নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অমরত্বের লোভ কখনো আমাকে পায়না। মানব জীবনের নশ্বরতা নিয়েই আমার সুখ। লিখি নিজের জানার আনন্দে, তাতে কেউ যদি পড়ে সেটা অনেক বড় পাওয়া। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আর কিছুই নেই।

শের শায়রী

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই।।

শের শায়রী › বিস্তারিত পোস্টঃ

পোষ্টারের জন্ম হল কেমন করে

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪১



আধুনিক বিজ্ঞাপনের জগতে এক বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে পোষ্টার। ১৪০ বছরের ও বেশী ‘পোষ্টার আর্টের’ বয়স, এই জগতের ইতিহাস জানতে হলে ফিরে যেতে হবে সেই ১৮৬০ সালে। পোষ্টারকে শীল্প হিসাবে পরিচিত করেছে জুল শেরেটা। ‘থ্রি ষ্টোন লিথোগ্রাফিক প্রসেস’ শেরেটের এক বিশাল আবিস্কার। লাল, হলুদ ও নীল রংয়ের তিনটি পাথর রাঙিয়ে তার ওপর কালি মাখিয়ে রামধনুর সাতটি রঙই তৈরী করে ফেলেছিলেন শেরেট। খুব সাবধানে সেই পাথর বসিয়ে ছাপা হত পোষ্টার। এভাবে খুব তাড়াতাড়ি কম খরচে পোষ্টার তৈরী করা যেত।



পাথর বা ধাতুর পাত থেকে ছবি ছাপার পদ্বতি ‘লিথোগ্রাফি’ কিন্ত শুরু হয়েছিল ১৭৯৮ সালে। সে সময় প্যারিস হয়েছিল শিল্পকলা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। ছবির জগতে আসছে পরিবর্তনের জোয়ার।পাশাপাশি মধ্যবিত্ত সমাজে বাড়ছে ভোগ্যপন্যের চাহিদা। মানুষের কাছে নিজের উৎপন্ন জিনিসের চাহিদা বাড়ানোর জন্য ব্যাবসায়ীরা বেছে নিলেন সহজ ভাষায় কম খরছে চিত্র বিচিত্র পোষ্টার। কিন্ত ওই সময় কাঠের আর ধাতব প্লেট ছিল খুব দামী যেগুলো বার কয়েক ব্যাবহার করা যেত। এক দরিদ্র অভিনেতা এই নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলেন, তিনি বললেন প্রিন্টিং প্লেটগুলো হোক লাইমষ্টোনের, তাতে জিনিস্টা বার বার ব্যাবহার করা যাবে আর বিজ্ঞাপনদাতার খরচ ও কমবে। এই অভিনেতার নাম অ্যালয় সেনফেলতার। একে বলা হয় লিথোগ্রাফির জনক।



১৮৩০ সালের মধ্যে লিথোগ্রাফির মাধ্যমে ইংল্যান্ড ও আমেরিকায় রমরম করে চলতে লাগল পোষ্টার। প্যারিস, মিলান, বার্লিনের রাস্তাঘাট পোষ্টারে ছেয়ে গেল, এই পোষ্টারের সর্বপ্রথম ক্রেতা ছিল সার্কাসের লোকেরা। তবে খুব একটা উন্নত মানের হতনা এই পোষ্টার।বিশেষ রংয়ের ব্যবহার বা নকশা কিছুই এতে থাকত না। শেরেট রং ও লেখায় আনলেন নতুন ধারা। ১৮৬৭ সালের মধ্যে তিনি পোষ্টারে ছাপিয়ে ফেলেন প্যারিসের নৈশজীবন চিত্র ও তৈরী করলেন বিখ্যাত অভিনেত্রী সারাহ বার্লহার্টের অনিষ্ঠানের একটি বিজ্ঞাপন। ১৮৭০ সালের মধ্যে পোষ্টার মুভমেন্ট ছড়াতে শুরু করল সারা বিশ্ব। ১৮৮৯ সালে শিল্পে নববিপ্লব আনার জন্য পেলেন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সন্মান ‘লিজিয়ঁ দ্য’নর’।



