নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুটা প্রকাশিত বাকীটা অপ্রকাশিত
পঙ্গপালের দল এসে ফুটকুড়াইয়ের নড়বড়ে চায়ের দোকানটায় বসে পড়ে। ওরা রাত অব্দি বসে বসে ঢপের কেত্তন গাইবে। আসল উদ্দেশ্য চেপে রইবে ভীড় কমবার আগ পর্যন্ত। প্রতিদিনকার মতো ফুটকুড়াই বললো মামুরা চা দিমু? ‘ওদের মধ্যে একজন বললো, মাল, না পেটে পড়লে চা-ফা কামে দিব না’।
ফুটকুড়াই চায়ের কেটলিতে পানি দিতে গেল। পঙ্গপালের দল বাচালীপনা থামিয়ে বলল, তোর বইন কই গেছে রে? ওর সোজা উত্তর ‘বেচতে’। সবাই হো-হো করে হেসে উঠলো-কোনডা বেচতে গেছে রে? ‘মাল-না বডি’।
ফুটকুড়াই রাগে গজগজ করতে থাকে,- শালারা তগো ট্যাহা না থাকলি তগো বইনরাও এমন করতো। ফেনসিডিলের বোতলের জন্য এইসব পঙ্গপালরা রোজ আসে। ফুটকুড়াইয়ের বোন ফুলি মাঝে মাঝে আকবরের চালা ঘর থেকে এনে দেয়। মেয়ে মানুষকে মানুষজন এখনও কম সন্দেহ করে। খালি ফেনসিডিল সাপ্লাই করে সংসার চালানো সম্ভব নয়। দালাল রা সবসময় ঠকায় ফুল কে। তাই এখন নিজেকে ভাড়া দিতে হয়!
সন্ধ্যে থেকে রাত হয়ে এলো ফুলি বাড়ি ফেরে না। ফুটকুড়াই সাধ্যমত খুজে কিন্তু পায় না। ওরা সকলে মাল না পেয়ে গজরাতে-গজরাতে চলে যায়। যাবার সময় টিপ্পনী কাটে, তর বইন মনে হয় আইজকা বড় পার্টি পাইছে, মউজ হইব ম্যালা।
পরদিন খবরের কাগজে ফুলির ছবি আসে। হোটেলে খদ্দের সহ পতিতা গ্রেফতার। সাংবাদিক তো এসব তুলে আনবার জন্যই তাতিয়ে থাকে। থানার বড় বাবু বললো, ‘তুই তো দেহি উছাম মাল’ আমারে দিলে ছাইড়া দিমু। ফুলির ইচ্ছে করে এই সব মানুষগুলোর মুখে কষে দুইটা থাপ্পর দিতে কিন্তু সম্ভব নয়। ফুলি কু-প্রস্তাবে রাজী হয়নি। পরদিন সকালে ছবি এসে গেছে পেপারে। মহল্লার সবাই বলাবলী করতে থাকে, ‘বেশ্যাগো এই মহল্লায় থাকতে দিওন যাইব না’। মহল্লার মাতব্বর ওদের ডেকে বলে তগো এই এলাকা ছাইড়তে হইবো, তগো আর টাইম নাই রে ফুলি।
ফুলি শুধু ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে, ‘ক্যান যে খুদায় পেট দিছিল’। ফুটকুড়াই শেষ বারের মতো চুলায় কয়লা দেয় আর বির বির করে বলে আল্লার কাছেই টাইম পাই না, মাইনষে আর কি টাইম দিব।
০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭
সকাল রয় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:০৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবনের যাতনার গল্প!
ভাল লাগল
++++