নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুটা প্রকাশিত বাকীটা অপ্রকাশিত
সে অনেককাল আগেকার কথা। কতোকাল সেটা নাই বা বললাম। তবে যেহেতু অনেককাল লিখেছি সেহেতু সেটা পুরোনো কথাই ধরে নিতে পারেন। তো সেই সময়ে আমার বইপড়ার তরঙ্গাইত নেশা। নেশা মানে মাথা ফাটাইন্না অবস্থা আর কী। এক বই পড়া শুরু করলে না শেষ করে উঠতে পারি না। অনেক কালের সেই কালে আমার বয়স তখন তেইশের পরে। দম ফাটাইন্না উপন্যাস পড়ি। প্রেমের উপন্যাস। উপন্যাসের রেশ শেষ হবার আগেই চোখের সামনে উপন্যাসের নায়িকারা ভাসে।
আমি যে গুটিকতক উপন্যাস পড়েছি তার মধ্যে লেখকরা উপন্যাসের নায়িকাদের নিয়ে যেসব উপমা দেন তা’তে করে মনে হয় সুন্দরী মেয়ে ছাড়া দুনিয়ার প্রেম হয় না। প্রেমের অধিকার যেন দুনিয়ার সব সুন্দর মেয়েদের। আর ঘর-বাসন মাজার জন্য রইলো একটু কালোমতন মেয়েরা। মোটা মেয়েরা রইলো উপহাসের জন্য। উপন্যাস পড়ার পর আনন্দের সাথে সাথে একটু খারাপ লাগাও লাগতে শুরু করলো।
হরিণী চোখ, টিকালো নাক, লম্বা চুল, দীর্ঘ শরীর আরও কত কী! প্রেমিকার এসব থাকতেই হবে। নিদেন পক্ষে শ্যামবর্ণা তো হতেই হবে, তার উপর নায়িকার মন হতে হবে বাঁশবাগানের মতো। উপন্যাসের নায়িকারা কেউ কেউ জন্মগতভাবেই প্রেমিকা হয়ে থাকে বা সেকেন্ড নায়িকা গুলোও নিদেন পক্ষে সুন্দরী হয়। তো এইসবের বাইরের কালোমতন মেয়েরা উপন্যাসের প্রেমে অচ্ছুৎ।
এর মাঝে ব্লগে একদিন ইমন ভাইয়ের একটা লেখা পড়লাম “রবীন্দ্রনাথের কালো মেয়েরা”। পড়ে ভালো লাগলো। শুরু করলাম একটা গল্প লেখা। গল্পের নায়িকা পাড়ার মেয়ে পারমিতা। পাড়ার মেয়েদের নিয়ে গল্প লিখতে অসুবিধা থাকলেও আমার বেলায় সেটা হবে না কারণ আমাদের পাড়ার কেউ ব্লগ পড়েই না। তার উপর আমার ম্যান্দামারা গল্পও অচ্ছুৎ
গল্প প্রকাশ হওয়ার পর একজন বললো, আপনার গল্পের নায়িকার বর্ণনায় লিখছেন, পারমিতা সাধারণ সুন্দরী, এ্যাই সাধারণ সুন্দরী বিষয়টা কী? আমি বললাম, সুন্দরের যে ধরণ না থাকলেই নয়, সেটাই সাধারণ সুন্দরী। তিনি বললেন ইন্টারেস্টিং! আমি বললাম, হু টেস্টিং। পারমিতাকে নিয়ে লেখা গল্পটা অরণীতে প্রকাশ হলো কোন এই বইমেলায়। সম্পাদক রিঙ করে বললেন, একদিন আসুন চা খাওয়া যাক।
মধুপুর হয়ে এক তপ্ত দুপুরে টাঙ্গাইল গেলাম। সম্পাদক বেশ স্বজন মানুষ। তৎকালীন সময়ের বেশ কিছু তরুণ গল্পকারদের সাথে আমার দেখা হলো, আমি তাদেরকে চিনলেও কেউ আমাকে চিনে না। তো সবার সাথে বসে আছি, কবি তাহমিনা কোরায়েশী বললেন, এই ছেলে তুমিও কি গল্প লিখছো? আমি বললাম হ্যা, তিনি বললেন, বিষয়টা বেশ ইন্টারেস্টিং! আমি বললাম, হুম টেস্টিং
তো সেই লেখকদের মেলায় যেসব গল্পকারদের সাথে দেখা হয়েছিলো তারা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত এবং জনপ্রিয় লেখক শুধু আমি বাদে, তার একটা কারণ হলো আমি সাহিত্য বিষয় নিয়া কোনোকালেই সিরিয়াস না এবং আমার লেখার টাইপ ম্যান্দামার্কা। এতোসব উচ্চ প্রশংসনীয় গল্পকার ও লেখকদের লেখার সাথে কী করে যে আমার লেখা নির্বাচিত করেছিলেন সম্পাদক সে বিষয়টা আমার বোধগম্য হয়নি।
