নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নানা দেশ কত কথা

শোভন শামস

আমার দেখা নানা দেশের কথা সবার জন্য - পাঠকের ভাল লাগাতেই আনন্দ

শোভন শামস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইয়াম্বিও-ওয়েস্টার্ন ইকুয়েটরিয়া – সাউথ সুদান – ছবি ব্লগ

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

জুবা থেকে হেলিকপ্টারে নানা দেশের মানুষ একসাথে ইয়াম্বিওর পথে রওয়ানা হলাম। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কেনিয়া, সাউথ সুদান,সামোয়া, ইথিওপিয়া, জিম্বাবুয়ে, ভারত, ইউক্রেন এবং বাংলাদেশ সবাই চলছি। সকাল বারটার পর টেক অফ করল আমাদের হেলিকপ্টার। ওয়েস্টার্ন ইকুয়েটরিয়া প্রদেশের রাজধানী ইয়াম্বিও, এই প্রদেশের কাউন্টির সংখ্যা দশটি। প্রদেশটি ডেমক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের পাশেই।

আজ বেশ ঘুর পথের যাত্রা। যেতে হবে ওয়েস্টার্ন ইকুয়েটরিয়া প্রদেশের সীমান্ত জনপদ ইযো হয়ে। জনপদটি ডেমক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এবং সাউথ সুদান এই তিন দেশের সীমান্তের কাছে। এখানে একটা জায়গাতে তিন দেশ এক হয়েছে। জনপদ গুলো অরণ্যের মাঝে, এবং মাঝে মাঝে এখানে বাজার বসে। তিন দেশের মানুষ তখন এখানে আসে। এই অঞ্চলে লর্ডস রিপাবলিকান আর্মি নামে একটা সন্ত্রাসী গ্রুপ বেশ সক্রিয়।

জুবা ছাড়িয়ে পশ্চিমের দিকে চলা শুরু হল। মাটির রাস্তা, এই পথে প্রায় ৫৭২ কিলো মিটার দূরে ইয়াম্বিও শহর। নিচের দৃশ্য একরকমই প্রায়। এখানে নদীর উপস্থিতি নেই। ঘাস জমি, ঝোপ গাছ ও বন রয়েছে। মাঝে মাঝে আট দশটা টুকুল নিয়ে ছোট ছোট জনপদ। নদীর মত আঁকাবাঁকা হয়ে বনের মধ্যে দিয়ে ফাঁকা জায়গা, এসব জমিতে ঘাস আছে। ঘাসের নদীর মত মনে হয়।

জুবার আকাশ পরিষ্কার, মাঝে মাঝে হালকা সাদা মেঘ, দুপুরের রোদের সোনালি আলো চারিদিকে।দুই ঘণ্টা ফ্লাইট টাইম , একটু একঘেয়ে হলেও তেমন খারাপ লাগছিল না। ইযোর দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছি আকাশ ততই মেঘলা হতে শুরু করেছে। এই এলাকাতে বৃষ্টি হলে বিমান চলাচল বন্ধ থাকে।ইজো যেতে হলে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সীমান্ত ঘেঁসে যেতে হয়। কেউ দেখিয়ে না দিলে অবশ্য সীমান্ত বুঝা যায় না।পথে কিছু টুকুল ও গ্রাম দেখলাম, জানতে পারলাম এগুলো সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের গ্রাম ।



ইজো হেলিপেড, বনের মাঝে একটু ফাঁকা জায়গাতে – কাছেই সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সীমান্ত

