![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বহু নিয়ম মেনেছি। লেখাপড়া করার নিয়ম... মেনেছি, পরীক্ষা দেবার নিয়ম... মেনেছি, চাকরী করবার নিয়ম... মানব। কিন্তু নিয়মটা কে মানা উচিৎ একথাটাও কি মানতে হবে ?
আমার নিজের চোখে দেখা একটা ঘটনা, বোধহয় তখন কলেজে পড়ি। একটা বৃষ্টির দিন ছিল, আমি বাড়ির পাশের একটা দোকানে আটকে গেছিলাম। পাশেই একটা অফিস ছিল, সরকারী অথবা আধা সরকারী হবে। কিছুক্ষন পর খেয়াল করলাম একটা ভাইয়া হেটে আসছেন দোকানের দিকে, সম্পূর্ন ফর্মাল ড্রেসে। বোঝাই যাচ্ছিল ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলেন ঐ অফিসটাতে। অবাক করার বিষয় ছিল ঐ ড্রেসে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে রাস্তা পার হয়ে ওনার দোকানের দিকে হেটে আসাটা। হাতে সার্টিফিকেট ভর্তি একটা ফাইল ছিল কিন্তু বৃষ্টি থেকে বাচার কোন ইচ্ছা তার ছিল না। আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে তার পালিশ করা কালো জুতাটার উপরে কাদার ছিটা গুলার কথা। ওনার দেখে বুঝতে অসুবিধে হলোনা ইন্টারভিউ খারাপ হয়েছে। দোকানে এসে সিগারেট চাইল, ব্রান্ডটা খেয়াল নাই আমার। তবে যেটা স্পষ্ট মনে আছে উনি ঐ সিগারেট গুলা বেন্সনের প্যাকেটে দিতে বলেছিলেন দোকানদারকে। তারপর সেখান একটা ধরিয়ে প্যাকেট টা রেখেছিলেন বুক পকেটে। আমি আরো ভাল ভাবে খেয়াল করেছিলাম, ওটা বেন্সনের গন্ধ ছিল না। সিগ্রেটের ধোয়া ছাড়ার ভিতরে স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল ওনার মানষিক অবস্থাটা। যখন কোন কারনে আমি ফ্রাস্টেশনে ভুগি ঐ দৃষ্টটা মনে করি। ঐ পরিস্থিতিটার সাথে তুলনা করি। তখন বুঝি আমার এই ডিপ্রেশানটার কারন কতটা সামান্য। ফর্মাল ড্রেসে কাদা লাগা একটা বেকার আর বেন্সনের প্যাকেটে কমদামী সিগ্রট রেখে নিজের সৌখিনতাটাকে বোকা বানানোর চেষ্টা। দৃশ্যটা অনেক সাধারন আমি জানি, কিন্তু আপনি যদি সকালের টুথপেষ্ট থেকে দিনের শেষ চায়ের কাপটার সাথে আপোষ করতে করতে অভ্যস্ত থাকেন তবে এটা কখনো সাধারন দৃশ্য মনে হবে না,চোখে আলাদা কিছু একটা ধরা পড়বেই। কিন্তু ইদানিং দেখি আমাদের সমাজে একটা অদ্ভুত রীতি চালু হয়েছে, সেটা হল আমরা কেউই নিজেদের সামর্থবান ভাবতে চাইনা। আসলে অভাব উপযোগ এগুলো সীমাহীন, সেটা কারোরই পূর্ণ হবার নয়। কিন্তু সেই অপূর্নতার জন্য নিজেদের কে মধ্যবিত্ত ভাবা শুরু করব ? আমি কথাটা এমনি এমনি তুলি নাই, আমি দেখিছি আমাদের স্থানীয় এক শিল্পপতির ছেলে বাইক কিনবে দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা দিয়ে, কিন্তু কিছু টাকার সল্পতা হওয়ার সে নিজেকে মধ্যবিত্ত দাবী করে বিশাল লম্বা একটা ফেসবুক স্টাটাস দিয়ে দিল, যেনো যেন শব্দটা ব্যাবহার করা একটা আর্ট !!! সেদিন প্রশ্ন করেছিলাম ওরা মধ্যবিত্ত হলে আমি কে ? অর্থনৈতিক ভাবে তো আমার কোন অস্তিত্ত্বই থাকল না তাহলে। অঞ্জন দত্তের বিভিন্ন গানে যে মানুষগুলোকে আমরা মিনিবাসের হাতল চেপে রোজ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অফিসে যেতে শুনেছি, মাসের প্রথম দিন টার জন্য ত্রিশটা দিনের আকুতি, স্ত্রীর ছেড়া ব্লাউজের লজ্জা-অপমান, বাচ্চার গুড়োদুধের কৌটাটার সাথে পর্যন্ত আপোষ করতে দেখেছি তারা কারা ?? একটা কথাটা আমি প্রায় বলি , আজও বলছি “ মধ্যবিত্ততা কোন আর্ট না, এটা একটা অভিষাপ” ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৩
শূণ্য মাত্রিক বলেছেন: এটাই উপলব্ধি করেছি।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:২৭
কহেন কবি কালিদাস বলেছেন: ভাই মধ্যবিত্ত/নিন্ম মধ্যবিত্ত হল সেই সব মানুষ যারা জিবনে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিশ চাইলেও পায় না । ওদের অনেক সাধ আহ্লাদ অপূরণীয় থেকে যায় । কিন্তু ভাই এটা অভিশাপ না । আমি নিজেও একজন মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে । আমার কাছে কেন যেন মনে হয় আমরা জীবনে যতটা সুখ-শান্তি পাই, যেভাবে জীবনকে ছুঁয়ে দেখতে পারি তা মনে হয় অন্য কেউ পারে না ।
ভাল থাকবেন নিরন্তর ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৪
শূণ্য মাত্রিক বলেছেন: খুব সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, আপ্নিও ভাল থাকবেন
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩
আলোরিকা বলেছেন: মধ্যবিত্ততাই আর্ট ! কেন বলুন তো ?
উঃ কারণ মধ্যবিত্তকেই আর্ট করে চলতে হয় !
এবং তারাই সমাজের হার্ট
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৫
শূণ্য মাত্রিক বলেছেন: বাহহহ !!! এটাতো ভাবিনি। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬
গরু গুরু বলেছেন: "মধ্যবিত্ততা কোন আর্ট না, এটা একটা অভিষাপ”