নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গজলের উৎস সন্ধানে

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৭



শিকারী কুকুর বনের মধ্যে হরিনীকে তাড়া করছে – ভীত হরিন প্রানভয়ে পালাচ্ছে, হঠাৎ তার শিং বুনো ঝোপের মধ্যে আটকে গেল। নিজেকে মুক্ত করার আপ্রান চেষ্টা করেও যখন সে আর বের হতে পারছে না তখন হরিনীর কন্ঠস্বর থেকে আর্তনাদের মত যে আওয়াজ বের হয়ে আসবে সেটাই হল গজলের যথার্থ অভিব্যক্তি। এ আমার একান্ত “গজল” উপলদ্বির অনুভুতি। এক তীব্র অসহায় বোধ, তীব্র কষ্ট থেকে এর জন্ম এবং এর সম্ভাবনা হরিনের শিং এর মত নিজের মধ্যে বয়ে চলেছে সবাই।

গজল এক সময় একটা বিশেষ মহলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্ত সময়ের পরিক্রমায় এর নেকাব তুলে তার সৌন্দর্য্য ধারায় আচ্ছন্ন করছে বিপুল শ্রোতার মনকে। কিছু স্মরনীয় গায়ক গায়িকা তাদের নিজস্ব গায়কী ঢংয়ে আর কন্ঠ মাধুর্য্যে গজলকে সাধারন্যে করেছে বিপুল জনপ্রিয়।গজলের রীতিনীতি নিয়ে গবেষনা করবে গবেষক, আমি এর জন্ম, সৌন্দর্য্য বা বিকাশের দিকে আলাপ করি।



গজল শব্দটি আরবি হলেও ফার্সি ও উর্দূতে এর বিকাশ। গজলের আভিধানিক অর্থ হল “প্রেমালাপ”। সঙ্গীত হিসাবে গজলকে আমরা চিনলেও এর শুরু কিন্ত কাব্য বা কবিতা হিসাবে। গজলের উৎস সন্মধ্যে একটি অনুমান হল গজলের জন্মের আগে ফার্সি ভাষায় রচিত কাওয়ালি ও কত্তল কলবান প্রচলিত ছিল যা ভক্তি রসের জোয়ারে স্রষ্টা প্রেমের দুয়ার খুলে দিত। তারই এক ধারা মানব প্রেমের অভিমূখী হয়ে গজল ধারা সৃষ্টি হল। তবে কাব্য হিসাবে গজল যখন সাহিত্যে স্বীকৃত পেয়েছে সঙ্গীত হিসাবে তখন ও স্বীকৃতি পায়নি। কাব্যকে তখন সুর হিসাবে আবৃতি করার ঋতি ছিল। ফার্সি সাহিত্যের অনূকরনেই উর্দূ সাহিত্যে গজল প্রচলিত হয়। ভারত বর্ষে গজলের শুরু মোগল আমলে। এখানে গজলের প্রবর্তক হিসাবে আমীর খসরুর নাম শ্রদ্বার সাথে স্বরন করা হয়। শুরু থেকেই গজল করুন রসাত্মক প্রেমময় কাব্য। আমীর খসরুর বিশিষ্ট বন্ধু ছিলেন সুলতান নাজিম উদ্দিন বলবন। শোনা যায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমীর খসরু নাজিমুদ্দিন কে গজল শুনাতেন আর দু বন্ধু কেঁদে ভাসাতেন।