বিকাল তিনটার সময় দেখি হেলিকপ্টার একটা ঝোপ ঘেরা খালি জায়গার দিকে নামছে। এটাই ইজো হেলিপাড, নতুন বানানো হয়েছে এখানে, আগে ঈজো শহরের কাছে ল্যান্ডিং স্ট্রিপ ছিল সেখানেই নামত হেলিকপ্টার, জায়গাটা সীমান্তের সাথে বলে এখন ওটা বাদ দিয়ে নতুন করে এই জায়গাতে হেলিপাড বানানো হচ্ছে। আসার পথেই আকাশ মেঘলা হয়ে আসছিল, নামার পর ফোটা ফোটা বৃষ্টি, তারপর বজ্রসহ ঝমঝমে বৃষ্টি শুরু হল। দুই ঘণ্টা বসে থেকে সবাই নেমে একটু ঘোরাফেরা করছিল, বৃষ্টি আবার ফিরিয়ে নিয়ে এলো ভেতরে। এসময় ফ্লাই করা যায় না, তাই বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় থাকলাম।

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ সামোয়ার নাগরিক তার ছুটি শেষে ফেরত আসছিল এখানে, সাউথ সুদান থেকে অনেক দূরের দ্বীপদেশ এই সামোয়া। বিমান ভাড়া তিন থেকে পাচ হাজার ডলার। আমিরাত’স সব চেয়ে কম ভাড়া, তিন হাজার ডলার। সামোয়া থেকে নিউজিল্যান্ড, সেখান থেকে সিডনী – ডুবাই – জূবা, তিন দিনের রাস্তা। এত কষ্ট বলে পুরুষরা বছরে একবার ছুটিতে যায়। মহিলারা এটা পারে না, তাদেরকে দুই তিনবার যেতে হয়।

শব্দের জন্য এতক্ষণ কথা হচ্ছিল না, এখন সময় পেয়ে সবাই নানা কথা শেয়ার করছে। ইয়াম্বিওতে যারা থাকে তাদের এখানে ভাল লাগে। জুবার তুলনায় এখানে অপরাধ অনেক কম। প্রায় সব দরকারি জিনিসপত্র পাওয়া জায়।খাবারের খরচ এখানে তুলনামূলক ভাবে কম। তাই এখানে যারা আছে তারা বেশ ভালই আছে এবং এরা জুবাতে যেতে আগ্রহী না।দূরে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না বলে বাহির থেকে অনেকে এখানে আস্তে চায় না। তাই চাপ এখানে বেশ কম।

আধা ঘণ্টা পর মেঘ কেটে সূর্যের আলো দেখা গেল, বৃষ্টিও থেমে গেছে ততক্ষণে, আবার উড়াল দিল হেলিকপ্টার। এবার ফ্লাইট টাইম চল্লিশ মিনিট। আকাশ আলো করা রোদ। বিকেল পাঁচটার সময় ইয়াম্বিও বিমানবন্দরে পৌঁছে গেলাম। নামেই বিমান বন্দর- আসলে লাল মারামের বড় খোলা চত্তর, একটা মারামের ল্যান্ডিং স্ট্রিপ, দুএকটা টিনের ঘর, সরকারী কাজকর্মের জন্য। তবে কাজ চলছে ভবিষ্যতের জন্য। হেঁটে গাড়ির কাছে চলে এলাম। রাস্তা গুলো লাল মারামের। এখানে এই মারাম পাওয়া যায়। লাল রঙের পাথরের কুঁচি সহ আঠাল মাটি এই মারাম। বেশ ভাল রাস্তা হয় এই মাটি দিয়ে।



ইয়াম্বিও বিমানবন্দর

বিমান বন্দর থেকে বাইরে আসার পর ছোট জনপদ, আমাদের দেশের গ্রামের মত ছোট ছোট দোকান পাট। কিছু সওদা নিয়ে বসে আছে অনেকে, কেউবা অলস গালগল্প করে সময় কাটাচ্ছে। এখানকার গাছগুলো বেশ লম্বা ও মোটা দেখলাম যা বাকী প্রদেশ গুলোতে কম দেখেছি। ইয়াম্বিও শহর থেকে সাঁইত্রিশ কিলোমিটার দুরেই ডেমক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো সীমান্ত। রাস্তাও আছে যদিও তেমন সুবিধার না, সাধারন জনগণ এই রাস্তা দিয়েই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায়। লর্ডস রিপাবলিকান আর্মি এই অঞ্চলে সক্রিয় থাকায় চলাচল সবসময় নিরাপদ না।



