নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুনভাবে নিজের চিন্তার শক্তি আর ভাবনার বিশ্লেষণ করার সামর্থ অর্জনের জায়গা হল ব্লগ। বিচিত্র ভাবনারাশির আলোয় নিজেকে আলোড়িত আর আলোকিত করার উদ্দেশেই আমরা ব্লগে আসি। অবসর সময়টাকে ভালোভাবে কাটানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম উপায় আর নেই। তদুপরি বিনোদন এখানে উপরি পাওনা

এস এম ইসমাঈল

মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।

এস এম ইসমাঈল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ আখেরী চাহার সোম্বা

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:০৬

আখেরী চাহার সোম্বা - সফর মাসের শেষ বুধবার 'আখেরী চাহার সোম্বা' হিসেবে বাংলার মুসলমান সমাজের মধ্যে বিশষভাবে প্রতিপালিত হতো। মুলতঃ 'আখেরী চাহার সোম্বা' একটা ফারসী শব্দগুচ্ছ। এর অর্থ - শেষ বুধবার। ফারসী ভাষায় বুধবারকে চাহার সোম্বা বলা হয়ে থাকে।



৬৩২ খৃষ্টাব্দের ২৭ শে সফরের এ দিনে আমাদের নবী হযরত রাসুলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দীর্ঘ সময় রোগ ভোগের পর সামান্য সুস্থ্যতা বোধ করে গোসল করেছিলেন বলে হাদীস শরীফ ও বিভিন্ন সিয়রের কিতাবাদিতে উল্লেখিত আছে। তাঁকে লুবাইদ নামে মদীনার এক ইহুদী চিরুনী দ্বারা যাদু করে সেটি একটা খেজুর গাছের ডাল সমেত কুয়ায় নিক্ষেপ করেছিল। এতে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর কোন কিছুই স্মরণ থাকতো না এবং শারীরীকভাবেও তিনি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েন। পরে স্বপ্নে জিব্রাঈল ( আঃ) মারফত তা অবগত হয়ে সুরা নাস ও সুরা ফালাক এর সাহায্যে তিনি যাদুর প্রভাব মুক্ত হন।



সে কারণে এ দিনটিতে এদেশের মুসলমানরা রোগ মুক্তির আশায় বিশেষ দোয়া-তাবিজ লিখিত পানি পান ও তদ্বারা গোসল করতো এবং ইবাদাত বন্দেগীর মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করতো। বৃটিশ সরকার এ দিনটিতে ও সরকারী ছুটি ঘোষনা করেছিল।



নুর নবীজী'র (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরোগ্য লাভের সুসংবাদ আবগত হয়ে সাহাবায়ে কেরামগণ (আঃ) আনন্দিত চিত্তে আল্লাহ্‌র দরবারে শুকরিয়া স্বরুপ হাজার হাজার দিনার সদকা-খয়রাত এবং বহু সংখ্যক উট-দুম্বা কুরবানী করেন। অবশ্য সেদিন বিকেলেই তাঁর শারীরীক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল।



এ ঘটনার ঠিক দু'সপ্তাহ পরেই তাঁর ইন্তেকাল হয়েছিল।পরে অবস্হা এতটা ভয়াবহ হয়ে দাড়িয়েছিল যে, এমনকি তিনি প্রাত্যহিক পান্জেগানা নামাজগুলিতেও ইমামতি করতে পারছিলেন না। ফলে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) কে নামাজের জন্য অস্হায়ীভাবে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।



ইসলামের ইতিহাসে সফর মাসটি বিশেষভাবে গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এটি আরবী হিজরী সনের দ্বিতীয় মাস। শাব্দিক অর্থ হলো 'খালি'। কারণ মুহররম মাসে যেহেতু যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ ছিল, তাই সফর মাসে আরবরা নতুন করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়তো। ফলে তাদের ঘরসমুহ খালি হয়ে পড়তো। এ মাসটি বিপদাপদ অবতরণের মাস। নুর নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,'' যে কেউ মাহে সফর অতিবাহিত হবার শুভ সংবাদ শুনাবে, আমি তকে বেহেশতে প্রবেশের শুভ সংবাদ প্রদান করি।'' হাদীসে আরো বর্ণিত আছে যে,'' পুরো বছরে দশ লাখ আশি হাজার বিপদের অবতারণা হয়। এর মধ্যে নয় লাখ বিশ হাজার সফর মাসেই নাযিল হয়ে থাকে।''



পবিত্র হাদীস শরীফে রয়েছে,"পৃথিবীতে যত রকমের বিপদ-আপদ ও বালা-মুসীবত রয়েছে, তার অধিকাংশই এ মাসে সংঘটিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে এ বিশেষ মাসটিতে''। যেমন হাদীস শরীফের এক বর্ণনানুযায়ী, "বার মাসে যত বালা-মুসীবত অবতীর্ণ হয়, তার সবই এ মাসের মধ্যে রয়েছে এবং গোটা বছরে আল্লাহ্‌তায়ালা যেভাবে বিপদ-মুসীবত দিয়ে থাকেন, তম্মধ্যে নয় অংশ সফর মাসের মধ্যে এবং বাকী এক অংশ মাত্র সারা বছরে নাযিল হয়। এ জন্য এ মাসকে 'মাহে নুযুলে বালা' বা মুসীবত অবতীর্ণ হওয়ার মাস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।



এ মাসে অনেক সম্মানিত আম্বিয়া আলাইহিস সালাম'র উপর পরীক্ষামুলক বিপদাপদ অবতীর্ণ হয়েছে, যেগুলি ইতিহাসখ্যাত যেমন- হযরত আদম'র (আঃ) জান্নাতে থাকাবস্হায় নিযিদ্ধ গাছের ফল ভক্ষণ করা, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ, হযরত আইয়ুব (আঃ) ভয়ানক অসুখে পড়েছিলেন। এভাবে হযরত যাকারিয়া (আঃ), হযরত ইয়াহইয়া (আঃ), হযরত কারজিছ (আঃ), হযরত ইউনুস (আঃ) প্রমুখ আম্বিয়া আলাইহিস সালামগণের উপর বিভিন্ন রকম পরীক্ষামুলক বিপদাপদের অবতারণা হয়েছিল।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.