গজল গানে কথা বেশি, সুরের প্রাধান্য কম। মূলত হালকা ধরনের গান হলেও সব ধরনের রচনাই এ গানের বিষয়বস্তু হতে পারে। উচ্চভাবপূর্ণ ও গাম্ভীর্য্যপূর্ণ রচনাও কোন কোন গানে দেখা যায়। এ গানে অনেকগুলো চরণ, কলি বা তুক্ থাকে। প্রথম কলি ‘স্থায়ী’ এবং বাদবাকি কলিগুলো ‘অন্তরা’। গজল ভালো গাইতে হলে ভালো ভাষা-জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। টপ্পা ও ঠুমরির মতো গজল প্রধানত কাফি, পিলু, ঝিঝিট, খাম্বাজ, বারোয়া, ভৈরবী রাগে গাওয়া হয়। গজল গানে একটি বিশেষ আবেদন আছে, তাই এ গান শ্রোতার মনকে রসে আপ্লুত করে তোলে। গজল খুবই জনপ্রিয় গান। সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, মীর্জা গালিব, দাগ, জওক, আরজু প্রমুখ অনেক কবি অজস্র সুন্দর সুন্দর গজল রচনা করে গেছেন। সম্রাট জাহাঙ্গীর, সম্রাজ্ঞী নূরজাহান, নবাব ওয়াজেদ আলী শাহর মতো ইতিহাস-প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের রচিত অনেক গজল গানের সন্ধান পাওয়া যায়। বাংলা ভাষায় বেশকিছু গজল রচিত হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা গজল রচনায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন।

গজল সন্মধ্যে একটি কথা আছে গজলেই, ‘বন্দিশ-য়ে-আলফাজ হি হ্যায় নহি/ কাফি গজল কে লিয়ে/ দোয়া বুদ খুনে জিগর ভি চাহিয়ে অসরকে লিয়ে’ – শব্দের বিন্যাস বা সুরের মধুর্য্য দিয়ে তুমি যতই সাজাও তাকে যথার্থ গজল হতে গেলে অন্তত বুকের দুফোটা রক্ত মিশিয়ে দিতে হবে। যে রক্ত হৃদয়ের গোপন দুঃখবোধ বা নিবিড় যন্ত্রনাবোধ থেকে ঝরে পরে। গজলকে অনেক বলেছেন “প্রেমিকের সাথে আলাপ” সে আলাপনে স্বপ্ন-কল্পনা, আশা-আকাক্ষার সাথে মিশে থাকে ব্যার্থতা, হতাশা, নিঃসঙ্গতা। ভালবাসার তীব্র আবেগ, কামনার উদ্দামতা, উপলদ্বির গভীর থেকে কাব্যের ভাষাকে আশ্রয় করে জন্ম নেয় “গজল”। ভালবাসার এক প্রগাঢ় নেশা, সুরার সাথে একে মিলিয়েছেন ওমর খৈয়াম। জীবনে তার প্রার্থিত ছিল যৎসামান্য রুটি, পূর্ণপাত্র সুরা, পদ্যগ্রন্থ আর একজন সাকী। আবার প্রেমে বঞ্চিত অনেকেই সুরার নেশার কাছে আত্নসমর্পন করে। যার ফলে গজলে প্রেমের পাশাপাশি এসেছে সুরা এবং পান পাত্র ভরিয়ে দিতে মদির দৃষ্টিপাতে হৃদয়ে নেশা ধরিয়ে দিতে অনেকেই হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাকীর প্রতি। এই সাকী কারো কারো দৃষ্টিতে সঙ্গিনী, কারো দৃষ্টিতে মানসী, কারো দৃষ্টিতে নারী। কোন কোন গোষ্ঠীর মতে এই সাকী হল স্রষ্টা।



ও ঔর হোঙ্গে যো পীতে হ্যায় বেখুদিকে লিয়ে
মুজেসে চাহিয়ে থোরিসে জিন্দেগীকে লিয়ে

জিগর মুরদাবাদী

ওরা আলাদা জাতের লোক যারা সুরা পান করে জীবন কে ভূলে যাবার জন্য, আমার তো সুরার প্রয়োজন হয় জীবনকে ফিরে পাবার জন্য

গজল গানের কলিগুলোর অর্থ প্রায়ই দ্ব্যর্থবোধক। প্রেম যখন পুরুষ বা নারীর প্রতি নিবেদিত হয় তখন সে গজল মানব-প্রেম বা পার্থিব-প্রেম, আবার প্রেম যখন স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয় তখন তা আধ্যাত্মিক প্রেম। তাই গজল গান এক ধরনের ‘ভাব-সঙ্গীত’ বলেও পরিচিত।

