নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুটা প্রকাশিত বাকীটা অপ্রকাশিত
শুরু হলো আরেকটা বৈশাখ। বিব্রতকর ভাবে নগরে অলি-গলি সহ বাজারের মাংশওয়ালার দোকানে ঝুলছে গৃহপালিত পশুদের কাটা দেহ। বছরটা-মাংশ ভাত দিয়েই শুরু করতে হবে এমনটাই অতীত ধারনা আমাদের। প্রানী হত্যা দিয়েই বছর শুরু করি। এ যেন উদরপুর্তির আর এক উৎসব। এই একটা দিন বাউল-জারী-পুথি-পালায় বাঙালী সাজার ধুম। হাতে কাচেঁর চুড়ি, প্রেমের ফুলঝুড়ি, লাল-সাদা শাড়ীতে, পায়ে দলিয়ে দৈন্যবাসীদের মতো হাতে তুলে নুন-পান্তায় মত্ত। এই আমাদের পহেলা বৈশাখ।
ছোটবেলায় মাটির সানকিতে ভাত খেতাম। জীবনটা কুড়েঁতেই শুরু হয়েছিল বলে মাটির সাথে শুয়ে ছিলাম অনেকটা বছর। এখনো মাটিতে কান পেতে শুনি ফেলে আসা বোশেখের সেই সব গন্ধমাখা দিনের কলকাকলী। সেই দিনগুলো এখন সোনার খাচা থেকে ব্রোঞ্জের খাচায় স্থান করে নিয়েছে। শীতের পর-পরই পান্তা আমাদের সকালের অমৃত হয়ে ঠোটের ভালোবাসায় উদরে যেত মহা আনন্দে, কাচা মরিচ, সরষে তৈল কিংবা খানিকটা পোড়া মরিচ দিয়ে। পান্তা এখনো খাই, সেই আগের স্বাদ খুজি, শরীর ভারী হয়ে আসে মনে হয় খানিকটা মাতাল হয়ে যাচ্ছি, ঘোরের মধ্যে চলে যাই পূর্বের পান্তা-সানকির দিনে। বোশেখের উৎসবে পান্তায় চোখ রাখিনা। তাবু টানানো ঘরে খাওয়া হয়না, সিরামিকের প্লেটে হাত উঠেনা কিংবা ইলিশ ছুয়েই গলাধকরন করতে পারিনা এই সব।
চৌত্র সংক্রান্তির পরদিন আমরা আর্শিবাদ কুড়াতে যেতাম বর্ষিয়ানদের কাছে। মাথায় হাত ছুইয়ে দীর্ঘাযু কামনা করতেন কেউ কেউ ঠোট চাপা হাসি নিয়ে হাতে দিতেন হরেক রকম মিষ্টি পুতুল। আমাদের ছিল তখন ফরিঙ ধরার বয়েস সে বয়সে স্বাদ লুকিয়ে থাকতো জ্বিভের ডগায় সেইসব মিষ্টি পুতুল খানিকটা সময় হাতে নিয়ে রাখার পার গাছের ডালে পা ঝুলিয়ে বসে বসে খেয়ে নিতাম মিষ্টি পুতুল। এখন আর্শিবাদ কুড়াতে কেউ আসেনা প্রত্যেকেই হিমালয় হবার জন্যই বড় হয়ে যায় হাওয়া খেয়ে। আজকাল ফরিঙ ধরার বয়সে কেউ ঘুড়ে বেড়ায় না হন্যে হয়ে রোদের সাথে সাথে।
সুসং নগরের আত্রাখালী নদীর ধারে মেলা বসতো, তখনকার পুতুল চোখে মনে হতো এ যেন এক নতুন বাজার। সব কিছুর আয়োজন থাকতো সেখানে, সন্ধ্যের পর হতো যাত্রাপালা, সঙ সেজে মানুষ কারো বুকে জাগিয়ে দিতো ভালোবাসার ঢেউ কারো বা সর্বনাশের কান্না। এখন সেই সব পালা মানে অর্ধ উলঙ্গ নৃত্য। আমরা কেউ কেউ তাতেই বাহবা দিই কেননা আমরা এগিয়ে যাচ্ছি সময়ের হাত ধরে নুতনের দেশে।
নিম্নবিত্তের কোন বিত্ত থাকেনা তবু ও নামেই ডাকি। গরীবদের কোন বাছ-বিচার থাকেনা। গরীবদের পেটে অনেক খিদে। ওরা জন্মেই এসব গুনাবলী নিয়ে। আমরা যারা রঙ-চঙ মেখে বাঙালী বাবু হয়ে বোশেখের বাতাসে পারফিউমের সুবাস ছাড়ি তারা কিন্তু চোখের ফাকে এড়িয়ে চলি সেই সব বিত্তবানদের, যাদের কে নিম্ন চোখে দেখি। তাদের হাতে দেইনা তুলে এক টুকরো ইলিশ। তাদের কাছে রোজ পান্তা আছে, একদিনের ফুলবাবু বাঙালী সাজার প্রয়াসে পান্তা খাই ওদের মতো। কোনদিন কি ওদের মতো হতে পারবো?
