নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের সকল প্রকার তথ্য কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে ।
দিন কয়েক ধরে শরীরের মতিগতি বুঝতে পারছি না। তার সাথে যোগ হল জ্বর-কাশি। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে কাশির গতি,শব্দ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আমার মা সারা রাত সরিষার তেল হাতে পায়ে মাথায় দিচ্ছেন। আর আমার নানা অনিয়মের রেকর্ড শুনাচ্ছেন।
আমার ঠান্ডার সাথে রাতে গোসল, রাত জাগা, চুল বড়সহ নানা কারণ খুঁজে পেলেন। আমি বিকট শব্দে কাশি আর নিরবে মায়ে অভিযোগ শুনি। সকাল হলে যেহেতু কাশি আর জ্বর একটু দূর্বল হয়ে পড়ে। সুতরাং আমি রাতে ঘটনা ভুলে গিয়ে আবার বের হই। নানা জায়গায় ঘুরি কারণে অকারনে।
মানুষের উপদেশ শুনি কাশি বিষয়ক। সবাই নানা ঔষুধ দেয়। তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা, মধু, আদা, লংবঙ্গ, তেজপাতা , আদা লবন, আদা পুড়া। কেউ সরাসরি বলল ডাক্তারে কাছে যাও। কাশির ভয়াবহতা কেউ আবার বেশি আপন জোর করে পাঠিয়ে দিতে চায় হাসপাতালে । কারো উপদেশ বরফ খাও।
আমি কাশি শরীর ভাল না। এরমধ্যে একবড় ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গেলাম। গিয়ে দেখি পুরো হাসপাতাল তার পরিচিত। তিনি হাসপাতালের সবাইে নাম ধরে ডাকে।
ডাক্তারা প্রায়ই সবাই তার পরিচিত। সবাইকে ডাক্তার,রোগী, রোগীর আত্মীয়সজন সবাইকে তিনি উপদেশ দিয়ে বেড়ান কি কি কারণে হৃদরোগ হয়। কি করতে হবে।
একজন ডিউটি ডাক্তারকে ডেকে বললেন। আমার ছোট ভাই একটা এন্টিবায়েটিক আর কাশির সিরাপ লিখে দাও তাকে। ভয়ানক বাজে ভাবে কাশে সারাদিন।
ডাক্তার সাহেব আমাকে তার রুমে যেতে বললেন, আমি হৃদরোগের ডাক্তারের কাছে কাশির মত হালকা রোগের নিয়ে যাওয়ার সাহস না দেখিয়ে চলে আসলাম।
আমি যেহেতু অলস তাই দিন কয়েক কাশি নিয়ে ভুগছি। গতকাল ছিল কাশি হত্যা দিবস। আমার এক ভাই-ব্রাদারে ছোট বোন আমার কাশি বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল।
প্রথমে আদা-লবঙ্গ,তেজপাতা মিশিয়ে চা খেতে দিল। মিনিট কয়েক পর আমি আবার কাশছি। সে হতাশ না হয়ে । এবার আর এক ঔষধ বানাল ভয়ানক ঔষধ। তার ধারণা এই ঔষধ কাজ না করে যাবেই না।
আমি আল্লাহ ভরসা করে গরম ঔষধ খেয়ে নিলাম। যথারীতি মিনিট কয়েক পড় কাশি। এবার সে আর তার ভাগ্নি মিলে আরো ভয়ানক ঔষধ বানাতে ব্যস্ত হয়ে গেল।
পুদিনা পাতা, রাম তুলশি, লবঙ্গ, আদা, তেজপাতা, মধু মিশিয়ে কড়া ঔষধ বানানো হল। রাত গভীর হচ্ছে আমি বাসার দিকে রওনা দেওয়ার আগে আবারও ঔষধ খেলাম। আমার ঔষধ খাওয়া দেখে ফারুক ভাই আগ্রহ প্রকাশ করলেন। তাকেও রাম তুলশি, পুদিনা, আদা,লবঙ্গের মিশ্র খাইয়ে দেওয়া হল।
আপাতত কাশির সাথে লড়াই থামিয়ে বাসার দিকে রওনা হলাম। কাশি ক্রমেই বাড়ে। ফারুক আমাকে সিটি কলেজের কাছে নামিয়ে দিয়ে গেলেন। আমি হাঠছি গন্তব্য জিগাতলা।
স্টার কাবাবের কাছে এসে দেখি মানুষজন নাই। রাস্তা ঘাট নিরব। একলোক নানা রং মিশানো পান নিয়ে বসে আছে। আমি দামাদামী করে ৫টাকায় ১৫টাকা দামের পান নিলাম।
জিগাতলার দিকে হাটছি। এই এলাকায় একটি কাপড়ে দোকান আছে যার নাম বাংলায় হলুদ। হলুদ দোকানটি আরো বিশাল করা হচ্ছে। এত রাতেও শ্রমিকরা কাছ করছে। আমার কাশি দেখে তারাও ঔষধ এবং উপদেশ দিল। শ্রমিকদের কাছ থেকে উপদেশ নিয়ে হাঁটছি। গন্তব্য জিগাতলা।
জিগাতলা বাস স্ট্যান্ডের কাছে পুটলা মনির ভাইয়ের সাথে দেখা। পুটলা মনির ভাইয়ের সাথে আমার অনেক স্মৃতি। তার বিয়ের আগের দিন তিনি জানতে পারেন তার ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেছে। একদিনের মধ্যে আইডি কার্ড লাগবে। কয়েকজন বলল ভুয়া আইডিকার্ড বানিয়ে বিয়ে করে ফেলতে।
