নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
হযরত বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানী
রহ: এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
পর্ব--(১)
জন্ম ও শৈশব :
ইসলামী জগতের প্রাতঃস্মরনীয়
আধ্যাত্নিক ব্যক্তিত্ব,দরবেশকুল
শিরোমনি, বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির
জিলানী র: ১লা রমজান হিজরী ৪৭০
বা ৪৭১ সালে পারস্যের এক বিখ্যাত
জনপদ ‘জিলানে’ এ জনপদে জন্মগ্রহন
করেন।তার বংশতালিকায় পিতা
সাইয়্যিদ শায়খ আবু সালেহ র: এর
একাদশতম উর্ধ্বতন পুরুষ হযরত হাসান র:
এবং তার মাতা সাইয়েদেনা
ফাতেমা র: এর চৌদ্দতম উর্ধ্বতন পুর্বপুরুষ
ছিলেন হযরত ইমাম হোসেইন র:।
এভাবেই তিনি পিতৃ সুত্রে
হাসানী ও মাতৃ সুত্রে হোসাইনী
বংশধারার উত্তরসুরী। আব্দুল কাদির
জিলানী র: এর পিতা সাইয়্যেদ আবু
সালেহ মুসা র: একজন বিশেষ
পুন্যবান,কামেল ও বোযর্গ ব্যক্তি
ছিলেন। সচ্চরিত্রতা ও আল্লাহ
প্রেমের বিবিধ গুন তাহার মধ্যে
বিরাজমান ছিল। যৌবন কালে যখন
তিনি বিয়ে করেননি তখনকার একটি
ঘটনা ! তিনি একদিন নদীর ধারে
ক্লান্ত অবস্হায় বসে বিশ্রাম
নিচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখলেন
একটি আপেন পানিতে ভেষে
যাচ্ছে।তিনি ফলটি উঠিয়ে আনলেন
ও পরম তৃপ্তিসহকারে ভক্ষন করলেন।
কিছুক্ষন পর হঠাৎ তর মনে হল এই ফলটি
খাওয়া তাহার ঠিক হলো ? এই ফলের
মালিকতো তিনি নন।কোথা হতে এ
ফল ভেসে এসেছে কে জানে।তার
অনুমতিতো নেয়া হয়নি। তাহলে
তিনি কি পরদ্রব্য ভক্ষনজনিত অপরাধ
নিয়ে মহা বিচারকের সামনে
হাজির হবেন ? যে করেই হোক
মালিকের ঠিকানা বের করে মাফ
চেয়ে নিতে হবে।তাই তিনি
স্রোতের বিপরীত দিকে
বিষন্নচিত্তে আপেল ফলের
বাগানের সন্ধান করিতে
লাগিলেন এবং বাগানের ও
বাগানের মালিকের সন্ধান
পেলেন।বাগানের মালিক
সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ সাউয়েমী র:।
তিনিও একজন খোদাভীরু ধর্মপ্রান
সাধক।আল্লাহপাকের মারেফতের
সাগরে সর্বতাই তিনি নিমজ্জিত
থাকেন।তার কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে
বলে তার কাছে ক্ষমা চাইলেন যুবক
আবু সালেহ।বিস্মিত হলেন
বাগানের মালিক।এই যুবকের অন্তরে
কি আল্লাহভীতি।একেত
ো হাত ছাড়া করা যায় না।তিনি
বললেন, ‘আপেলেরতো অনেক মুল্য।কি
এনেছ তার জন্য ?’ আবু সালেহ জবাব
দিলেন,’আমার কাছেতো কোন
টাকাপয়সা নেই’ তবে গায়ে খেটে
মুল্য পরিশোধ করতে চাই।আপনি যতদিন
খুশী গায়ে খাটিয়ে নিতে
পারেন।’হজরত সাউয়েমী র: বললেন
ওয়াদা করবার আগে ভাল করে
ভেবে দেখ। আবু সালেহ বললেন আমি
ওয়াদা পুর্ন করবো ইনশাআল্লাহ।
সাউয়েমী র: বললেন তোমাকে পুরো
এক বৎসর বাগানের দেখাশোনার
কাজ করতে হবে উপরন্তু আমি যখন যে
কাজের হুকুম দিব তাই করতে হবে।
কোন কথা ছাড়াই সব শর্ত মেনে
নিলেন আবু সালেহ।সময় শেষ হবার পর
নুতন শর্ত যুক্ত করলেন সাউয়েমী র:।
তিনি বললেন ‘আমার একটি অন্ধ,বধির
ও বোবা কন্যা আছে তাকে তোমার
বিয়ে করতে হবে’। তাতেও রাজী
হলেন আবু সালেহ।বিয়ের পর বাসর
ঘরে ঢুকেই তাজ্জব বনে গেলেন আবু
সালেহ।তার নব বধুতো অপরুপা!
