![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় বাবা,
চিঠিটি যখন তোমাকে লিখছি তুমি তখন ক্যানসার নামক ঘাতক ব্যাধিটির সঙ্গে নিরন্তর যুদ্ধ করে যাচ্ছ। জানিনা কতটুকু যন্ত্রণা তোমার । শুধু এইটুকু বুঝতে পারছি তুমি রোগা হয়ে যাচ্ছ । তোমার ওজন ৭০ থেকে নেমে এসেছে ৫৫ তে। অফিস থেকে প্রতিদিন যখন বিকেলে বাসায় ফিরি বুকের ভীতর এক তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি। বিশ্বাস করো বাবা, তোমাকে হারানোর কথা ভাবতেও পারিনা । যে তুমি আগলে রেখেছ আমাদের ৩ ভাই বোনকে , পরীক্ষার সময় রাত জেগে বসে থেকেছ পাসে, সামান্য সর্দি জ্বর হলেই আমাদের নিয়ে ছুটে গেছো ডাক্তারের কাছে !! এক অসাধারন মায়ার বাধনে দু হাতে আগলে রেখেছ আমাদের , কখনো কোন কষ্ট পেতেও দাওনি ! আজ সেই তুমি, নরম বিছানায় চুপচাপ শুয়ে থাকো । কথা বলতে ও কষ্ট হয় তোমার । আমার ইচ্ছে করে তোমার কণ্ঠনালির ওই ক্যান্সার টা কে টেনে হিঁচড়ে শরীর থেকে আলাদা করে দেই ।
সেদিন তুমি বায়না ধরলে , কিছু খেতে পারছিনা রে , একটা হরলিক্স এনে দিবি ? কি সামান্য আবদার তোমার !! অথচ এই আমি আবদার করে করে তোমার মাথা খারাপ করে ফেলতাম । একটা কোমল হাসি দিয়ে সায় দিতে । সংসার খরচ বাঁচিয়ে কি কষ্ট করেই না আমাদের চাওয়া গুলো পুরন করতে !! রেডিওথেরাপি আর কেমথেরাপি দিয়ে কান্সারের সাথে প্রতিদিন তোমার যুদ্ধ । শরীরে যন্ত্রণার যুদ্ধ নিয়ে তুমি বেঁচে আছো জানি।
আমাদের ৩ ভাইবোন এর চাকুরীর যে সামান্য মাইনে তা দিয়ে ক্যান্সার এর সাথে যুদ্ধ করা খুব কষ্টকর ! নিজেকে অপরাধি মনে হয় । কেন আরো উন্নত চিকিৎসা দেবার খমতা আমার নেই ?? ছোটবেলায় তুমি যখন কোলের ভীতর নিয়ে আমায় ঘুম পারাতে তখন আদরে আমার ঘুম এসে যেতো । তোমার কোল যে আমাদের চির আশ্রয় । এমন আশ্রয় থেকে কে বঞ্চিত হতে চায় বলো?
বাবা, এই লেখাটা লেখার সময় আমি অনেক কেঁদেছি জানো ? ইট কাঠ পাথরের এই যান্ত্রিক শহরে নিজেকে বড় একা আর অসহায় লাগছে ! তুমি তো আমার বুদ্ধি , সংগ্রাম , সাহস !! মাথার উপরে ছায়া !! আমি এই ছায়া থেকে বঞ্চিত হতে চাইনা বাবা !!
প্রিয় বন্ধুরা ! তোমরা আমার বাবার জন্য দোয়া করো !! তিনি যেন আরো কিছুকাল বেঁচে থাকেন।
২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১১
মোঃ শিবলী সাদিক বলেছেন: সোনি, আপনার অসহায়ত্ব আর যন্ত্রনা আমি খুব ভালভাবেই বুঝতে পারছি। আমার বাবাও ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করতে করতে গত ২৪শে ফেব্রুয়ার, ২০১৩ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তাঁর চিকিৎসাকালীন সময়কার আমার মানসিক অবস্থা আর আপনার মানসিক অবস্থার মধ্যে এক অদ্ভুত সাদৃশ্য। প্রতিদিন আমিও আপনার মতো তীব্র ভয় আর যন্ত্রণা নিয়ে অফিস থেকে বাসায় ফিরতাম। বাসা থেকে ফোন এলেই বুকটা ধুক ধুক করতো অজানা কোন আশঙ্কায়।
আল্লাহ আপনার বাবার যন্ত্রণা লাঘব করুন আর আপনার পরিবারের সবাইকে ধৈর্য্য ধারন করার তৌফিক দিন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৮
এক মুসাফির বলেছেন: আল্লাহপাক আপনার বাবাকে দ্য়া করুক।