অনেক দাতা সংস্থা আছে যারা চোখের কোন লুকিয়ে রাখে সমস্যার নোটখাতা। বোশেখে কোন দান-দক্ষিনা হয়না। আমরা নতুন পোষাক গায়ে চাপিয়ে চলি সবুজ-ধূসর পথ, যাদের গায়ে মলিন পোষাক তাদেরকে তখন ভাবি ভীনগ্রহের মানুষ। আমাদের গায়ে এলার্জি আছে, আছে নাক উচু ভাবনা। নেই নিম্ন বিত্তের জন্য এই একটা দিনে কিছু হাতে তুলে দেবার প্রয়াস। ভালো খাবার কিংবা ভালো পোষাক দেবার মতোন মানসিকতা।
প্রেমিকার ঠোটে বাহারী আকাঙ্খা, আমি কিংবা আমাদের শার্টে বিশ্ব বেহায়া হবার জলছাপ তবু আমি গর্বিত হয়ে বলি বাঙালী, কেননা চোখের জল মুছে আমি প্রতিবার নতুন করে জেগে উঠি বোশেখের মতো। আমাদের দেয়ালে কাল বৈশাখীর আচ লাগেনা। আমার কিংবা আমাদের দেখা সেই সব বিত্তবানদের ঘর উড়ে যায় শৈশবের ঘুড়ির মতো। যাদের ঘরে দুঃখের বসবাস আজীবন। যাদের ঘরে ঈশ্বর খেলেন ঘুড়ি উড়াবার খেলা। আমরা হই সেসবের দর্শক কিংবা সকরুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা শব্দ কারিগর।
___________________________________________
রচনাকাল-
১ লা বৈশাখ-১৪২১ বঙ্গাব্দ
উইলকিংসন রোড, সুসং নগর
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩০
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ ঢাকাবাসী ভাই___
শুভ নববর্ষ
২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৭
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
শেষের কথাগুলো চমৎকার।
নববর্ষের শুভেচ্ছা।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৫
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ___
শুভ নববর্ষ
ভালো থাকবেন____সবসময়____সারাক্ষন______
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৮
মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার কথা শিল্প! মুক্ত গদ্যের আদলে কিছুটা স্মৃতি জাগানিয়া, কিছুটা ছোট গল্পের স্টাইলে কাব্যিক বর্ণন । ভালো লেগেছে ।
নববর্ষের শুভেচ্ছা !
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৭
সকাল রয় বলেছেন:
সব মিলিয়ে নতুন কিছু লিখতে চেয়েছিলাম। জানিনা কতটুকু হলো তবুও যে শেষ করতে পেরেছি আজকের চরম ব্যাস্ততম দিনটিতে তাতেই ভালো লাগছে। ধন্যবাদ মামুন ভাই
____শুভ নববর্ষ
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: স্মৃতির সমান্তরালে বর্তমানের তুলনা কাব্যিক ভাষায় চমৎকারভাবে লিখেছেন।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৯
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ
হাসান ভাই আপনার লেখা পড়লাম বাঙলার মেইল এ _____
অনেক অনেক শুভাশীষ আপনার জন্য।।
৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:০৬
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা!!!
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৪
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ
ভালো থাকবেন
৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:১০
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
পান্তা এখনো খাই, সেই আগের স্বাদ খুজি,
ঘোরের মধ্যে চলে যাই পূর্বের পান্তা-সানকির দিনে।
প্রথম দিনটা এক প্রকার ভালই কাটল ! আপনার ?
উইলকিংসন রোড, সুসং নগরটি কোথায় কবি ?
