নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাজামুস জুলকারনাইন রতন

এস েজ রতন

একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, লেখক, বক্তা, প্রশিক্ষক ও উন্নয়নকর্মী এবং মানব কল্যাণে নিজেকে সমর্পণকারী একটি স্বর্গীয় পৃথিবী উপহারে নিবেদিত আত্মা।

এস েজ রতন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়ারেন্টি গ্যারান্টি

২১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:০০



ইলেকট্রনিক্স পণ্য ছাড়া এখন জীবন যাপন করাই যেন দুষ্কর। ওয়াশিং মেশিন, ইস্রী, বিভিন্ন রকমের লাইটস্, ফ্যান, টিভি, ফ্রিজ, ক্লিনার, হিটার, কুলার, এসি, সেলফোন, কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ডিটেক্টর, লকার, সেন্সর আরো কত কি। এগুলো ছাড়া একটি দিনও যেন সচল থাকা দায়। এই পণ্যগুলো বিক্রির জন্য কত রকমের ব্র্যান্ড বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে। নামী দামী ব্র্যান্ডগুলোও এখন পণ্যের সহজসাধ্য ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন রকমের ছাড়, ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির ঘোষণা দিচ্ছে। পণ্যের অরিজিন কান্ট্রি হারিয়ে এখন ক্রয় ক্ষমতার বিষয়টি ভেবে ঐ কোম্পানীগুলো চায়না ও কোরিয়া থেকে পার্টস্ এনে স্থানীয়ভাবে অ্যাসেম্বলী করে বিক্রি করছে। সাধ্যের নাগালে থাকার কারণে সবার ঘরেই এখন বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস্ পণ্য শোভা পাচ্ছে।

এই পণ্যগুলোর বিক্রয়কেন্দ্রগুলো অনেক দৃষ্টিনন্দন আর পরিপাটি গোছালো হয়। বিক্রেতাদের আচরণ, সৌন্দর্যও হয় দেখার মতো। বিক্রির সময় তাদের মুখে আর আচরণে অসম্ভব বিনয় ফুটে ওঠে। ব্যবহারে আর পণ্যের ওয়ারেন্টি গ্যারান্টির সুবিধা দেখে ক্রেতা পণ্যগুলো কিনতে একমুহূর্তও ভাবে না। অবশ্য এছাড়া আর কি-ই বা করার থাকে। পুরোনো সেই প্যানাসনিক, ন্যাশনাল, মেইড ইন জাপান, কোরিয়া অরিজিন তো আর এখন পাওয়াই যায় না। বাধ্য হয়েই আমাদেরকে এই সহজলভ্য পণ্যগুলোতেই খুশি থাকতে হয়।

রামপুরা থেকে মালিবাগের দিকে যেতে প্রধান সড়ক, রামপুরা ফুটওভারব্রীজ পেরিয়ে বেশ কয়েকটি দোকানের পর ডিভাইডারের ওপারে রাস্তার ডানে “ভিশন” নামের প্রাণগ্রুপের একটি ইলেক্ট্রনিকস্ পণ্যের শো-রুম। লম্বামত একটি ছেলে নীল রঙ্গের ইউনিফর্ম পরা তিনি কম্পিউটারে বসে বিল প্রিন্ট করেন, এছাড়া রাশেদ নামের একজন সেলস্ ম্যান, আরেকজন আছেন চিকনমতো মাঝারী আকার– কাব্যের জন্য একটি টেবিল ল্যাম্প কিনতে সেখানে যাই। তারা সাজিয়ে রাখা দৃষ্টিনন্দন ল্যাম্পগুলো দেখালেন। দারুণ আকর্ষণীয় সব ল্যাম্প। টাকা পয়সা ব্যাপার না, যেন এখনই কিনে টেবিলে রাখতে পারলেই আনন্দ। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সেলস্ ম্যানরা যেচে যেচে বলতে থাকলেন ঐ ল্যাম্পের গুনাগুন, ওয়ারেন্টির কথা। যেকোন সমস্যায় ০৩ মাসের মধ্যে স্লীপসহ কার্ড নিয়ে হাজির হলেই হলো।

স্লীপ হাতে নিয়ে ল্যাম্পটা হাতে ঝুলিয়ে আমার মেয়েটা বেজায় খুশি মনে হাঁটতে থাকলো। স্লীপটা টেবিলে রাখতে গিয়ে হঠাৎ চোখ আটকে গেল ক্রেতার নামের অংশে। মনোয়ার নামের এক লোকের পানির বোতল কেনার স্লীপ ওটা। আরে এটা কেমন করে দিলো ওরা? স্বাভাবিক, সেল ফোন নম্বর, ঠিকানা সব ঐ ব্যক্তির। পরেরদিন অফিস থেকে ফেরার পথে ভিশনে গেলাম। তাদেরকে বললাম। বলল- এটা ব্যাপার না। আপনারটা প্রিন্ট বের করে দিচ্ছি। স্লীপে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখলাম না। ফলে ভ্যাট বাবদ কত কাটছে তা-ও স্পষ্ট না। কোন প্রয়োজনে কাকে কল করবো তা-ও ঐ স্লীপে নেই। যাক, অনেক কথা বলতে ইচ্ছে হলো কিন্তু বললাম না। পরে বাসায় ফিরে ভাবলাম, আমার মতো একজন সচেতন মানুষই যদি এই বিষয়গুলো না দেখে পণ্য কিনি তাহলে কেমন করে হবে? অথচ ঠিক এই বিষয়েই অফিসে কতো খেয়ালই না রাখতে হয়।