ইয়াম্বিওর পথে

এখানকার আবহাওয়া চমৎকার। রোদের আলো আছে তবে তেজ কম। হালকা ঠাণ্ডা হাওয়া চারিদিকে। ধুলা বালিও তেমন নেই। এলাকাও বেশ পরিচ্ছন্ন। সন্ধ্যা হয়ে আসছে, সন্ধ্যার পর বাতাসের বেগ বেড়ে গেল, একটু ঝড় বৃষ্টি হল, পরিবেশ ঠাণ্ডা আর ফ্রেস হয়ে গেল।আজ আর বাইরে কোথাও যাব না। সাউথ সুদানের এক ডাক্তারের সাথে দেখা হল এখানে, প্রায় পাঁচ বছর এখানে আছে, এই শহরটা তার ভাল লাগে, পরিবার জুবাতে আছে, বাচ্চারা সেখানে পড়াশোনা করে।সাপ্তাহিক ছুটিতে জুবা আসা যাওয়া করে। পরদিন ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেল। কিছুক্ষণ আসেপাশে হাঁটলাম। বেশ ঠাণ্ডা আবহাওয়া। রাতে এ সি কিংবা ফ্যান কিছুই লাগেনি।



শহরের পথে

সকাল এগারটার পর শহর দেখতে বের হলাম। আমাদের ড্রাইভার রুয়ান্ডার এক চটপটে ছেলে। তার আবেগ বেশ জোরাল, এই শহরটা বেশ ভাল ভাবে চিনে।জানতে পারলাম যে এখানকার মানুষজন তুলনামূলক ভাবে শান্ত। গরুর জন্য মারামারি হত্যা ইত্যাদি এখানে অনেক কম, তবে একদম নেই তা বলা যাবে না। রাস্তা থেকে একটু দূরে মানুষের বসবাসের টুকুল, বেশ কিছু টুকুল একসাথে নিয়ে জনপদ গরে উঠেছে। এখানকার টুকুলের বাহিরটা বেশ সুন্দর করে রঙ করা, দেখতে ভালই লাগে। যেতে যেতে দেখলাম ভেতরে কর্ম ব্যস্ততা আছে। আলস সময় ও কাটাচ্ছে কেউ কেউ, বিশেষত বৃদ্ধ ও পুরুষেরা।



জনপদ ও মানুষের বসবাসের টুকুল

রাস্তা থেকে একটু দূরে ছোট ছোট গর্ত, এসময় প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টি হয় তাই বেশ পানি আছে সেগুলোতে। বাচ্চারা রাস্তার পাশের অল্প পানিতে ঝাপা ঝাঁপি করছে। তাদের সবাই প্রায় কাপড় বিহীন।মনের আনন্দ তাই বলে একটুও কমেনি দেখলাম। আপন মনে তারা খেলছে। বিদেশী দেখে মাঝে মাঝে কেউ হাত নেড়ে টাটা ও দেয়।



ইয়াম্বিও’র জনপদ

পুরুষ ও মহিলারা সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। চিরচেনা দৃশ্য ও দেখা যায়, মহিলারা মাথায় করে বড় বোঝা টানছে, তারা এগুলো বাড়িতে নিয়ে পরিবারের কাজে লাগাবে। মহিলারা এখানে বেশ পরিশ্রম করে।পুরুষদের কাজ মারামারি ও যুদ্ধ করা, লাভ হলে আরেকটা বিয়ে করা । তবে যুদ্ধে অনেকে মারা যায়।



