| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তারেক রহমানের হঠাৎ ‘জামায়াত-বিরোধী’ উচ্চারণ: রাজনীতির মাঠে নতুন সংকেত, নাকি পুরোনো সমস্যার মুখোশ?
বিএনপি রাজনীতিতে এক অদ্ভুত মোড়—অনেক বছর পর হঠাৎ করেই তারেক রহমান সরাসরি জামায়াতকে ঘিরে কিছু সমালোচনামূলক কথা বললেন। ফজলুর রহমান কিংবা কিছু সাবেক ছাত্রদল নেতার মুখে যেসব কথা এতদিন ‘ইঙ্গিতে’ শোনা গেছে, এবার তারেক রহমান নিজেই তা বলে ফেললেন।
কিন্তু সমস্যা হলো—এটা এতটাই ‘অস্বাভাবিক’ শোনালো যে, মনে হলো অনভ্যাসে গলার স্বরই ফেটে যাচ্ছে।
তারেক রহমানের বক্তব্য একদম খারাপ হয়নি। ধর্মীয় কুঁজো যুক্তি দিয়ে মানুষকে বেহেশতের টিকিট দেখানো যায় না—এই কথাটা ঠিক। তিনি বলেছেন, বেহেশত–দোজখের গ্যারান্টি দুনিয়ার কেউ দিতে পারে না, কেউ দিলে সেটা ‘শিরক’ পর্যন্ত হতে পারে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এটিতে ভুল নেই—বরং যথেষ্ট শক্ত, যুক্তিসঙ্গত অবস্থান।
কিন্তু রাজনৈতিক বাস্তবতা—সেটা একেবারেই আলাদা।
বাঙালি বেহেশতের লোভে ভোট দেয় না—অন্তত গণমানুষের চরিত্র তা বলে না
তারেক রহমান যদি ভাবেন জামায়াত ভোট পায় শুধুই ধর্মের মোড়কে ‘বেহেশত-দোজখ’ দেখিয়ে—তাহলে তিনি ভুল দেখছেন।
বাংলাদেশে মানুষ ধর্মপ্রাণ—কিন্তু ধর্মীয় আবেগ যত আছে, তার চেয়ে বড় আছে ‘ব্যবহারিক জীবন’।
যে সমাজে:
** ঘুষখোর লোকের সামাজিক মর্যাদা আছে,
** নিয়ম-কানুন মানলে মানুষ হেরে যায় বলে ধরে নেয়,
** নিজের সুবিধার জন্য আইন ভাঙাকে অনেকেই ‘ইন্টেলিজেন্স’ মনে করে—
সেই সমাজে বেহেশতের লোভে ভোট দেবার ঘটনাটা খুবই সীমিত। আছে—কিন্তু ততটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর না।
বিএনপির আসল সংকট: নিজেদের ভেতরের দানব
মানুষ আজ জামায়াত নিয়ে যতটা সন্দিহান, তার চেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূলের প্রতি।
গত এক বছরে মামলা বানিজ্য—যা BNP ক্ষমতার বাইরে থেকেও করতে শুরু করেছে—এটা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করেছে।
টেম্পুস্ট্যান্ড থেকে বাসস্ট্যান্ড, এমনকি ময়লার গাড়ি—চাঁদাবাজির যে স্রোতধারা তৈরি হয়েছে, তা খুব অল্প সময়েই মানুষের চেহারা দেখে নিতে শিখিয়েছে।
লেখা বা বক্তৃতায় যতই তারা গণতন্ত্রের কথা বলুক, মাটির মানুষ দেখেছে—বিএনপির কিছু নেতা-মোড়লের মুখ পাল্টায় নাই। বরং সুযোগ পেলে আগের চেয়েও ভয়াবহ।
এটাই বিএনপির মূল ব্যথা।
এটাই তাদের পতনের ফাটল।
আর এখানেই জামায়াত নিরবে, ধীরে, শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে জায়গা তৈরি করছে।
জামায়াত কেন সুযোগ পাচ্ছে—বাস্তব ব্যাখ্যা
জামায়াতের রাজনৈতিক দোষ, ইতিহাসবিরোধী অবস্থান, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের আচরণ—এসব তো রয়েছেই।
কিন্তু এর মাঝেও সমাজে তাদের একটা ইমেজ—যা নিয়ে অনেকেই মুখে না বললেও স্বীকার করে—সেটি হলো:
** রাস্তাঘাটে প্রকাশ্য চাঁদাবাজি নেই,
** তৃণমূলে ‘দলের নামে’ জায়গা দখল–জমি দখল কম,
** ছাত্রশিবিরের ছেলেরা চাইলে অন্য দলে গিয়ে দোষ চাপিয়ে নেয়—নিজেদের নামে ‘সামাজিক বিশৃঙ্খলা’ তৈরি করে না,
** এদের সংগঠনভিত্তিক শৃঙ্খলা এখনও অনেক শক্ত।
এটা জামায়াতকে ‘শুদ্ধ’ বানায় না—দূরে দূরে না।
কিন্তু নোংরা রাজনৈতিক বাস্তবতায় সাধারণ মানুষ তুলনা করে:
“কে আমাকে সরাসরি ক্ষতি করছে?”
এখানেই বিএনপি পিছিয়ে গেছে।
এখানেই জামায়াত ‘সুযোগ’ পাচ্ছে।
তারেক রহমানের কী করা উচিত?
