নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভেঙে চলেছি হৃদয় পাথর ব্যার্থ সময়ের মুগুরে

সর্বভূক

ভেঙে চলেছি হৃদয় পাথর কঠিন সময়ের মুগুরে।

সর্বভূক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবরোধ রম্য।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২১

*সামনে অবরোধের দিনগুলো কিভাবে কাটাবে তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র লিখ!!!



প্রিয় “অ”,

আশা করি বিরোধীদলের নির্দলীয় সরকারের দাবিতে লাগাতার আজীবন অবরোধ কর্মসূচীতে ভালই দিনাতিপাত করিতেছ।তুমি পত্র লিখিয়াছো বিশ দিন পূর্বে অথচ আমি তাহা এইমাত্র হস্তগত করিয়াছি।তোমার পত্রে তুমি কিরূপে আমি অবরোধপূর্ন দিন কাটাইতাছি তাহা জানতে চাইয়াছো।তাই তোমাকে লিখিতেছি।



তুমি তো জানই গত বছর গ্র্রামে চেয়ারম্যানেরর কনিষ্ঠা কন্যা আঙুরবালার সহিত টাংকি মারিতে গিয়া আমি রামধোলাই খাই।ইহার পরে গ্রামবাসী আমার মস্তকমুন্ডন করিয়া নিরর্দয়ভাবে গ্রাম হইতে বিতারিত করে।রামধোলাই খাইয়াছি তাহাতে মোর দুঃখ নাই।উহাতে আমি শৈশবকাল হইতেই অভ্যস্ত।কিন্তু কষ্টের ব্যাপার হইল আমার চুল গজাইতাছে না।এই শীতে খুব কষ্ট পাইতাছি।যাইহোক, শহরে আসিয়া আমি এখন খুবি ব্যাস্ত দিনাতিপাত করিতেছি।এলাকার বড় কাদের ভাইয়ের কাছ হইতে আমি রাজনৈতিক দীক্ষা নিতেছি।উনি বিরোধীদলের একনিষ্ঠ সমর্থক।তবে তুমি ভাবিও না উনি জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী।যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তিনি বিরোধীদলে থাকেন।তিনি সরকারী সকল নৈতিক-অনৈতিক কর্মকান্ডের ফাটাফাটি প্রতিবাদ করেন।আবার তুমি ভাবিও না উনি বক্তৃতা দিয়া বা লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।উনি ককটেল ফুটাইয়া তার প্রতিবাদ করেন।এলাকাসূত্রে জানিতে পারিয়েছি…তাকেও কৈশরে গ্রাম হইতে মুরগী চুরির অপবাদে তাড়াইয়া দেওয়া হইয়াছিল।উনি এলাকায় ককটেল কাদের নামেও পরিচিত।উনি ককটেল ফাটানির অর্থ দিয়া মোটরসাইকেল কিনিয়াছেন।তুমি জানিয়া অবাক হইবে ককটেল ফুটাইয়া যে অর্থ তিনি উপার্জন করেন তাহা দিয়া তিনি দুটো বউয়ের লালন-পালন করেন।সম্প্রতি পোশাক শিল্পের এক কিশোরীকে তিনি উত্যক্ত করেন বলে খবর পাইয়াছি।মনে হয় উনি তৃতীয় বিবাহের দিকে অগ্রসর হইতেছে।শুধু তাহাই নয়…মাঝে মাঝে তিনি পেট্রোল বোমা ছুড়িয়া যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করিয়া নির্দলীয় সরকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করিতে চান।উনার মত বিপ্লবী আমি জীবনে আর দ্বিতীয়টি দেখি নাই।তুমি জানিয়া খুশি হইবে যে আমি এখন আন্তর্জাতিকমানের ককটেল তৈরী করিতে সিদ্ধহস্ত।এখন কাদের ভাই আমাকে গাড়িতে কি করিয়া অগ্নিসংযোগ করিতে হয় তাহা শিখাইতাছে।এইতো কিছুদিন আগে আমি একখানা দামী প্রাডো গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করিয়াছি।সাংবাদিকরা আমার ছবি তুলিলেন।পত্র-পএিকায় আমার রঙিন ছবি আসিয়াছে।পরে অবশ্যই কাদের ভাই আমাকে এই ঘটনার জন্য ভীষনভাবে তিরস্কার করেন এবং ব্যাপক মারধর করেন।পরে জানতে পারি যে রাজনৈতিক দলের নেতা গাড়ি পুরানোর অর্থ দিয়াছিল আমি তার গাড়িটাই পুড়াইয়া দিয়াছি।যাহোক, ছোটখাট ভুল তো হয়।আশা করি অবিলম্বেই আমি কাদের ভাইয়ের মত বিশাল কেউ হইতে পারিব।ও তোমাকে তো আসল দুঃখের কথা বলাই হয়নি।এইখানে আসিয়া আমার একজনকে ভীষণ মনে ধরিয়াছে।তাহাকে আমি প্রেমের প্রস্তাব দিতেই সে আমার নামে ইভটিসিং এর মামলা টুকাইয়া দিয়াছে।এই মামলায় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হইয়াছিল।সেই রিমান্ডে নিয়া আমাকে পাশবিকভাবে নির্যাতন করা হইয়াছিল।আমার পশ্চাৎদেশে তাহারা মুরগী,হাঁস,কবুতর,ঈগল যাহার ডিম পাইয়াছে তাহাই প্রবেশ করাইয়াছে।এখনও আমি ঠিকমত বসিতে পারি না।তবে হাজতে আমি অনেক বড় বড় নেতাদের দেখিয়াছি।শুনিয়াছি তাদেরও নিয়মিত ডিম-থেরাপি দেয়া হয়।নিজেকে তাহাদের কাতারে দেখিয়া প্রাণ জুড়াইয়া যায়।



সামনের দিনগুলোতে আরও বেশী ককটেল ফুটাইয়া…পেট্রোল বোমা ছুঁড়িয়া নির্দলীয় সরকারের দাবিকে আগাইয়া নিতে হবে।আজ আর নয়।আমাকে এখন লাল টেপ কিনিয়া আনিতে হবে।ফুরাইয়া গেছে।তুমি ভাল থেকো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.