![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
আজ ১৯ মহররম আশেকে রাসুল ﷺ, ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন হযরত বেলাল (রাঃ)'র ওফাত দিবস!
#হযরত_বেলাল_ইবনে_রাবাহ (রাঃ) বিলাল ইবনে রাবাহ (রাঃ) ৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন এবং আবিসিনিয় বা হাবাশী বংশোদ্ভুত ছিলেন। তিনি ছিলেন মক্কার কুরাইশ নেতা উমাইয়া ইবনে খালফ-এর ক্রীতদাস। ইসলাম গ্রহণের কারণে তিনি তার কাফির মনিব দ্বারা নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতিত হন। পরবর্তীতে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) তাঁকে ক্রয় করেন দ্বাসত্ব ও অত্যাচার থেকে মুক্ত করেন। হিজরতের পর মদীনায় থাকাকালীন অবস্থায় তিনিই সর্বপ্রথম আযান দেয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
আশেকে রাসুল হযরত বিলাল (রাঃ)'র
নবীপ্রেমের একটি অতুলনীয় দৃষ্টান্ত!
আল্লাহর প্রিয় রাসুল ﷺ যখন প্রকাশ্য জগত থেকে অন্তরাল গ্রহন করলেন তখন সাহাবাইয়ে কেরামের উপর কিয়ামত কায়েম হয়ে গেল। সবার জিন্দেগি উজার হয়ে গেল । হুজুর মুহাম্মাদ ﷺ- এর বিদায় বিষাদে লোকেরা অস্থির হয়ে গেল। তাঁদের মধ্যে হযরত বেলাল হাবশী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)ও ছিলেন । তিনিতো মদিনার অলি গলিতে পাগলের মতো ঘুরছিলেন আর লোকজনদের বলতেন ”ভাইয়েরা তোমরা কি কোথাও আমার আক্বা রাসুলুল্লাহ ﷺ কে দেখেছো ? যদি দেখে থাকো তবে আমাকেও সাক্ষাত করিয়ে দাও! আমাকে রাসুল ﷺ কোথায় আছেন, বলে দাও! মদিনা মুনাওয়ারার প্রতিটি গলি সর্বত্র মাহবুবের কদমের নিশানা মওজুদ রয়েছে। শেষ পর্যন্ত হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বিদায় বিষাদ সহ্য করতে না পেরে মদিনা মুনাওয়ারা থেকে হিজরত করে সিরিয়ার হালবে চলে যান। প্রায় এক বছর পর স্বপ্নে তিনি হুযুর ﷺ এর দিদার লাভ করলেন। নাবী করিম ﷺ এরশাদ ফরমালেন "হে বেলাল! তুমি আমার সাথে সাক্ষাত করা কেন ছেড়ে দিয়েছো? তোমার হ্নদয় কি আমার সাক্ষাত করতে চায় না?” চোখ খুলে গেল অস্থিরতা বেড়ে গেলো ”লাব্বাইকা ইয়া সাইয়েদী ” (হে আক্বা আমি আপনার গোলাম হাজির) বলতে বলতে উঠলেন। আর রাতারাতি উটনীর পিঠে সাওয়ার হয়ে মদিনা মুনাওয়ারার দিকে রওয়ানা হলেন । রাত দিন অনবরত সফর করে শেষ পর্যন্ত আশেক্বেদের কেন্দ্র-ভুমি মদীনার নুরানী ও চিত্তাকর্ষক পরিবেশে প্রবেশ করলেন । মদিনা মুনাওয়ারায় প্রবেশ করতেই তাঁর হ্নদয়-ভুবনে ওলট পালট হয়ে গেল । তিনি সোজা মসজিদে নববী শরিফে চলে গেলেন। আর সারকারে মাদীনা ﷺ কে তালাশ করলেন কিন্তু কোথাও দেখতে পাননি । অতঃপর হুজরা শরীফে গুলোতে তালাশ করলেন, সেখানেও নবীয়ে করিম ﷺ কে পেলেন না। শেষ পর্যন্ত অস্থির হয়ে নূরে মুজাসসাম হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর রওযা পাকে হাযির হলেন । আর কেঁদে কেঁদে হাযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বেহুঁশ হয়ে নুরানী রাওযার পাশে লুটিয়ে পড়লেন ।