নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোহেল হোসেন

আমি একজন সাধারণ মানুষ।

সোহেল হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেলীর ফাঁদে ইমরান!!!

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:২১

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে: সিলেটের ছেলে জাভেদ আহমদ ইমরান। সংক্ষেপে জে এ ইমরান। আর চট্টগ্রামের মেয়ে সেলিনা আক্তার শেলী। প্রেমের সম্পর্ক ৮ বছর ধরে। প্রথমে চিঠি চালাচালি। এরপর মোবাইল ফোনে প্রেম। এই প্রেম অনেক গভীরে চলে গেলেও এখন দু’জন আলাদা। দুই মেরুতে। কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই। অন্তহীন প্রেম বিরহে পুড়ছে দু’জন। এই অবস্থায় সিলেটের ছেলে জে এ ইমরানের ওপর আসছে একের পর এক হুমকি। হত্যা, গুম কিংবা নারী নির্যাতন মামলায় তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। এ কারণে সোমবার সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় জিডি করেছেন ইমরান। ইমরানের বাড়ি সিলেট শহরতলীর বারখলা গ্রামে। আর শেলী বর্তমানে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার পুরানঘর হেলথ সুপার ভাইজার হিসেবে কর্মরত। তার বাড়িও একই উপজেলারমানিয়াবাদ গ্রামে। ২০০৪ সালে ঢাকার খিলক্ষেতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির ইন্টারভিউ কালে শেলীর চাচাতো বোন জেসমিনের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় সিলেটের ইমরানের। জেসমিনের সঙ্গে ইমরানের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর ইমরান সিলেটে এলে জেসমিনের চাচাতো বোন শেলীর মোবাইল ফোনে জেসমিনের সঙ্গে কথা বলতো ইমরান। কিন্তু মোবাইলটি শেলীর থাকায় প্রায় সময় ইমরানের সঙ্গে শেলীর কথা হতো। জেসমিনের অবর্তমানে ইমরান ও শেলীর ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ এক সময় প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। তখন শেলী এইচএসসিতে পড়ালেখা করতো। মোবাইলে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে প্রায় তিন বছর তাদের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। এ সময় তারা একে অপরের মধ্যে ছবিও আদান-প্রদান করে। প্রেমের সম্পর্ক হওয়ার তিন বছর পর ২০০৭ সালের দিকে শেলীর টানে ইমরান চট্টগ্রামের সাতকানিয়া যায়। সেখানে দৌল ব্রিজের কাছে দুই জনের দেখা হয়। এরপর তারা সিএনজি নিয়ে বাঁশখালী ইকোপার্ক, মেঘলা সহ কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে বেড়ায়। এভাবে দুই দিন তারা বিভিন্ন স্থানে অভিসারে ডুবে থাকে। ওই সময় ইমরান শেলীকে সিম সহ একটি মোবাইল সেট উপহার দেয়। এভাবে প্রতি বছর শেলীর টানে ইমরান সাতকানিয়া ছুটে যেতো। দুই জন ঘুরে বেড়াতো বিভিন্ন স্থানে। শেলীকে নিয়ে মার্কেটিং করতো ইমরান। এমনকি ওই সময় শেলীর পরিবারের কথা চিন্তা করে ইমরান তাকে পড়ালেখার খরচ দিতো। ২০০৮ সালে শেলী তার বড় ফুফুর বাড়ি থেকে ইমরানের সঙ্গে কক্সবাজার চলে যায়। সেখানে কলাতলী এলাকার হোটেল সী ল্যান্ডে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে রুম ভাড়া নেয় এবং স্বামী-স্ত্রীর মতো তারা ওই হোটেলে রাত কাটায়। বেশ কয়েকটি অন্তরঙ্গ ছবিও তোলে। এরপর পর্যায়ক্রমে শেলী তার বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িও নিয়ে যায় ইমরানকে। প্রেমের সম্পর্ক দৈহিক সম্পর্কে গড়ালে ইমরান নিজ থেকে শেলীকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু শেলী বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না। এভাবে আরও এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর ২০০৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর দুই জন কক্সবাজারে বেড়াতে যায়। সেখানে একটি বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের বাসায় কাজির মাধ্যমে ইমরান ও শেলী বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু বিয়ের কাবিনের রসিদ শেলী তার কাছেই রেখে দেয়। এরপর দুই জন হোটেলে আরও এক রাত কাটিয়ে ইমরান চলে আসে সিলেটে এবং শেলী চলে যায় বাড়িতে। বিয়ের পর আরও একবার ইমরান ও শেলী কক্সবাজার যায় এবং হোটেলে রাত কাটায়। এর পরের বার শেলী ইমরানকে নিয়ে তার ফুফাতো বোন আমিনার বাড়ি যায়। সেখানে আমিনা ও তার স্বামীর কাছে শেলী তার স্বামী বলে পরিচয় দেয় ইমরানকে। আমিনার