চিঠি (১১)

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৫

বন্ধু ,



ক্যামন আছিস তোরা ? অনেক দিন তোদের সাথে দেখা নেই । জানিস তো, যখন ই ঘুমিয়ে পরি স্বপ্ন আসে । আর সপ্নের মাঝে তোরা কোথা থেকে দৌড়ে আসিস ! আয়না ,এক্কা দোক্কা খেলি !! আয়না কানা মাছি খেলি , এমন অনেক আবদারে ঘুম ভেঙ্গে যায়। নারে আজ রোদে পুড়ে খেলবোনা। মা বারন করেছে , বলেছে আমার সোনা মেয়ের কাঁচা হলুদ গা এর রঙ রোদে পুরে ঝলসে যাবে । তাহলে আয় গল্প করি। আইসক্রিম খাই !! আচ্ছা বাবা আচ্ছা , গল্প করতে নেই মানা ।



বন্ধু , তোদের মনে আছে প্রাইমারী বিদ্যালয়ের এক কোনে একটা টিউবওয়েল ছিল। মাঠেই ভীষণ রকম দৌড়াদৌড়ি করতাম। ঘণ্টা বাজলেয়ই দৌড় দিতাম ক্লাস করার জন্য। পিপাসা লাগলে ছুটে যেতাম সেই খটখট আওয়াজ করা প্রিয় টিউবওয়েল এর কাছে / টিউব ওয়েল এর সেই সোঁদা নোনা পানির গন্ধ আজো আমকে টানে !! শিবু' দার দোকানের ১ টাকা দামের টক ঝাল মিষ্টি আচার না খেলে পড়াশুনায় মন বসানো আমার জন্য ছিলো অসম্ভব । স্বপন স্যার এর কান মলা আর আজিজ স্যার এর জোড়া বেত এর বাড়ী !! উফ !!মনে পড়লে আজো গা শিউরে ওঠে ।



আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে বড়লোক ছেলেটা কি যেন নাম ! ওহ মনে পরেছে শিপলু! কেডস পায়ে দিয়ে জিন্সের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে স্কুল এ আসতো ।বাবার কাছে বায়না ধরেছিলাম অমন একটা কেডস জুতা আমার চাই । পারেনি কিনে দিতে আমার বাবা । স্কুল শেষে বাসায় ফিরলে মা ভাত বেরে রাখতেন, আলুভর্তা পুইশাক অথবা সবজি ডাল দিয়ে । তখন পাশে আমার বড়োলোক চাচার ঘর থেকে প্রায়ই ভেসে আসতো মাংস রান্নার ঘ্রান ,তখন আমার কি যে খেতে ইচ্ছা করতো ! এরকম কতশত ইচ্ছা কে কবর দিয়েছি !

আচ্ছা তোরা কেন এখনো আমার স্বপ্নে ভাসিস ? তোরা কেন আমার চোখের সামনে নিয়ে এখনো স্মৃতি হয়ে ভেসে বেরাস ? কেন এত বড় হবার পরেও তোদের নিয়ে চিঠি লিখতে বসি ?

যে যেখানেই থাকিস, ভালো থাকিস ।

০ টি +০/-০