ইয়াম্বিও শহরের রাস্তায়

ইয়াম্বিও শহরটা তেমন বড় না। চৌরাস্তা আছে কয়েকটা, সেখানে ট্রাফিক পোস্ট আছে, ট্রাফিক পুলিশ দেখলাম দাড়িয়ে ডিউটি করছে। ওয়েস্টার্ন ইকুয়েটরিয়া প্রদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অফিস আছে শহরে। এসব অফিস তেমন ঝকমকে মনে হলনা। মানুষ কম গাড়ি ও তেমন বেশি নেই। বড় কন্টেইনার ক্যারিয়ার আছে কিছু, এগুলো পাশের দেশগুলো থেকে মালামাল নিয়ে আসে।ব্যাংক দেখলাম কয়েকটা, দোতালা বাড়ির সংখ্যা কম, বেশির ভাগ একতালা টিনের ঘর। মোটর সাইকেল ও সাইকেলে মানুষ যাতায়াত করছে, গন পরিবহন হিসেবে দু’একটা মাইক্রোবাস দেখলাম।











ইয়াম্বিও স্টেডিয়ামের পথে

ঘণ্টা দুই ঘোরার পর আর দেখার কিছু পেলাম না, ফেরার পথে শহরের একটু বাইরে বানানো ইয়াম্বিও স্টেডিয়াম দেখতে গেলাম। ইয়াম্বিও স্টেডিয়াম শহরের আরেক পাশে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার এই স্টেডিয়ামের নির্মাণে সহায়তা করেছিল। তাদের বানানো একটা ভাস্কর্য এখানে আছে। বাংলাদেশের অবদানের স্বীকৃতি এখানে আছে দেখে বেশ ভাল লাগল।এই এলাকাতে মানুষজন তেমন নেই। আশেপাশে বন, দূরে কিছু ঘরবাড়ী, স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে একটা রাস্তা চলে গেছে সামনের কোন জনপদের দিকে। সেখান দিয়ে গাড়ি চলছে দেখলাম। স্টেডিয়াম আজকে ফাঁকা, সবাই কাজকর্মে ব্যস্ত, বিকেল বেলা খেলাধুলা হবে।

এখান থেকে সোজা রাস্তা আরেক দিকে চলে গেছে, সেখানে এই শহরের পাওয়ার ষ্টেশন, তেল দিয়ে চলে এই পাওয়ার ষ্টেশনের জেনারেটর। রাস্তায় ইলেকট্রিকের পোল আছে, লাইন মাটির নিচ দিয়ে গেছে মনে হল, উপরে কোন তার ঝুলতে দেখলাম না। রাতে এখানে কিছু সময় বিদ্যুৎ থাকে।



লেকের পাড়ে গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র

আবহাওয়া চমৎকার এবং গাড়িটা ভাল বলে শহরটা সুন্দর ভাবে দেখা হল। মাঝে একবার একটু বৃষ্টি হল তবে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তা থেমে গেল, আকাশে আবার আলো ছড়ানো সোনালি রোদ। ফিরতি পথে রাস্তা থেকে একটু নেমে নতুন একটা রাস্তাতে চলে এলাম। এখান দিয়ে কৃ ত্রিম লেকের দিকে রওয়ানা হলাম। পর্যটকদের আকর্ষণ করার এবং স্থানীয়দের অবসর কাটানোর জন্য এখানে টুরিস্ট রিসোর্টের মত সাজান হচ্ছে লেক এলাকা, ছোট ছোট গোল ঘর বানানো হচ্ছে, সাথে বাগানের কাজ চলছে, আগামিতে হয়ত এটা একটা সুন্দর সময় কাটানোর জায়গা হবে, হোটেল রেস্টুরেন্ট ও আশেপাশে বানানো হচ্ছে।









ইয়াম্বিও বিমানবন্দর







জনপদ ও মানুষের বসবাসের টুকুল



















ইয়াম্বিও বাজার এলাকা

বাজার বেশ জমজমাট, অনেক জিনিষ পাওয়া যায়। এখানেও সবকিছু আসে উগান্ডা থেকে তাই দাম অনেক বেশি। বড় দোকানও আছে এখানে, প্রায় সবকিছু পাওয়া যায়।ভারতীয় আছে বেশ কিছু, তারা সবাই ব্যবসার সাথে জড়িত। পুরনো কাপড় প্রথমে ভারতে নিয়ে আছে বিদেশ থেকে, তারপর ধুয়ে এবং ইস্ত্রি করে প্যাকেট করে। এইসব কাপড়ের প্যাকেট পাইকারি দরে এখানে বিক্রি করে দেয়। লোকাল দোকানদার ও ফেরিওয়ালারা এগুলো বিক্রি করে। কাপড়ের দাম এখানে অনেক।

