিরাট প্রাজ্ঞ লোক। নিম্নেই লক্ষ্য করে দেখুন প্রশ্নগুলো কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে কতটা অজ্ঞতা থাকলে করা হয়েছে।

১ এর উত্তর

عن أبي هريرة سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : ( موقف ساعة في سبيل الله خير من قيام ليلة القدر عند الحجر الأسود
অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূল সাঃ বলিতে শুনিয়াছি যে, তিনি বলেছেন- আল্লাহর রাস্তায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা শবে কদরে হাজরে আসওয়াদের সামনে ইবাদত করা হইতে উত্তম।

সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৬০৩
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৯৮১
কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৫৬০
জামেউল আহাদীস, হাদীস নং- ২৪৩৪৮

২ এর উত্তর

আল্লাহর রাস্তায় বের হলে অনেক সওয়াব হবে। অনেক হাদীসে সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়েছে সওয়াবের। তবে নির্দিষ্ট করে ৪৯ কোটি বলাটা উচিত হবে না। তবে অগণীত সওয়াব হয় আল্লাহর রাস্তায় বের হলে এটা নিশ্চিত। নিম্নের ৩টি হাদীস থেকে তা স্পষ্ট হয়।

عن خريم بن فاتك : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من أنفق نفقة في سبيل الله كتبت له بسبعمائة ضعف

অনুবাদ-হযরত খুরাইম বিন ফাতেক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোন কিছু খরচ করে তা তার আমলনামায় ৭ শত গুণ হিসেবে লেখা হয়।

সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৬২৫
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৬৪৭
সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৫
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯০৩৬
মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-২২৭
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৭৭০
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩২৯৪

এবার দেখুন আল্লাহর রাস্তায় আমল করলে খরচের থেকে কত বেশিগুণ সওয়াবের কথা হাদীসে এসেছে-
عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِنَّ الصَّلاَةَ وَالصِّيَامَ وَالذِّكْرَ تُضَاعَفُ عَلَى النَّفَقَةِ فِى سَبِيلِ اللَّهِ بِسَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ
হযরত সাহল বিন মুয়াজ রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর রাস্তায় নামায, রোযা, এবং জিকিরের সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচের সওয়াবের তুলনায় ৭ শত গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৫০০
সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৮৩৫৫
কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১৮৯০৬
জামেউল আহাদীস নং-৬৪৮৮

অন্য হাদীসে এসেছে-

عن سهل بن معاذ عن أبيه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال إن الذكر في سبيل الله تعالى يضعف فوق النفقة بسبع مائة ضعف قال يحيى في حديثه بسبع مائة ألف ضعف
হযরত সাহল বিন মুয়াজ রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহকে স্মরণ করার সওয়াব আল্লাহর রাস্তায় খরচের সওয়াবের তুলনায় ৭ শত গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।
অন্য বর্ণনায় এসেছে সাত লক্ষ গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয়।

মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৫৬১৩
আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৪০৫
মুসনাদুস সাহাবা ফি কুতুবিত তিসআ, হাদীস নং-১৫১৮৬
কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৮৭৯
জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-৬৮৫৮

৩ এর উত্তর

عن انس قال رسول الله صلى الله عليه وسلم- غدوة في سبيل الله أو روحة خير من الدنيا وما فيها
অনুবাদ-আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল দুনিয়া ও দুনিয়ার ভিতর যা কিছু আছে, তা থেকে উত্তম।

সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬১৯৯,
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৯৮৫,
সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৬৪৮,
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৭৩৯৮,
সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩২৭,
আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৬৬৭,
আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৫৮৩৫,
মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৭৩৫৪,
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৬০২,
মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩৫৪৮,
মুসনাদুর রাবী, হাদীস নং-৪৬৬,
মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-২২৫,
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৮২০,
মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-৯৫৪৩

৪ এর উত্তর

عن أبي هريرة أن النبي صلى الله عليه و سلم قال : ( لا يجتمع غبار في سبيل الله ودخان جهنم في جوف عبد مسلم
অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর রাস্তার ধুলাবালি আর জাহান্নামের ধোঁয়া কোন মুসলিমের পেটে একত্র হতে পারে না।

