![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।
কিবরিয়া কাকু'র একটা কাহিনী বলি-
তিনি আমার গ্রামাতো কাকু। গ্রামের সবাই কোন না কোন অর্থে ভাই, চাচা ইত্যাদি হয়ে থাকেন। এই অর্থে তিনি আমার গ্রামাতো চাচা। ডাকতাম কাকু বলে।
গ্রামে এমন কোন দুষ্টামি, আকাজ নাই যা কিবরিয়া কাকুর করা হয় নাই। এর গাছের আম, ওর খোয়ারের মুরগীতো মা'মুলী বিষয়। এর দিকে নজর ওর দিকে... সব কিছুই তার যখন করা শেষ। তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন পকেটমার হবেন। গ্রামেতো মানুষজন প্যান্ট পড়ে না, লুঙ্গি পড়ে। পকেটমার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি ঢাকায় আসলেন। সময়টা নব্বই সালের দিকে।
ঢাকায় এসে পকেটমারের ট্রেনিং নিচ্ছেন। খুব একটা সুবিধার করতে পারলেন না। তারু গুরুও তার উপর আর ভরসা করতে পারলেন না। শুরু হয়ে গেলো তার একলা চলার সময়। দুই দিন দুই রাত না খাওয়া। ক্ষুধায় পেট জ্বলে যাচ্ছে।
অনেক ভেবে চিন্তে তিনি একটা বুদ্ধি বের করলেন। কাহিনীটা এই বিষয়েই। বুদ্ধিটা হইলো, তিনি পান খায় এমন একজন হুজুর খোঁজে বের করলেন। পান না খাওয়া অনেক হুজুরই পেলেন। কিন্তু তার চাই পান খাওয়া হুজুর। হুজুরের হাত দুইটা ধরে ঝরঝর করে কেঁদে দিলেন
- হুজুর আমার মা বাপ নাই। গত রাতে দেখলাম তারা না খাইয়া আছে রোজ হাসরে। হুজুর যদি দুইটা ভাত খাইতেন আমার সাথে।
আসলে কিন্তু তার মা, বাপ আছে। আর কান্নাটা তিনি কেঁদেছেন পেটের ক্ষুধায়। হুজুর খেতে রাজি হলেন। পেট ভরে দুইজন হোটেলে খাইলেন। খাওয়া যখন শেষ তখন হুজুরকে জিজ্ঞাসা করলো
- হুজুর আপনি তো পান খান, তাই না?
- হ বাবা, এইডা না খাইয়া পারি না।
- আপনে হুজুর বসেন, আমি আপনার জন্য একটা পান নিয়া আসি।
কাহিনী শেষ। শেষমেষ সেদিন হুজুর হয়ত বিল দিয়ে বের হয়েছিলেন। নয়ত কে জানে হয়ত হুজুরের পাঞ্জাবী টাঞ্জাবী খুলে রেখে দিয়েছিলো।
-০-
কয় দিন আগে কিবরিয়া কাকুরে দেখলাম গ্রামের বাড়ী। সে কাহিনী আরেক দিন...
©somewhere in net ltd.