ল্যাম্পের অন-অফ নব দু’একদিন ব্যবহার না করতেই অচল হয়ে গেল। ল্যাম্প এর লাইট অফ হচ্ছে না, জ্বলেই থাকছে অহর্নিশ। এই দুইদিনে বিদ্যুতের লোডশেডিংও হয়নি। অর্থাৎ ল্যাম্প ব্যবহারই করতে হয়নি। চারদিন পর শো-রুমে যেয়ে মৌখিকভাবে জানালাম সমস্যাটির কথা। পাত্তাই দিলেন না। বললেন- ওটা নবের সমস্যা, ভেতরে নবের পয়েন্ট ভেঙ্গে গেছে। এটা ওয়ারেন্টিতে দেয়া যাবে না। টেকনিক্যাল সমস্যা হলে, আলো কম হলে কাজ করে দেয়া যেতো। অথচ ওয়ারেন্টি কার্ডে ০৩ মাসের ওয়ারেন্টি কথাটা ছাড়া অন্য কিচ্ছু লেখা নেই, কোন শর্ত দেয়া নেই। সেদিন ল্যাম্প নিয়ে যাওয়া ছাড়াই কথা বলেছিলাম। আরও দু’দিন গেল। ল্যাম্প বাবাজি তো আর অফ হয় না। চরম সমস্যা। পরের দিন ল্যাম্প নিয়ে গেলাম। দেখালাম। বললাম- চেষ্টা তো করেন। আপনাদের এক্সপার্ট আছে নিশ্চয়ই। ওয়ারেন্টি সেকশনে পাঠিয়ে দেন। কিছু একটা হয়তো হতে পারে। সেদিনও তারা নিরুৎসাহিত করল, বলল- এটা আর কিছু করা যাবে না। একরকম জোর করেই ল্যাম্পটি রেখে আসলাম। বলল- কিছু হলে আপনাকে কল করে জানাবো।

দিন যায়, রাত যায় আর কল! বাধ্য হয়ে আরো কয়েকদিন পর আবার গেলাম ঐ শো-রুমে। প্রথমদিন আমাকে স্যার আর আমার বউকে ম্যাডাম বলতে বলতে ফেনা তুলছিল। আর আজ বিরক্ত ও নীরস মুখে আমাকে দেখেই যেন তাদের অপয়া দিন শুরু হলো। ল্যাম্পটা আরো নষ্ট করে এনে বলল- এটা আর ঠিক হবে না। এভাবেই চালান। এখন ওটা ঐভাবেই চলছে। ওটা সারাদিন রাত জ্বলেই থাকছে। আর উপহাসের হাসি হাসছে। আমার ওয়ারেন্টির ০৩ মাস সময়ও আমাকে টিপ্পনি কাটছে।

মনে রাখবেন, টাকা আপনার, যতক্ষণ আপনার ব্যাংকে বা কার্ডে বা হাতে বা মানিব্যাগে আছে। এই লোভনীয় মোহনীয় কাগজটি কোনকিছুর বিনিময়ে হস্তান্তরের সময় তাৎক্ষণিক যতটা সম্ভব পণ্যটি দেখে নেবেন। প্রয়োজনে, সময় নেবেন। কয়েকদিন দেখে, বুঝে তারপর পণ্য কিনবেন। অন্য যেকোন কিছু বোঝা হলেও, টাকা কখনো বোঝা হয় না। আর ওয়ারেন্টি, গ্যারোন্টি ওগুলো ফাও, লোভ দেখানো, নেশা ধরানো।

বি দ্র : বিস্তারিত বললাম বলে আমাকে মাফ করবেন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

তারেক ফাহিম বলেছেন: ওয়ারেন্টি গ্যারান্টি শিরোনেমে লিখাটি বেশ বড়ই দেখাচ্ছিল। পরে পড়ে দেখলাম দুইবার আসছে।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০২

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: ল্যাম্প,সারাদিন রাত জ্বলে??? =p~
রিচার্জ কার্ড মিটারে কতো বিল কাটে?
আর যা বললেন,সেসব নিয়ে আর নাই বা গেলাম।আপনি,ভূল করেছেন।৩০০টাকার লাইট ১০০টাকায় কিনেন নি বলেই এই অবস্থা। :P

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৪০

পলাশবাবা বলেছেন: দ্যা ফয়েজ ভাই, তাই বলে "ভূল"

৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:২৯

ক্স বলেছেন: আপনি যখন জানলেন যে ভিশন প্রাণ গ্রুপের, তখন কোন সাহসে কিনতে গেলেন? আমি তো প্রতিজ্ঞা করে বসে আছি, প্রাণ গ্রুপ যদি দেশের সমস্ত জমিজমাও বর্গা নিয়ে নেয়, তখন দরকার হলে বিদেশ থেকে চাল আনিয়ে খাব, তারপরেও ঐ বজ্জাতদের ধারে কাছে যাবনা।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:২৪

এস েজ রতন বলেছেন: সুন্দর সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি দু’বার এসেছে, তা ঠিক করে দেয়া হলো। ফয়েজ সাহেব, আমার বাসায় আমন্ত্রণ, দেখে যান- ওটা সারাক্ষণ জ্বলছে কি না? আজও সকালে দেখে এলাম জ্বলছে ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.