নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

The Illuminati

Look to the light. Follow the light. Learn from the light. ▲

নিরীহ বালক

যে আমার সাথে যেমন , আমিও তার সাথে তেমন । মিথ্যা কথা আমার চরম শত্রু , কখনই বলতে পারি না । সত্য কথা বলতে পছন্দ করি । যা বুঝি তাই বলি ।

নিরীহ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে আসা

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৯

কটা মেয়ে ঝুম বৃষ্টিতে একলা দাড়িয়ে আছে । মুখটি তার আকাশ পানে তুলে চোখবুজে সে স্পর্শ করছে বৃষ্টিকে । ঝুমবৃষ্টি ধুয়ে দিয়ে যায় সকল মেঘ যা তারমনে ছিলো । বৃষ্টির ছোয়ায় তার মনের মেঘ ধীরে ধীরে মুছে যায় । থাকে এক প্রশান্ত আকাশ । নীল আকাশ ! যেন তার বেদনার রঙ্গেই সাজানো । বৃষ্টি শেষ , মেঘ কেটে যাচ্ছে । আকাশ ঝলমল করছে সূর্যের আলোয় । মেয়েটি ধীর পায়ে হেটে যায় ঘরের দিকে । টেবিলের উপর থাকা মোবাইলের লেড লাইট জ্বলছে , তার মানে কারো মিস কল অথবা মেসেজ এসেছে । বুকের মাঝে একটু চিনচিন করে উঠলো । কেন জানি এখনো মন থেকে তার কথা মুছে যায় নি । শুধুই মনে হয় এখনি বোধ হয় ও ফোন দিল , এই বুঝি ওর মেসেজ এল ! কিন্তু না ! পোড়া কপাল যাদের , তাদের সাথে এমনই হয় । খোদাও তাদের দিকে ফিরে চায় না । খেলা করে এই পোড়া কপালীদের নিয়ে । ঠিক করলো মোবাইলের সিম চেঞ্জ করে ফেলবে । মুছে ফেলবে সব স্মৃতি । সব উপহার , সব চিঠি নিয়ে ব্রীজ থেকে নদীতে ফেলে দিবে । চিন্তা করতে করতে শাওয়ার নিতে গেল । শাওয়ার শেষ করে রুমে এসে দেখ ছোট বোন ফারিয়া বসে আছে । "ফারজানা আপু , ভাইয়ার মোবাইল থেকে উনার আম্মু ফোন দিয়েছিল । " একটু চমকে উঠলো ফারজানা । "কোন ভাইয়া ? কার আম্মু ??" "তুমি তো জানই যে কার কথা বলছি । যাই হোক , ভাইয়া অ্যাপোলোতে ভর্তি হয়েছে । পারলে এখুনি যাও । ইমার্জেন্সীতে আছে । " "কি হয়েছে ওর ? " ফারজানার চোখে পানি চলে আসলো । বুকের ভিতর খুব যন্ত্রনা হচ্ছে । "জানি না । বেশি কিছু বলেনি । উনি কাদছিলো । " কি করবে বুঝতে পারছে না ফারজানা । ড্রাইভারও নেই । ঈদের ছুটিতে আছে । ওরও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই । তবুও নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিল । তারাতারি রেডি হয়েই ছুটলো । বাবার ড্রয়ারেই ছিল গাড়ির চাবি । মনে মনে খোদাকে ডাক ছিল । যদিও খোদার উপর তার বরই ক্ষোভ , তারপরও মনে হচ্ছিল যদি আজকে খোদা তাকে সাহায্য করে !!! হাসপাতালে যাওয়ার সময় শাহাবাগ থেকে একগাদা রজনীগন্ধার স্টিক কিনে নিলো । ওর খুব পছন্দ রজনীগন্ধা । পথে কোন সমস্যাই হল না , পৌছে গেল হাসপাতালে । নিচে রিসিপশনে কথা বলার সময় তারা ওর দিকে অনেক্ষন তাকিয়ে ছিল । ফারজানাও কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছিল । তাদের কে তাড়া দেয়ার পর তারা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় । ডাক্তার তাকে দেখেই মনে হল যেন একটু তাড়াহুরা শুরু করে দেয় । "আপনাকে সেই কখন থেকে কল করা হচ্ছে ! আর আপনি এখন আসলেন ? রোগীতো আপনাকে না দেখে অপারেশনই করতে দিবে না । তাড়াতাড়ি চলুন । " ডাক্তার একটু ঝাজ নিয়েই কথা গুলো বললো । ফারজানা এবার কেদেই দিল "কি হয়েছে ওর , স্যার ? " " এক্সিডেন্ট করেছে । অপারেশেনে লাইফ রিস্ক আছে । কিন্তু তাও করতেই হবে । পেশেন্ট বলছে এর জন্য আপনার অনুমতি লাগবে । আজকালকার ছেলে-মেয়ে গুলো যে কি না !!! " বলেই ডাক্তার একটা পেপার আর কলম এগিয়ে দিলেন । ফারজানা সাইন করতেই , ডাক্তার নার্সদের ডেকে OT তে চলে গেলেন । ফারজানা সবার সাথে OTর সামনে বসে পড়লো । তখনো ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে । সবাই ওর দিকে কেমন করে যেন তাকাচ্ছে । প্রায় চার ঘন্টা পর ডাক্তার OT থেকে বের হয়ে সবাইকে একটু গুরুগম্ভীর কন্ঠে বললেন "অপারেশন সাকসেসফুল , রোগী ভাল আছে । আধাঘন্টা পর দেখা করতে পারবেন । " আধা ঘন্টা পর হাতে রজনীগন্ধা নিয়ে ও সবার আগে ঢুকলো । "কি হয়েছিলো তোমার ? কোথায় এক্সিডেন্ট হল ? কিভাবে হল ? একটু কেয়ার ফুল থাকলে কি হয় ?? " বলেই আবার কান্না । রাইয়ান উঠে বসে ওকে বুকে জড়িয়ে নিল "ধুর পাগলী , কাদে না । আমার কিচ্ছু হয় নাই । এত্তো গুলা রজনীগন্ধা দেখে আমি সত্যি পাগল হয়ে গেলাম । " এরপর ফারজানা চোখ কটমট করে ওর দিকে তাকালো । হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছলো । আশেপাশে তাকিয়ে দেখে নার্সের ড্রেসে যারা আছে , সব ওর বদমাশ বন্ধুগুলা ।



