নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখীমানুষ

সুখী মানুষ

সত্যিকারের সুখীমানুষের সাথে আমার একটাই পার্থক্য, সুখীমানুষের গায়ের জামা ছিলো না, আমার আছে।

সুখী মানুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার দেখা রাতের স্মৃতিগুলো

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৪৬

সবার চোখ ফাঁকি দিয়েই কাজটা আমি করে আসছিলাম। বছর খানেক পর ধরা পড়ে গেলাম। আব্বা পিছন দিক থেকে ডাক দিলো, অরুণ!

ঘটনা হইলো, আমার অজান্তেই আমি একটা কঠিন নেশায় ঢুকে গিয়েছিলাম। এই নেশা ঘোরের মত নেশা। বিষয়টা শুরু হয় ক্লাশ নাইনের শেষের দিকে। নেশাটার নাম গভীর রাতে হাটা'র নেশা। রাত এগারোটা, বারোটা পর্যন্ত পড়াশোনা করতাম। তারপর দড়জা বন্ধ করে আস্তে করে ঘর থেকে বের হয়ে যেতাম। এলাকার এমন কোন রাস্তা, এমন কোন কবরস্থান, এমন কোন ভয়ের স্থান নাই যা আমি রাতের পর রাত ঘুরে দেখি নাই। এই স্মৃতিগুলা বেশ রোমাঞ্চকর। কখনো কখনো বেশ বেদনারও। কত পূর্ণিমার আলো, কত অমাবস্যার অন্ধকারের সাথে মিশে আছে সেই অভিজ্ঞতাগুলান, আহা।

সেইসব স্মৃতিগুলা লেখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু সমস্যাও আছে। আমার আশেপাশে অনেকেই এখন ফেসবুক ব্যবাহার করে। কোন ঘটনাই লেখার অজুহাতেও সামান্যতম বাড়ায়ে লেখার বিন্দুমাত্র সুযোগ নাই। এমনকি কাউকে নিয়ে মজা করারও উপায় নাই। দেখা গেলো যাকে নিয়ে মজা করছি স্বয়ং সেই ব্যক্তিই আমার লেখার নিয়মিত পাঠক। দেখা গেলো পাঠকের এই খড়ার দিনে উল্টা একজন পাঠক কমে গেলো।

মজা করতে গিয়ে কিছু লেখাতো দূরের কথা। বলাটাও কত ভয়ানক হয় তার উদাহরণ দেই। প্রিয়'র (সাবধাণতা অবলম্বন করলাম) এক আত্মীয় ট্রাভেল ব্যাগ কে লাকিজ বলে। একদিন মজা করেই বল্লাম
- প্রিয় লাকিজ ধরে না বাবা।
পাশে যিনি বসে ছিলেন, তিনি কিন্তু বুঝে গেলেন আমি লাগেজ না বলে কেন লাকিজ বল্লাম। এবং এই বলার মাধ্যমে কাকে অপমান করলাম। তিনি পাশ থেকে হুংকার দিলেন
- তুমি তো ইংরাজীর তিমি মাছ। সারা দিন খালি অন্য মানুষের দোষ ধইরা বেড়াও।

রাতের দুনিয়া দেখার অভিজ্ঞতা বলবো। আজ একটা ঘটনা বলি।
কামাইরা খালের পুল নামের একটা জায়গা আছে। দিনের বেলায়ও মানুষ এই পুলের কাছে একা যায় না। অনেকগুলা ঘন বাঁশের ঝাড় দিয়ে জায়গাটা ঢাকা। দিনেও অন্ধকার থাকে। বছর খানেক আগেও পাশের বাড়ীর মনু ফুপুর হাজবেন্ড এই পুলের কাছে ভয় পেয়ে মারা গেছেন। একদিন সন্ধায় যখন বাজার থেকে ফিরি তখনই দেখলাম কে যেন কলা পাতায় করে ভোগ দিয়ে গেছে। কামাইরা খালের পুলের একটু দূরে। বাঁশ বাগানের মাঝখানটায়। তখন মানুষজন ভোগ দিতো মনের আশা পূরণ করার জন্য। বেশীরভাগ সময়ই মনের এই আশাগুলা হইতো অন্য কারো ক্ষতি করা। যেমন, আল্লাহ ওমুকে যেন রক্ত বমি করতে করতে মারা যায়। আল্লাহ তুমুকের মাইয়াটা জানি কারো সাথে ভাইগা গিয়া ওর মুখে চুনকালি দেয়, ইত্যাদি টাইপ।