ইতোমথ্যে হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু)র মদীনা শরিফে শুভাগমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছিল। চতুর্দিকে গুঞ্জন ছিলো মুআযযিনে নবী হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সরকারে দু’জাহা ﷺ এর রওজা পাকে হাজির হয়েছেন। যখন হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু)'র হুঁশ ফিরে আসলো ,তখন দেখলেন চতুর্পাশে মানুষের ভিড় জমে গেছে । এর পরক্ষনে মানুষ কাকুতি মিনতি শুরু হয়ে গেল , হে বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) একটিবার মাত্র পুনঃরায় ঐ চিত্তাকর্ষক আযান শুনিয়ে দিন, যা মহানবী (ﷺ) কে শুনাতেন। হযরত বেলাল (রা.) বারংবার হাত জোড় করে অপারগতা প্রকাশ করছিলেন ” ভাইয়েরা! এটা আমার সাধ্যের বাইরে কারণ আমি যখন নবী কারিম ﷺ এর জীবদ্দশায় আযান দিতাম তখনতো আমি ( আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলু্ল্লাহ) বলার সময় স্ব-চোক্ষে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর দিদার করে নিতাম । এখনতো নবী করীম ﷺ পর্দার আড়ালে তাশরিফ রাখছেন । এখন বলো আযানে আমি আমার সারকারে দিদার কেমনে করবো । অনুগ্রহ করে আমাকে এই খেদমত থেকে অব্যাহতি দিন। আমার মধ্যে বরদাশত করার ক্ষমতা নেই।” কিন্তূ প্রত্যেকবারই হযরত বেলাল (রা.) অস্বীকার করতে লাগলেন। কোন কোন সম্মানিত সাহাবী (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) অভিমত প্রকাশ করলেন যে, যে কোনমতে হোক হযরত হাসান ও হোসাইন (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) দের ডেকে নাও ! যদি শাহাজাদাদ্বয় হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে আযান এর দেয়ার হুকুম দেন তবে তিনি অব্যশই মেনে নিবেন। কেন না মহানবী (ﷺ) এর আহলে বাইতের প্রতি হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর অসাধারন ভালবাসা রয়েছে । এ অভিমতটা পছন্দ হলো সবার । সুতরাং, একজন লোক গিয়ে হযরত হাসান ও হোসাইন (রাদ্বিয়াল্লাহু আলহুমা) দের ডেকে নিয়ে আসলেন । আসতেই হযরত।হোসাঈন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হযরত বেলালের(রাদিয়াল্লাহু আনহু)এর হাত ধরে ফেললেন । আর বললেন হে বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আজ আমাদের কে ওই আযান শুনিয়ে দেন । যা আমার নানাজান (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) কে শুনাতেন । ” হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) প্রিয় হোসাঈন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে কোলে তুলে নিলেন । অতঃপর বললেন,আপনি আমাদের প্রিয় মাহবুব মহা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামা) এর কলিজার টুকরা । আপনি হলেন হুজুর মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামা) এর বাগানের ফুল । আপনি যা বলবেন তাই হবে । শাহঁজাদা ! আমি যদি অস্বীকার করি আর আপনি যদি নারাজ হয়ে যান , তবে মাযার মোবারকে নবীয়ে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) দুঃখিত হবেন । এখন হযরত বেলাল (রা.) আযান শুরু করলেন...
আল্লাহু আক্ববার ! আল্লাহু আক্ববার!
আল্লাহু আক্ববার ! আল্লাহু আক্ববার!
আশ’হাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লালাহ !
আশ’ হাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লালাহ !
