নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
ইসতিগফার কি ? : আল্লাহতায়ালার নিকট আপন কৃত পাপের জন্য ক্ষমা চেয়ে যে প্রার্থনা করা হয় তাই ইসতিগফার। ‘তাওবা ও ইসতিগফার’ মানব জাতির মিরাছ। যা আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম এর নিকট থেকে পাওয়া গেছে। সুতরাং মানুষের কর্তব্য সব সময় আল্লাহতায়ালার নিকট তাওবা-ইসতিগফার করা অর্থাৎ- তার দ্বারা সংঘটিত গুনাহ সমুহের জন্য মাফ চেয়ে কান্নাকাটি করা ।
কখন তাওবা করতে হয় ? যখনই কোন ব্যক্তি ঘটনাচক্রে পড়ে কোন পাপ কাজ করে বসে, তখনই সে ব্যক্তির উচিৎ আল্লাহতায়ালার নিকট মাফ চাওয়া । কারন পাপ কাজ থেকে বান্দাকে তাওবার করার সুযোগ দেয়ার জন্য কিরামান কাতিবিন ফেরেশতাদ্বয় ৭ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকেন। এ সময়ের মধ্যে যদি সে ব্যক্তি আল্লাহয়ালার পাক দরবারে স্বীয় গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ভীত চিত্তে, বিশুদ্ধ নিয়তে কান্নাকাটি করে ক্ষমা প্রার্থনা করে,তবে মহান রাব্বুল আলামীন দয়া পরবশ হয়ে উক্ত বান্দার যাবতীয় পাপরাশি ক্ষমা করে দেন। তাওবার জন্য কোন সময় নির্দিষ্ট করা নাই, যেমনটা নামাজ,রোযা,হজ্ব,যাকাত ইত্যাদি ইবাদাতের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। অতএব, যথাশীঘ্র সম্ভব তাওবা করে নেয়া উচিত। কেননা কখন আমাদের মৃত্যু এসে পড়ে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে যদি আল্লাহতায়ালার নিকট থেকে যাবতীয় পাপ কাজের জন্য মাফ চাওয়া না যায়, তাহলে আমাদের ধ্বংস নিশ্চিত। কারন মৃত্যুর পর মানুষের আমলের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
মহাগ্রন্থ আল কুরআনের শতাধিক আয়াতে কারীমায় মানব জাতিকে মহান আল্লাহ পাকের কাছে তাদের কৃত পাপরাশির জন্য ক্ষমা র্প্রাথনা অর্থাৎ তাওবা-ইস্তিগফার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সকল আয়াতে মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর অসীম দয়া ও ক্ষমাশীলতার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষন পুর্বক তাঁর নিকট কায়মনোবাক্যে ক্ষমা ভিক্ষা করার আদেশ দিয়েছেন।
যাতে আমরা তাওবার গুরুত্ব যথাযথভাবে অনুধাবন করতে পারি, সেজন্য কুরআনের নবম সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরায়ে তাওবা। আর আল্লাহ্তায়ালা নিজেই পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে কীভাবে তাওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে তা শিক্ষা দিয়েছেন।
পবিত্র কুরআনের সুরা নাসর এর শেষ আয়াতে আল্লাহ পাক বিশেষভাবে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার আদেশ দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে , “হে আমার হাবীব ! আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসা সহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করুন । নিশ্চয়ই তিনি তাওবা কবুলকারী।”
“মহান আল্লাহ পাক তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন” এ কথা পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআনের বহু ¯স্থানে বলা হয়েছে। সুবহান আল্লাহ্ ! তাওবাকারীগনের কত মর্যাদা !
হাদীসে কুদসীতে হযরত আবু হুরায়রা (রা বর্ননা করেন, আল্লাহয়ালা বলেছেন, “ আমার বান্দারা অমার সম্পর্কে যে রকম ধারনা পোষণ করে, আমি তার সাথে ঐরূপ ব্যবহার করি। ” এর তাৎপর্য হচ্ছে, বান্দা যদি কবুল হবার আশা নিয়ে একনিষ্ঠভাবে তাওবা করে,তার যাবতীয় অপরাধের মার্জনা চায় এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহতায়ালা তা নিঃসন্দেহে কবুল করবেন।
গাউসুল আযম বড় পীর হযরত আবদুল কাদির জিলানীকে (রাহঃ) লোকেরা দেখেছে যে, তিনি হেরেম শরীফের কঠিন প্রস্তর খন্ডের টুকরাগুলির উপর চেহারা মুবারক রেখে কাঁদছেন এবং বলছেন “হে আল্লাহ ! তুমি দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর। যদি আমি শাস্তির আসামী হই, তাহলে রোজ কিয়ামতের দিন তুমি আমাকে অন্ধ করে উত্থিত করো, যেন নেককারগনের সম্মুখে লজ্জিত না হই।” তথ্যসুত্র : হযরত শেখ সাদীর (রাহঃ) গুলিস্তাঁ ও বোস্তাঁ’র বঙ্গানুবাদ - অনুবাদক ঃ মাওলানা মোঃ সাইদুর রহমান - পৃষ্টা নং-৪৪, প্রকাশনায়ঃ-ইসলামিয়া কুরআন মহল, বাংলাবাজার,ঢাকা। প্রকাশকাল-২০০৫ খৃষ্টাব্দ।
অশেষ ফযীলত ও বরকতপূর্ণ হবার কারনে এবং সুন্নতের উপর আমল জারী রাখার প্রপ্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করে
আমাদেরকে প্রতিদিন কম পক্ষে একশত বার করে ইসতিগফার করা উচিত।
©somewhere in net ltd.