নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুটিং স্টার লষ্ট

নাই।

শুটিং স্টার লষ্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছাত্র

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৫২

ঈদের ঠিক আগের দিনের কথা। আমি উত্তরা থেকে বাসে উঠলাম। টিকিট বাস, নাম অনিক। যাবে সিটি কলেজের সামনে দিয়ে। আমি যাবো নিউমার্কেট।



দুপুর বেলা, এই সময় বাসে সিট পাওয়া তো দূরের কথা, ঠিকমতো দাড়াতেও কষ্ট করতে হয়। বাসে উঠে যথারীতি দেখলাম সিট খালি নেই। অলরেডি বেশ কয়েকজন দাড়িয়ে আছে। আমিও দাড়িয়ে গেলাম।



বাস কাউন্টার ছাড়ার আগেই হঠাৎ করে তিনটা ছেলে উঠলো। একটার চোখে বিশাল চশমা। ছেলে তিনজন উঠে বাসের পেছন দিকে হেটে যেতে লাগলো, তখন ড্রাইভার ঘুরে বললো, টিকেট ছেড়া হয়েছে আপনাদের? টিকিট কই?



ছেলে তিনজনের একজন বললো, টিকিট! কিসের টিকিট?



ড্রাইভার এবার ক্ষেপে গেলো। এই যে ভাই, দাড়ান, টিকিট না কিনলে বাস থেকে নেমে যান।

এবার একটা ছেলে ঘুরে বললো, স্টুডেন্ট।



ড্রাইভারও বেপরোয়া। বললো, আজ ঈদের আগের দিন, স্টুডেন্ট টিকিট নাই। সব স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। টিকিট না থাকলে নেমে যান। টিকিট ছাড়া লোক নেওয়া যাবেনা।



এবার একজন ঘুরে এসে ড্রাইভারকে বিশাল দাবড়ি লাগালো। বলল, ওই, তোর মালিক কি কইছে আমারে লইবো না? এমন চোখ পাকিয়ে কথাটা বললো যে ড্রাইভার ঠান্ডা হয়ে গেলো।



আমরা সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি। ড্রাইভার আর কিছু না বলে ঘুরে গেলো। কিছুই করার নেই তার, বাস ছেড়ে দিলো। ছেলেতিনটে একদম পেছনে গিয়ে গল্প করতে লাগলো।



উপরের ঘটনা টা যে ঘটে সেটা হয়তো অনেকেই জানেন। এরা ঢাকা কলেজের ছেলে। আমার ভাষায় কুলাঙ্গার। এরা টিকেট কিনে বাসে উঠে না। দল বেঁধে যে কোন বাসে উঠে পড়ে এবং যথারীতি ভাড়া না দিয়ে নেমে যায়। এদেরকে কিচ্ছু বলা যায়না, কারণ কে চায় সামান্য বাস ভাড়ার জন্যে একটা বাস নষ্ট করতে। ওরা সিম্পলি আগুন ধরিয়ে দেবে অথবা রাস্তায় আটকে ভাঙচুর করবে।



ইদানিং এই জিনিসগুলো খুব অহরহ চোখে পড়ছে। এরা হয় ভয়ানক পিছলা টাইপের। সেদিন একইরকম কাহিনী। একটা ছেলে ফোনে কথা বলতে বলতে বাসে উঠে গেলো। ড্রাইভার যতোই ডাকে সে ফিরে তাকায় না। কন্ডাকটার কে বললো, স্টুডেন্ট!



আমার ছোট ভাই পড়ে ঢাকা কলেজে। অনেক ধরণের খবরই পাই ওর কাছ থেকে। এমন ঘটনাও হয়, কোন একটা বিষয়ে ঝামেলা করার আগে দেখা যাবে এক ছেলে হাত বাঁশ নিয়ে দৌড়ে ঢাকা কলেজ থেকে বেরুচ্ছে তারপর বিশ পঁচিশটা গাড়ী ভেঙে আবার ঢুকে যাচ্ছে পাশের রাস্তা দিয়ে। এরা সবাই বহিরাগত। ঘটনা ঘটার জন্যে এটা শুরুর দিকের কাজ।



আমি তীক্ষ চোখে তাকিয়েছিলাম সেই ছেলেগুলোর দিকে। মাত্র ইন্টার পাশ করেছে। কিন্তু চোখ ঘুরিয়ে, চোয়াল শক্ত করে যখন কথা বলে, তখন মনে হয়- কারা এরা? ছাত্র?



আমরা কি আশা করতে পারি এদের কাছ থেকে? জাতি কি আশা করতে পারে এদের কাছ থেকে? এদের তো নীতির ঠিক ঠিকানা এখনই নাই, এরা জাতির মেরুদন্ড কিভাবে হবে?



