নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিনিলাম আপনারেআঘাতে আঘাতেবেদনায় বেদনায়;সত্য যে কঠিন,কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,সে কখনো করে না বঞ্চনা।

সত্যের সারথি সাদেক

সত্য যে বড় কঠিন, কঠিনেরে বাসিলাম ভালো, যে কখনো করেনা বঞ্চনা !

সত্যের সারথি সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কৃষ্ণচূড়ায় সুশোভিত জবি ক্যাম্পাস

২০ শে জুন, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৪

আকাশে জৈষ্ঠ্যের গনগনে সূর্য। কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত বাতাস। প্রকৃতি যখন প্রখর রৌদ্রে পুড়ছে, কৃষ্ণচূড়া ফুল তখন সৌন্দর্যের বার্তা নিয়ে এসেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসে। গ্রীষ্মের এই নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরেছে আপন মহিমায়। ক্যাম্পাসে সময়কে একটু রাঙ্গিয়ে দিতেই হয়তো প্রকৃতির এ আয়োজন। ক্যাম্পাসের বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, প্রশাসনিক ভবনের পাশে ডালপালা ছড়ানো বিশাল আকৃতির কৃষ্ণচূড়াগুলো সৃষ্টি করেছে রক্তিম বর্ণের এক মোহনীয়তা। ছোট্ট এ ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়াগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। ক্যাম্পাসে যেন লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি,

যেকারো চোখে এনে দেয় শিল্পের দ্যোতনা।
কবিগুরু রবি ঠাকুরের ভাষায়,
‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে
তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি’
নজরুলও কৃষ্ণচূড়ায় মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন,
‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে,
আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’

কবি শামসুর রাহমান লিখেছেন-
আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে
কেমন নিবিড় হয়ে। কখনো মিছিলে কখনো-বা একা
হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়- ফুল নয় ওরা
শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।
একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ...।

দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রৈদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীষ্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিষ্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত। এর আদি নিবাস আফ্রিকার মাদাগাস্কার। ১৮২৪ সালে সেখান থেকে প্রথম মুরিটাস, পরে ইংল্যান্ড এবং শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিস্তার ঘটে। এখন জন্মে আমেরিকা, ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, ভারতসহ বিশ্বের বহু দেশে। ধারণা করা হয়, কৃষ্ণচূড়া ভারত উপমহাদেশে এসেছে তিন থেকে চারশ’ বছর আগে। বহুকাল ধরে আছে বাংলাদেশে। তবে ফুলের নাম কী করে কৃষ্ণচূড়া হলো সে সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায় না। ধারণা করা হয়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অবতার কৃষ্ণের নামে ফুলটির নামকরণ করা হয়েছে। একটু খেয়াল করলেই চোখে পড়বে, কৃষ্ণের মাথায় চুলের চূড়া বাঁধার ধরনটির সঙ্গে ফুলটির বেশ মিল। সেখান থেকেই কৃষ্ণচূড়া। আবার উদ্ভিদবিজ্ঞানী, নিসর্গপ্রেমী কিংবা কবি সাহিত্যিকরাও এই নামকরণ করে থাকতে পারে।

কৃষ্ণচূড়া গাছের আরেক নাম যে গুলমোহর। যদিও তা কম লোকই জানেন, কিন্তু কৃষ্ণচূড়াকে চেনেন না এমন লোক খোঁজে পাওয়া দায়। কৃষ্ণচূড়াকে সাধারণত আমরা লাল রঙেই দেখতে অভ্যস্ত হলেও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া লাল, হলুদ ও সাদা রঙ্গেরও হয়ে থাকে।

ক্যাম্পাসের প্রতিটি ধূলি কণা কেই মিস করি। বিশেষ করে করে প্রতিটি কৃষ্ণচূড়া যেন একেকজন জীবন্ত বন্ধু আর ক্যাম্পাসের সাক্ষী হিসেবে আমাদের চিনে রাখে। উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তুহিন আল মামুন বলেন, যখন ক্যাম্পাসের সাবেক হয়ে যাবো, তখন সবচেয়ে বেশিমনে পড়বে বিজ্ঞান অনুষদের সামনের কৃষ্ণচূড়া গুলো। ঘামে ভিজে কতবার যে, এর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি তার ইয়েত্ত নেই।

আমাদের সময়ে কাটানো সময় গুলোতে যে বন্ধুরা ছিল তারা নেই। কিন্তু তাদের স্মৃতির সাথে জড়িত কৃষ্ণচূড়া গুলোই তাদের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।

উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিভাগ কুমার সরকার বললেন সৌন্দর্যবর্ধক গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। মুকুল ধরার কিছু দিনের মধ্যে পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড় ৭/৮টি পাপড়িযুক্ত গাঢ় লাল। শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ। শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি দেশের গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের মানুষের কাছেও সমান গুরুত্ব বহন করে। শখের বশে এ গাছের কদর থাকলেও এর কাঠ তুলনা মূলক দামী না হওয়া এবং ভালো কোন ব্যবহারে না আসায় বাণিজ্যিকভাবে এ গাছ বপনে আগ্রহ অনেক কম। তবে ক্যাম্পাসকে আরো সুন্দর করতে কৃষ্ণচূড়া লাগোনো যেতে পারে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুন, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: কৃষ্ণচূড়ার ভালবাসা ও শুভেচ্ছা নিবেন। আমার প্রিয় কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষকে নিয়ে লিখেছেন,পড়ে মুগ্ধ হলাম।

২| ২০ শে জুন, ২০১৯ রাত ৮:০৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: সত্যের সারথি সাদেক ,




মহান কবিদের কবিতার লাইন, অনিন্দ্য লালের ছোপে ভরা সব ছবি আর আপনার লেখার রক্তিমতা নিয়ে ভালোলাগার পোস্ট।

জবি ক্যাম্পাসের সবাইকে কৃষ্ণচূড়ার চোখ ধাঁধানো শুভেচ্ছা।

৩| ২০ শে জুন, ২০১৯ রাত ১০:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ পুরো এলাকার চেহারা বদলে দেয়।
প্রতিটা এলাকায় দুইটি করে কৃষ্ণচূড়া থাকা বাধ্যতামূলক করা হোক।

৪| ২১ শে জুন, ২০১৯ রাত ১২:০৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: অত্যান্ত হৃদয় মোহিত।

৫| ২১ শে জুন, ২০১৯ রাত ১২:৫৪

সত্যের সারথি সাদেক বলেছেন: বালক, শুভেচ্ছা জানবেন !

৬| ২১ শে জুন, ২০১৯ রাত ১২:৫৫

সত্যের সারথি সাদেক বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ২১ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৪৯

কালো যাদুকর বলেছেন: আমারও অনেক প্রিয় ফুল। এরকম একটা গাছের ছোট ধরন আমাদের এখানেও পাওয়া যায়। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.