নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুটা প্রকাশিত বাকীটা অপ্রকাশিত
মেঘালয় থেকে ফিরছিলাম আমরা ক’জন, হঠাৎ পথে দেখা হয়ে গেলো আমাদের পুরোনো সেই গল্পবলা হরিপদ কাকার সাথে। দেখলাম তিনি নদীর ধারে আপন মনে বসে আছেন। কাছাকাছি যেতেই তিনি বললেন আজ একটা নতুন গল্প শোনাবো তোদের। আমরা টপাটপ বসে পড়লাম সবুজ দূর্বার উপর।
তখনও সন্ধ্যে হয়ে আসেনি বলে নদীর ঘাটে মানুষের আনাগোনা কমেনি। যে কারণে খুব কাছাকাছি বসতে হলো। হরিপদ কাকা গল্প বলার শুরুতে মুখভার করে ফেলেন। যথারীতি সে মুখভার করতেই আমরা আগ্রহী হয়ে কান পাতলাম গল্পে।
মিনিট খানেক চুপ থাকার পর মুখ উচিয়ে বলতে তিনি শুরু করলেন-
আজ যে গল্পটা বলবো সেটা কতো-শতো কাল আগের কোন গল্প নয়। খুবই সাম্প্রতিক গল্প। মেঘালয়ের পাদদেশে বাস করতো এক সহায় সম্বলহীন যুবক। যার নাম ছিলো দৈন্যকুমার। সে রুপকথার রাজকুমার বা ডালিম কুমার নয় সে এই যুগের দৈন্যেভরা দৈন্যকুমার। তার দিন কাটতে সামান্য কাজ করে আর শান্তিভরা ঘুম দিয়ে। সে ঈশ্বরের উপর ভরসা না রাখলেও ঈশ্বর তার প্রতি ছিলেন সহায়। তার জীবন ছিলো নিরুত্তাপ।
তেইশ বসন্ত এভাবেই সূর্য উঠে সয়ে গেছে সকল যাতনা। সন্ধ্যে তারাটি আকাশে নিরব দর্শক হয়ে জেগে জেগে ঘুমিয়ে গেছে রাতের সাগরে। পথের সবুজ দূর্বা থেকে থেকে উঁকি দিয়েছে বাতাসের জয়গানে। মধ্যরাতের রূপময়ী চাঁদ গেয়ে গেছে গান, আনন্দহীন সুরমালতীতে। স্নিগ্ধ ভোর প্রতিটি দিনের মতো ছবি একে দিয়ে গেছে আপন মনে। এভাবেই ছন্দে-বিরহে-অপেক্ষায় কেটে গেছে তেইশটি বসন্তের দিন। হয়তো চলে যেতো এভাবেই, কিংবা একসময় মানব জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ার সুর বাজতো।
কিন্তু তার নিরাসক্ত জীবন দেখতে দেখতে ঈশ্বর একদিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেন। তিনি চাইলেন ছেলেটির জীবনে বন্ধন আসুক, মোহ আসুক, প্রেম আসুক। প্রেমে পড়ুক। কিন্তু দৈন্যকুমার এতটাই বাস্তববাদী যে, প্রেম তার কাছে অসহায়। মোহ তার কাছে নিস্ফল। অগ্যতা ঈশ্বর তার নিজের ইচ্ছে পূরনে দৈন্যকুমারের ভেতরই উপবিষ্ট হলেন।
সেই মেঘালয়ের কালো পাহাড় জানতো, যার নেই কিছু বলবার, নেই কিছু দেখাবার তার জীবনে নারীপ্রেম একটু আশ্চর্যই বটে। জনপদের মানুষগুলো একদিন অবাক চোখে দেখলো, কুমারের জীবনপথে প্রেম এসে গেছে উত্তাল হাওয়ার মতো। প্রেমে এসেছে সর্বনাশা বৃষ্টির মতো।
যার দৈন্যের ভাগ্য তেইশ বছরেও এতটুকু বদলে যায়নি, যে মানুষটি দু-বেলা ভাতের মতো করে মানুষের উপহাস গলাধঃকরণ করতো তার জীবনে কিভাবে উড়ে এমন প্রেমের সুবাস!
কিন্তু লোকের কথায় ঈশ্বর তো দমে যাবার পাত্র নন। তিনি মোহিত করা রুপে যুবককে তাঁতিয়ে তুললেন।
দূরের এক জনপদের মোহময়ী তার সাথে প্রেমের সুরে ভেসে চললো দিনের পর দিন।
দৈন্যকুমারের বুকে জমিয়ে রাখা হাজার শব্দভাণ্ডার, প্রেম এসেছে বলে বিস্ফোরিত হতে লাগলো। শব্দময় কথাগুলো প্রেমময় রূপ নিয়ে প্রকাশ হতে লাগলো। অনেক দিনের জমানো মনকথার ঘুড়িটি প্রেমের সুতোয় পড়ে উড়তে লাগলো আকাশ জুড়ে। প্রেমের সুতো ঘুড়িকে দিল দীর্ঘ পথের সন্ধান।
এই অবদি বলে থেমে গেলেন হরিপদ...
আমরা মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম, হঠাৎ গল্প থেমে যেতেই সমস্বরে বলে উঠলাম, তারপর...কী হলো?