তারেক রহমানের ধর্মীয় ব্যাখ্যা ভালো—যুক্তিপূর্ণও।
কিন্তু রাজনীতি শুধু ধর্ম দিয়ে বিশ্লেষণ করলে হবে না। কারণ সমস্যা ধর্মে নয়—সমস্যা তার নিজের ঘরের ভেতরে।
জামায়াতের বেহেশত-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেয়ে তারেক রহমানের জরুরি কাজ—
নিজের দলের ভেতরের দানবদের থামানো।
মামলা বানিজ্য, তৃণমূল চাঁদাবাজি, অদ্ভুত রাহাজানি—এগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ।
এটাই তার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সুযোগ।
যদি তিনি এগুলো মোকাবিলা করতে পারেন—তাহলে বিএনপি আবার দাঁড়াতে পারে।
যদি না পারেন—তাহলে যত ধর্মীয় যুক্তিই তিনি দিক, মানুষ বলবে:
“নিজের দলের শয়তান সামলাতে পারেন না—অন্যের বেহেশত নিয়ে কথা বলছেন কেন?”
শেষ কথা
তারেক রহমান আজকে যেটা শুরু করেছেন—এটা ভালোর দিকেই ইঙ্গিত। কিন্তু এটিকে কার্যকর করতে হলে তাঁকে রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আগে ধরতে হবে।
বেহেশতের বাণিজ্যে জামায়াতকে হারানোর চেয়ে
বিএনপির ভেতরের ইবলিশদের বের করে দেওয়াই তার সবচেয়ে জরুরি কাজ।
সেটা করতে পারলে—তাঁর জন্য রাজনীতিতে পথ এখনও খোলা।
না পারলে—বাকি সব বক্তব্য শুধু শব্দ হয়ে মিলিয়ে যাবে।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২২
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: ঠিক তাই।
২|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৮
কলাবাগান১ বলেছেন: আওয়ামী ভোট চাই- তারেক
এখন দেখি প্রথম আলো ১৯৭১ কে খুব হাইলাইট করছে ডিসেম্বর এর উসিলায় ....মতলব ঠিক বুঝতে পারছি না কেননা প্রথম আলো ছিল লাইনের প্রথমে ১৯৭১ এর পক্ষকে ক্ষমতা থেকে নামাতে...
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩০
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
৩|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৮
আলামিন১০৪ বলেছেন: সত্যিকার ভালো মানুষ জনমানুষের জন্য রাজনীতি করে, নিজের আখের গোছানের জন্য না, এই কস্টি পাথরের বিচারে বাংলাদেশে বর্তমানে দুই ধারার দল সক্রিয়, ১। বামপন্থী, কিন্তু এরাও আওয়ামী লীগের সাথে মিশে পঁচে গেছে ২। ডান পস্থী জামাআত, কিন্তু আপনি যেমন বললেন, ভোটাররা মানুষ ভালো কি মন্দ সেটা দেখে ভোট দেয় না..
বিএনপি জিয়ার আদর্শ থেকে আজ বিচ্যুত, যে জিয়ার সততা ছিল প্রশ্নাতীত তার উত্তরসুরীরা এখন জিয়ার নাম বেঁচে খাচ্ছে
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৮
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন:
কে বামপন্থী আর রক ডানপস্থী। কে ভাল জনমানুষের কে খারাপ, জিয়ার উত্তরসুরীরা ভবিষ্যতে কি পাবেন, সেসব প্রশ্নে উত্তর খুব দ্রুতই দেখতে পাবেন।
৪|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৯
আলামিন১০৪ বলেছেন: সত্যিকার ভালো মানু জনমানুষের জন্য রাজনীতি করে, নিজের আখের গোছানের জন্য না, এই কস্টি পাথরের বিচারে বাংলাদেশে বর্তমানে দুই ধারার দল সক্রিয়, ১। বামপন্থী, কিন্তু এরাও আওয়ামী লীগের সাথে মিশে পঁচে গেছে ২। ডান পস্থী জামাআত, কিন্তু আপনি যেমন বললেন, ভোটাররা মানুষ ভালো কি মন্দ সেটা দেখে ভোট দেয় না..
বিএনপি, জিয়ার আদর্শ থেকে আজ বিচ্যুত, যে জিয়ার সততা ছিল প্রশ্নাতীত তার উত্তরসুরীরা এখন জিয়ার নাম বেঁচে খাচ্ছে
৫|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: যেহেতু তারেক রহমান আর দেশে আসবেন না, তাই এই দেশের রাজনীতিতে তার বক্তব্য এখন অপ্রাসঙ্গিক।
আমি যতদূর জানি তারেক জিয়া একদল ধর্মান্ধ লোকজন দ্বারা পরিবেষ্টিত, সে এখন জামাতকে প্রতিপক্ষ মনে করে তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছে।
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৯
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: "আমি যতদূর জানি তারেক জিয়া একদল ধর্মান্ধ লোকজন দ্বারা পরিবেষ্টিত" - সঠিক বলেছেন।
৬|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০০
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: একটা মন্তব্য করেছিলাম, ওটা কি ডিলিট করে দিলেন?
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২২
এস.এম. আজাদ রহমান বলেছেন: না ভাই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩১
কিরকুট বলেছেন: তারেকের অবস্থা এখন কুল রাখি না মান রাখি ।