হাসপাতালের নীল পোশাকে ওকে ভালই মানিয়েছিল । সব ছিল ওর পাগলামি আর বন্ধুদের কারসাজি । মান ভাঙ্গাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত এই কাজটা করলো । ও আবার বোকার মত ধরা পড়ে গেল সেই ফাদে ।প্ল্যানটা ছিল ফারজানার সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড সাদিয়ার । সেদিন বিকালে সাদিয়ারা সবাই মিলে লেকে আড্ডা দিচ্ছিল । তখনই সাদিয়া জিজ্ঞাস করে রাইয়ানকে যে ফারজানার সাথে দিন কাল কেমন যাচ্ছে । ও মুখ ফুটে কিছু না বললেও সাদিয়া ঠিকই সব বুঝে নেয় । তারপরই এই নাটক সাজানো হয় ।



যাই হোক , ভালই হলো । এত্তোগুলো রজনীগন্ধা দেখে তো ও অনেক বেশি মুগ্ধ হয়ে যায় । ওদিকে ডাক্তারকেও কনভেন্স করতে নাকি ওদের অনেক কষ্ট হয় । তবে ডাক্তার তার রোলটা ফারজানার সামনে ভালই প্লে করে । ডাক্তার ছিল ফারজানার বন্ধু রাতুলের বাবা । তবে ওদের দুজনকে আবার একসাথে করতে পেরে সবাই বেশ খুশি । আশা করা যায় , সামনের মাসেই ওদের দুজনকে পারমানেন্টলী একসাথে রাখার ব্যাবস্থা হবে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩০

নিঃসঙ্গ গাংচিল বলেছেন: ভাল লাগলো।।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৫

নিরীহ বালক বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.