গজলের আরেকটি রূপও আছে। সে রূপটি অন্য কোন গানে নেই। আবৃত্তি আকারে গজল পরিবেশন। এসব ধর্মই গজল গান শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভুবনে আলাদা জাত হিসেবে গণ্য।



গজল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এক ব্যতিক্রমধর্মী গান। এ গানের ‘ভাষার কাব্য ভাব, রাগের স্বর বিন্যাস ও তালের ছন্দ মাধুর্য্য এক অনির্বাচনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে।’

গজল গানের বাণীতে সুর-মিশ্রণে যেসব বক্তব্য ধরা পড়ে তা অনেকটা এরূপ : ১. একজন অপরজনের কাছে নিজেকে হেয় করে অন্যকে বড় করে তুলে ধরে। ২. বাঞ্ছিত মানুষটিকে আয়ত্তে না পেয়ে নিজের জীবনকে ধিকৃত করে। ৩. প্রিয়জনের অদর্শনে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। ৪. প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রাণ বিসর্জনের সংকল্প করে। ৫. আনন্দে বা দুঃখে সুরা সিন্ধুতে নিমজ্জিত হয়। ৬. প্রেমে অন্ধ হয়ে উন্মত্ত অবস্থায় পতিত হয়। ৭. প্রেমাম্পদের স্তুতিতে বিভোর হয়ে পড়ে। এগুলো হল পার্থিব প্রেমের উপকরণ। অপরদিকে ভগবৎ প্রেমের প্রকাশও রয়েছে গানের বাণীতে। ঈশ্বরের কাছে মান-অভিমান, ঈর্ষা-ঈপ্সা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি ও উদ্বেল-উচাটন মূর্ত হয়ে ওঠে গানে।

গজল গানের প্রকৃতি কোমল, ভাবপ্রবণ ও সংবেদনশীল বলে তার পরিধির ক্ষেত্র কিছুটা সীমিত। এ ক্ষেত্রে তিনটি পর্যায় দেখা যায়। যেমন: কাব্যের ক্ষেত্রে, রাগের ক্ষেত্রে এবং তালের ক্ষেত্রে।



গজল গান দুটো পঙ্ক্তি নিয়ে রচিত। প্রতিটি খণ্ডকে ‘শের’ বলা হয়। অনেকগুলো ‘শের’ নিয়ে গজলের অবয়ব। শের কখনও একই বক্তব্য নিয়ে রচিত। আবার এতে কখনও বিভিন্ন বিষয়বস্তুর উপস্থাপনা দেখা যায়। মূল কথা, গজলের কাব্য ভাবই মুখ্য। ভাষার লালিত্য, শব্দের ঝঙ্কায়, ছন্দের মাধুর্য গজলের বৈশিষ্ট্য। গজলের প্রথম শেরকে স্থায়ী এবং অন্যসব শেরকে ‘অন্তরা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। গজল গানে মূলত কাব্যিক ভাব প্রকাশিত।

রাগের ক্ষেত্রে গজল যে কোন রাগেই গীত হতে পারে। এর জন্য নির্দিষ্ট কোন রাগ নেই। তবে যেসব রাগেই গজল পরিবেশিত হয় সেসব রাগে শৃঙ্গার রস সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। তাই কাফি, পিলু, খাম্বাজ, ভৈরবি প্রভৃতি চটুল রাগের ব্যবহার গজলে বেশি দেখা যায়। তাই বলে দরবারি কানাড়া, মিয়া-কি-মল্লার, বিলাসখানি টোড়ি, চন্দ্রকোষ প্রভৃতি গম্ভীর চালের রাগেও গজল পরিবেশনে কোন বাধা নেই। তবে দ্রুপদ বা খেয়ালের মতো তাল, বাঁট করা হয় না এবং স্থায়ী ছাড়া সবগুলো অন্তরা একই সুরে গাওয়া হয়।



