নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুনভাবে নিজের চিন্তার শক্তি আর ভাবনার বিশ্লেষণ করার সামর্থ অর্জনের জায়গা হল ব্লগ। বিচিত্র ভাবনারাশির আলোয় নিজেকে আলোড়িত আর আলোকিত করার উদ্দেশেই আমরা ব্লগে আসি। অবসর সময়টাকে ভালোভাবে কাটানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম উপায় আর নেই। তদুপরি বিনোদন এখানে উপরি পাওনা

এস এম ইসমাঈল

মুক্তমনা, সকল রকমের সংস্কার মুক্ত, আমি ধর্মভীরু হলেও ধর্মান্ধতা আমাকে কখনো গ্রাস করে নিতে পারেনি।আমি সুস্থ্য চিন্তা আর মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। আমার শক্তি আমার আবেগ আবার সে আবেগ-ই আমার বিশেষ দুর্বলতা। নেহায়েত সখের বশে এক আধটু কাব্য চর্চা করি, এই আর কি। প্রিয় বিষয় সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, সংগীত, দর্শন, দেশ ভ্রমন আর গোয়েন্দা সিরিজের বই পড়া।ভীষণ ভোজন রসিক আমি। জন্ম যদিও চট্টগ্রামে কিন্তু ঢাকা শহরেই লেখা পড়া আর বেড়ে উঠা। আমার জীবনের গল্প তাই আর দশ জনের মতো খুবই সাদামাটা।

এস এম ইসমাঈল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন লেখকের গল্প

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২৮

বহুযুগ আগে এদেশে গ্রামের লোকজনদের মাঝে লেখাপড়ার তেমন একটা চল ছিল না। ৩-৪ গ্রাম খুঁজে পাওয়া যেতেো একজন শিক্ষিত লোক। যাদের সন্তান বা নিকট আত্মীয় দূরে বা বিদেশে থাকতো তাদের কাছে কেউ কোন চিঠি লিখলে সেটা পড়ার জন্য অথবা চিঠির উত্তর দেয়ার জন্য এসব লেখাপড়া জানা লোকদের কাছে যেতে হত। সেরকম একজন লোকের কাছে একবার এক চাষী ভাই গেলেন একটা চিঠি লেখাবার জন্য। তখন লেখক সাহেব তার কাছে আগত চাষী ভাইকে বললেন, ভাই আমি কিন্তু এখন তোমাকে কোন চিঠি লিখে দিতে পারবনা। চাষী ভাই তাকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন? তিনি বললেন, আমার পায়ে ব্যথা তাই। তখন চাষী ভাই বললেন, আরে ভাই আপনি আমার সাথে দয়া করে মস্করা করবেন না। আপনি চিঠি লিখবেন হাত দিয়ে, আপনার ব্যথা হল পায়ে, তাহলে লিখতে অসুবিধা কোথায়? তখন লেখক বললেন, কারন আমার লেখা চিঠি আমি ছাড়া আর কেউ পড়তে পারবে না। তাই ঐ চিঠি খানা আবার আমাকে গিয়ে পড়ে দিয়ে আসতে হবে তাই।

প্রসঙ্গত আমার দাদা মরহুম আবদুল বাকী বি এ সাহেব ছিলেন সেই ব্রিটিশ আমলের বি এ পাশ এবং এলাকার এক মাত্র উচ্চ শিক্ষিত ব্যাক্তি। তিনি সরকারী হিসাব নিরীক্ষণ বিভাগের উঁচু পদে চাকুরী করতেন। তাঁর বড় ছেলে ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম বি বি এস পাশ করা ডাক্তার।

সেদিন ফেসবুকে দেখলাম, একজন তিন দিনে দেড় লক্ষ্য পৃষ্ঠার এক খানি উপন্যাস লিখেছেন, শুধু মাত্র বই মেলায় প্রকাশ করার জন্য।
লেখালেখিটা আসলে এক প্রকার সাধনা। গুনগত মান ছাড়া হাযার হাযার পৃষ্টার বইয়ের আদৌ কোন প্রয়োজনীয়তা বা মুল্য আছে কি? এভাবে হুড়াহুড়ি করে বই লিখলে কোন ভাল কিছু আশা করা যায় না। এরকম ফালতু বই পড়ার চেয়ে একদম দুরে থাকাই শ্রেয়। কারন হাবি জাবি জিনিষ খেয়ে রুচি খারাপ করার কোন প্রয়োজন আছে কি? এর চেয়ে দৈনিক পত্রিকা পাঠ করা আরো বেশী ফলদায়ক।