রাত একটার দিকে কখন যেন মনের অজান্তেই হাটতে হাটতে কামাইরা খালের পুলের কাছে চলে আসলাম। দূরে তাকায়ে দেখি ভোগ দেওয়া খাবারের কাছে কী যেন জ্বলজ্বল করছে। বুঝলাম, হয়ত কুকুর। রাতে কুকুরের চোখ জ্বলজ্বল করে। আরেকটু কাছে গেলাম। দেখি একটা লোক হাটু গেড়ে মাটিতে বসে আছে ভোগের উপর। এত বছর পর স্মৃতি ঘেটে লেখতে গিয়ে ভয় লাগছে। অথচ তখন ভয় লাগতো না। খুব সহজ, সাবলীল ভাবেই তাকায়ে রইলাম। লোকটা ফিরে আমার দিকে তাকাইলো। হালকা আলো আঁধারে আমি ভাবা শুরু করলাম, পরিচিত চেহারার লোকটাকে কি আমি চিনি?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৫৯

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: সাসপেন্স রাইখা দিলেন! B:-) আপনে লোক ভালা না :P

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

সুখী মানুষ বলেছেন: জীবন থেকে নেয়া গল্প ভাই।
খুব দ্বিধায় ভুগতেছিলাম, আদৌ এইসব বলবো কি না। দেখা গেলো আমার দেখা স্মৃতিগুলা অন্যের মনে দাগ কাটলো না। তাহলে কেন শুধু শুধু বলা? প্রায় এক বছর আমি এমন করে রাত বিরাতে ঘুরে বেড়াইছি। দেখি, পরের পর্বটা লেখে ফেলবো। কথাগুলা বলায় ইন্সপাইরেশন দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪

সুখী মানুষ বলেছেন: লেখতে গিয়ে হঠাৎ খেয়াল করলাম, "পাছে লোকে কিছু বলে" ভয়টা কাজ করছে মনে। স্মৃতিগুলা আমারই দেখা। কিন্তু আরেকটা সমস্যা খেয়াল করলাম, লেখার পরে স্মৃতিগুলা কেমন যেন নাটকীয় হয়ে যাচ্ছে। দুই একটা বর্ণনা আমার দেখা স্মৃতিগুলাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। দেশের বাড়ীর অনেকেই আমার সাথে ফেসবুকে আছেন। তারা গল্পগুলা, জায়গাগুলা মিলাতে পারবে। হয়ত বলে বসতে পারে, কৈ ওমুকে তো তেমন ছিলো না। অতএব লেখাটা বড় রিস্কি। তারপরেও ভরসা ঐ আমার গুরু। তিনি তো বলেই গেছেন

"সেই সত্য যা রচিবে তুমি,
ঘটে যা তা সব সত্য নহে ।কবি, তব মনোভূমি, রামের জন্মস্থান অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো ।''
~~ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৫৯

লাল পিপড়ে বলেছেন: মজা করতে গিয়ে কিছু লেখাতো দূরের কথা। বলাটাও কত ভয়ানক হয় তার উদাহরণ দেই। প্রিয়'র (সাবধাণতা অবলম্বন করলাম) এক আত্মীয় ট্রাভেল ব্যাগ কে লাকিজ বলে। একদিন মজা করেই বল্লাম
- প্রিয় লাকিজ ধরে না বাবা।
পাশে যিনি বসে ছিলেন, তিনি কিন্তু বুঝে গেলেন আমি লাগেজ না বলে কেন লাকিজ বল্লাম। এবং এই বলার মাধ্যমে কাকে অপমান করলাম। তিনি পাশ থেকে হুংকার দিলেন
- তুমি তো ইংরাজীর তিমি মাছ। সারা দিন খালি অন্য মানুষের দোষ ধইরা বেড়াও।

-
চোরের মন পুলিশ পুলিশ :P

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৬

সুখী মানুষ বলেছেন: ভাই আমার, নিজের অভিজ্ঞতাগুলান লেখে দেখেন না ;) । দেখেন কত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৩:১৪

শ্মশান বাসী বলেছেন: দিলেন তো মিয়া গ্যাস্ট্রিক বাজাইয়া। বাকিটা কবে??

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:২৫

সুখী মানুষ বলেছেন: আপনি শ্মশানেই থাকেন ভাই, আপনার কাছে আমি নিজেই আসতেছি বাকীটা নিয়া। শ্মশানের স্মৃতিও আছে অভিজ্ঞতায়। :)

৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৭

কাবিল বলেছেন: ভাল লাগতেছে, পরের পর্বে দেখি কি হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.