নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের সকল প্রকার তথ্য কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে ।
সে অনেক বছর আগের কথা | আমার এক বড় ভাই দায়িত্ব পেলেন পুলিশের নানা অনিয়ম নিয়ে নিউজ করার। যেহেতু তিনি টেলিভিশনে কাজ করেন তাই তার ফুটেজ লাগবে। ঢাকায় কোথায় কোথায় পুলিশ টাকা খায়, অকর্ম করে তার বিশাল ফর্দ নিলেন।
সপ্তাহখানিকের মধ্যে কিছু ফুটেজ নিয়ে প্রায় তৃপ্তির ঢেকুর তার। একদিন সকালে তিনি আমাকে বললেন আজ ট্রাফিক পুলিশকে ধরব। সারাদিন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ট্রাফিক পুলিশের দুইটাকা পাঁচ টাকা মুঠো বন্দির ছবি নিলেন। খুবই তৃপ্ত ঢেকুর তার।
দুপুর প্রায় তখন শেষ হয় হয়। ৩২ নাম্বার থেকে আমরা যাচ্ছি নিউ মার্কেটের দিকে। রাস্তায় এক মোড়ে পুলিশ মাত্র একটু ছায়ায় গিয়ে দাড়াল। এই সুযোগে রিকসা-গাড়ি মিলে যানজট লাগিয়ে দিল।
ওমনি ক্যামেরা তাক। পুলিশ ব্যাটা বিশ্রাম নেয়, রাস্তায় যানজট। ভাল ফুটেজ, ভাল ভাল। ফুটেজ নেওয়া শেষ।
একবার তো পুলিশের বক্তব্য নেওয়া দরকার। তাই এগিয়ে গেল ক্যামেরা-সাংবাদিক, আমি পিছু পিছু।
পুলিশ ব্যাটা যানজট লাগিয়ে তখন ভাত খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাস্তার ধারে। কত বড় সাহস। মানুষ যানজটে ভোগে সে ভাত খায়?
ক্যামেরা তাক করে প্রশ্ন একটাই আপনি এখানে আর রাস্তায় যানজট?
পুলিশের অনুরোধ ভাই, ভাই, ভাই । কিন্তু কোন ছাড় নাই ক্যামেরা তাক তাক। সাংবাদিক প্রশ্ন ছুড়ছেন একটার পর একটা। ভাই, ভাই বলে তিনি সাংবাদিকে সামলাতে চাইলেন।কিন্তু আজ কোন ছাড় নেই।
হুট করে পুলিশ ব্যাটা ঘুরে দাড়ালেন। তারপর সে ভাতের পাত্রটার ঢাকনা সরিয়ে ডাকলেন এদিকে আসেন। আমি কাজ ফাঁকি দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি, তার নিউজ করেন।
কিন্তু এই ভাতের নিউজ করবেন না? দিনে ১৪ ঘন্টার বেশি ডিউটি করি? ডিউটি শেষে কোথায় গিয়ে ঘুমাই সেই বিছানার নিউজ করবেন না?