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৭৭৪
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৮২৮৯
আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং-২৮১
সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-৪৩২০
আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-১৯১১
সহীহ ইবেন হিব্বান, হাদীস নং-৩২৫১
মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৭২২
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭৪৮০
মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১০৯১
মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৩৫৬২
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৯৮৪৬
শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৯৫২

৫ ও ৬ এর উত্তর

এ প্রশ্নটি একটি বোকামীসূলভ প্রশ্ন। দ্বীন প্রচারের পদ্ধতি ও মূলনীতি সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয়বাহী এসব প্রশ্নাবলী। তাবলীগের চিল্লা, তিন দিন, এক সাল। গাস্ত ইত্যাদীর সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি যদি বেদআত হয়। তাহলে মাদরাসার একাডেমিক পদ্ধতি কেন বেদআত নয়? ক্লাসিক্যাল পদ্ধতিতে কেন মাদরাসাগুলোতে একের পর এক কিতাব পড়ানো হয়? এ পদ্ধতিতে কি রাসূল সাঃ দ্বীন শিখিয়েছেন? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, আরবী বিশ্ববিদ্যাল, জামিয়াগুলোর পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর সনদ প্রদানও একটি বিদআত সাব্যস্ত হবে। কারণ এমন পদ্ধতিতে রাসূল সাঃ কুরআন হাদীস শিক্ষা দেন নি। এগুলোকে বেদআত বলাটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে? না চূড়ান্ত পর্যায়ের আহমকীর নিদর্শন হবে এরকম প্রশ্ন করা?