বাড়ি থেকে ফিরে শেলী ও ইমরান কক্সবাজার যায়। ওখানে তারা রাত কাটায়। পরে আবার ইমরান চলে আসে সিলেটে এবং শেলী চলে যায় বাড়িতে। এ সময় ইমরান বার বার কাবিন আনার চাপ প্রয়োগ করলে শেলী কৌশলে এ বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এতে সন্দেহ হয় ইমরানের। ইমরান সিলেট থেকে কক্সবাজার গিয়ে বিয়ে পড়ানো কাজিকে খুঁজতে থাকে কক্সবাজারে। কিন্তু ঠিকানা মতো গিয়ে কোন কাজিরই খোঁজ পাওয়া যায়নি। এতে বিভ্রান্তিতে পড়ে ইমরান। এ নিয়ে শেলীর সঙ্গে ইমরানের মনোমালীন্য দেখা দেয়। দু’জন কয়েক দিন কথা বলাবলিও বন্ধ রাখে। অবশেষে বিয়ের কাবিন মিথ্যা বলে শেলী স্বীকার করে। তবে সঠিক কাবিন করবে বলেও জানায়। এ ঘটনার পর দু’জনের সম্পর্ক নতুন করে জোড়া লাগে। ইতিমধ্যে শেলী বিএ পাস করে চাকরি খুঁজতে থাকে। পারিবারিক স্বাস্থ্য ক্লিনিকে পরীক্ষা দিয়ে সে চাকরিও পেয়ে যায়। বর্তমানে শেলী সাতকানিয়ার পুরানঘর হেলথ সুপার ভাইজার হিসেবে কর্মরত। ২০১২ সালের ২৬শে মার্চ ফের দেখা হয় ইমরান ও শেলীর। ওই সময় দুই জন চট্টগ্রামের আমিরাবাদের একটি হোটেলে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সময় কাটায়। হোটেলে রেজিস্ট্রার বইতে শেলী নিজের নাম এ্যানি হিসেবে উল্লেখ করে। ২৭শে মার্চ আবার শেলী ও ইমরানের দেখা হয়। ফুফাতো ভাই জয়নালের বাড়ির পাশে নদীর তীরে দুই জন দেখা করে। ওই সময় ইমরানের কাছে থাকা দু’জনের দীর্ঘ সম্পর্কের ভিডিও ফুটেজ, ছবি, চিঠি ফেরত চায় শেলী। সরল মনে ইমরান এগুলো ফেরত দিলে শেলী পুড়িয়ে ফেলে। সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৬ থেকে ১৮ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইমরান ও শেলী এক সঙ্গে থাকে। তারা ওই সময় দোহাজারীর মৌলভীর দোকান সংলগ্ন বান্ধবী ফারজানা ওরফে মিতু স্বাস্থ্য ক্লিনিকের একটি কক্ষে সময় কাটায়। পরে ইমরান চলে আসে সিলেটে, শেলী চলে যায় বাড়িতে। সিলেটে ফিরে আসার পরপরই ইমরান বার বার ফোন করলেও শেলী তা রিসিভ করেনি। উল্টো ঘণ্টার পর ঘণ্টা শেলীর মোবাইল ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়। ৩-৪ দিনেও শেলীর সঙ্গে কথা বলতে পারে না ইমরান। ওই সময় শেলী এক ফাঁকে ইমরানের ফোন ধরে এবং তাকে ভুলে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। অন্যত্র সংসার গড়ার অনুরোধ জানায়। কিন্তু এর আগে ইমরান ২৭শে সেপ্টেম্বর শেলীর ভাই পদুয়া ইউনিয়নের সচিব আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন এবং শেলীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানান। ওই সময় আনোয়ার হোসেনও সম্পর্ক গড়ার পক্ষে মত দেন এবং পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেন। তার সঙ্গে সিলেটে থাকা ইমরানের মা ও মামার সঙ্গে কথা হয়। এদিকে শেলী কয়েক দিন মোবাইলের সিম নাম্বার পরিবর্তন করে দিয়েছে। এতে ইমরানের সঙ্গে শেলীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইমরান পারিবারিকভাবে সম্পর্ক গড়ে আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আনোয়ার তাকে হত্যা, গুম কিংবা নারী নির্যাতন মামলায় আসামি করার হুমকি প্রদর্শন করে। আর এতে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সোমবার রাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় জিডি করেছেন ইমরান। ইমরান জানিয়েছেন, শেলী ও তার প্রেমের সম্পর্ক শেলীর বড় ভাবীর মাধ্যমে পরিবারের সবাই অবগত ছিলেন। এ কারণে বিভিন্ন সময় শেলীর পড়ালেখা সহ ভরণপোষণে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন ইমরান। শেষ পর্যন্ত শেলী তাকে ধোঁকা দিয়ে উচ্চাভিলাষী জীবন যাপন করতে আরও কয়েকজন বড় লোকের ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে। এদিকে, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় দায়ের করা জিডিতে ইমরান প্রাণনাশের আশঙ্কা করেছেন। তিনি ওই জিডিতে শেলীর বড় ভাই আনোয়ার হোসেন, মেজ ভাই মফিজ হোসেন এবং ছোটো ভাইকে দায়ী করেছেন। এবং সেলিনা ওরফে শেলীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথাও জিডিতে উল্লেখ করেছেন। ইমরান জানান, তাকে প্রাণে মারার যে হুমকি দেয়া হয়েছে তার রেকর্ড রক্ষিত আছে। সময়মতো তিনি পুলিশের হাতে হস্তান্তর করবেন।



এরকম সব খবর এক জায়গায় পেতে হলে এখানে ক্লিক করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.