আমি এগিয়ে গিয়ে দেখি পুলিশ ব্যাটা যে ভাত খাবার প্রস্তুতি নিয়েছে। তা অনেক আগেই গরমে খাবার অযোগ্য হয়ে গেছে।
যান যান নিউজ করেন। বলে তিনি পানি দিয়ে ধুয়ে সে ভাত ডাল দিয়ে খাচ্ছেন।
ক্যামেরা চলছে। ভয়ানক ক্লান্ত, ক্ষুদার্ত সেই পুলিশের কাছে তখন ক্যামেরা কিছুই নয়।চলুক ক্যামেরা, চলুক।
পৃথিবীর ভয়ানকতম অপরাধের সাক্ষী হয়ে আমার সেই সাংবাদিক বড় ভাই, বন্ধু নিউজ করলেন।
ধারাবাহিক প্রতিবেদন। পুলিশের নানা দূভোগ নিয়ে সংবাদ।
ঢাকার রাস্তায় ডিউটিরত পুলিশ কি খায়? কত ঘন্টা ডিউটি করে? পুলিশ ব্যারেকে তাদের ঘুমানোর জায়গা কেমন? শত শত অভিযোগ। এত এত অভিযোগের মাঝে হারিয়ে গেল দুই টাকা পাঁচ টাকা চাঁদা তুলার ফুটেজ।
এই সংবাদ সংগ্রহের সময় একজন পুলিশ বলেছিলেন। একদিন যদি এই রংচটা খসখসে পোশাকটা পড়ে তীব্র রোদ আর শব্দের মাঝে শাহবাগে ঘন্টা তিন ডিউটি করলে আপনাদের পুলিশ সম্পর্কে ধারনা পাল্টে যাবে।
আমি গরমে অস্থির পাতলা পাঞ্জাবি পড়া। পুলিশের পোশাকটায় হাত দিয়ে দেখার সাহস পাইনি। শুধু বুঝতে পেরেছিলাম এই রকম কাপড় দিয়ে বানানো শার্ট পড়ে মানুষ ফ্যানের নিচেও বসে থাকতে পারবে না।
টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার হল। অনেক পুলিশ ধন্যবাদ দিল বড় ভাইকে এই রকম একটা মানবিক সংবাদ প্রকাশের জন্য। যে পুলিশ কর্তারা তাকে সহযোগিতা করল তাদের ধন্যবাদ দিলেন তিনি। মাঝখানে খানিকটা ধন্যবাদ আমাকে দিলেন। বলেছিলেন সাংবাদিক হলে ভাল হত।
না আমি সাংবাদিক হতে পারিনি, আমার সে যোগত্যা হয়নি।
আাজ অনেক বছর পর আমি জানি না। ঢাকায় রাস্তায় ডিউটিরত পুলিশের নীল গাড়িগুলো আজও গরমের দিন ঘেমে কাদাকাদা হয়ে যাওয়া ভাতই বিলি করে কিনা?
পুলিশের পোষাকের কাপড়গুলো আগের থেকে আরো কিছুটা আরামদায়ক হয়েছে কিনা?
এখনো কি পুলিশগুলো ১২/১৩/১৪ ঘন্টা ডিউটি করে?
ডিউটি শেষে ব্যারেটে গিয়ে তারা একটা পরিপাটি বিছানা পায় তো। ক্লান্তি দূর করতে সুখের নিদ্রায় যাবে বলে?
যদি আমার এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর না হয়। তবে বলি এতটা অমানবিক পরিবেশে পুলিশকে রেখে একটা মানবিক পুলিশ প্রত্যাশা করা অন্যায়।
পোষাক খুলে ফেলার পর ঘরে ফেরা সেই পুলিশটা আমাদের কারো বাবা, বন্ধু, ভাই, বান্ধবী,বোন,বউ, স্বামী কিংবা নিকট আত্মীয়। প্রত্যাশা করি শুধুই পুলিশের জন্য নয়, পুলিশ নামক মানুষগুলোর নানা সমস্যার সমাধানের জন্য বছরে দু একটা মানবিক সংবাদ প্রকাশ পাবে।
মানবিক পুলিশ প্রত্যাশী আমরা, একদিন পুলিশের জন্য একটা মানবিক কর্মক্ষেত্র তৈরি করব।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২৩
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: পুলিশদের সম্মন্ধে আমরা নেগেটিভ মনোভাব নিয়েই বড় হয়েছি তাই হয়তো তাদের প্রকৃত খবর আর কেউ নিতে চাই না।
তবে এটা ঠিক এদেশে কর্মরত পুলিশরা সরকারের কাছ থেকে ঠিক মত সুযোগ-সুবিধা পায়না।
লেখাটি দুবার এসেছে ঠিক করে দিয়েন।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১২
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: ঠিক করে দিলাম।
৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:০০
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: খুব ভাল।লিখছেন।
লেখাটা দু'বার হয়ে গেছে। এডিট করে নিন।
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ। এডিট করলাম
৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন- পুলিশ আমাদের বন্ধু।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: প্রতিদিন বলে
৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১২
নিহার আহম্মেদ বলেছেন: আপনি তো শোনালেন ট্রাফিক পুলিশের গল্প। যারা রাস্তায় রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দায়িত্ব পালন করে তাদের গল্প। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা, যারা আরামে আয়েশে চাকরি করে, তারা মানবিক নয় কেন? তারা কেন ঘুষ খায়? কেন সাধারন মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করে? কেন মাদকের সাথে জড়ায়? মাদকাসক্তদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে? বেতন কম তাও তো আর বলতে পারবেন না। তাহলে কেন তারা অবৈধ পথে পা বাড়ায়? আসলে জাতি বেড়ে উঠছে এক অবৈধ পন্থার মধ্য দিয়ে।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: সকল পেশায় ভাল খারাপ আছে। যারা বঞ্চিত তাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে
৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৭
এম এম করিম বলেছেন: নিহার আহম্মেদের সাথে একমত।
৭| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:৪৭
সোহানী বলেছেন: সহমত লিখায়।
যত নীচু পোস্ট তত কষ্ট। তবে এটা মেনেই তারা চাকরী নিয়েছে এবং চাকরী করে যাচ্ছে। কিন্তু কথা হলো তাদের আধা পেটের বেতন, মোটা কাপড়, মোটা জুতার যোগানদার সরকার। সো সে সরকার কি তাদের কথা চিন্তা করে? আর এ আধা পেটের বেতনের পুলিশ তাদের সব পাওনা দেনা আদায় করে নেয় নিরীহ জনগনের থেকে। তাহলে সরকারের ব্যার্থতার দায়ভার কেন আমাদের ঘাড়ে পড়বে????