তাবলীগ জামাআত কোন নতুন দল বা সংগঠনের নাম নয়, বরং নবী করীম সাঃ এর তিরোধানের পূর্ব থেকেই বিদায় হজ্বের পর থেকে ব্যাপক হারে সাহাবায়ে কিরাম রাঃ এবং রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর পর থেকে নিয়ে প্রত্যেক যুগেই কমবেশি সম্মিলিত ও বিচ্ছ্ন্নিভাবে দাওয়াতের এ দায়িত্ব পালিত হয়ে আসছিল।
হযরত ইলিয়াস রহঃ ব্যাপক আকারে ও সংগঠিতরূপে সেটির পুনঃজাগরণের চেষ্টা করেছেন মাত্র। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই যেমন কর্মধারা ও সূচি থাকে, তিনিও তেমনি এ জামাতের জন্য কিছু কর্মধারা তৈরী করেছেন সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিকভাবে অধিক উপকারী ও জরুরী বিষয় চিন্তা করে। পূর্ণ শরীয়তকে সামনে রেখে এর মাঝে কোন বিষয়গুলো প্রথমে আমলে আনতে পারলে পূর্ণ শরীয়তের উপর পাবন্দ হওয়া সহজ হয়ে যাবে তা চিন্তা করে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করেছেন। এরই অন্তর্ভূক্ত ৬ গুণ, ৩ দিন, এক চিল্লা, তিন চিল্লা, গাস্ত, ইত্যাদী। যা কোনভাবেই শরীয়তের গন্ডির বাহির থেকে নয়। সেই সাথে শরয়ী কোন হুকুমকে অস্বিকার করে নয়।
যেমন বর্তমান মাদরাসা শিক্ষা শরীয়তের মাঝে নতুন কোন সংযোজন নয়, বরং সাহাবায়ে কিরামের মাঝে আসহাবে সুফফার যে জামাআত সার্বক্ষণিক দ্বীন চর্চায় নিমগ্ন থাকতেন সেটাই ছিল সর্ব প্রথম মাদরাসা। যদিও বর্তমান মাদরাসা পদ্ধতি আর আসহাবে সুফফার মাদরাসার মাঝে পদ্ধতিগত পার্থক্য রয়েছে। মৌলিকত্বে কোন পার্থক্য নেই। সে সময় কোন সিলেবাস ছিল না। ছিল না কোন ক্লাসিক্যাল অবকাঠামো। ছিল না সার্টিফিকেট দেওয়ার পদ্ধতি। ছিল না বিধিবদ্ধ শিক্ষক ষ্টাফের কোন মূলনীতি। কিন্তু পরবর্তীতে আম ফায়দার জন্য এবং দ্বীন চর্চায় অধিক উপকার অর্জনের নিমিত্তে একটি একাডেমিক পদ্ধতি আবিস্কার করা হয়েছে। যে আবিস্কার কোন বিদআত নয় মর্মে সকল ওলামায়ে কিরাম একমত। তেমনি তাবলীগ জামাআতের বর্তমান সাংগঠনিক ভিত্তি হিসেবে কিছু মূলনীতি নির্ধারণও কোন নতুন বিষয় নয়, বা বিদআত নয়। কারণ মাদরাসা শিক্ষার বর্তমান পদ্ধতিকে যেমন আমরা সওয়াবের কাজ মনে করি না, কিন্তু ইলমী দ্বীন চর্চাকে জানি সওয়াবের কাজ। তেমনি তাবলীগ জামাআতের পদ্ধতিটা মূলত সওয়াবের কারণ নয়, বরং এর দ্বারা যে কাজটি আঞ্জাম দেয়া হয় তথা তাবলীগ সেটি হল সওয়াবের কাজ। এ দু’টিতে কোন পার্থক্য নেই। সুতরাং তাবলীগ জামাআতকে দ্বীন এর মাঝে নতুন সংযোজন বলে বিদআত সাব্যস্ত করাটা বিদআতের সংজ্ঞা ও দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত পর্যায়ের অজ্ঞতার পরিচায়ক। কারণ বিদআত বলা হয়
عَنْ عَائِشَةَ رضى الله عنها قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ فَهُوَ رَدٌّ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমাদের দ্বীনের মাঝে যে ব্যক্তি নতুন বিষয় আবিস্কার করে যা তাতে নেই তাহলে তা পরিত্যাজ্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৬০৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-২৫৫০, সহীহ মুসলিম-৪৫৮৯}
এই হাদিসে লক্ষ্য করুন কি কি শর্তে নব আবিস্কৃত বস্তুকে পরিত্যাজ্য বলেছেন নবীজী সাঃ।
১-সম্পূর্ণ নতুন বিষয়। যার কোন সামান্যতম প্রমাণ নবীযুগে বা সাহাবা যুগে নাই এমন বিষয় হতে হবে।
২-দ্বীনী বিষয় হতে হবে। সুতরাং দ্বীনী বিষয় ছাড়া যত নতুন বিষয়ই আবিস্কারই হোকনা কেন তা বিদআত নয়। যেমন বৈজ্ঞানিক আবিস্কার। নতুন নতুন আসবাব ইত্যাদী। এসব বিদআত নয়। কারণ এসব দ্বীনী বিষয় নয়। বরং বৈষয়িক বিষয়।
৩-দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার হতে হবে। দ্বীনের জন্য হলে সমস্যা নাই। কারণ দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার মানে হল এটা সওয়াবের কাজ। সুন্নাত, ওয়াজিব ইত্যাদী। আর দ্বীনের জন্য হলে সেটা মূলত সওয়াবের কাজ নয়, বরং সওয়াবের কাজের সহায়ক। যেমন মাদরাসা শিক্ষা একাডেমিক পদ্ধতি নববী যুগে ছিলনা। পরবর্তীতে আবিস্কার করা হয়েছে। এই একাডেমিক পদ্ধতিটি দ্বীনের মাঝে নতুন আবিস্কার নয়, বরং দ্বীনী কাজের জন্য সহায়ক হিসেবে আবিস্কার হয়েছে। অর্থাৎ দ্বীন শিখার সহায়ক। আর দ্বীন শিখাটা সওয়াবের কাজ। কিন্তু সিষ্টেমটা মূলত সওয়াবের কাজ নয় বরং সহায়ক। তেমনি তাবলীগের বর্তমান পদ্ধতিটি ইলিয়াস রহঃ আবিস্কার করেছেন দ্বীন প্রচারের সহায়ক হিসেবে। তথা দ্বীনের জন্য আবিস্কার। দ্বীন মাঝে আবিস্কার নয়। তাই এটি বিদআত হওয়ার কোন সুযোগই নেই।
যারা বলেন এ পদ্ধতি বিদআত, তারা মূলত দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত অজ্ঞতার পরিচয় দেন এসব কথা বলে।