তালের ক্ষেত্রে গজল পরিবেশনের পরিধি কিছুটা সীমিত। কাব্যনির্ভর গান বলে গজলে কোন কঠিন তাল ব্যবহার হয় না। তাতে গজলের কাব্যিকভাবে অন্তরায় সৃষ্টি হয়। তাই স্বল্পমাত্রা আর সরল ছন্দের কাহারবা ও দাদরা তালেই বেশিরভাগ গজল গীত হয়। তালের ক্ষেত্রেও কোন ধরনের কূটলয়কারী বা তেহাই প্রয়োগ করা হয় না এবং গজল প্রধানত মধ্য লয়ে পরিবেশিত হয়।

গজল গান মোটামুটি দুই পক্ষে বিভক্ত: ১. সাহিত্য পক্ষ, ২. সঙ্গীত পক্ষ। সাহিত্য পক্ষে কাব্য মূল ভূমিকা পালন করে। কাব্য আবার দুভাগে বিভক্ত: ১. তগজ্জুল, ২. তসব্বুফ। তগজ্জুল পর্বে মানব জাতির লৌকিক প্রেমের প্রাধান্য থাকে। এবং তসব্বুফ পর্বে থাকে অলৌকিক প্রেমের প্রাধান্য। সে সঙ্গে এ পর্বের আদিতে রহস্যবাদ ও অন্তে অদ্বৈতবাদের সমন্বয় প্রধান গুণ হিসেবে গণ্য। যার ফলে ঈশ্বরের কাছ থেকে ভক্তের পরম প্রাপ্তি ও চরম শান্তি লাভ হয়ে থাকে। গজল গানের সঙ্গীত পক্ষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

এ অংশও দুই ভাগে বিভক্ত: ১. রাগ পর্ব, ২. তাল পর্ব। রাগ পর্বে শৃঙ্গার রসের সহায়ক রাগগুলো গজল গানে ব্যবহৃত হয়। গজল গানে রাগের শুদ্ধতা বজায় থাকে না। কারণ গজলে কাব্য ভাব তুলে ধরেন গাইয়েরা। এক জন নারী তখনই সুন্দরী হিসাবে গনিত হবে যখন তার রুপের মাধুরীর সাথে হৃদয়ের সৌন্দর্য্য মিলিত হবে। গজলের রচয়িতার মধ্যে মীর তকি, মির্জা গালিব, দাগ, দেহলভী, ইকবাল, বাহাদুর শাহ জাফর, ফিরাক গোরাখপুরী, সাহিব পাঞ্জি, সারসার সালানী, শাহীর লুধিয়ানভী, খয়াল কানপুরী, জিগর মুরদাবাদী, ফৈজ আহমদ ফৈজ, হরিচন্দ্র আখতার, আহসান দানিশ, আরজু লখনবি স্মরনীয়। গজল শেষে যিনি নিজের পরিচয় দিতেন “ম্যায় হু বেগম আখতার ফৈজাবাদকি”। জীবিতকালে তিনি যেমন ছিলেন গজল সম্রাজ্ঞী, মৃত্যুর পর ও তিনি স্বমহিমায় বিরাজিত।

সবশেষে আমার প্রিয় একটা শের

খোদাসে হুস্নুনে একদিন এ সওয়াল কিয়া
জাহাঁমে তু মুজে কিউ না লাজওয়াল কিয়া
মিলা জবাব তসবীরখানা হ্যায় দুনিয়া
সবে দরাজে আদম কা ফসানা হ্যায় দুনিয়া
হুই হ্যায় রঙ তগায়ুরসে যব নমুদ উসকি
ওহি হাসিন হ্যায় জাঁহামে হ্যায়, হকিকৎ জিসকি।
কহি করিব থা এ গুফতুগ কমরনে শুনি
ফলগপে আম হুই আখতারে সহরনে শুনি
সহরনে তারোঁসে শুনাই তারোঁনে শবনমকো
ফলগকি বাৎ বাতাদি জমিকে মহরমকো
ভর আয়ে ফুলকে আঁসু পয়ামে শবনমকে,
কলিকা নান্নাসা দিল খুল হো গিয়া গমসে
--- কলীম

