![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার মস্তিষ্কে আমার দ্বারা তৈরিকৃত, আমার কল্পনা জগৎটি অনেক বড়। আমি আমার কল্পনার চরিত্রের একটি চরিত্র। আমার নিজের এই কল্পনার জগৎটির জন্য আমাকে অনেক সময় ব্যায় করতে হয়, তাই আপনাকে নিয়ে ভাবার মত সময় আমার কাছে নেই।জানি আপনারও থাকবে না !!!
পকেটে পাচ টাকা আছে মাত্র । আমি ফার্মগেটে দাঁড়িয়ে । সময় ৩টা ১০।
সামনে দিয়ে অনেক লোকাল বাস যাচ্ছে । এত ভীড় যে, উঠতে ইচ্ছে করছেনা ।
একটু সামনে এগিয়ে গেলাম, ধানমন্ডির বাসগুলো প্রায় ফাকা। যদিও গন্তব্য ওদিকে নয়। তবুও উঠে পড়লাম । বিকালে বাসে উঠে মজা নেই ।মজা আছে সকাল ৬টার দিকে, বাসে উঠে প্রকৃতির হাওয়া অনুভব করা যায়। প্রকৃতির ঠিক না, ঢাকা শহরের ।
৫ টাকা দিয়ে নামলাম,সংসদ ভবনের সামনে ।ভীড় আর জ্যাম লাগল তাই মাঝপথেই নেমে গেলাম। জায়গাটায় আগে কখনও আসিনি । একটু অপরিচিত। পকেটে টাকা পয়সা নাই। হাটতে লাগলাম, এবার। ফুটপাতের ছায়ায় ভালই লাগছে। এটা ভাল সময় রিকশাওয়ালা দের জন্য। তারা রিকশার সিটে বসে আরামছে কোন গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে।
দুরন্ত পথিকের মত হাটতে হাটতে ধানমন্ডি ৩২ লেকের পাশে উপস্থিত হলাম। ঘড়িতে ৪টা ২০ বাজে। মনে মনে হাসলাম, শুভ্র ছেলেটার কথা মনে পড়ল। পিচ্চিছেলেটা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, চাচ্চু, ৪২০ মানে কি বলুন তো?
কথায় চারশত বিশ।
-উফফঃ তুমি জাননা দেখি।
-তুমি বল?
-যেসব ছেলেদের একসাথে অনেক গার্লফ্রেন্ড থাকে তাদের বলে ৪২০।
কল্পনা থেকে বের হয়ে আরেকটু হাটলাম। পা ব্যথা করছে । একটু পার্কে বসে রেস্ট নিতে হবে। সামনে এগুতেই ফুটপাতে একটা লাল গোলাপ দেখলাম ।
“ফুল পবিত্র জিনিস”। এটি কেন ফুটপাতে থাকবে?
এটার থাকার কথা , কোন বাগানে, কারো হাতে বা দোকানের টবে সুন্দর করে সাজানো । ফুটপাতে ফুলের রানীকে মানাচ্ছেনা ।
গোলাপ, ফুলের রাণী তাহলে ফুলের রাজা কে? ওহ , ফুলের রাজা সন্ধিহান। ফলের রাজা আম । তাহলে ফলের রানী কে?
ধুর ! আজিব কনফিউশন।
আমার চ্যালা বাদলের কাছ থেকে গোলাপের একটা খেলা শিখেছিলাম । ও আবার শিখেছে কোন হলিউড মুভি দেখে। খেলেটা হচ্ছে, যদি প্রিয় মানুষ আপনাকে ভালবাসে কি বাসেনা এর ডিসিশন নিতে আপনার সমস্যা হয়, তাহলে এক একটা গোলাপের পাপড়ি ছিড়ুন আর বলতে থাকুন , প্রথম পাপড়ির ক্ষেত্রে ‘ সি লাভস মি”!
দ্বিতীয় পাপড়ির ক্ষেত্রে , “সি লাভস মি নট”... এভাবে চলতে থাকবে গোলাপের শেষ পাপড়ি না ছেড়া পর্যন্ত। তারপর আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত উত্তর পাবেন।
গোলাপটা তুলে নিলাম । একি! এর কাটায় এত রক্ত কেন?
মনে হচ্ছে, কেউ গোলাপের ডাটা টা মুঠো করে সজোরে হাতের তালুতে চাপ দিয়েছে। কি জানি , কোন প্রেমিকের কষ্ট!
ফুটপাতের পাশে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আরে ইরা না! কিন্তু ওর গাড়ি কোথায়?
এই মেয়ের সাথে আমার প্রথম দেখা হয়, সিএনজি দূর্ঘটনায় । সিএনজির প্যাসেঞ্জার ছিলাম আমি। পিছন থেকে এক জীপ গাড়ী এসে সজোরে ধাক্কা দেয় সেই সিএনজিকে । ড্রাইভারকে পিছনে বসিয়ে গাড়ী চালিচ্ছিল, ইরা ।
এক্সিডেন্টে ড্রাইভার ভদ্রলোকের কিছু না হলেও , আমার কাধ আর কপাল দিয়ে রক্ত পড়েছিল । ইরাই ওর গাড়ীতে করে নিয়ে গিয়েছিল, হাসপাতালে । তিনদিন বেডরেস্টে ছিলাম। আত্মীয় স্বজন কেউ না এলেও ইরা এসে এসে গল্প করে যেত আমার সাথে । সেই থেকে পরিচয় ।
সামনে এগিয়ে গিয়েই ইরাকে জিজ্ঞাস করলাম, ইরা, তোমার কি হাত কেটে গেছে?