তাবলীগ জামাআতের কাজ যেহেতু রাসূল সাঃ ও পরবর্তী সাহাবায়ে কিরামের প্রচার করা দ্বীন প্রচারেরই একটি সুসংহত রূপ মাত্র। তাই তাবলীগ জামাআতের কাজের সাথে সেসব ফযীলত শামিল হবে যা কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত দ্বীন প্রচারের ফযীলত। যেমন দ্বীন শিক্ষার ফযীলত প্রাপ্ত হবে বর্তমান একাডেমিক পদ্ধতিতে পড়াশোনা করা মাদরাসা ছাত্ররা।

৭ নং এর উত্তর

তাবলীগী সাথি ভাইরা বয়ান বা দাওয়াত দেওয়ার সময় সরাসরি কুরআন সুন্নাহের সরাসরি উদ্ধৃতি না দিয়ে তারা মুরব্বীরা বলেছেন বলাটা একটি প্রশংসনীয় পদ্ধতি। এটাকে সমালোচনার প্লাটফর্ম বানানোটাও বিদ্বেষমূলক করা হয়েছে।
কুরআন হাদীস খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। যে ইচ্ছে সে, যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে তা বলাটা একদম অনুচিত। দু’ লাইন বাংলা অনুবাদ পড়ে শাইখ সাজার কুশিক্ষা তাবলীগে শিক্ষা দেয়া হয় না। কুরআন ও হাদীস বর্ণনায় আদব ও সতর্কতার প্রতি লক্ষ্য করেই এ পদ্ধতিতে কথা বলে থাকেন তাবলীগী ভাইয়েরা।
আর এ পদ্ধতি সাহাবাদের থেকেই প্রাপ্ত। এরকম অনেক সাহাবায়ে কেরাম ছিলেন যারা রাসূল সাঃ বলেছেন একথা সরাসরি বলতে খুবই ভয় পেতেন। তাই এমনিতে মাসআলা বলে দিতেন কিন্তু একথা রাসূল সাঃ বলেছেন একথা সরাসরি বলতেন না। আল্লাহর নবীর দিকে মিথ্যার নিসবত হওয়ার ভয়ে। যেমন-
عبد الله بن الزبير عن أبيه قال قلت للزبير بن العوام ما لي لا أسمعك تحدث عن رسول الله صلى الله عليه و سلم كما أسمع ابن مسعود وفلانا وفلانا ؟ قال أما إني لم أفارقه منذ أسلمت . ولكني سمعت منه كلمة . يقول ( من كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من النار )
অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি হযরত জুবাইর বিন আওয়াম রাঃ কে একদা জিজ্ঞেস করলেন যে, আপনার কি হল? আপনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ ও অন্যান্যদের মত রাসূল সাঃ থেকে কোন হাদীস কেন বর্ণনা করেন না? তখন তিনি বললেন-শোন! আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রাসূল সাঃ থেকে পৃথক হইনি। [অর্থাৎ রাসূল সাঃ থেকে আমি অনেক হাদীসই শুনেছি, কিন্তু আমি বর্ণনা করিনা কারণ হল] কিন্তু আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আমার উপর ইচ্ছেকৃত মিথ্যার নিসবত করবে সে তার বাসস্থান জাহান্নামকে বানিয়ে নিবে। [এ ভয়ে আমি হাদীস বর্ণনা করি না। ]

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৬
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৬৫৩

