নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞানের মহাসমুদ্রে আমি নগন্য এক মাঝি।

সিকদারভাই

সিকদার থেকে সিকদার ভাই ।

সিকদারভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি আত্মহত্যার কাহিনী ।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৯



ভেবেছিলাম লিখব না । কিন্তু এই মাত্র রাত আটটা উনচল্লিশ মিনিটে লাশটা যখন খাটিয়ায় করে আমার দোকানের সামনে দিয়ে নিয়ে গেল তখন ভেজা চোখে কি বোর্ডটা টেনে লিখতে শুরু করলাম।



সকালে সাড়ে এগারটায় দোকানে এসে কিছু দোয়া কালাম পড়ে দোকানে বসলাম । কিছুক্ষন পর কম্পিউটারটা চালু করা দৈনিক আজাদী আর আমাদের দেশ পত্রিকা পড়ছিলাম । এই সময় সিএনজি করে আমার এক বন্ধু এল । ও গাড়ি থেকে না নেমেই আমাকে বলল " যাবি ? "



" কোথায় "



" খোকন ভাইয়ের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে । "



আমি আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি কম্পিউটারটা বন্ধ করে সি এন জিতে উঠলাম।



থিতু হয়ে বসে প্রশ্ন করলাম "কি হয়েছিল ? "



" যৌতুক। "



" কেন বিয়ের সময় দেয় নাই ?"



" দেয় নাই মনে হয় । কারন মেয়েটা কয়েকদিন আগে খোকন ভাইকে বলেছিল " বাবা তুমি খাট আর কয়েকটা ছোটখাট ফার্নিচার দিলে আমি ওদের অত্যাচার থেকে বেঁচে যাই ।"



খোকন ভাই তখন বলেছিল " দিব মা দিব ।"



কিন্তু খোকন ভাই বেচারা গরীব সরল-সিধা মানুষ । ডিশের ভাড়া তুলার চাকরি করে । কয় টাকাইবা বেতন পায় । সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা । তারপর মেয়ের বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ চালাকি করে স্বর্ণ সব মেয়ে পক্ষের উপর তুলে দিয়েছে সাথে তিনশত বর যাত্রীর আপ্যায়ন । তখন ছেলে পক্ষ বলেছিল আপনারা এই দিলে আমরা আর কিছু চাইব না । কিন্তু বিয়ের কয়েক মাস পরই ছেলে , ছেলের মা-বাবা ও এক অবিবাহিত বোন মিলে শুরু করে অত্যাচার । প্রথমে ল্যাপটপ তারপর খাট ওয়্যারড্রব ও অন্যান্য ফার্নিচার। এই নিয়ে অত্যাচারে মাত্রা বাড়তে থাকে। এর মধ্যে মেয়েটি একবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে তখন ছেলে পক্ষের বাধায় সে সফল হতে পারেনি । এরপর ও ছেলে পক্ষের যৌতুকের জন্য অত্যাচার একটুকুও কমেনি । অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আজ সকালে ২১ বছরের মেয়েটি গলায় দড়ি দিয়ে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর মায়া ছাড়তে বাধ্য হল।



পাঠক একটি মেয়ে যখন বিয়ে করে শ্বশুর বাড়ি যায় তখন তার চোখে যেমন অজানা এক ভয় থাকে তেমনি থাকে ভবিষ্যত জীবনের রংগীন স্বপ্ন । একটি সুন্দর সংসার হবে । স্বামির ভালবাসায় ঘর জুড়ে আসবে নতুন অতিথি । তার কচি কন্ঠের মা মা ডাকে আনন্দে ভরিয়ে তুলবে তার সুখের ঘর। কিন্তু সব স্বপ্নই যখন ভেংগে চুরমার হয়ে যায় যৌতুকের করাল গ্রাসে তখন সেই অবলা মেয়েটি আশ্রয় খুজে নেয় আত্মহ্যার ছায়া তলে।



যদিও তা আমাদের কারও কাম্য নয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.