অন্ধ,বধির বা বোবা কিছুই নন।পরদিন
ব্যখ্যা দিলেন সাউয়েমী র:।আমার এই
কন্যা কোনদিন ঘরের বাইরে
যায়নি,বাইরের কোন লোকের
দিকে কখনো চোখ তুলে তাকায়নি
এবং তার মুখে কখনও অশ্লীল বাক্য
উচ্চারিত হয়নি।তাই তাকে আমি
অন্ধ,বধির ও বোবা বলেছিলাম।
আব্দুল কাদির জিলানী র: যখন
মাতৃগর্ভে তখন একদিন তার মাতা
সাইয়্যেদেনা উম্মুল খায়ের
ফাতেমা(র স্বপ্নে দেখেন যে মানব
জাতির আদি মাতা, হযরত আদম আ: এর
স্ত্রী হজরত হাওয়া আ: সহাস্য আনন্দে
তাকে বলছেন,”ওগো ফাতেমা ! তুমি
বিশ্বচরাচরের ভাগ্যবতী মহিলা।
তোমার গর্ভে যে সন্তান আছে,সে
হবে আওলিয়াকুল শিরমনি গাউসুল
আজম।”
অনুরুপ আরেক স্বপ্নে দেখিলেন হযরত
হযরত ইব্রাহিম আ: এর স্ত্রী বিবি
সারা র: মধুর স্বরে বললেন,”হে
সৌভাগ্যবতী ফাতেমা !আল্লাহ
পাকের মারেফাত তত্ত্বের শ্রেষ্ঠ
পথ প্রদর্শক ‘নুরে আজম’ তোমার গর্ভে
আছে।সুতরাং তুমি নিবিষ্ট মনে
আল্লাহর গুনগানে নিমগ্ন থেক।”
একই ভাবে আবার দেখলেন
ফেরাউনের পুন্যবতী স্ত্রী আসিয়া
আ: মধুর কন্ঠে বলছেন,”ওগো
সৌভাগ্যবতী ও মর্যাদাশীলা
ফাতেমা ! আমি তোমাকে এক
অনির্বচনীয় শুভসংবাদ প্রদান করছি।
তুমি অতিশয় সৌভাগ্যবতী ও
মর্যাদাশীলা রমনী।তোমার গর্ভে
যে আওলিয়াকুল শ্রেষ্ঠ সন্তানের
আবির্ভাব হয়েছে,পৃতিবীর বুকে
তার উপাধি হবে ‘রওশন জমির’।
সুতরাং তুমি সতর্কতার সহিত সেই
শুভক্ষনের জন্য অপেক্ষা করতে
থাক।”এরকম আরো বহু স্বপ্ন তিনি তার
গর্ভাবস্হায় দেখেন।
হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(র এর বয়স
যখন মাত্র ৫ বৎসর তখনই তিনি পিতৃহীন
হন।তার লালন-পালন ও পড়াশোনার
দায়িত্ব এসে পড়ে মায়ের উপর।মা
চরকায় সুতা কেটে জিবীকা
নির্বাহ করতে শুরু করেন।মাতা
পুত্রকে কখনও কখনও অনাহারে
অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়।
যেদিন ঘরে কিছু খাবার না
থাকতো তখন মা বলতেন,”আজ আমরা
আল্লাহপাকের মেহমান।”খুব অল্প
বয়সেই হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(র
মকতবে যাওয়া শুরু করেন।বাল্যবয়সেই
বিভিন্ন আলৌকিক ঘটনাও ঘটতে শুরু
করে।একবার সমবয়সী বালকদের সাথে
খেলায় যোগ দেয়ার ইচ্ছা করলে
গায়েবী আওয়াজ এলো,”হে বরকতময়
সত্তা ,আমারকাছে এসো!”কথা
শোনা গেলেও কন্ঠটি কার বা
কোথ্থেকে এলো কিছুই তিনি
বুঝতে পারলেন না।তাছারা কোন
লোকও তিনি সেখানে দেখতে
পেলেন না।তাই ভয়ে দৌড়ে তিনি
ময়ের কাছে চলে এলেন। এরকম আরো
বহুবার হয়েছে।একবার নিদ্রাকাতর
অবস্হায় সুখময় নিদ্রা যাচ্ছিলেন।এমন
সময় ঘুমের ঘরে তিনি স্বপ্নে
দেখিলেন-একজন
উজ্জল জ্যোতিবিশিষ্ট স্বর্গীয়
ফিরেশতা তাহার শিয়রের নিকট
এসে অত্যন্ত কোমল স্বরে
বলিতেছেন- ”হে আল্লাহর মনোনিত
আব্দুল কাদির!উঠ,আর নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে
পড়ে থেক না।সুখ শয্যার কোলে ঢলে
পড়বার জন্য এই পৃথিবিতে তোমার
আগমন ঘটেনি।তোমার কর্তব্য ও
দায়িত্ব সুদুরপ্রসারী! মোহগ্রস্হ,নিদ্র
াচ্ছন্ন জনগনকে নিদ্রার মোহ থেকে
মুক্ত করিবার জন্যই তোমার আগমন
ঘটেছে
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৯
বিজন রয় বলেছেন: ++