তো সাধারণ মানুষ সরাসরি কুরআন হাদীসের কথা না বলে মুরুব্বীরা বলেছেন বলাটা কি অধিক নিরাপদ বক্তব্য নয়? এটাতো প্রশংসনীয় পদ্ধতি। এটাকে সমালোচনা করার কি হল?
আল্লাহ তাআলা তাবলীগ জামাতের মত মকবুল জামাতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে এর দ্বারা সকল মানুষের আরো বেশি দ্বীনের খিদমাত আঞ্জাম দেওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা
ইমেইল[email protected]
[email protected]

৩৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪

আদম_ বলেছেন: আবোল-তাবোল লীগ।

৩৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৪

অলিভার বলেছেন: যারা মানুষ কে আল্লাহর দিকে ডাকে কিন্তু কোন বিনিময় চায় না তারাই প্রকৃত পথের অনুসারী । -তাবলীগ ঠিক এই কাজটিই করে ! এই লেখক মানুষ কে বিভ্রান্ত করছেন !

৩৫| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৭

আমরা তোমাদের ভুলব না বলেছেন: মালাউনের বাচ্চা, নাস্তিক আর জামাত ছাড়া কেউই তাবলীগ এর বিরোধিতা করে না।
তুই কোন দলের?
আর তাবলিগ এর কোথা বাদ দিলাম, তুই ইসলাম এর জন্য কি কি করছিস সেইটার একটা লিস্ট দে।
লিস্ট না দিতে পারলে যেদিক দিয়ে আসছিস ঐ দিক দিয়ে ঢুকায় দিবো কুত্তারবাচ্চা।

৩৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৫৮

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: লেখকের কথার সারকথা্‌, তিনি জল্লাদকে বলছেন, ওগো জল্লাদ তুমার তো তলোয়ার ই নাই :-প

৩৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৪

সৌর কলঙ্কে পর্যবসিত বলেছেন: মানুষ প্রধান অতিথিকে হয় প্রথমে আনে নয়তো শেষে। আর দেখুন উনি প্রথমে বললেন তাব্লীগ ঈমান নিয়ে মেহনত করে না অথচ যে লাইফে ৩ দিনের জন্যও যায় নাই, শুধু ২/১ দিন কথা শুনেছে, সেও জানে, তাবলীগের মূল কাজ ই তো ঈমান নিয়ে।


আর শেষের পয়েন্ট ??

তাব্লীগয়ালারা কি ঘাস খায় ??? আপনি উদাহরন দেন যে তাবলীগ ওয়ালা মাসের পর মাস ঘুরে বেরায়, আর ফিরে এসে বাটপারি করে। উদাহরন দেন।
আমি তো দেখি তাবলীগ ওয়ালারাই বরং অনেক বেশি সৎভাবে উপার্জন করে।


আর আমার কাজ ঠিক রেখে আমি তাবলীগে যাই নাকি আমেরিকা যাই, টা বলার অধিকার তো অন্য কারও নাই.।.।.।.।

৩৮| ০৬ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬

সামিউল ওয়াকিল তমাল বলেছেন: আপনার কোন আইডিয়া নেই তাবলীগ সম্পর্কে । তিন চিল্লা লাগিয়ে আসুন, তারপর এসে নিজের এই পোস্ট খানা পরেন ।

৩৯| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:৫৫

রওনাক সালাম বলেছেন: জনাব লেখক, দয়া করে মিথ্যা লেখা বন্ধ করেন। আমি মাত্র তিনদিন তাবলীগে গিয়েছি। সেখানে আপনি যা বলছেন তার কোনটাই সত্য না। তাবলীগ ওয়ালারা মূলতঃ ঈমানের/ক্বলেমার দাওয়াত দেয়। আপনি কোনদিন তাবলীগে যানও নাই বা তাবলীগ সম্পর্কে সমান্যতম ধারনাও রাখেননা। আগে একটা বিষয় সম্পর্কে ভালমত যেনে তারপর লেখা উচিৎ। না হলে আল্লাহর আজাবে আমরা যে কেউই গ্রেফতার হতে পারি।
আল্লাহ, আমাদের দিলের ময়লা দূর করে দিন, আ---মিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.