নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি সুন্দর পৃথিবী চাই

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান শোভন

অনেক কিছুই বলার আছে, ব্লগ দেখলেই বুঝেবন।

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রক্তঋণ

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪০

ঘুম হইতে জাগিয়া আবু সুমাইয়্যা শায়িত অবস্থায়ই ভাবিতে লাগিল আরো কিছুসময় ঘুমাইবে কিনা। আযান কানে আসিতেছে, এখন কোন ওয়াক্ত? আসর না মাগরিব? বাহিরে অন্ধকার মনে হইতেছে। সারিয়াছে, তবে কি সে আসরের নামায আদায় করে নাই? পরে মনে পড়িল, আসর, মাগরিব দুই নামাযই আদায় করিয়াছে। এখন এশার ওয়াক্ত। ঘুম আসিতেছে না তেমন। তাহার পরও শুইয়া থাকিল অলসভাবে। একসময় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিল, মসজিদে যাইবে। শয্যা হইতে উঠিয়া মনে হইল ক্ষুধা লাগিয়াছে। কিছু খাইলে ভাল হয়। একবার ভাবিল মসজিদ হইতে ফিরিয়াই রাত্রের আহার সারিয়া লইবে। কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তা করিল রাত্রি দ্বিপ্রহরে যদি ক্ষুধা আবার চেগাইয়া ওঠে, তখন কি করিবে। ডাইনিং এ তাহার জন্য তো নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার বরাদ্দ। আবার এক পেয়ালা কফিও জরুরী হইয়া উঠিয়াছে। তাই নামায সারিয়া রাস্তার ঐধার হইতে গাজর চিবাইয়া এবং কফির পেয়ালায় কয়েকটা চুমুক দিয়া আসিতে মনস্থির করিল। তাহাকে লুঙ্গি পরিধান করিয়াই যাইতে হবে। কারন, পানি গিলিয়া নামাযের প্রস্তুতি লইতে লইতে আর লুঙ্গি বদলাইবার সময় নাই। যাহা হউক, রাস্তার ঐধারের জায়গাটি বারিধারা পার্ক নহে যে তথায় লুঙ্গি পরিধান করিয়া যাওয়া বারণ। নামায শেষ করিয়া তথায় গিয়া দেখিল একখানা ভ্যানের গাজর ইতঃপূর্বেই শেষ হইয়া গিয়াছে। আবু সুমাইয়্যা আশাহত হইল তবে পুরাপুরি নিরাশ হইল না। কিঞ্চিৎ দূরে আরো একখানা গাজরের ভ্যান রহিয়াছে। আগে কফি গিলিয়া লই, ভাবিল সে। কফির পার্ট চুকাইয়া সে যখন অপর ভ্যানের নিকটে গেল তখন সে পুরাপুরিই নিরাশ হইয়া গেল, এইখানেও শুধু গাজরের খোসাই পড়িয়া রহিয়াছে। অপরদিকে এই এলাকায় অন্যত্র গাজর পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এইদিক ওইদিক ইতস্তত ঘুরিয়া ফিরিয়া আর কোথাও গাজর না পাইয়া সে ভগ্ন হৃদয়ে বাসার পথ ধরিল, যদিও কফি গিলিয়া ক্ষুধা অনেকটাই কমিয়া গিয়াছিল। সে হাঁটিতেছিল আর একখানা ভিডিওচিত্রের কথা ভাবিতেছিল। সে দেখিয়াছিল এক জঙ্গি, আত্মরক্ষা করিতে উদ্যত এক পুলিশের নিকট অনুনয় বিনয় করিতেছে। জবাবে পুলিশটি বুটজুতা দিয়া দুই তিনটি লাথি মারিয়া তাকে ধরাশায়ী করিল। অতঃপর আত্মরক্ষায় সচেষ্ট অপর এক পুলিশ আসিয়া তাকে শটগান দিয়া খুব নিকট হইতে গুলি করিয়া চলিয়া গেল। জঙ্গিটি ‘ও আল্লাহ্‌রে’ বলিয়া চিৎকার দিয়া ঢলিয়া পড়িল। সে কি মরিয়া গেল? মরিলে মরুক। এই দেশে জামাত শিবিরের জঙ্গিদের ঠাঁই নাই। আজ আকাশে অসম্ভব রূপালী একটা চাঁদ উঠিয়াছিল। কি কারনে জানি না, আবু সুমাইয়্যার চাঁদটিকে রক্তাত্ত মনে হইল। ২৫ শে ফেব্রুয়ারীর চাঁদ কি রক্তাত্ত হয়? এত রক্তের ঋণ কি কোনদিন শোধ করা হইবে? উত্তর তাহার জানা নাই। বাসার গলিতে ঢুকিবার মুহুর্তে তাহার মনে হইল, চিতই পিঠা খাওয়া যাক। পিঠা গরম কিনা দেখিয়া উহা তুলিয়া লইতে লইতে পিঠাওয়ালা চাচা কে জিজ্ঞাসা করিল পিঠার দাম ৫ টাকাই আছে তো? চাচা একটা মুচকি হাসি দিয়া সম্মতিসূচক মাথা নাড়াইল। চাচার মুখে সাদা দাড়ি। সেকি, চাচা কি তবে জামাতি? রাজাকারও হইবে মনে হয়? না হইলে দাড়ি রাখিবে কেন? যাহা হউক অদ্যকার সরিষা বাঁটার স্বাদ টা একটু অন্যরকম মনে হইল। ভালই লাগিতেছিল অবশ্য...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.