ঈশ্বরকে একদিন প্রশ্ন করল রূপ – হে ঈশ্বর, ধরাতে আমাকে তুমি অমর করোনি কেন? ঈশ্বর উত্তর দিলেন, - এ পৃথিবী হল পরিবর্তনশিল চলচিত্রের প্রেক্ষাগৃহ, অন্তহীন রাত্রির চলমান কাহীনি হচ্ছে পৃথিবী। স্বল্পস্থায়ী জীবন ই হল রূপের আয়ু, এ সত্যই রুপকে এত আকর্ষনীয় করেছে, করেছে মুল্যবান। অনিত্যতাই সত্য, আর সত্যই সুন্দর। অমরত্ব কাউকে আমি দেইনি। জন্ম মানেই মৃত্যু। আদির পর অন্ত। যৌবনের পর জরা। ঈশ্বর ও রূপের কথোপকথন শুনে ফেলল চাদঁ। সে কাছেই ছিল। চাঁদ এসে সারা আকাশকে শুনিয়ে দিল সে কথা। সারা আকাশে রটে গেল রূপ ও জীবনের স্বল্পয়ুর কঠিন সত্য। ঊষার প্রথম তারা সে খবরটা শিশিরের কানে কানে বলে ছিল। শিশির সে খবর নিয়ে এল পৃথিবীর বুকে। শিশিরের কাছে সে দুঃসংবাদ শুনে ফুলের চোখ জলে ভরে গেল। কাছেই ছিল কলি। এ খবর শুনতেই দুঃখে হৃদয় ফেটে তার লাল হয়ে গেল। মানে ফুল হয়ে ফুটে উঠল সেই বিদীর্নহৃদয় কলি।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৪

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: ++++++্

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৭

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৭

গ্রাম্যবালিকা বলেছেন: গজল মানে প্রেমালাপ! জানতাম না।

আপনার প্রিয় শের টি অনেক সুন্দর শের শায়েরী।

ভালো লেগেছে খুব। আমার অনেক প্রিয় একজন ব্লগার আপনি। :)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৫

শের শায়রী বলেছেন: এত আনন্দ আমি কোথায় রাখি বালিকা, আপনাদের মত কিছু উদার ব্লগারদের জন্য আমার মত কিছু নবীশ লেখায় উৎসাহ পায়। আপনাদের উদার উৎসাহে আমার এ পর্যন্ত আসা। আমার কৃতজ্ঞতা জানুন। আপনি এত সুন্দর করে আপনি আমকে বললেন, আমি দেখুন নিজে থেকে যে কোন ধন্যবাদ দেব সেটাও পারছিনা। আমার এ দৈন্যতাকে মার্জনা করুন। কি বলব, কি বলব.....আচ্ছা একটা শের শায়রী শুনাই

ময়নে পুছা চাদসে ফলগ ইয়া হো জমি
মেরে ইয়ারসা হাসিন
চাঁদ হ্যায় কাহি?
চাদনে কহা চাঁদনী কি কসম, নেহি, নেহি, নেহি।

খুবসুরৎ তুনে যো পাই
লু্ট গই খুদাকি সব খুদাই
মীর কি গজল কহুঁ ইয়া তুমে
কহু ম্যায় খৈয়াম কি রুবাই
ম্যায়নে পুছা শায়েরোঁসে এইসি দিলকসি
শের হ্যায় কাঁহি ?

শায়েরোঁনে কহা শায়েরেকি কসম নেহি নেহি নেহি।

চাল হ্যায় কি মৌজ কি রওয়ানি
আঁখ হ্যায় কি ময়কাদোঁকি রানী
হোঁট হ্যায় কি পাখড়ি গুলাবকি
জুলফ হ্যায় কি রাত কি কাহানি
ম্যায়নে পুছা বাগসে কি এইকি দিলখুশি
ফুল হ্যায় কি কাঁহি