এখানে টিম্বার বেশ ভাল, গাছ গুলো বেশ লম্বা ও মোটা, তাই টিম্বার ব্যবসা বেশ জমজমাট। এই খাতও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দখলে। উগান্ডা ও কেনিয়া থেকে তারা এখানে এসে কাজ করে। অনেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে আসে। ইয়াম্বিওতে কুশ এয়ার নামের একটা বাজেট এয়ারলাইন্স নামে। এটা সপ্তাহে দুইবার জুবা যায়। সেখান থেকে উগান্ডা বা কেনিয়াতে যাওয়া যায়। কোম্পানিগুলোর ম্যানেজাররা এসব বিমানে করে আসে।বাকি লোকজন ঝুকি নিয়ে সড়ক পথেই আসে।বাঁচার সংগ্রাম তাদেরকে সব বাধা পেড়িয়ে কাজের জায়গায় টেনে আনে।



প্রাইমারী স্কুল

নতুন নতুন স্কুল হচ্ছে শহরে, জায়গার সমস্যা নেই তাই সব স্কুলের সামনে খেলার জন্য খোলা মাঠ আছে।অনেক ছোট বাচ্চা দেখলাম স্কুলে। তারা খেলাধুলা করছে মনের আনন্দে। শহরের রাস্তায় মাঝে মাঝে গর্ত হয়ে আছে, সেখানে এক জায়গাতে দেখলাম বেশ মানুষের জটলা। কাছে গিয়ে দেখি স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষক মিলে একটু দূর থেকে পাথর এনে গর্ত ভরাট করছে, পরে রাস্তার পাশ থেকে মাটি কেটে জায়গাটা সমান করে দিচ্ছে, বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এই ধরনের মানসিকতা থাকলে এই প্রদেশ অনেক এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।



স্কুলের বাচ্চারা খেলাধুলা ও কমিউনিটি উন্নয়নে কাজ করছে



মাসিয়া মার্কেট এলাকা , ইয়াম্বিও

শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বেশ বড় বাজার, এলাকাটার নামে বাজারের নাম মাসিয়া মার্কেট। এখানে বাস স্ট্যান্ড আছে, সেখান থেকে নানা দিকে লোকজনের যাতায়াত চলছে। বেশ বড় এলাকা, অনেক মানুষ দেখলাম। নাপিতের দোকান , নানা জিনিসপত্রের পাইকারি দোকান , ব্যাংক ইত্যাদি সবই এখানে আছে। কিছু ছবি তুললাম এখানে দাঁড়িয়ে। আমাদেরকে দেখে অনেক বাচ্চা দাঁড়িয়ে গেল। কথা বললাম ওদের সাথে, কিছু বুঝল কিছু বুঝল না।

এদেশে মানুষজন তাদের নিজেদের গোত্রের ভাষায় কথা বলে নিজেদের মধ্যে, অন্য লোকজনের সাথে কথা বলার একমাত্র মাধ্যম সুদানি/ স্থানীয় আরবি ভাষা। স্বাধীনতার পর এরা সরকারী ভাবে আরবি বাদ দিয়ে স্কুলে ইংরেজিতে পড়াশোনা চালু করেছে। এদেশে ইংরেজি ভাষা চালু হতে আরও সময় লাগবে। বড়রা সবাই আরবি বুঝে,ব্যবসায়ীরা লোকাল আরবিতেই কথা বলে। সুদানি অনেকে এখানে ব্যবসা করছে বহু যুগ ধরে, সাথে আছে ভারতীয়, এখন উগান্ডা, কেনিয়া ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের লোকজন এসে এখানে ব্যবসা করছে।

