১৮৯০ সালে ফ্রান্স তখন পুরো আক্রান্ত পোষ্টার ম্যানিয়ায়, সে সময়টিকে বলা হয় ‘লা বেল এপোক’ যার অর্থ ভাল সময়। ১৮৯১ সালে পোষ্টারকে সর্ব প্রথম যথার্থ শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন বহু সমালোচিত অসাধারন চিত্রকর অঁরি তুলো লেত্রেক। তার আকাঁ ‘মুলা রুজ’ নাইট ক্লাবের ক্যানভাসে নৃত্যরত এক নর্তকীর ছবি একেছিলেন। হুহু ক রে বাড়তে লাগল পোষ্টারের চাহিদা আর পোষ্টারের কারবারিদের সংখ্যা।



নানা জায়গায় আয়োজন হতে লাগল পোষ্টারের প্রদর্শনী। ইতালীতে তৈরী হতে লাগল ফ্যাশন আর অপেরা সংক্রান্ত পোষ্টার, স্পেনে বুল ফাইট সংক্রান্ত, হল্যান্ডে সাহিত্য বিষয়ক, ব্রিটেন ও আমেরিকায় সার্কাস বিষয়ক পোষ্টার সবার দৃষ্টি কেড়ে নিল। প্রথম পোষ্টার প্রদর্শনী হয়েছিল ইতালী ও গ্রেট ব্রিটেন ১৮৯৪ সালে। এরপরের এগজিবিশন ১৮৯৫ সালে জার্মানিতে, ১৮৯৭ র গোড়ার দিকে রাশিয়ায়, পোষ্টার নিয়ে ফ্রান্সের রিম শহরের প্রদর্শনী দর্শক ভোটে সেরা ছিল।



বিভিন্ন দেশের পোষ্টারের বিশেষত্ব বিভিন্ন ধরনের, ডাচ পোষ্টারে যেন সবসময় একটা সুশৃঙ্খল নিয়মানুবর্তিতার ছাপ, নাটকীয়তায় ভরা ইতালির বিশাল আকৃতির পোষ্টার। জার্মানের পোষ্টারে রয়েছে মধ্যযুগীয় ভাব আর সোজা সরল আকার ধরন। এর মধ্যেই শুরু হল “আর্ট ন্যুভো মুভমেন্ট”। চিত্রশিল্পে এক নতুন ধারা, শুরু হল প্রতীকী চিহ্নের ব্যবহার। চেকোশ্লাভাকিয়ার আলফাস মুশো ছিলেন এই ঘরানার শিল্পের পথিকৃত। ১৯০১ সালে লোত্রেকের অকাল মৃত্যুর পর পোষ্টার শীল্পে এল বিশাল শুন্যতা। এর আগেই মুশা ও শেরেট পোষ্টার আকা ছেড়ে মন দিয়েছেন ছবি আকায়। এই শূন্যতাকে পূরন করতে এগিয়ে এলেন লিয়োনেত্তা কাপ্পিয়েল্লো নামে এক ইতালিয় চিত্রশিল্পী। আধুনিক চিন্তা ভাবনার পোষ্টার অলঙ্করন শুরু হল তার হাতে।



প্রথম বিশ্বযুদ্বের পর আবার বদলে গেল অঙ্কনশীল্পের ধারা। প্রতিষ্ঠিত হল ‘আর্ট ডেকো’। শব্দটি এসেছে “ডেকোরেটিভ আর্ট” থেকে। তার মর্ডান আর্টের পোষ্টারের ঢুকে গেল চলতি ধারার কিউবিজম, ফিউচারিজম এর এক্সপ্রেশনিজম। ১৯০৫ সালে জার্মানিতে মর্ডান আর্টের ষ্টাইলকে বলা হত “প্লাকাত ষ্টিল”। এটি চালু করেন বার্লিনের শিল্পী লুসিয়েন বার্নহার্ট। একই সময় প্যারিসে আর এক শিল্পীর খুব নামডাক তার নাম কাসান্দ্রে। ১৯২৩ সালে তিনি কিছু আর্ট ডেকো পোষ্টার তৈরী করে পেলেন “ফাদার অভ মর্ডান অ্যাডভার্টাইজিং” খেতাব।