আমি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি বলে টাকার কষ্টটা বুঝি। প্রতি সেমিস্টারে তিরিশ চল্লিশ হাজার টাকা বাবার কাছ থেকে নিয়ে পড়তে যে কি খারাপ লাগে সেটা এই ছেলেরা বুঝবে না। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, যদি আমার মতো এত টাকা দিয়ে এদের পড়তে হতো তাহলে বুঝতো কত ধানে কত চাল।



লেখাপড়ায় তাদের কি কষ্ট? কত টাকাই বা নষ্ট হচ্ছে ফেল করলে?

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:১০

শাহাবুিদ্দন শুভ বলেছেন:
আসলে প্রথমত ওরা ওদের পরিবার থেকে শিক্ষা পেয়ে উঠেনি। যার কারণে এরকম হচ্ছে। কলেজের শিক্ষকরাও তাদের এই বিষয়ে বুঝিয়ে বলতে পারেন।
আর যারা সবসময় এধরণের কাজ করে তাদের কাছ থেকে আসলেই কিছু আশা করা যায় না।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২২

ধূসর মানচিত্র বলেছেন: আপনার লেখার অনেকাংশ সমর্থন করি। কেবল শেষ প্যারা ছাড়া।
আপনি একটু চিন্তা করুন, আপনার বাবার সমর্থন আছে বলে আপনার বাবার ৩০-৪০ হাজার টাকা দিতে পেরেছে কিন্তু বাংলাদেশের ৮০-৯০% ফ্যামিলি ঐ টাকা দেওয়ার সমর্থন নেই, তাহলে কি ওরা পড়াশুনা করবে না।দয়া করে শুধু নিজেদের কথা চিন্তা করবেন না আম-জনতার কথা ভাবুন। আর পাবলিক কিন্তু অনেক রাগিব তৈরি করেছে,সেটা ভুলে গেলেন।সবাইকে একপাত্রে মাপা কি ঠিক?
আমি অবশ্যিই,অবশ্যিই & অবশ্যিই বাসের এই কথিত ছাত্রদের এই ধরনের কাজের নিন্দা করি তীব্রভাবে,তারা ছাত্র নামে অছাত্র। বস্তুত আমাদের দেশে ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের আনাচে-কানাচে এই রকম ছাত্র নামধারী অছাত্র আছে। পরিবার কিছুটা দায়ী। তার থেকে বড় দায়ী,আমাদের কলুষিত রাজনীতি। তারা হয়ত ছাত্র নাম দিয়ে করছে বাসে নীরব অত্যাচার, অন্য জায়গায় দেখুন রাজনীতিবিদ কমিশনার,নেতাদের নাম দিয়ে চলছে এই অনাচার।

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৮

বোহেমিয়ান কথকতা বলেছেন: আসলেই এই গুলা অছাত্র ।
কিন্তু শেষ প্যারা টা না লিখলেই বোধ হয় ভাল হত ভাই । প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেরা গাড়ি ভাংচুর করে না এইটা কে বলল?
ভাল থাকুন ।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫২

ডিজিটাল কলম বলেছেন: নিন্দনীয়............।

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:২২

কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি বলেছেন: দিনে দিনে কত কি দেখা হবে!

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৩৪

মাহমুদ সিএসই বলেছেন: সত্য ঘটনাগুলো সবার দৃষ্টির সামনে তুলে আনার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।

আসলে এই নৈতিক অধঃপতনের জন্য শুধু এইসব ছাত্রদের দোষ দিলেই চলবে না। কারন, তাদের পেছনে অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, গডফাদার আছে, তা নাহলে তারা কখনওই এধরনের পাওয়ার দেখানোর সুযোগ পেতো না.... ধীরে ধীরে এটাই একসময় ট্রেডিশন হয়ে যায়। ব্যাপারটা অনেকটা, সবাই করছে আমি করব না কেন... এরকম। আর সবাই ভয় পেয়ে তাদেরকে ছেরে দিচ্ছে বলে তারাও আরও বেশি সাহসী হয়ে উঠছে।

৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৩১

জাকির হোসেন বিডি বলেছেন: আসলেই এই গুলা অছাত্র ! এরা ছাত্র নামের অন্যকেহ !! তবুও বাংলাদেশের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আমি এসব কিছু আপাতত সমর্থন করব। কেননা বাসের শ্রমিকরা ভদ্র গো বেচারা মানুষের সাথে যা করে তার কাছে এগুলা তেমন কিছুই না ! মন্দ হলেও এগুলা না থাকলে তারা সাধারন মানুষ গুলোকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে । :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.