একটু থেমে নিয়ে হরিপদ কাকা আবার বলতে শুরু করলেন, প্রেম চলতে-চলতে প্রায় দীর্ঘ তিনশত দিন পর মেয়েটি যুবক দৈন্যকুমারকে আস্তে আস্তে এড়িয়ে যেতে শুরু করলো। কথা না রাখার বাহানাগুলো তখন প্রজাপ্রতির মতো উড়তে শুরু করেছে, অজুহাতের পর অজুহাতগুলো শুধু অকারণেই ভাসছে। এই দীর্ঘবাসের পর মেয়েটি বুঝতে পেরেছে নির্মল মনের দৈন্যকুমার যেনতেন কোন মানুষ নয়, সে একজন নিমগ্ন কবি। কে যেন বলেছিলো- চঞ্চলা, চপলা হরিণী নারীর জীবনে যদি কোন কবিপ্রেম আসে তাহলে তাকে ভালোবাসা যায় কিন্তু তার সাথে ঘর করা যায়না।
এই পর্যন্ত বলেই, আবারও “গল্পমানুষ হরিপদ থেমে গেলেন... আমরা চেয়ে রইলাম মুখের পানে। তিনি মুখটা নামিয়ে নিয়ে বললেন, এরপর ঈশ্বরের হয়েছিলো করুণ অবস্থা।
তিনি মানুষরূপে ছিলেন বলে কোন কলকাঠি নাড়তে পারছিলেন না। শুধু মনে হচ্ছিল তিনি নারীর মনের আকাঙ্খার কাছে হেরে গেছেন। দৈন্যকুমার হয়ে একটি করজোরে প্রণিপাতও করেছিলেন মেয়েটির কাছে। ঈশ্বর শান্ত হয়ে এলেও দৈন্যকুমার ততদিনে জেগে উঠেছে, মোহ আর আর বন্ধনের সাগরের ডুবে গেছে সে। পণ করে বসলো এই মেয়েকেই বিয়ে করবে, ঈশ্বরের কোন শক্তিই তাকে ফেরাতে পারবে না।
দৈন্যকুমারের এমন কথায় ঈশ্বর রাগ করতে পারলেন না। মানুষ যে মোহে পড়লে এমন হয়ে যায়, এটা তো তার অজানা নয়। এরপর কেটে গেলো বেশ কিছু রাত। শব্দহীন রাত। নক্ষত্রভরা রাত। নির্ঘুম রাত। এক প্রভাতের কালে ঘুমন্ত দৈন্যকুমারকে রেখে ঈশ্বর চললেন স্বর্গের পথে। এখন যা করার দৈন্যকুমারই করবে, পরাজিত হলে ঈশ্বরকে দোষ দেবে। তিনি চৌকাঠ পেরিয়ে কাঁদলেন। পরিশেষে বুঝতে পারলেন এই মানব ভূমিতে ইচ্ছের হাত ধরেও তিনি নিজেও অসহায়!
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৯
সকাল রয় বলেছেন: হরিপদ বাবু মেঘালয় থেকে ফেরার পথেই থাকেন তো তাই ...
পরবর্তীতে মেদ ঝেড়ে ফেলবো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:২৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +।
কবির সঙ্গে কেনো ঘর করা যাবে না ???অবশ্যই যাবে।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩২
সকাল রয় বলেছেন:
কেউ কেউ অবশ্য কবি শব্দ শুনলেই মুখ ঘুরিয়ে নেন...
অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৭
ওমেরা বলেছেন: ভাল লাগল ধন্যবাদ ।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩২
সকাল রয় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও ভালো থাকুন
৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ভালো লেগেছে!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
সকাল রয় বলেছেন: আপনার উপস্থিতি আমারও ভালো লাগলো...
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৪
কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: দারুন উপলদ্ধি। শুভকামনা।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১
সকাল রয় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১১
তপোবণ বলেছেন: ভালো লেগেছে। শব্দের বুনন, বিন্যাস, প্রকাশ ভঙ্গি চমৎকার।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০
সকাল রয় বলেছেন:
শুনে খুশি হলুম...
যৎসামান্য প্রচেষ্টা আর কি!
অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
৭| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:১২
নিন্দারকাটা বলেছেন: ভালো লাগল।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩০
সকাল রয় বলেছেন: যেহেতু নিন্দারকাঁটা কইছে ভালো হয়ছে, সেহেতু মনে হয় ভালোই হইছে
অনেক ধন্যবাদ
৮| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:১৯
অলিউর রহমান খান বলেছেন: বেশ!
সুন্দর!
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯
সকাল রয় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১০
দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: দারুণ
খুব ভালো লাগলো।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৯
সকাল রয় বলেছেন:
শুনে খুশি হলাম...
অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
১০| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৩১
সুমন কর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮
সকাল রয় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
১১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৩১
আলোরিকা বলেছেন: পরিশেষে বুঝতে পারলেন এই মানব ভূমিতে ইচ্ছের হাত ধরে তিনি নিজেও অসহায় !!!! ---- দারুণ
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮
সকাল রয় বলেছেন:
জীবনের একটা সময়ে আমরা সকলেই অসহায়!
অনেক ধন্যবাদ
গল্পপাঠে কৃতজ্ঞতা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৪৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
গল্প ভালো লেগেছে।
মেঘালয় থেকে ফেরার সাথে গল্পের শুরুর কি সম্পর্ক? উহা মনে হয়, প্লটের জন্য প্রয়োজনীয় নয়, অকারণ মেদ