নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

সঞ্জয় নিপু

বাংলা আমার মা,বাংলা আমার দেশ

সঞ্জয় নিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিংবদন্তীর ব্লগার - ইমন জুবায়ের - বিশ্লেষণ করেছিলেন লালন এর গান ( আমার ভালোলাগা তার একটি পোষ্ট )

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৮



কিংবদন্তীর ব্লগার - ইমন জুবায়ের বাংলা ব্লগ , সাহিত্য সকল ক্ষেত্রে ছিল তার বিচরণ । তার নিখুঁত সৃষ্টিশীলতা দিয়ে রেখে গেছেন যুগান্তকারী কিছু লিখা যা আমাদের এবং আগামী প্রজন্মের একটি মেইল ফলক হিসাবে কাজ করবে। আমি তার লেখা অনেক লেখার মধ্যে একটি লেখা অসম্ভব ভালো লেগেছে যেটা আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করছি ।



লালনের এই গানটি কি চমৎকার বিশ্লেষণ তিনি করেছেন চলুন দেখি -

লালনের একটি গান -



তিন পাগলে হৈল মেলা নদে এসে

তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।



একটা পাগলামী করে

জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে

আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধূলার মাঝে

তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।



একটা নারকেলের মালা

তাতে জল তোলাফেলা করঙ্গ সে

পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে



পাগলের নামটি এমন

বলিতে ফকিল লালন ভয় তরাসে

চৈতে নিতে অদ্বৈয় পাগল নাম ধরেছে।

তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।



এই গানটি বেশ জনপ্রিয়। এদেশের হাটে-মাঠে-ঘাটে শোনা যায়। গানটি জনপ্রিয় বলেই মনে প্রশ্ন জানে গানটির মানে নিয়ে সাধারণ শ্রোতা আগ্রহ বোধ করে কি না। নাকি তারা কেবলি সুর ও তালের ঘোরে মাথা ঝাঁকায়? লালন এর গান নিয়ে আলোচনা হয় সাধুসঙ্গে-এটা আমরা জানি, কিন্তু সে তো মুষ্টিমেয় তত্ত্বজিজ্ঞাসুর কর্ম, ওই আসরে সাধারণ্যের প্রবেশ দুঃসাধ্য। তা সত্ত্বেও কি বাউল গানের মানে নিয়ে সাধারণ শ্রোতার মনে কি প্রশ্নের উদয় হয় না? যা হোক। এই গানটির মানে বোঝার চেষ্টা করা যাক।



তিন পাগলে হৈল মেলা নদে এসে

তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।



নদে মানে ধরে নিচ্ছি, নদীয়া, নদীয়া জেলা। জ্ঞানপীঠ বলে যে জায়গাটির এককালে বিপুল খ্যাতি ছিল। সেই নদীয়া জেলায় তিনজন পাগলের মেলা বসেছে। আমরা অনেক সময় বিদ্যাধর পন্ডিতব্যাক্তিকে পাগল বলি। ‘হৈল মেলা’ বলতে দেখা হয়েছে বোঝানো হয়েছে। তিনজন সাধারণ মানুষের দেখা হয়। আর তিনজন জ্ঞানী মানুষের দেখা হলে মেলা বসে যায়। আশেপাশে লোকের ভিড় বাড়ে, চলতে থাকে প্রশ্ন-উত্তর। যা হোক। লালন প্রথমেই কিন্তু তিন জন পাগলের নাম বলেননি, নাম বলেছেন গানের শেষ স্তবকে। তবে লালন বলেছেন, কেউ যেন পাগলের কাছে না যায়।

কেন?

সে কথায় পরে আসছি।

এরপর লালন বলছেন:



একটা পাগলামী করে

জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে

আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধূলার মাঝে

তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।



এ ক’টি চরণে পাগলের মানসিক প্রবণতা সম্বন্ধে অনেকটাই বোঝা গেল। একজন পাগলামী করে ‘ জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে’। এই চরণে যেন লালন পাগলের ‘জাত’ অনেকটাই চিনিয়ে দিলেন। এই পাগলেরা বৈপ্লবিক চিন্তাচেতনায় আচ্ছন্ন। কেননা, বাংলায়-যেখানে জাতপাতের অলঙ্ঘনীয় প্রাচীর উঠেছে-সেখানে জাতহীনকে জাত দেওয়া সহজ কথা নয়: এক অর্থে এটি পাগলামীই বটে। কেননা, অজাতকে জাত দিলে নিজের জাত খোয়ানোর আশঙ্কা থাকে। সে আশঙ্কা মাথায় নিয়েই উনিশ শতকে লালন গেয়ে উঠেছিলেন-



জগত জুড়ে জাতের কথা

লোকে গল্প করে যথাতথা

লালন বলে জাতের ফাতা ডুবিয়েছি সাধবাজারে।



বোঝা গেল, লালনের পাগলেরা সময়ের চেয়েও অগ্রসর চিন্তার অধিকারী এবং মানবতাবাদী। তবে তারা জাতপাত না-মানলেও ঈশ্বরে বিশ্বাসী। কেননা, ‘ আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধূলার মাঝে।’ হরি এবং আল্লাহ্ সমার্থক। তার মানে ওই মানবিক পাগলেরা সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত অবস্থায় আল্লাহর জিকির (স্মরণ) করতে করতে (সুফিদের মতো?) ধুলায় লুটিয়ে পড়ছে। শোষিত শ্রেণির পাশে দাঁড়ানো এবং ঈশ্বরের প্রতি গভীর বিশ্বাস-এটাই বাংলার মানবতাবাদীদের পবিত্র আদর্শ ...কিন্তু,লালন এও বলছেন, ‘তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে।’



এই ট্রপিক্সের আরো বিস্তারিত পাবেন এই লিঙ্কে -

View this link



আমরা আজীবন তাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবো ।



ধন্যবাদ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৮

ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন: :(

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

সঞ্জয় নিপু বলেছেন: :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.