আলহামদু লিল্লাহ আমি প্রায় ১০-১২ টা বই লিখেছি। বিষয় ধর্ম, সুফীবাদ, কবিতা, কবিতার অনুবাদ, জীবনী। সময় নিয়েছি দশ বছর। একটা লেখা বার বার পড়ে নিজে সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমি থামি না। আমি সব লেখা্য় পাঠকের কথা মাথায় রাখি। আর চেষ্টা করি আমার লেখায় যথা সম্ভব বেশি তথ্য পাঠকদের উপহার দিতে।

লেখালেখি নিয়ে একটা পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছা ছিল। এসব কান্ড দেখে তা আরো প্রবল হল।

লেখালেখির সাথে যাদের সামান্য পরিচয় আছে, তারা বুঝবেন লেখালেখি করতে হলে পড়াশুনা করা লাগে। না হলে এক্কেবারে খালি পেটে ভাল কোন লেখা আশা করা যায় না। আমি মনে করি লেখকদেরকে শিক্ষকের ভুমিকা নেয়া উচিত। আর ভাল ছাত্র হলেই যে তিনি ভাল শিক্ষক হবেন এমনটা কিন্তু নয়। কারন নিজের মনের ভাবনা আরেক জনের কাছে কনভে করাটা সত্যিই বেশ কঠিন কাজ। লেখকদের
এমন ও সময় যায় তখন দুলাইন লেখাও আসেনা। আবার দেখা যায় কোন দিন ঘন্টার পর ঘন্টা লেখা আসতেই থাকে। লেখালেখির জন্য নির্ধারিত কোন টাইম ফ্রেম থাকেনা। সেটা লেখকের মুড এর উপর নির্ভর করে। লালন সাই এর একটা কথা আমার খুব মনে পড়ে, কোন লেখা মনে আসলেই তিনি তাঁর সাগরেদদের ডেকে বলতেন, "ওরে আমার ছানাপোনারা এসে পড়েছে,তোরা সব কোথায়?"
আজ বেশ কদিন ধরে একটা কথা মাথায় শুধু ঘোরাফেরা করছে।

আমাদের দেশের এসব টি-২০ লেখক বা মৌসুমী কোকিলদের জন্য একটা বুদ্ধি বের করেছি। সেটা হল মাইক্রো ব্লগিং। ওনারা ছোট ছোট পোষ্ট দেবেন। আর লেখার মান বাড়াবেন। এটা ছয় মাস থেকে এক বছর চলতে পারে। তাছাড়া আজকাল মানুষের হাতে সময়ও অনেক কম। তাই ছোট ছোট পোষ্ট দেয়া ফলদায়ক হতে পারে বলে আমি মনে করি।

আমার ক্যাম্পাস,আমার পরম গৌরবের জায়গা। এখনো নাতি-নাতনীদের নিয়ে স্কুলে আসা যাওয়ার সময় আমার প্রিয় ঢাবি ক্যাম্পাস এর কাছাকাছি এলে গর্বে আমার বুকটা ৩ ইঞ্চি ফুলে ঊঠে। ওদের কাছে বার বার একই গল্প করি, এটা আমার ভার্সিটি, এটা এরকম। আমরা ছিলাম এরকম,ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার আরেকটা আবেগের জায়গা আমার ছাত্র জীবন। কখনো ছাত্রদের প্রসঙ্গ এলেই কেন জানি না, মনটা আমার হু হু করে কেঁদে ঊঠে।১৯৮৩ সালে এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে গুলিস্তান এলাকায় মিছিলরত ছাত্রদের উপর পুলিশের ট্রাক চালিয়ে দিয়ে ৩/৪ জন ছাত্রকে মেরে ফেলা হয়। সেদিন আমার মনে খুব কষ্ট লেগেছিল। সেই থেকে আমি এরশাদ -কে আমি খুউব ঘৃণা করি।

চীনে পিকিং বিপ্লবের সময় শত শত আন্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীকে নির্দয়ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।

বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক এর সামনে শাপলা চত্তরে অবস্থানরত কাওমি মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করা হয়।এ হত্যাকাণ্ডের আজ পর্যন্ত কোন বিচার হয় নি। যেটা জাতির জন্য ভীষণ লজ্জাজনক।

আরেকবার আমি আমার গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট নেবার জন্য, কনভোকেশন এর রেজিসট্রেশন ফি জমা দেবার পর ও সেটা আর তুলতে যাইনি। কারন আমার আত্ম সম্মান বোধ। ৮ম শ্রেণী পাশ কোন বিধবা মহিলার হাত থেকে আমার অনার্স-মাস্টার্স সনদ নেয়াটা আমার কাছে চরম অবমাননাকর বলে মনে হয়েছিল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.