![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টাঙ্গুয়ার হাওড় ভ্রমন..।
অপরুপ সৌন্দর্য্যের টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলার ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরনা এসে মিশেছে এই হাওরে। ছোট খাট ৫১টি হাওরের সমন্বয়ে ৯,৭২৭ হেক্টর এলাকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর জেলার সবচেয়ে বড় জলাভূমি এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর । প্রায় ২০০ প্রজাতির মাছ ,জলজ উদ্ভিদে ভরপুর এই হাওর
পানিবহুল মূল হাওর ২৮ বর্গকিলোমিটার এবং বাকি অংশ গ্রামগঞ্জ ও কৃষিজমি , স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে শ্যামলি আর মামুন এন্টারপ্রাইজের বাস সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর রাত ১১:৪৫ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া উত্তরা থেকে রওনা হলে এনা পরিবহনের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ আসতে পারেন। শ্যামলির একটি নাইট কোচ এসি সেবা দিয়ে থাকে, এছাড়া মামুন এন্টারপ্রাইজের সকল সার্ভিস নন-এসি। বাস সিলেকশনের ক্ষেত্রে এনা সব থেকে আরামদায়ক হবে, এরপর শ্যামলি আর মামুন এন্টারপ্রাইজ প্রায় কাছাকাছি মানের।
রাতের ১১:৩০ বাসে যাত্রা শুরু করলে ভোর ৫/৬ টার মধ্যেই আপনি সুনামগঞ্জ পৌছে যাবেন। অতিরিক্ত ক্লান্তি থাকলে ৪/৫ ঘন্টার জন্য আসেপাশের কোনো হোটেলে আলোচনার মাধ্যমে বিশ্রাম নিতে পারেন।
অথবা আপনি চাইলে বাস থেকে নেমে পুরান বাসষ্ট্যান্ড থেকে সকালের নাস্তা সেরে সরাসরি টাঙ্গুয়ার হাওড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। ট্যুর প্লান আপনার অবস্থান আর সাময়িক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।
টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়ার জন্য সুরমা ব্রিজ পাড়ি দিয়ে লেগুনা/বাইকে করে তাহিরপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। ট্যুর মেম্বার বেশী হলে লেগুনা দিয়ে গেলে খরচ কম পড়বে।
সুরমা নদীর ওপার থেকে লেগুনা দিয়ে তাহিরপুর যেতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লেগে যাবে। তাহিরপুর পৌছানোর পর তাহিরপুর বাজারঘাট থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা অথবা ট্রলার পরেরদিন সকাল পর্যন্ত ভাড়া করুন। বড় নৌকাগুলো ভাড়া করলে রাতে ঘুমানো এবং টয়লেটের বিষয়ে একটু বেশী সুবিধা পাবেন। চাইলে মাঝিদের সাথে আলাপ করে দুপুর / রাতের খাবার নৌকাতে রান্না করার ব্যবস্থা করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে তাহিরপুর বাজার থেকেই বাজার করে নিতে হবে। তবে মাঝিদের রান্না করা খাবারের মান সুবিধাজনক না হওয়ার গুঞ্জন থাকায় আপনি দুপুরের খাবার তাহিরপুর বাজার থেকে খেয়ে উঠলে অথবা সকালে একটু ভাড়ি নাস্তা করে উঠলে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওড়ে ঘুরার পর রাতের খাবার অনায়েসেই টেকেরঘাট বাজারে খেতে পারবেন। কেননা রাতে আপনাকে টেকেরঘাতেই থাকতে হবে ।
যদি পারেন প্রথম দিন সন্ধ্যায় অথবা পরের দিন সকালে টেকেরঘাটে অবস্থিত কেয়ারি – লাইমস্টোন লেক যাকে অনেকে নীলাদ্রি বলে চিনে ও লাখমাছড়া ঝর্ণা ঘুরে আসুন।
টাজ্ঞুয়ার হাওরে মন উজার করে ঘুরুন। অসাধারন ভালো লাগা কাজ করবে। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে অবস্থিত ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো হাওড় এলাকা দেখার চেষ্টা করুন। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারের নিচে স্বচ্ছ পানিতে গোসল করতে পারেন।
রাতের বেলায় নৌকায় শুয়ে শুয়ে হাওড়ি জোছনা উপভোগ করুন, বিশ্বাস করুন সমস্ত দু:খগুলো নিশ্চিত শুভ্রতায় পরিনত হবে। রাতে থাকাটা যথেষ্ঠ নিরাপদ, সুতরাং ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই।
কত খরচ পড়বেঃ
ঢাকা – সুনামগঞ্জ নন এসি ৫৫০ টাকা , এসি ৮০০ টাকা
পুরান বাসষ্ট্যান্ড থেকে সুরমা ব্রীজ পাড়ি দিন ১০ টাকা প্রতিজন
সেখান থেকে ১০০ টাকা প্রতিজনে লেগুনা ভাড়া করে তাহিরপুর।
তাহিরপুর থেকে ২৫০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে মাঝারি অথবা বড় আকারের ইঞ্জিন চালিত নৌকা অথবা ট্রলার ভাড়া করে নিন পরের দিন সকাল পর্যন্ত।
খাওয়া খরচ আপনাদের রুচির উপর নির্ভর করবে।
৮-১০ জনের গ্রুপ হলে খরচ কম হবে এবং ভ্রমণ পথে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন।
এছাড়া সুনামগঞ্জে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার মধ্যে থাকার জন্যে হোটেল (Hotel) ভাড়া পাবেন। হোটেল নূর-পূর্ববাজার স্টেশন রোড সুনামগঞ্জ হোটেল সারপিনিয়া-জগন্নাথবাড়ী রোড, সুনামগঞ্জ।
হোটেল নূরানী, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড , সুনামগঞ্জ। হোটেল মিজান, পূর্ব বাজার-সুনামগঞ্জ।
হোটেল প্যালেস, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন রোড সুরমা ভ্যালী আবাসিক রিসোর্ট
প্রয়োজনীয় কিছু ফোন নাম্বার
ফজলু ভাই (মাঝি) – ০১৭১৯৬৫৯৪৪৫
হাবলু ভাই (ট্রলারের মালিক) – ০১৭৪১২৪৮৭৬১
কাইয়ুম (ডাক বাংলো, তাহিরপুর) – ০১৭৩৬৪৪৭৪৭৬
বি:দ্র: পলি ব্যাগ, চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল, কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য পানিতে ফেলবেন না।
রিস্ক নিয়ে পানিতে নামবেন না। প্রয়োজনে লাইফ জ্যাকেট সাথে নিন। নতুবা ৫ লিটারের খালি পানির বোতল মুখ টাইট করে আটকিয়ে সাথে রাখুন। বিপদে তা লাইক জ্যাকেটের কাজ করবে।
হ্যাপী ভ্রামনীং
©somewhere in net ltd.