নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাংলায় কথা কই, আমি বাংলার কথা কই, আমি বাংলায় হাসি, বাংলায় ভাসি, বাংলায় জেগে রই..। আমি বাংলায় ভালোবাসি, আমি বাংলাকে ভালোবাসি, আমি তারি হাত ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আসি, আমি যা কিছু মহান বরণ করেছি বিনম্র শ্রদ্ধায়....।

অতি সাধারণ একজন, স্বপ্ন দেখি সোনালী দিনের।

আঁধার রাতের মুসাফির

আমি একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার, পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কম্পিউটার সায়েন্ষ বিভাগ থেকে। এখন কাজ করছি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে।

আঁধার রাতের মুসাফির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালো থেকো প্রিয় স্বদেশ, চলে গেলাম স্বপ্নের দেশে। ফিরে আসবো আবার তোমাদের মাঝে - শেখ হাসিনা

১২ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৫০

অনেক মাস পর অবশেষে মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারলাম। জেলখানার চার দেয়ালে বন্দী, এই কষ্ট শুধু অনুভব করা যায়, কাউকে বুঝানো যায়না। প্রিয় দেশবাসী, তোমাদের কারণে সরকার বাধ্য হলো আমাকে মুক্তি দিতে। আমাকে যে তোমরা ঋণের জালে জড়িয়ে দিলে। চেষ্টা করবো কোন একদিন সুযোগ পেলে এ ঋণ শোধ করার। ভেবেছিলাম - ওয়ান ইলাভেন আমাদের নতুন দিনের সন্ধান দিবে, যার জন্য শুরু হয়েছিলো লগি বৈঠার আন্দোলন, এত রক্ত ঝরালাম। কিন্তু কি লাভ হলো? রাজনীতির হিসাবটা প্রায়ই মিলাতে পারিনা, ভুল হয়ে যায় বার বার। আমার পিতার নেতৃত্বে আমরা পেলাম একটি স্বাধীন দেশ। ক্ষমতায় থাকা কালে মানুষ হিসাবে তাঁর ভুলত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু খুব অল্প সময়েই তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে, তাই বিপদ আঁচ করতে পেরে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে হলো, গণমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হলো, তাও শেষ রক্ষা হলো না।



পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর সেই যে মুখ ফিরিয়ে নিলে তোমরা কিছুতেই আর আমাকে সুযোগ দিলেনা । জীবনে অনেকগুলো ভুল আমি করেছি, তার মধ্যে অন্যতম একটি ভুল ছিলো স্বৈরশাসক এরশাদকে সমর্থন দেয়া এবং তার সাথে হাত মিলিয়ে শাসন ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন। আন্দোলন সংগ্রামের পর একানব্বইতে তোমাদের উপর ভরসা করে নির্বাচনের পূর্বেই ঠিক করেছিলাম আমার মন্ত্রী সভা, কিন্তু তোমরা আমার সাথে প্রতারণা করলে। সে দিন কি যে কষ্ট পেয়েছিলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমি বড় বেশি আবেগপ্রবণ, ঘটনার পরবর্তী ফলাফল চিন্তা না করেই অনেক কিছু বলে ফেলি। সেদিন নির্বাচনের পরিবেশ দেখে বলেছিলাম, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু ফলাফল দেখে বাধ্য হয়ে সুক্ষ কারচুপির অভিযোগ আনতে হয়েছিলো। এখানেও রাজনীতির মারপেঁচে ধরাশায়ী হয়ে গেলাম।



পরবর্তী আবার সেই হরতাল-ধর্মঘট, আন্দোলনের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হলাম। আমি তোমাদের কাছে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলাম, কাঁদলাম; তোমরা আমাকে বিশ্বাস করে ক্ষমতায় পাঠালে। এরপরের ইতিহাস তোমাদের জানা। হাজারী, মহীউদ্দীন, মায়া, শামীম ওসমান, হাজী সেলিম, লিয়াকত, তাহেরদের দিয়ে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গিয়ে আবারও আকাশ থেকে ভুমিতে পতিত হলাম ২০০১ সালের নির্বাচনে। এই জোট সরকার ছিলো ৯১ এর চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী ও রাজনৈতিক কুশলী। যার ফলে , শত চেষ্টা করেও পাঁচ বছর কিছু করতে পারলাম না।