আমি বললাম ভাই সবকিছু ভুয়া হোক বিয়ের বিষয়ে কিছু ভুয়া করা ঠিক হবে না। কয়েকজন জানাল যে একদিনে ভোটার আইডি কার্ড বানানো সম্ভব নয়। দুইদিন সময় লাগে। আমি রাতেই থানায় জিডি করে। সকালে মনির ভাইকে নিয়ে আগারগা চলে গেলাম। খুব অনুরোধ করার পর এবং বিয়ের মত জটিল বিষয়টি বুঝার পর কতৃপক্ষ বিকালের দিকে তাকে আইডি কার্ড দিয়ে দিলেন।
মহা আনন্দে মনির ভাইয়ে বিয়ে হল সন্ধ্যায়। কিন্তু বছর কয়েক মনির ভাইকে দেখিনা। আজ মনির ভাইকে দেখলাম। মনির ভাইয়ের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি গাজা বিশেষজ্ঞ। তার সকল গল্প গাজা দিয়ে শুরু এবং গাজার অধিকার প্রতিষ্ঠা দিয়ে শেষ।
আমি মনির ভাইয়ের সাথে হাটছি। গন্তব্য কারওয়ান বাজার। মনির ভাই পেশা পরিবর্তন করেছেন। সবজি বেচাকেনা করেন।
বুঝলেন গাজা কিন্তু আমাদের লোকাল জিনিস। এই সিগারেট, মদ এইসব কিন্তু লোকাল না। কিন্তু কি আজব মদ,সিগারেট নিষিদ্ধ না।গাজা নিষিদ্ধ।
সবই বিদেশীদের কাজ। তারা সিগারেটের ব্যবসার জন্য গাজারে নিষিদ্ধ করে রাখল। তামাক নিয়ে আসে পুর্তগিজরা।
গাজার কি কোন ক্ষতিকর দিক নেই।
ক্ষতিকর দিক কার নাই। এত মজার চিনি কিন্তু ডায়েবেটিস হলে তা নিষিদ্ধ। কিডনীর রোগীর জন্য ফল। উচ্চ রক্তচাপের জন্য গরুর মাংস.............। আসল বিষয় হল পরিমান। পরিমত খেলে গাজা মহা ঔষধি।
গাজার বিষ নানা রোগের প্রতিশোধক।
আমি মনির ভাইয়ের গাজা বিষয়ক গল্প শুনছি। বোকার মত কাজ হল। কারওয়ান বাজার অনেক দূর মনে হচ্ছে।
দুনিয়াতে অনেক দেশে গাজার বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। কারণ মানুষ এখন বুঝতে পারছে গাজা সিগারেট কিংবা মদের মত তেমন ক্ষতিকর নয়।
মনির ভাই আমার কাশির সমস্যার সমাধান কি গাজায় আছে?
নাহ যদি আপনি আগে পরিমিত গাজা খাওয়ার অভ্যাস রাখতেন তবে কোনদিন সর্দি-কাশি হইত না। এখন হিতের বিপরীত হইব।
আমি কাশছি। মনির ভাই বলল কি কি ঔষধ খেলেন কাশির জন্য। আমি সারাদিনের গিনিপিগ হওয়ার গল্প বললাম।
ভাই যা খাইলেন তাতে আর কিছু খাওয়ার দরকার নাই। তবে একটা উপায় শিখিয়ে দেই। তারপর কাশতে কাশতে বাড়িতে চলে যান। তবে ঘন্টায় দশবারের বেশি করেবেন না।
কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখি ব্যাপক হইচই। এত লোক গাড়ি এলো কোথা থেকে। ভিতরে গিয়ে দেখি গরম লাগছে। আমি তাড়াতাড়ি বের হয়ে পুটলা মনিরের উপায় পরীক্ষা করলাম। ব্যাপক মজা। শান্তি ।
এবার গন্তব্য শ্যামলী। আমি রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ তল্লাশি চৌকিগুলো পার করছি। পুলিশগুলো সব ক্লান্ত হয়ে বসে আছে।
অনেকদিন পর আজ ফজরে আযান শুনছি। ভোর আর পূণিমা দুই হতাশা তৈরি করে।
আমি ঘড়ি ধরে ৬ মিনিট পর পর মনির থেরাপী প্রয়োগ করছি আর হাটছি।
হে কাশি আরো দুইদিন থেকে যা।
০৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫০
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: হ্যাঁ তথ্য ঠিক আপনার।
২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:১০
হাসিবুল হাসান শান্ত বলেছেন: সব কিছুর যেমন লিমিট থাকে গাজারও তেমন একটা লিমিট আছে ৷
গাজার লিমিট টা ঠিক থাকলে কোন ক্ষতি হয় না ৷ গাজাকে নেশা বানালে মাদক আর নেশা না বানালে অনেক বর ঔষুধ ৷ অতিরিক্ত কিছুই ভালো না ৷ যারা নিজেকে control করতে পারে না তাদের জন্য গাজা না ৷
০৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫১
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: অতিরিক্ত কিছুই ভালো না ৷
৩| ০৬ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
নির্বাসিত শব্দযোদ্ধা বলেছেন: self control বড় বিষয় :-)
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: গাজা হলো একমাত্র নেশা যার ওভারডোজে মানুষ মরার কোন রেকর্ড নেই।