বাগ কি কহা হর কলি কি কসম নেহি নেহি নেহি।
---আনন্দ বক্সী

আমি চাঁদ কে প্রশ্ন করলাম, বলো তো আকাশে বা পৃথিবীতে আমার প্রিয়ার মত চাঁদ আছে কি? চাঁদ জবাব দিল চাঁদনির দিব্যি খেয়ে বলতে পারি নেই নেই নেই। রূপ তুমি যে পেয়েছো মনে হচ্ছে ঈশ্বরের সব রুপ লাবন্যের জোলা চুরি হয়ে গেছে। মীর এর রচিত গজল বলব কি তোমায়? নাকি বলব ওমর খৈয়াম এর কোন রুবাই? কবিদের আমি প্রশ্ন করলাম আমার প্রিয়ার মত কবিতা আছে কোথাও? কবিদের জবাব এল- যেন ঢেউ এর ঊচ্ছলতা, তোমার চোখ যেন সুরাবিপনীর রানীর মদির নেত্র, তোমার ঠোট যেন গোলাপের পাপড়ি আর তোমার চুল দেখে যেন মনে হয় এ যেন চুল নয়, এ যেন শত শত রহস্যঘন রাত্রির কাহিনী। বাগান কে প্রশ্ন করলাম, আমার প্রিয়ার মত হৃদয় মনোহরক ফুল আছে কি কোথাও? বাগান বলল প্রতিটি কলির দিব্যি খেয়ে বলতে পারি, নেই নেই নেই।।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
নিক্লনা বেনাকাব , জামানা খারাব হেয়
ওর উছপে ইয়ে সাবাব জামানা খারাব হেয়

পাঙ্কজ উধাস এর এই গজল টি আমার কাছে দারুন লাগে

আর আমি নিজেও গজলের খুব ভক্ত । পোস্টে ++++++++

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩২

শের শায়রী বলেছেন: ভাই আপানার কাছে সব দিক দিয়ে ঋনী, আপানার লেখা অনুকরন করার ব্যার্থ চেষ্টা করি, আপনার উদারতা আমাকে ভাবতে ভালবাসায় যে আমি কিছু একটা লিখছি আপনার পরিমিত বোধ আমাকে আনন্দ দেয়। ছোট্ট একটা শের আপনার জন্য

দুশমনি জমকর করো, এ গুঞ্জাইশ রহে
যব কভি হাম দোস্ত হো যায়েঁ তো শরমিন্দা না হো।
--- জগ্ননাথ আজাদ

শত্রুতা করার সময় হে বন্দ্বু, একটু ভেবেচিন্তে কর। দেখো এত নিষ্ঠুর ভয়ংকর শত্রুতা কর না যে পরে যদি বন্দ্বু হয়ে যাই তখন লজ্জিত হতে হয়। তোমার শত্রুতার মধ্যে একটু ছেদ রেখ, সুযোগ রেখ বন্দ্বু। যতির পর পুরানো বন্দ্বুত্ব ফিরে পেলে লজ্জা নেই, কিন্তু শত্রুতার চরমে যদি আজ বন্দ্বুত্ব ছিন্ন করে ফেল, পুর্নমিলনের সময় লজ্জায় মুখ তোলা যাবে কি করে। সুতারাং হে বন্দ্বু, শত্রুতা করবার সময় সম্পর্কে ছেদ রেখ, ছিন্ন করে ফেল না

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৬

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: ইধার জিন্দেগীকা জানাজা উঠেগা
উধার জিন্দগী উনকো দুলহান বানেগি
কায়ামাত সে পেহলে কায়ামাত হে ইয়ারে
মেরে সামনে মেরি মাইয়াত সাজেগি


দুই চাইরডা লিংক দেন না.............

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৪৬

শের শায়রী বলেছেন: লেখক বলেছেন: ও কৌন হ্যায় জিনহে তওবা কি মিল গই ফুরসত
হামে গুনাহ ভি করনে কি জিন্দেগী কম হ্যায়
--- আনন্দনারায়ন মুল্লা

ওরা কারা যাদের পাপ করার পর প্রায়শ্চিত্ত করার জন্যও সময় জুটে যাছে? আমার তো জীবন এত স্বল্প লাগছে যে, এক আধ-টুকরো যে পাপ করবো, তার ও সময় জুটছে না!