মজার ব্যপার হলো, এর আগে সম্পাদক আমার কোন লেখা পড়েনও নাই আবার আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগও ছিলো না। তিনি পারমিতা’র গল্পে কী পেয়েছিলেন জানি না তবে গল্প নিয়া কয়েকজন গুণবান লেখক বিস্তর আলোচনা করেছিলেন। সেখানে একজন লিখেছিলাম আমার গল্পটা সরল এবং ডালপালা মেলতে ব্যর্থ। আমি লেখাটি পরে আনন্দিত হয়েছিলাম এই ভেবে যে, কেউ তাহলে লেখাটা পড়েছে বৈকি।
সেদিন সেই আলোচনা কক্ষে উপস্থিত নির্বাচিত লেখকদের সাথে আমার আলোচনা তো দূর কী বাত পরিচয়টুকু ও হয়নি। সেটাই ছিলো লেখকদের সাথে আমার প্রথম এবং এ যাবত্কাল শেষ সাক্ষাৎ। এরপর আরও কিছু ম্যান্দামারা লেখা লিখেও বা বইমেলাতে ঘুরেও সেইসব জনপ্রিয় লেখকদের সাথে দেখা হলেও কথা হয়নি।
প্রসঙ্গ ঘুরে যাচ্ছে। তো যে কথা বলছিলাম, গল্পের নায়িকা’র সুন্দরতা এবং আমার ম্যান্দামারা গল্প। গল্প লিখতে গিয়ে কবিতা বানিয়ে ফেলি আমি এবং এ-কথা প্রথম শুনেছিলাম দুই হাজার দশ খ্রিস্টাব্দে। বিবেচনা করলে বিষয়টা থেকে সরে আসা যেতো কিন্তু আমার বিবেচনাবোধ অন্যরকম তাই আর ধারা পরিবর্তন হয়নি।
৩০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪
সকাল রয় বলেছেন: তাহলে লিখে ফেলুন,
পড়ে দেখতে চাই
২| ২৮ শে মে, ২০১৮ সকাল ১০:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: কাউকে ছোট করার জন্যে নিজেকে বড় করে তার পাশে দাঁড় করান.. পরনিন্দা না করেও তাকে ছোট করতে পারবেন..
২৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩২
সকাল রয় বলেছেন: কাউকেই ছোট করা ঠিক নয়।
মানুষকে ভালোবেসে তার পাশে দাঁড়াতে হয়, ছোট করে দাঁড়ানো কী ঠিক?
৩| ২৯ শে মে, ২০১৮ ভোর ৪:৫১
জাহিদ অনিক বলেছেন:
রয়কথা ভালো লাগলো। প্রত্যেক লেখক/কবিরই এমন কিছু অপ্রকাশিত কথা থাকে।
২৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫
সকাল রয় বলেছেন: ঠিক লেখক হিসেবে নয়, নিজের জীবনের জমানো কথার প্রকাশ বলা যায়।
রয়কথা আরও ৩ পর্ব আছে, সেগুলো পড়লে আশা করি সহজ হয়ে যাবে।
ধন্যবাদ
আপনাকে।
৪| ২৯ শে মে, ২০১৮ সকাল ৮:৫২
অলিভিয়া আভা বলেছেন: লেখাটা আরও একটু ভালো করে একটু বড় করে লিখতেন? একজন সাহিত্যিকের ভেতরের গল্পটা জানআটা খুব জরুরী। কিভাবে তিনি ভেঙ্গেচুরে একজন কবি বা একজন লেখক হলেন সেটা তো আর সকল পাঠক জানে না। সেটা জানানোটা জরুরী। কেননা যে জিনিস সহজেই পাওয়া যায় তা কেউ নিতে চায় না। সাহিত্য আমাদের দেশে সহজেই পাওয়া যায় কিনা ! কিন্তু এর জন্ম কোথায় হয় সেটা কেউ ভেবে দেখে না। এর প্রসববেদনা কেউ টের পায় না।
ভালো লাগলো সকাল রয়। আপনার নামটিও খুব সুন্দর।
৩০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯
সকাল রয় বলেছেন: আপনার কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো। যদিও লেখক বা কবি হয়ে উঠতে পারিনি অধ্যবসায়ের অভাবে। আমার কাছে সাহিত্য একটা সাধনার নাম। এই সাধনা পুরো জীবন দিয়েও শেষ করা যায় না। লেখালেখিতে ফাঁকিবাজি চলে না । আমি অনিয়মিত এবং লেখালেখিতে উদাসীন। তবুও একসময় যে লিখতে চেয়েছিলাম সেটা মনে রাখার জন্যই এই লেখাটির অবতারণা করেছি আর কী।
এরপর যখন লিখবো তখন আরও একটু ভালো আ বড় করে লিখতে।
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:২৪
শামচুল হক বলেছেন: হুম, আপনার মত আমারো অবস্থা।