![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এলিয়ান না, তবে মাঝে মাঝে মনে হায় অন্য গ্রহ থেকে এসেছি.. ! :-) http://un-realized.blogspot.co.uk
যতই ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি করেনা কেন। ফুটবল আমাদের হৃদয়ে। বিশ্বকাপের সময় হলে তার প্রমান পাওয়া যায়। বিশ্বকাপ থেক যোজন যোজন দূরে থালেও ব্রাজিল আর্জেন্টিনার জন্য আমরা প্রণ দিতে প্রস্তুক হই। বছরের পর বছর হারার পরও, এক জয়ের পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কানায় কানায় ভরা।
আমি যখন ছোট তখন বাংলাদেশে খেলা বলতে মাতামাতি করার মত, একটাই ছিল, ফুটবল। বিটিবির খেলার খবরে মোহামেডাম- আবাহনীর খেলার দৃশ্য দেখার জন্য চুপি চুপি পড়ার টেবিল থেকে উটে পড়তাম। আর নব্বুইয়ে ম্যারাডোনার সেই কান্না অনেক বাঙ্গালীর মতো আমাকে কাঁদিয়েছে। আমার চাচাতো ভাই ছিলেন বেশ ভালো ফুটবল খেলোয়াড়ার । এলাকায় এবং এলাকার বাহিরে, সে ছিল রিতিমত সেলিব্রটি। কাছ থেকে দেখা আমার জীবনে প্রথম তারকা। ঠিককরেছিলাম, বড় হয়ে আমিও ফুটবালার হবো।
১৯৯৫ সালের কথা, আমি তখন স্কুলে পড়ি। আমাদের স্কুলে এক বয়স্ক স্যার ছিলেন। ভদ্রলোক তার কর্ম জীবনের পুরাটাই স্কুলে চাকরী করে কাটিয়েছেন। আমরা যখন দেখেছি তখন পড়ালেখা ছাড়া আর কোন দিকে কোন খেয়াল ছিল না। ক্লাসে আসতেন, অংক পড়াতেন তার পর অফিসে চলে যেতেন। আমাদের স্কুলের ফুটবলে দল ছিল এই এলাকার সবচেয়ে দূর্বল দল। যদিও আমাদের দুই তিন জন বেশ ভাল খেলোয়াড় ছিলো, প্রতিবছর অন্ত:স্কুল ফুটবল প্রতিযোগীতায় আমরা অংশ গ্রহন করতাম এবং বেশ কয়টা গোল হজম করতাম। আর আশে পাশের অন্য স্কুলের ছাএরা আমাদের নিয়ে সারা বছর হাসাহাসি করতেন। ছোটবেলা থেকে এটাই দেখে আসছিলাম।
১৯৯৫ সালে আমাদের স্কুলে তিন জন ছাএ ভর্তি হলো, ভালো ফুটবলার হিসাবে এদের বেশ নাম ডাক। এদের নিয়ে এই বছর স্কুলের ফুটবল দল বেশ শক্তিশালী হলো। একের পর এক খেলা জিতে আমরা সেমী ফাইনেলে ওঠলাম। সেমী ফাইনালে আমাদের প্রতি পাক্ষ আমাদের পাশের সেই স্কুল যারা আমাদের প্রতিবছর ডজন গোলে হারাতো আর আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করতো। কিন্ত সেমী ফাইনালের আগের ম্যাচে একটা দূরঘটনা হলো। আমাদের এক খেলোয়াড় কে প্রতিপক্ষ বেশ ভালোভাবে আঘাত করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে। খেলার পরে এক পশলা মারামারিও হলো। প্রতিপক্ষ তাদের নিজেদের মাঠে আমাদের মত আনকোরা দলের কাছে হার মেনেনিতে পারে নিয়। আর যে খেলোয়াড় আঘাত পেয়েছে, ডাক্তার বলেছেন আঘাত বেশ জোড়ালো, পায়ের হাঁড় ভেংগে গেছে। এই নিয়ে স্কুলের সব শিক্ষক স্কুল কমেটি মিটিং বসলেন। কিছু শিক্ষক মত দিলেন আমাদের সেমি ফাইনাল খেলতে যাওয়া উচিত হবে না। এমন সময় আমাদের সেই বয়স্ক স্যার যার কিনা খেলাদুলা নিয়ে কোন আগ্রহ নেই, সে রিতিমত গর্জেওঠলেন
"বিশ বছর ধরে হারতেছি, বিশ বছর। প্রতিবছর আল্লাহর কাছে কেদেঁছি, আর আশা করেছি, এই বার ছেলেরা যিতবে, আল্লায় শুনে নাই। আর আজকে আপনার বলছেন আমাদের খেলা উচিত হবে না। এই খেলা আমার সাথে আমাহমদের (আমাদের পাশে স্কুলের হেড মাষ্টার, যে এক সময় স্যারের বন্ধুছিলেন)। এই বছর আমি দিখিয়ে দিব তকে।"
যে স্যার জীবনে কোনদিন খেলাদুলা নিয়ে কোন কথা বালেন নাই তার মুখে এমন গর্জন শুনে সবাই অবাক। আমরা সেই দিন বুজলাম, রসকস হীন এই অংক স্যারের হৃদয়ে জুড়ে আছে ফুটবল। সবাই সিদান্ত নিলো আমরা খেলবো এবং এই ম্যাচ হবে স্যারের সম্মানে। সেই বাছর আমরা ফাইনালে ওঠেছিলেম। এবং স্যার আমাদের জন্য নিজ খরচে ছাগল জবাই করে খাবারের আ্য়োজন করেছিলেন। এই দূর পরবাস থেকে বঙ্গবন্ধু জতীয় ষ্টেডিয়ামের উম্মাদনা দেখে, আজকে স্যার কে কেন জানি খুব মনে পড়ছে।
মাঠে যখন ফুটবল নিয়ে মিলি-জাহিদ-নাসির-মামুনুল-রায়হানরা দৌড়ায় তখন মনে হয় স্বপ্ন নিয়ে দৌড়ায়তেছে। এক সাথে, এগিয়ে যাবার স্বপ্ন। দুই রাজনৌতিক দলের লোভ আমাদের কে ধ্বংসের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে, কেড়ে নিচ্ছে আমাদের জীবনের সব আশা আনন্দ, স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার অধীকার। । তারপরেও এদেরকে বুড়ো অংগুল দেখিয়ে আমরা আজ মেতে উঠেছি আনন্দে, এক সাথে। জয় হোক বাংলাদেশে ফুটবলের, জয় হোক এই দূখীনি দেশটার, মানবতার।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: সেমি ফাইলালে দল যখন জিতে তখনই মনে হয়েছিল, একটি পোস্ট দিব এ নিয়ে যে, অন্তত এখনো কিছু উপলক্ষ্য আছে যাতে জাতি এক ও অভিন্ন হতে পারে।
শুভ কামনা প্রিয় বাংলাদেশের জন্য।
জয় বাংলাদেশ।