ভালো থাকুন।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: একটা সমাধানে আসতে হবে
৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৩
রুরু বলেছেন: পুলিশে সৎ আছে?
৯| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৫
গরল বলেছেন: মজার ব্যাপারটা হল এই কূৎসিত মানুষগুলো কয়েক লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে নিজের শখে এই চাকুরী নিয়েছে। কেউ তাকে জোড় করে আই চাকুরীতে ঢুকায় নাই। মানুষ কতটা নীচ, অসৎ, বিবেকহীন, বিকৃত মস্তিষ্কের হলে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে হলেও এই হতভাগ্য চাকুরী নিতে পারে সেটা আমার কল্পনায়ই আসে না।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: কিন্তু আমাদের স্বাথে তাদের পেশাটাকে মানবিক করতে হবে।
১০| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২৪
ফিনিক্স! বলেছেন: সরকারের উচিত, তুলনামুলকভাবে নিচু পদের কর্মকর্তাদের বেতনের দিকে মনোযোগ দেওয়া। দুর্নীতি অনেক ভালো কাজের অন্তরায়।
২৯ শে জুন, ২০১৮ রাত ১১:৪৫
সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেছেন: খুবই জরুরি
১১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৩
মিথ্যা প্রেমের গল্প বলেছেন: ভাল বলেছেন। তবে একটা জিনিশ কি, বর্তমানে পুলিশ দু এক টাকা নেয়। লাক্ষ টাকার দ্যান মারে!
১২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ভালো পোস্ট সন্দেহ নাই।
আমরা পুলিশকে চোর, ঘুষখোর, লুটেরা, চাঁদাবাজ, অপহরণকারী, অপরাধীদের পোষণকারী বলি কথাটা মিথ্যা নয়। তার মানে এই নয় যে এ জন্য পুরো পুলিশ বিভাগকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তারপরও কথা থাকে যে, একজন ব্লগার অনুলেখা বা হাফিজুর রহমান (পুলিশ বিভাগে আছেন), অথবা পুলিশ মেরাজ সর্দার, একজন শের আলী কিন্তু পারেন না পুরো পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে।
গতকাল মুরাদনগর গেছিলাম একটা কাজে। চা খেতে ঢুকলাম একটা স্টলে। দুজন চা খেতে খেতে বলছিলেন যে, তার খুব ঘনিষ্ট এক বন্ধু আছেন থানায়। অপর জন বললেন, পুলিশ তোমার বন্ধু হোক আর আত্মীয় হোক, টাকা ছাড়া কাজ করাইতে পারবা না।
এই হচ্ছে সামগ্রীক পুলিশি পরিচয়।
১৩| ১৫ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৪:৪২
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন: পুলিশদের নিয়ে লেখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন নিরন্তর।
১৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৫১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
এতটা অমানবিক পরিবেশে পুলিশকে রেখে একটা মানবিক পুলিশ প্রত্যাশা করা অন্যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫২
কামরুননাহার কলি বলেছেন: আপনার লেখাটি দু’বার পোস্ট হয়েছে।
লেখাটি ভালো লেগেছে। তবে আপনি যাই বলুন, এই যুগের পুলিশদের আমি পছন্দ করি না।