নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভেঙে চলেছি হৃদয় পাথর ব্যার্থ সময়ের মুগুরে

সর্বভূক

ভেঙে চলেছি হৃদয় পাথর কঠিন সময়ের মুগুরে।

সর্বভূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

রং-চা।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৫

তখন সেভেন-এইটে পড়ি।আমার বেশ কয়েক বছরের সিনিয়র এক কাজিনের দুটো কাঁচের চুড়ি অসাবধানতাবশত ভেঙে যায়।সে এমনভাবে কেঁদেছিল যেন তার চৌদ্দগুষ্টি সুনামিতে মারা গেছে।কত দাম দুটো কাঁচের চুড়ির??? ফালতু….তখন থেকেই মেয়েদের প্রতি একটা কেমন বিরক্তি কাজ করত।তারা এত ন্যাকা হয় কেন???



আমার নাতিদীর্ঘ ভালো লাগার একটা সম্পর্ক ছিল।সময়ের রেইঞ্জটা এতই কম ছিল যে মাঝে মাঝে মনে হয় শুরু আগেই যেন শেষ হয়ে গেছে।অল্প সময় বলে গিফট দেয়া-নেয়ার ব্যাপার ঘটেনি।তবে সেই চরম সুখের একদিন জি.ই.সির মোড়ে দুজনে রিকশা করে যাবার পর ভাংতির পাল্টাপাল্টিতে তিনি আমায় পাঁচটা টাকা দিয়েছিলেন।সেই পাঁচ

টাকা আমার মানিব্যাগের ভিজিটিং কার্ডের একটা কোনায় বহু যতন করে রেখে দেই।তাও প্রায় বছর তিনেক আগের কথা।



এরপর আমার অনেক কষ্টের দিন গেছে।গেছে কিছু সুখের দিনও।টিউশনি আর প্রোজেক্ট কাজের দরুন পাওয়া টাকায় মানিব্যাগ ফুঁসে উঠেছে অনেক বেশী।আবার দুটোর খরায় প্রায়ই থাকতে হয়েছে ভিখেরী হয়ে।মাঝে মাঝে কমদামি সিগেরেট টানারও পয়সা জুটত না।পাবলিক বাসে পা দেবারও টাকা নাই।কিন্তু ভিজিটিং কার্ডের প্রাচুর্য্যের ভিড়ে রয়ে গেছে সেই পাঁচ টাকার নোট।খুব একটা দেখতাম না আমি নোটটাকে।তাতে হয়তো আবেগের অপচয় বাড়বে।ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাড়বে ছন্দহীন কিছু বিরহী কবিতা।ঐ পাঁচ টাকার নোটে যেন আমি মেয়েটার গন্ধ পেতাম।তার চুলের গন্ধ…শরীরের ঘ্রান …অদ্ভুতভাবে মিশে ছিল সেই নোটটাতে।হাজার বিড়ম্বনায় বা দারিদ্র্যে তাই নোটটা খরচ করা হয়নি।নিজেকে ন্যাকা লাগত…তবু মেনে নিতাম…এটাই বোধ হয় ভালবাসা।



গত কয়েকদিন ধরে হরতালের মৌসুম চলছে।আর আমার চলছে সর্দির মৌসুম।সর্দি একেবারে মাথায় উঠে চড়েছে।সেই সাথে তীব্র মাথা ব্যাথা…গলা খুশখুশ।একেবারে বিতিকিচ্ছিরি অবস্হা।সন্ধ্যায় আড্ডায় গেলাম।বেশীক্ষন থাকতে পারলাম না।ফিরতে বাধ্য হলাম মিনিট পনের পরেই।পথেই রং-চা ওয়ালার দেখা পেলাম।এক কাপ ধোয়া ওঠা আদা মেশানো রং চা তখন বেহেশতের পানীয়।টাকা মিটিয়ে চলে এলাম।



অর্ধেক পথে গিয়েই থমকে দাড়ালাম।টাকাটা কোথা থেকে দিলাম।মানিব্যাগ খুলে দেখি তাতে পাঁচশ টাকার একটা নোট।ভিজিটিং কার্ডের জোয়ারে সেই আবেগীয় পাঁচ টাকার নোটটা নেই।সর্দি-কাশির ছোটে স্মৃতি-বিভ্রম হয়ে খরচ করে দিলাম টাকাটা।আমি আবার পিছু হাটলাম…খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম রং চাওয়ালাকে।পাওয়া গেল না।ঐ এলাকায় অনেকেই রং চা বিক্রি করে পেট চালায়।তার চেহারাটাও মনে করতে পারছিলাম না।যে আমি সর্দির মত সামান্য অসুখে এত দিনের আবেগে লালিত-পালিত পাঁচ টাকার নোট খরচ করে দিলাম…সেই আমি চা-ওয়ালার মুখ কিভাবে মনে রাখব???



তবুও আমি খুঁজব তাকে…আচ্ছা সেই পাঁচ টাকা যদি সে অন্য কাউকে দিয়ে দেয়??? তাতে কি সেই শরীরের সুঘ্রান মিশে থাকবে আগের মত???



আজ বুঝি সেই মেয়েটা এক জোড়া কাচের চুড়ির জন্য কেন এভাবে কেঁদেছিল।হয়তো সেখানেও মিশে ছিল কারও শরীরের সুঘ্রান বা ভালোবাসা।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

হেডস্যার বলেছেন:
আহা !! :)

২| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

সর্বভূক বলেছেন: :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.