অবশেষ মাথায় এলো নতুন কৌশল - যে কোন ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা তৈরী করতে দূর্বল সরকারের সময় লগি - বৈঠা দিয়ে রাস্তায় নামালাম তোমাদের। এলো আমাদের পছন্দের লোকদের নিয়ে গঠিত সরকার। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে আমাদের পছন্দের ব্যক্তিদের বসানো হলো- এ ব্যপারে পর্দার পেছনের অদৃশ্য শক্তি অনেক সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু বিধিবাম, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভংগ করতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে সব কিছু ওলট পালট হয়ে গেলো। যা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি, তা ঘটে গেল। একে একে গ্রেফতার হতে লাগলো আমার দলীয় নেতা কর্মী, আত্মীয় স্বজন। রাতে ঘুমাতে গেলে হঠাৎ দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠি - উর্ধ্ব শ্বাসে আমি দৌড়াচ্ছি, পেছনে বুটের আওয়াজ; একটা খাকী পড়া কালো ছায়া তরবারী হাতে আমাকে ধাওয়া করছে, আর আমি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে করতে অন্ধকার গহীন অরণ্যে দৌড়াচ্ছি, কেউ শুনছেনা আমার ডাক। ভয়ে বিছানা থেকে ধড়মড়িয়ে উঠে পড়ি, দেখি বুকের ভিতর যন্ত্রটি অনেক বেশি অস্থির হয়ে ধুকধুক করছে। পানি পান করে ভয় নিবারণের চেষ্টা করি। বাইরে অন্ধকার, এ শহর ঘুমিয়ে পড়েছে অনেক আগে, শুধু ঘুম নেই আমার চোখে। মাঝে মাঝে পোষা কুকুর গুলো ঘেউঘেউ করছে, কাণ পেতে শোনার চেষ্টা করি বাইরে কি সত্যিই বুটের আওয়াজ শোনা যায়! কি যে অব্যক্ত যন্ত্রণা, শ্বাস রুদ্ধকর পরিবেশ!



এভাবে দিন যায়, রাত আসে। এক একটি রাত মনে হয়ে যেন কত দীর্ঘ- হয়ত শেষ হবে না, আমিও মুক্তি পাবনা এই বুটের আওয়াজ থেকে। কিন্তু অবশেষ ভোর হয়। কিন্তু একি! চারপাশে এত শব্দ কিসের! অসংখ্য খাকী পরা লোক ঘিরে ফেলেছে সুধা সদন। দুঃস্বপ্ন বুঝি সত্যি হয়ে গেল, আমাকে কালো গ্লাসের গাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হলো লাল দালানে, যা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। এর পরের ঘটনা আপনাদের জানা। দিন গুনছি, কবে আমি আবার মুক্তপাখির মত ঘুরে বেড়াবো! এ জন্য যে কোন কিছু করতে আমি রাজি। অবশেষে, মুক্তি পেলাম, বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলাম কিন্তু বুক ভরেনা। এদেশের মাটি-বাতাস আমার সাথে বার বার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেক গুলো কমিট্‌মেন্ট্‌ দিতে হয়েছে সরকারকে, তা আরেকদিন বলব। আমার বৃটিশ এয়ারওয়েজে ফ্লাইট উড়াল দিলো বলে, আজ যাই। দেরী করলে যদি আবার খাকীরা মন পরিবর্তন করে আমাকে খাঁচায় বন্দী করে! তোমরা কেমন থাকবে জানিনা, এ মূহুর্তে শুধুমাত্র নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতেও চাইনা। আমি ফিরে যাচ্ছি আমার প্রিয়জনদের কাছে, যেখানে রয়েছে আমার শিকড়। তোমাদের মাঝে আসি শুধু সময়ের প্রয়োজনে।



জয় বাংলা।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-৪

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৫৮

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: বাংলাদেশের রাজনীতি এমনই। আমরা এসব নেতাকেই বার বার ভোট দেই। আসুন আবার তাকে ভোট দেই। তার বিকল্প তো আমরা বের করতে পারিনি। আবারও তাকে দুর্নীতি করার সুযোগ দেই।

১২ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:২৪

আঁধার রাতের মুসাফির বলেছেন: পাবো কি করে বলুন? আমাদের যে মেরুদন্ডই নেই, মেরুদন্ডহীন মানুষ কি কখনো নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারে? এর এই মেরুদন্ড গজাতে হলে সবার আগে প্রয়োজন চিন্তার পরিশুদ্ধতা, পরিবর্তন করতে হবে মানসিকতা।

২| ১২ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৫৮

আউটসাইডার বলেছেন: অনেক কিছু বলার আছে, বলতে পারতাম, কিন্তু বলবো না...

১২ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:২২

আঁধার রাতের মুসাফির বলেছেন: জরুরী অবস্থাকে ভয় পাচ্ছেন নাকি? ভয় পাবেন না। খাকী পরাদের একজন কোন দেশে পালাবে, তার খোঁজ নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে, আরেকজনেরও বেশী দিন নেই, সময় ঘনিয়ে আসছে। মন খুলে হাসুন, কথা বলুন, কোন ভয় নেই।

৩| ১২ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৫৮

আসাদ রহমান কিশোর বলেছেন: জটিলস্‌.....

১৪ ই জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৩৯

আঁধার রাতের মুসাফির বলেছেন: ধণ্যবাদ।

৪| ১২ ই জুন, ২০০৮ দুপুর ১২:০৬

ভালো বলেছেন: হ ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.