নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।
ভারতের প্রয়াত প্রধান মন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে আমার একটা মধুর স্মৃতি আছে। যা আজো আমায় আলোড়িত আর তাড়িত করে। ১৯৭৮ কি ১৯৭৯ সালে আমি তখন ঢাবির এম এ ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। ২১ জনের একটা দল নিয়ে আমরা শিক্ষা সফরে ভারত গিয়েছিলাম। সঙ্গে ছিলেন আমাদের সম্মানিত শিক্ষক জনাব প্রফেসর ডঃ সিরাজুল ইসলাম আর ডঃ হাবিবা খাতুন। সেবার আমরা কলকাতা, দিল্লী, আজমীর, আগ্রা জয়পুর সহ অনেকগুলো শহরে ঘুরলাম। ঢাকা থেকে বিমানে কলকাতা, সেখান থেকে ট্রেনে দিল্লী আর দিল্লী থেকে বাসে আজমীর। তখন গরম কাল। রাতের বেলা বাসে করে আজমীর যাত্রা করলাম। প্রচন্ড গরমে রাতে একটুও ঘুমাতে পারলাম না। আমি ঐ সফরের নাম দিয়েছিলাম >এ জার্নি টু হেল>।যাই হোক সিরাজুল ইসলাম স্যারের সাথে ইন্দিরা গান্ধীর প্রধান নির্বাচনী পরামর্শক মহা পাত্রজীর সাথে বেশ ভাল খাতির ছিল। আমরা সবাই তখন দিল্লীর দরিয়া গঞ্জ রোডের একটা হোটেলে উঠেছি।হটাৎ স্যার বল্লেন, কাল সকাল পাঁচটায় সবাই রেডি হয়ে থাকবে।আমি বরাবরই একটু সাহসী। জিজ্ঞেস করলাম স্যার কেন? স্যার বললেন, আমরা ভারতের প্রধান মন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করতে যাবো। ঠিক সাড়ে পাঁচটায় বাস আসবে, তোমাদের নিয়ে যাবার জন্য।
আমি বললাম, স্যার ব্রেকফাষ্ট কখন/ কোথায় করবো? আর আমরা কি উনাকে কোন প্রশ্ন করতে পারবো?
স্যার একটু যেন বিরক্ত হয়েই বললেন, উনি খুব সেনসিটিভ মহিলা। তোমরা আবার কি বলতে কি বলে বসবে, তাতে সমস্যা হতে পারে। কাজেই কোন প্রশ্ন নয়। আর সকালের নাস্তা সেখানেই হবে। আমি কোন মতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। আমাদেরকে নিয়ে যাবার জন্য পরদিন সকাল ঠিক সাড়ে পাঁচটায় বাস আসলো। আমাদের খুশী আর বাঁধ মানেনা। ফিটফাট হয়ে আমরা সবাই গিয়ে বাসে উঠলাম। বাস বেশী সময় নিল না। কাছাকাছিই ছিল ভারতের প্রধান মন্ত্রীর সফদর জং রোডের বাসভবন। দেখলাম আমাদের মিণ্টু রোডের মত বাংলো টাইপের একটা লাল ইটের ভবন। সামনে বিরাট লন।মহা পাত্রজী আমাদেরকে রিসিভ করলেন। আর দেখলাম উনি ব্যস্তপায়ে একবার ঘরে আবার বাইরে আসা যাওয়া করে সব কিছুর তদারকি করছেন। আরও দেখলাম ঘরের বাইরে আর ভিতরে সেই সাত সকালেও প্রচুর লোকজন। আমার হাতে ক্যামেরা ছিল। ফটো তুলতে চাইলে, উনার স্টাফরা মানা করলেন।বললেন, সময় মতো উনারা ছবি উঠিয়ে দেবেন। একটু পরে দেখলাম স্বয়ং শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী বেরিয়ে এলেন আমাদের সাথে দেখা করতে। উনি একটা সুতি শাড়ী পড়েছেন। এসেই উনি দুই হাত জোড় করে আমাদের অভিবাদন জানালেন। আমরাও তাঁকে একই ভাবে অভিবাদন জানালাম। তারপর, উনাকে নিয়ে আমরা সবাই, এক সাথে লাইন করে দাঁড়ালাম। উনার একজন স্টাফ আমাদের একটা গ্রুপ ছবি তুলে দিলেন। এই সেই ছবি। ছবির, বামদিকে সাফারী পরা আমি, হাতে ধরা আছে একটা ডায়েরী।
©somewhere in net ltd.