মাসিয়া মার্কেট এলাকা , ইয়াম্বিও











ইয়াম্বিও শহরের রাস্তায়



সাউথ সুদান-হোটেল ইয়াম্বিও - নতুন নতুন হোটেল হচ্ছে পর্যটকদের জন্য

বিদেশীদের থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল আছে এই শহরে। অনেক বড় এবং খোলা মেলা জায়গা নিয়ে আছে সাউথ সুদান- ইয়াম্বিও হোটেল, ভাড়া জনপ্রতি একশ ডলার। একতালা কটেজ আছে এখানে, সামনে বাগান এবং কিছু পশু পাখির ভাস্কর্য সাজান আছে। এর চেয়ে কমে বাজেট হোটেল আছে ২০/৩০ ডলার দিয়ে থাকা যায়। সব হোটেলে থাকা এখানে নিরাপদ মনে হল। দেশে শান্তি থাকলে এটাই লাভ। উন্নতি তখন দ্রুত গতি লাভ করে।

ফিরতে ফিরতে দুপুর হল। পঁচিশ সুদানিজ পাউন্ডে দুপুরের খাবার খাওয়া যায় ভাল হোটেলে, চিকেন ডিস। বিকেল বেলা বাইরে যাইনি কোথাও। পরদিন ফিরতে হবে। সকাল নয়টায় বিমান বন্দরে হাজির হলাম। আজকের বাহন ১৫ সিটের টার্বো প্রপেল বিমান। সরাসরি এটা জুবাতে চলে আসবে। যাত্রী আমরা অল্প কয়েকজন। বিমান মারামের টারমারক থেকে উড়াল দিল জুবার পথে। ফ্লাইট টাইম এক ঘণ্টা দশ মিনিট, সময় ভালভাবে কেটে গেল।

আরামদায়ক ছিল এই বিমানে ভ্রমন। পথে একটু ঝাকি খেল বিমান মেঘের কারণে। এই এলাকাতে মেঘ থাকে এবং ছোট বিমান বেশ ঝাকি খায়, তবে যাত্রা নিরাপদেই শেষ হল।আমাদের সাথে সাউথ সুদানের এক মন্ত্রী ও ছিল, তার লটবহর বেশ বড়, তারা সবাই বিদায় জানাতে এসেছিল বিমান বন্দরে। সুন্দর ভাবে কেটে গেল বিমান ভ্রমনের সময়, আমরা ফিরে এলাম চির পরিচিত জুবাতে।



মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫২

এম ই জাভেদ বলেছেন: খালি ফটুক দিলে কাম হইব? কিছু লেইখ্যা দ্যান মিয়া ভাই।

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

মুসাফির... বলেছেন: খালি ফটুক দিলে কাম হইব? কিছু লেইখ্যা দ্যান মিয়া ভাই।

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:৫৯

শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, লিখা শুরু করেছি। সামনেই আসবে।

সাথে থাকবেন

৪| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১০

আমাবর্ষার চাঁদ বলেছেন: সুন্দর ফটু............

৫| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১১

মশিকুর বলেছেন:
ছবি গুলো সুন্দর

৬| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২১

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
ছবিগুলো সুন্দর!!!

৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

তানিয়া হাসান খান বলেছেন: সুন্দর!!!

৮| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

সুমন কর বলেছেন: সুন্দর !!!

৯| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯

শোভন শামস বলেছেন: ধন্যবাদ সাথে থাকবেন

১০| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

ইমরান হক সজীব বলেছেন: এম ই জাভেদ বলেছেন: খালি ফটুক দিলে কাম হইব? কিছু লেইখ্যা দ্যান মিয়া ভাই।

১১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

ইমরান হক সজীব বলেছেন: আবার কেম্নে কেম্নে যেন পোষ্টে এসে পড়লাম :D ভালো পোষ্ট

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.