মদীনার আকাশে বাতসে যখন বেলাল (রা.) র জ্বালাময়ি আযানের ধ্বনিত হলো । তখন মদীনাবাসিদের হ্নদয় আন্দোলিত হয়ে উঠলো । দির্ঘ কয়েক মাস পর যখন হযরত বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর আযান শুনে মনুষের চোখের সামনে নবি করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামা) এর পবিত্র জীবদ্দশার দৃশ্য ভেসে উঠলো । লোকেরা ক্রন্দনরত দৌড়াতে দৌড়াতে মাসজিদে নববী শরিফের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো । প্রত্যেকে অস্থির হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো । ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে লোকেরা কাঁদতে লাগলো । যখন হযরত বেলাল (রা.) ( আশ্’হাদু
আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ ! ) বললেন তখন হাজার হাজার কন্ঠে চিৎকার এক সাথে আকাশে ধ্বনিত হলো যার কারনে আকাশ -বাতাস ভারী হয়ে উঠলো । নারী – পুরুষ সবাই অঝোর নয়নে কাঁদতে লাগলেন । স্নেহের ছোট ছোট শিশুরা বলতে লাগলো ‘আম্মু ! মু’আয্যিনে নবী হযরত বেলাল তো এসে গেছেন কিন্তূ নবীয়ে কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) কবে তাশরিফ আনবেন ? যখন বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ( আশ্ হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ !) বললেন তখন স্বাভাবিকভাবে তাঁর দৃষ্টি রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) এর মিম্বর শরিফের দিকে পড়লো , আহা ! মিম্বর শরিফ তখন খালি ছিল । আহা ! নবীয়ে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) দিদার পাওয়া গেল না । রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) বিচ্ছেদের জ্বালা তাঁকে অস্থির করে তুললো ,হুযূর মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামা) এর শোক-যন্ত্রণা তিনি সহ্য করতে পারলেন না । বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেলেন । যখন অনেকক্ষন পরে হুঁশ ফিরে আসলো তখন উঠে দাঁড়ালেন এবং কাঁদতে কাঁদতে পুনরায় সিরিয়ায় ফিরে গেলেন ।
যখন অকৃত্রিম আশেক্ব হযরত বিলাল (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ) -এর ইনতেকালের সময় ঘনিয়ে আসলো, তখন তাঁর স্ত্রী চুড়ান্ত দুঃখে বলে উঠলেন ”ওয়ায নাহু ” ( হায়রে দুঃখ ! ) এটা শুনে হযরত বেলাল(রাদিয়াল্লাহু আনহু)বললেন, ওয়াত রাবাহ! (বাহরে খুশির সংবাদ! ) কারণ আমি অনতিবিলম্বে আপন মাহবুব আক্বা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহে ওয়া সাল্লামা) এবং প্রিয় সংঙ্গীদের সাথে মিলিত হবো।
( বুখারি শরিফ)
হযরত বেলাল (রাঃ) ২০ হিজরির ১৯ মহররম, ২ মার্চ ৬৪০ খ্রিস্টাব্দে ৫৯ বছর বয়সে সিরিয়ায় ওফাত লাভ করেন। তাঁর মাজার শরীফ সিরিয়ার বাব আল সাগির কবরস্থানে অবস্থিত।
ক্বিসমত মুঝে মিল জায়ে বেলাল হাবশী কী
দম্ ইশক্বে মুহাম্মদ মে নিকল জায়ে তো আচ্ছা …।
অর্থঃ আহা! আমি যদি বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর সৌভাগ্যটুকু পেয়ে যেতাম । তবে ইশক্বে মুহাম্মদ ﷺ এর মধ্যে বিভোর হয়ে আমার প্রান বায়ু টুকু বের হয়ে গেলেও তা উত্তম ছিল।
#সংগৃহীত
#উইকিপিডিয়া
#Sunniaaqida.
০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:১৩
এস এম ইসমাঈল বলেছেন:
গাজী সাহেব, আমার ব্লগে আপনার সুচিন্তিত মন্ত্যব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা আর একরাশ ভালোলাগার কুসুম কুসুম শুভেচ্ছা। আপনার ইতিবাচক সমালোচনা আমার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকলো। আসলে পাঠকের প্রতিক্রিয়া একজন লেখকের জন্য দিক নির্দেশক।আপনার ব্যাপারে যা কিছু শুনেছিলাম এখন মনে হচ্ছে য ঠিকই শুনেছিলাম। ধন্যবাদ অনেক ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনার পোষ্টের সংখ্যার তুলনায় পাঠক ও মন্তব্য কম।
আপনি দ্বীন লিয়ে লিখতে চাইলে, এখনকার সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে লিখুন; বর্তমান সমাজ ব্যবস্হায় দ্বীনের প্রভাব ইত্যাদি নিয়ে মানুষ অনেক কিছু বুঝতে চায়; সেগুলো নিয়ে লিখুন।