সালাম জানবেন। নিচে আমি কয়েকটি আমার ব্লগে প্রকাশ করেছিলাম, আরো কিছু আছে, শীঘ্রি পেয়ে যাবেন। আনন্দম। আনন্দম
Click This Link

৫| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
দুশমনি জমকর করো, এ গুঞ্জাইশ রহে
যব কভি হাম দোস্ত হো যায়েঁ তো শরমিন্দা না হো।


ভাই কি শের দিলেন আমার মাথা পুরাই আউলাইয়া গেল । আর যা ব্যাখ্যা দিলেন আপনারে গজলের গুরু মেনে নিলাম ।

অউর হামে উস পার জানা হেয় সাকি
যাহা কই দুস্মান না হও স্রেফ দোস্ত হাম রাহে
অউর মুঝে আব জামকার পিলাতে যা তূনে
কিউকে মুঝে পিনা আতা নাহি , মুঝে পিনা সিখা যা সাকি ।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:২০

শের শায়রী বলেছেন: জিসনে দিল খোয়া ঊসী কো কুছ মিলা,
ফায়দা দেখো উসী লুকসান মে
---সারসার সালানী

যে হৃদয় হারিয়েছে সেই কিছু পেয়েছে। এটাই পৃথিবীর একমাত্র লোকসান যাতে আসলে লাভই ভাগ্যে জুটে যায়।

ভাল থাকবেন ভাই।

৬| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৬:১১

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++++++++++

ক্লাসিক একটা পোস্ট ভ্রাতা । অসাধারণ হয় আপনার পোস্টগুলি আর অবশ্যই ভিন্নধর্মী :)

ভালো থাকবেন সবসময় :)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:২৪

শের শায়রী বলেছেন: কেয়া বুরী শয় হ্যায় মুহব্বত কি ইলাহী, তওবা
জুম’ না কর ওহ খতাবার বনে বৈঠৈ হ্যায়।

--- জহীর

ভালোবাসা কি অভিশপ্ত বস্তু হে ঈশ্বর তুমি সৃস্টি করেছো। অন্যায় না করেও সর্বদা অপরাধী সেজে বসে থাকতে হয়। সত্যি ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়।

ভাল থাকবেন ভাই। আনন্দ। আনন্দ

৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৩৬

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: আরেক টা অসাধারন পোস্ট। গোলাম আলী সাহেব, খা সাহেব এদের গজল শুনতে শুনতেই তো বড় হলাম। আর আমার আম্মু আব্বুও নজরুলের গজলের বেশ ভক্ত।

প্রথম প্যারায় গজলের অভিব্যক্তিকে হরীনির অনুভুতির সাথে তুলনা করেছেন। আমার মনে হয় গজলে ভীতির চেয়ে আকুলতার আপিল টাই বেশি।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ তন্ময় ভাই।

৮| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

নীল তারেক বলেছেন: গজল আসলেই করুণ রসে বাধা সুর। আপনার লেখাটি ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

শের শায়রী বলেছেন: আপনার ভাল লেগেছে জেনে আনন্দ পেলাম। ভাল থাকুন।

৯| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২১

প িথক বলেছেন: ও সেরাপ কেয়া যিশে নেশা না হুয়া। অসাধারন পোষ্ট পড়ে আনন্দ পেলাম।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২১

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

১০| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

রায়হান কবীর বলেছেন: nice post.

plus

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮

শের শায়রী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

১১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯

কপোতাক্ষের তীরে এক অসামাজিক বলেছেন: কিছু গজলের লিনক দিলে ভালো হতো

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৩২

শের শায়রী বলেছেন: লেখক বলেছেন: দূঃখিত ভাই আমি আসলে অন লাইনে খুব একটা গজল শুনি না। তাই আমার এ ব্যাপারে খুব একটা ধারনা নাই। ভাল থাকবেন