ভালো থাকুন ।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৩
সকাল রয় বলেছেন:
নেত্রকোনার শেষ আর মেঘালযের শুরু----কোচ রাজার পার্শবর্তী দেশ। সুসঙ রাজার বাড়ি।
ভালো কাটলো সময় পেলামএটা লিখলাম।
কেমনআছেন?
৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ ভোর ৫:৪৬
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আমরা হই সেসবের দর্শক কিংবা সকরুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা শব্দ কারিগর।
এই লাইনটাইতো আপনার পুরো লেখার সারবস্তু। সেই বিত্তবানদের, যাদের আমরা নিম্ন চোখে দেখি তাদের অসহায়ত্বদের কথা, তাদের দুঃখের কথা আমরা শব্দের পর শব্দ দিয়ে সাজাতেই ভালোবাসি কিন্তু তাদের পাশে দাঁড়াতে পছন্দ করি না, তাদের উঁচু চোখে দেখতে আমরা চাই না। বরং বোশেখ এলে তাদের নিত্য নিদের আহার্য নিয়ে আমরা রঙ তামাশা মেটে উঠি। কর্পোরেটীয় থাবায় কেড়ে নেই তাদের ঐতিহ্যকে নিজেদের বিলাসিতার জন্য। একদিনের জন্য তাদের স্তরে নামতে চেয়ে তাদের আমরা দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেই, যাতে আশেপাশে দুর্গন্ধ না ছড়ায়। তাদের বাঙ্গালীপনাকে একদিনের জন্য কমার্শিয়াল করে দেয়া হয়।
অনেকটা স্যাটায়ারধর্মী লেখা মনে হল। তবে আপনার পুরো বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করছি সকাল দা। লেখাটায় নিজের মনের কথাগুলোর প্রতিধ্বনি খুঁজে পেলাম। দারুণ গুছিয়ে কিছুটা কাব্যিকতা মিশিয়ে খুব ভালো লিখেছেন। সবার মধ্যে প্রকৃত বাঙ্গালীপনা জেগে উঠুক, সব সময় জেগে থাক এই কামনা করি।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০১
সকাল রয় বলেছেন:
আপনি দারুন সারমর্ম দিয়েছেন। অনেক ভালো লাগলো। আমি একটু সময় পেয়েছিলাম ব্যাস লিখে দিলাম।
৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৪৮
ারোয়ার লস্কর বলেছেন: খুবি সূন্দর একটা লেখা ভালো থাকবেন,নববরষের শুভেচ্ছা নেবেন।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৫
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকুন
৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩১
অদৃশ্য বলেছেন:
চমৎকার লিখা সকাল দা...
শুভকামনা...
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৪
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ অরিন্দম
১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: +++++++++
আচ্ছা সুসং নগরটা কোথায়? নামটা সুন্দর।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩
সকাল রয় বলেছেন:
ইয়ে মানে আমাদের বাড়ীর পাশে সুসং নগর
১১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০
জমরাজ বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
বৈশাখের শুভেচ্ছা।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ জমরাজ
১২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৪৭
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আমরা একদিনে পান্তা আর ইলিশ খাই----হায়রে আমরা নাকি দরিদ্রদের বুঝি এই দিনে-------আমরা সখের নতুন কাপড় পড়ি--কত হরেক রকমের----সব ফালতুমিতে ভরা--সব নকলে ভরা। আমরা ছোট বেলাকার চৈত্র সংক্রান্তি কিংবা পহেলা বৈশাখের সাথে মিল নেই--------।
লেখা চমৎকার হয়েছে
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২১
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ আপু ভালো থাকবেন।
১৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: অনবদ্য সকাল। +++।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২০
সকাল রয় বলেছেন:
ধন্যবাদ শরৎবাবু
১৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মূল বক্তব্যের সাথে একমত। কিছু কিছু কথা খুবই ভালো লাগলো। কথার আড়ালে বিত্তবানদের প্রতি যে ‘খোঁচা’ নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা ভালো লাগলো।
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
সকাল রয় বলেছেন:
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন আপনিও_____
১৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
আমি গর্বিত হয়ে বলি বাঙালী
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৬
সকাল রয় বলেছেন: হুম____ধন্যবাদ
১৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭
তাজা কলম বলেছেন: ভালো লাগলো।
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
সকাল রয় বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন
১৭| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:২৭
এহসান সাবির বলেছেন: সুন্দর লেখা।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৬
সকাল রয় বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:২১
ঢাকাবাসী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন, পড়ে ভাল লাগল।