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ব শুরু হল এবং সেই সঙ্গে প্রায় শেষ হয়ে গেল লিথোগ্রাফিক পোষ্টারের যুগ। এল ফটো অফসেট প্রিন্টিং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় চালু ছিল সুইস “সাশপ্লাকাট” ষ্টাইল যার সাথে খুব মিল ছিল প্লাকাত ষ্টাইলের। ১৯৫০ সালের মধ্যে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেল লিথোগ্রাফিক পোষ্টার, আমেরিকা আর পোল্যান্ডে ভীষন ভাবে চালু হল “সুররিয়ালিষ্টিক” ধাচের পোষ্টার, ১৯৬৭ সালে এই আঙ্গিকে পপ গায়ক বব ডিলানের অ্যাল্বাম কাভার বের করে বিখ্যাত হন শিল্পী মিলটন গ্লেসার। উলফগ্যাং ওয়েইনগার্ট নামে এক শিক্ষক অফসেট প্রিন্টিং এর ওপর নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে পোষ্টারে আনলেন ‘গ্রাফিক ষ্টাইল’।



বিগত ১৪০ বছরে পোষ্টারের ধাচে এসেছে এমনই ধারার নানা পরিবর্তন। ভিন্টেজ পোষ্টারের মূল্য আজ অসীম। ১৯৬৮ সালে লস এঞ্জেলসের কোজি থিয়েটারের মালিকের সংগ্রহে ১৯৩০ থেকে ৫০ এর দূর্লভ সব পোষ্টার ছিল। তিনি সেগুলো বেচে দেন মাত্র ২৫০০০ ডলারে। আজ কয়েক লাখ ডলার খরচ করলেও এগুলো আর মিলবেনা।



১৯৬৩ সালে প্যারিসে এক সাহিত্য পত্রিকার অফিস মেরামতের কালে শ্রমিকেরা উদ্বার করে তুলো লেত্রেকের আকা কিছু অসাধারন পোষ্টার। ১৯৭০ সালে সেগুলো বিক্রি করে দাম পাননি ব্যাবসায়ীরা। লোত্রেকের “দিভান জাপোনাইস” এর একশো কপির এক একটি পোষ্টার সেসময় বিক্রি হয় মাত্র ৮০০ ডলারে। আজ তার এক একটির দাম ৩০০০০ ডলার। পোষ্টার আজো চিত্রশীল্পের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ভাবে গ্রহনযোগ্য, সর্বজন গ্রাহ্য। চিত্র সমালোচক জেকে হাইসমানস একাথা ভেবেই বোধ হয় বলেছিলেন পোষ্টার হল ‘জার্নালিজম অভ পেইন্টিং’।



সহায়তাঃ অনুরাধা স্যান্নাল এর একটি নিবন্ধ





মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫০

েমাঃ রফিকুল ইসলাম বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট, অনেক অজানা বিষয় জানতে পারলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

শের শায়রী বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

১১স্টার বলেছেন: ভালো লাগলো

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮

তামিম ইবনে আমান বলেছেন: আপনার পোস্ট গুলো তো সেরকম

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

শের শায়রী বলেছেন: ভাই ভাল বললেন না খারাপ বললেন? যাই বলেন ধন্যবাদ জানবেন :) :)

৪| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫

তোমোদাচি বলেছেন: ভাল লাগল পোষ্টারের ইতিহাস

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২১

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রো

৫| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১৯

নিয়েল ( হিমু ) বলেছেন: +++++++

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪

শের শায়রী বলেছেন: থ্যাঙ্কস ব্রো

৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

তামিম ইবনে আমান বলেছেন: সব কথা কি আর খুলে বলতে হয়। সেরকম মানেই সেইরকম

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

মুক্তির মিছিল বলেছেন: প্রথম প্লাস ও প্রিয়তে।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৮| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪

নিঃসংগ যোদ্ধা বলেছেন: গুড পোস্ট।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫

তুষার আহাসান বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম ২নং + দিয়ে।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৭

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

১০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

আপনি বলেছিলেন একটা গল্প লিখবেন সেই আশায় বসে আছি ..................

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১১

শের শায়রী বলেছেন: শুরু করব ব্রো। খুব শীঘ্রী। মাথায় ঘুরছে প্লটটা।

১১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪

সিডির দোকান বলেছেন: অনুসারিতে নিলাম অপনাকে।
পোস্ট ভালা অইছে রে.... B-)

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৬

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রো

১২| ০৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৫৭

চুক্কা বাঙ্গী বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। ভাল লাগলো।

০২ রা জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৮

শের শায়রী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.