১২| ২৮ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: চমৎকার লেখা। পড়ে মন ভরে গেলো। যদি সম্ভব হয় একটু সংশোধন করে নেবেন। গজলের সাথে উমর খৈয়ামের কোন সংস্রব নেই। উমর মূলতঃ সর্বকালের সেরা গনিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একজন। কবি হিবাবে নিজ মুল্লুকে অতি সামান্য পরিচিত ছিলেন। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ কবি এডোয়ার্ড ফিটজেরাল্ড উমরের রুবাই ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করার পর তিনি সর্বকালের সেরা কবিদের একজন হিসাবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেন। উমরের পরবর্তী যুগের পারস্যের বিখ্যাত কবি মাওলানা রুমি, শেখ সাদী (রঃ), হাফিজ প্রমুখ গজল রচয়িতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন।

গজল আরবি দীর্ঘ কবিতা ক্বাসিদা ( ১০০টি পর্যন্ত দ্বিপদী/শের এর সমন্বয়ে রচিত) থেকে এসেছে বলে বেশিরভাগ গুণীর অভিমত। ক্বাসিদা রচয়িতাদের মধ্যে প্রশ্নাতীতভাবে সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ইমরুল কায়েস। আপনি যথার্থই বলেছেন, গজল মূলতঃ ফারসিতেই বিকশিত হয়েছে। এরপর সবচেয়ে ভালো গজল রচিত হয়েছে উর্দুতে। উর্দুর বাইরে এই উপমহাদেশে শুধু বাংলাতেই গজল রচিত হয়েছে কবি নজরুলের কল্যাণে। এছাড়া নেপালি ভাষায় গজল আছে। আর আছে তুর্কি ভাষায়। এ অঞ্চলে আর কোনো ভাষায় গজল নেই।

২৮ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৩২

শের শায়রী বলেছেন: আপনার মন্তব্য আমার এই পোষ্ট কে পূর্নতা দিল। অশেষ কৃতজ্ঞতা জানবেন।

১৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:২৩

মিরোরডডল বলেছেন: শিকারি কুকুর আর হরিণীকে নিয়ে শায়রীর গজল উপলব্দির অনুভূতিটা ভালো লাগলো ।

“গজল হতে হলে বুকের দুফোটা রক্ত মিশিয়ে দিতে হবে । যে রক্ত হৃদয়ের গোপন দুঃখবোধ বা নিবিড় যন্ত্রণাবোধ থেকে ঝরে পড়ে” ......অসাধারণ !!! গজলের বক্তব্যগুলোর সুন্দর উপস্থাপন ।

জগজিৎ এর গজলে আমি আসক্ত । গজল ইটসেলফ একটা নেশা । জগজিৎ চিত্রার পাশাপাশি অনুপের কিছু গজলও ভালো লাগে ।

জগজিৎ নিশ্চয়ই শোনা হয়, তাই অনুপের একটা প্রিয়
দিলাম ।

১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৩৭

শের শায়রী বলেছেন: বোন, বড়ে গোলাম আলী শোনেন, অনুপও অনেক প্রিয়। আপনার দেয়া গজলটা আমার অনেক প্রিয়। যে হেতু গজলের এক্সপ্লানেশান ভালো লেগেছে আশা রাখি এই পোষ্ট টাও ভালো লাগবে আমন্ত্রন রইল শের শায়রী পাঠে এবং মন্তব্যে অশেষ কৃতজ্ঞতা

১৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯

মিরোরডডল বলেছেন: থ্যাংকস ট্রান্সলেট করে দেয়ার জন্য । যেমন সুন্দর শায়রীগুলো, ছবিগুলোও সেরকম সুন্দর হয়েছে ।
কোনটা রেখে কোনটার কথা বলবো । সবগুলো শায়রী এতো বেশী সুন্দর !

“ওরা আলাদা জাতের লোক যারা সুরা পান করে জীবনকে ভুলে যাবার জন্য , আমার তো সুরার প্রয়োজন হয় জীবনকে ফিরে পাবার জন্য” ...... অসাধারণ !!!!

“যে হৃদয় হারিয়েছে সেই কিছু পেয়েছে , এটা পৃথিবীর একমাত্র লোকসান যাতে আসলে লাভই ভাগ্যে জুটে যায়” ......... সো ট্রু !!!

এতো চমৎকার একটা লেখার জন্য

২৮ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩

শের শায়রী বলেছেন: চমৎকার গজলের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ মিরোরডডল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.