বিপরীত কাজ

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২৫

এমন অনেক কাজ আছে যেগুলো আমাদের সামনে আসলেই ঘৃণাতে আমরা চোখের ভ্রু কুঁচকে ফেলি, অথচ সত্যিকারে দেখা যায় আমরা তার ঠিক বিপরীত কাজটা করি -

* সকালে বাসে চড়তেই যানজটের জন্য সরকার থেকে শুরু করে সবার ১৪ গুষ্ঠি গালাগাল করে উদ্ধার করি, অথচ সুযোগ পেলেই বাস চালককে ট্রাফিক নিয়ম ভেঙ্গে উল্টো রাস্তা দিয়ে যেতে উৎসাহিত করি।

* যাত্রাপথে নিজের মা-বোনকে যখন বসতে দিতে পারি না তখন বাসের সব যাত্রীকে মনে মনে গালি দিতে থাকি, অথচ নিজে পাশে মহিলাকে দাড় করিয়ে রেখে দিব্যি বাসের সিটে ঘুমাই।

* রাস্তার পাশে ফেলা ময়লা দেখে নাক সিটকাই, অথচ নিজ বাসার ময়লাও রাস্তাতেই ফেলি।

* স্কুলের শিক্ষক যারা কোচিং করায় তাদের উঠতে বসতে গালি দেই, অথচ দিন শেষে সন্তানকে তাদের কাছেই পড়তে পাঠাই।

* বিদ্যুৎ চলে গেলেই প্রথমেই 'শালার কারেন্ট' গালি দেই, অথচ বিদ্যুৎ থাকাকালীন সেটা অপচয় অথবা চুরি করে ব্যবহার করতেও বাধে না।

* গ্যাস না থাকলে যখন রান্না করতে পারি না তখন মন চায় গ্যাস কোম্পানিকে পচা পানিতে চুবাই, অথচ সেই গ্যাসের চাপ বেশি থাকার সময় চুলার উপর কাপড় শুকাই।

* সারাদিন ফরমালিনযুক্ত খাবারকে গালিগালাজ করি, অথচ দিনশেষে কিছু টাকা লাভের জন্যে সেই ফরমালিনযুক্ত খাবার নিয়েই বাড়ি ফিরি।

* পথ শিশুদের অধিকারের জন্য সারাদিন গলা ফাটাই, অথচ কোন পথ শিশু এসে ২ টাকা চাইতেই বলি - যা ভাগ এখান থেকে।

* টিভিতে সংবাদ দেখে বলি - "দেশটা একেবারে ভারত কিনে নিয়েছে", অথচ ২ মিনিট পরেই চ্যানেল পাল্টে ভারতীয় চ্যানেল উপভোগ করতে থাকি।

* নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে টিভি দেখতে বসে সামান্য অশ্লীল কিছু দেখলেই চ্যানেল পাল্টে ফেলি, অথচ রাস্তায় সুন্দরী মেয়ে দেখলেই বলে বসি - "মেয়েটা কি সেক্সি!"

* ঘুষখোরকে ঘৃণা করি, অথচ যে কোন কাজ করতেই আগে জিজ্ঞেস করি - "কিছু লাগবে না তো?"

* খবরের কাগজে কোন নারী নির্যাতনের খবর দেখলেই ঘৃণায় সেইসব কালপিটদের গালি দেই, অথচ চোখের সামনেই ইভ টিজিং হতে দেখে প্রতিবাদ না করে উল্টো মজা লুটতে থাকি।

আরও এমন অসংখ্য কাজ আছে যেগুলো আমরা নিজেরা প্রতিনিয়ত করি, অথচ চোখের সামনে পড়লেই ঘৃণা প্রকাশ করি। কাউকে বদলানোর পূর্বে নিজেদের বদলানো দরকার, তা না হলে অযথা "পরিবর্তন চাই, পরিবর্তন চাই" করে চিৎকার করে কোন লাভ নেই।

০ টি +০/-০