অপ্রস্তুতভাবে আমাকে দেখে সে হকচকিয়ে গেল। সে বলল, হ্যা...না, মানে আপনি এখানে?
হেটে যাচ্ছিলাম। মনে হল, তোমার হাত কেটে গেছে! তাই জিজ্ঞেস করতে এলাম।
আমার হাত কেটেছে এটা আপনি জানলেন কি করে?
শুধু তাই না। তোমার হাতটা যে, গোলাপ ফুলের কাটার কারনে কেটেছে সেটাও জানি? কি দরকার ছিল ফুলটাকে মুঠো করে ধরার?
কি করে বুঝলেন?
আমরা ওসব বুঝতে পারি।
জ্বী, না । নিশ্চয়ই আমার ফেলে দেয়া গোলাপটা আপনি পেয়েছেন। আর আশেপাশে আর কাউকে না দেখে আমাকে প্রশ্ন করছেন। সেটাও আন্দাজে। আর লাক বাই চান্স লেগে গেছে। তাই না...
তুমি যেটা ভাব। কিন্তু, রক্ত যে পড়ছে হাতে কিছু দিয়ে চাপা দাও। তোমার ব্যাগে ফেসিয়াল টিস্যু তো আছেই ।
না সেটা ভাল লাগছেনা । রক্ত পড়তে দেখেই ভাল লাগছে ।
রক্ত ঝড়লেই যে, তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমার কাছে ফিরে আসবে এমন তো কোন কথা নেই।
এখন এটা কি করে বুঝলেন?
মানুষের চোখ দেখলে তার মনের কথা বোঝা যায় । আর তোমার চোখে এখনও অশ্রু......
ও তাই?
চল পার্কের ভেতরে গিয়ে বসি। তোমার হাতে ঘাসের রস দিয়ে দেয়। প্রাকৃতিক চিকিৎসা। তোমার গাড়ী আসতে এখনও আধা ঘন্টা ।
( মেয়েটার অব্যক্ত কথাগুলো আমি আন্দাজেই বলছি। সে অবাক হচ্ছে কিন্তু প্রকাশ করছেনা। ভীষন চাপা স্বভাবের।)
পার্কে গিয়ে আমি অবাক এত ভীড় কেন? আজ কি কোন স্পেশাল ডে?
মাথায় আসছেনা । আপাতত ঘাস চিবিয়ে রস বের করার চেষ্টা করছি । নিজেকে গৃহপালিত প্রানী মনে হচ্ছে , গরু- ছাগল কিভাবে এই ঘাসটা যুগ যুগ ধরে খেয়ে আসছে? কি পায় এই জিনিসের মধ্যে যা আমি পাচ্ছিনা?
ইরার হাতে ঘাসের রস দিয়ে দিচ্ছি । মেয়েটা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে । কিছু বলতে চাচ্ছে । পাশ দিয়ে দুইটা ছেলে যাচ্ছিল ।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল, চালিয়ে যাও, তোমাদেরই দিন...আজ ।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা মুখ নিয়ে ইরার দিকে তাকালাম।
ইরা হেসে বলল, আজকে কত তারিখ জানেন?
-হ্যা, ১৪ তারিখ।
-১৪ ফেব্রুয়ারি । এটা হল বিশ্ব ভালবাসা দিবস।
-আর বাকি ৩৬৪টা দিন কি , ভালবাসা বিহীন দিবস?
-আপনি পাল্টা প্রশ্ন করবেন না তো। আপনি পালন করেন না , ব্যাছ শেষ...
-ঠিকাছে। এই জন্যই ছেলে দুটো ঐ কমেন্ট করল।
-হ্যা, আমার বয়ফ্রেন্ডও তো আজ আরেকটা মেয়ের সাথে...
-থাক বাদ দাও। চল ওঠা যাক, তোমার গাড়ীও এসে গেছে।
-আর আপনি।
-আমার আর কি কাজ? হেঁটে বেড়াব।
-গোলাপটা আপনার কাছে থাকবে ।
-থাকুক।
-একটা রিকুয়েস্ট করব রাখবেন?
-বল।
-আপনার হাতটে ধরে আজকে ফুটপাতে আপনার পাশে হাটতে পারি?
-আমি শান্ত গলায় বললাম, তুমি চাইলে আমার পাশে হাটতে পার। কিন্তু, তোমার হাত ধরতে পারবনা। হিমুরা কখনো কারও হাত ধরতে পারেনা
২| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৯
জুবায়দুল ইসলাম রোকন বলেছেন: অনেক সুন্দর।
৩| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৯
জুবায়দুল ইসলাম রোকন বলেছেন: অনেক সুন্দর।
৪| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:০৭
শায়মা বলেছেন: মজার গল্প!
৫| ১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২৫
শৈপীল বলেছেন: ধন্যবা্দ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৩৩
রাইসুল সাগর বলেছেন: চেষ্টাটা বেশ ভালো চালিয়ে যান। শুভকামনা নিরন্তর।