নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপাতত বিস্তারিত না-ই জানলেন...

স্বপ্নতরী (রাজু)

আমি সামাজিক জীব http://facebook.com/sopnotory1 আমার সামাজিক যোগাযোগ প্রকল্প।

স্বপ্নতরী (রাজু) › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুই টাকার জীবন!

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬

একটি মানুষের জীবন খুবই সস্তা না? কেউ রাস্তায় পুঁড়ে যাচ্ছে, পুলিশ এক লাশের বিপরীতে দুই লাশ ফেলার হুমকি দিচ্ছে! আমি/আপনি দিন গুনছি আমার আপনজন কবে কোথায় "শেষ" হয়ে যায়!!

আমার ছেলে আবরার। এখন পৃথিবীতে তার পঞ্চম মাস। যেদিন প্রথম শুনলাম আমার স্ত্রীর গর্ভে ছোট্র একটি ভ্রুন দানা বেঁধেছে ওই দিনে থেকেই মনের গভীরে সে কি আবেগ-উৎকন্ঠা!
মোবাইলে দুইটি প্রেগ্নেন্সি রিলেটেড এপ্লিকেশান ইনস্টল করলাম - সপ্তাহ সপ্তাহে বাচ্চার বেড়ে উঠা; কোন সপ্তাহে হাত পা হচ্ছে, কোন সপ্তাহে তার চোখ খুলেছে, কখন থেকে সে শব্দ শুনতে পারে - এপ্লিকেশ্যানে এসব পড়ে প্রায়শঃ আমার পশম দাড়িয়ে যেতো।

মহান আল্লাহর কত মহিমা - তিনি কি দারুন করেই গড়ে তুলছিলেন একটি শরীরের ভিতর আরো একটা শরীর!

একবার হঠাৎ দুই দিন পেটে বাচ্চা নড়ছিলো না। আিম রাস্তায় হাটতে হাটতে ফোনে খবরটি পেলাম। হঠাৎ আমার চোখ অন্ধকার লাগলো। আমি ওখানেই বসে পড়লাম। ডাক্তারের কাছে আমার স্ত্রী গেলো; আলট্রাসনোগ্রাম করার পর জানা গেলো - না বাচ্চা ঠিক আছে... ওই একটা মুহুর্ত ছিলো যখন আমি মনে হয় পৃথিবী ফিরে পেয়েছি।

এটাতো আমি পুরুষের আবেগ বললাম। আমার স্ত্রী তখন কি রকম ঘোরে!!??

অমানুষিক পরিশ্রম যাচ্ছিলো তার। সোজা হয়ে ঘুমাতে পারেনা; আবার কাত হয়েও ঘুমাতে পারেনা। বেশিক্ষন দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা; আবার কিছুক্ষন বসে থাকলে কোমর ব্যাথা শুরু হয়...

এমন করে বাচ্চার জন্মের ক্ষন এলো। আগের দিন সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত জীবন মরন যুদ্ধের পর পৃথিবীর আলো দেখলো আমাদের ছেলে আবরার।

এখানে ঝামেলা শেষ হলেও পারতো। কিন্তু না - সারাদিন সারারাত ছেলে জাগে আর ঘুমায়। এই কান্না, এই পায়খানা, এই প্রস্রাব। এসব ঝামেলা সমাধান করতে করতে আমার স্ত্রী এবং আমার ঘরের অন্য সদস্যদের ঘুম হারাম। বাচ্চা জন্মের ৩৫ দিন এর মাথায় প্রবাস থেকে শুধুমাত্র ছেলেকে একনজর দেখার জন্য ১২ দিনের ছুটিতে দেশে আসলাম। এ ১২ দিনে আমার চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। নির্ঘুম থাকতে থাকতে আমার স্ত্রী এতটাই ক্লান্ত হয়ে গেছে - বাচ্চা চিৎকার করে কাঁদলেও মাঝে মাঝে তার ঘুম ভাঙতো না।

এ বাচ্চা দিন দিন বড় হবে। মায়ের কিন্তু শান্তি থাকবে না। একটু বড় হলে সারাদিন পাহারা দিবে ছেলে পানির দিকে যাচ্ছে কিনা - খাটের থেকে পড়ে যাচ্ছে কিনা। তারপর আসবে স্কুলে দেবার - পড়ালেখা করাবার দুশ্চিন্তা। তার পর বিয়ের বিয়ের চিন্তা...

এইযে একজন মা কিংবা বাবার কত পরিশ্রমে একটি ভ্রুন থেকে মহিরুহ হয়ে আমি আপনি পৃথিবীর আলো বাতাস হজম করছি তার জন্য আমাদের কোন চিন্তা আছে?

কত সহজেই সামান্য স্বার্থে হাজার রাত্রি নির্ঘুম কাটানোর ফসল - হাজারো কষ্টের কেষ্ট "সন্তান" একজন মানুষকে কিছু মানুষরুপি জানোয়ার খুন করছে/জ্বালিয়ে দিচ্ছে!!

কি নিষ্ঠুরতা - কি বর্বরতা!! মায়ের সে কলিজার টুকরার উপর।

কোথায় পাচ্ছি আমরা এ শিক্ষা? কিসে আমাদের মনুষত্বকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। কি কারনে মানুষ হয়ে পশুর আচরন করছি আমরা। কার জন্য?


_______________

আমার বাবা ডাক্তার এর কাছে রিপোর্ট নিয়ে যাবার কথা ছিলো ২১ জানুয়ারী। আজ ৫ ফেব্রুয়ারী! আমরা কেউই সাহস পাচ্ছিনা উনাকে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় যেতে দিতে।

আমার ছোট বোন এর হাজবেন্ড বর্তমানে সাইন্স ল্যাব থেকে উত্তরা গিয়ে অফিস করতে হয়। সারাক্ষন দুশ্চিন্তায় থাকি।

কেউ মনে হয় আজ ভালো নেই। দেশ ভালো নেই - দেশের মানুষ ভালো নেই। কিন্তু রাজনীতিজীবি গণতন্ত্র ব্যাবসায়ীদের এটা কবে বোধগম্য হবে? আর কত মানুষ পুড়লে বিএনপির গণতন্ত্র উদ্ধার হবে কিংবা আওয়ামীলীগের গণতন্ত্র রক্ষা হবে?

________________

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি এত ক্ষীণবল নাগরিক হলে বাকীদের অসুবিধা হবে; আপনার মত বাংগালীই ১৯৭১ সালে সোজাসুজি হাতে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করে এ দেশ এনেছেন, ২২ হাজার প্রাণ দিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.