নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যাগ্রহী

আমি সর্বদা সত্যের সন্ধানে সময় কাটাতে ভালবাসি। আর ভালবাসি স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে।

সত্য৭৮৬

আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ। নিজের সম্পর্কে বলবার মত তেমন কিছুই আমার নেই। আমি সর্বদা সত্যের সন্ধানে সময় কাটাতে ভালবাসি। আর ভালবাসি স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে। প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করি। অন্যকে ঠকানোর কথা ভাবতেই পারিনা। এ কালটাই যে সবকিছুর শেষ নয় তা বিশ্বাস করি।

সত্য৭৮৬ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে কি যুদ্ধবন্দীনিদের সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতা দেয়া হয়েছে?

৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৫

দুটি মক্কি সূরার (২৩: ৫-৭) ও (৭০: ২৯-৩১) নং আয়াত একই অর্থ প্রকাশ করে। যার উপর ভিত্তি করে ডান হাতের অধিকারভুক্তদের (যুদ্ধবন্দীনি/ ইসলাম পূর্ব দাসীদের) সাথে তাদের মালিক/ অভিভাবকদের (বিবাহবহির্ভূত) যৌন কর্মকে সর্বকালের জন্য হালাল বানানোর দাবি করা হয়। এরূপ দাবি করা কি আদৌ ঠিক? অজ্ঞাতসারে এমন দাবি করলে তওবা করে এখনও মাফ পাবার সুযোগ আছে। কিন্তু জ্ঞাতসারে করলে তার পরিণতির কথা নিশ্চয় বলে দিতে হবে না।



এর পক্ষে নিচের ইংরেজি অনুবাদগুলো প্রমাণ স্বরূপ পেম করা হয়ে থাকে-

(23.05) & (70:29) Who abstain from sex,

(23.06) & (70:30) Except with those joined to them in the marriage bond, or (the captives) whom their right hands possess,- for (in their case) they are free from blame,

(23.07) & (70:31) But those whose desires exceed those limits are transgressors;-



(২৩:০৫) ও (৭০: ২৯ নং আয়াতে (لِفُرُوجِهِمْ) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে তার অর্থ লজ্জাস্থান, যৌন অঙ্গ।



অথচ কেন এর অর্থ sex (রতিক্রিয়া ঘটিত বা রতিক্রিয়া পরিচালিত কার্যালাপ; যৌনক্রিয়া) বানানো হলো তা বোধগম্য নয়।



আবার অনেকে private parts হিসেবেও অনুবাদ করেছেন-

(70:29) And those who guard their private parts [private parts = গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ]



আবার একই (فُرُوجَهُمْ) শব্দের অর্থ (২৪:৩০) নং আয়াতে modesty হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে-

(24:30) Say to the believing men that they should lower their gaze and guard their modesty: that will make for greater purity for them: And Allah is well acquainted with all that they do.

[Modesty= (অর্থ) বিনয়, বিনয়শীলা, নিরাভিমান, অভিম্নশুণ্যতা, নিরহঙ্কারিতা, সংযম, পরিমিতিবোধ, মিতাচার, শালীনতাবোধ]



একই শব্দের বিভিন্ন অর্থ হতেই পারে। কিন্তু সেই অর্থেরও তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে নিশ্চয়। আমাদের মনে রাখা দরকার আল-কোরআন এমনই এক মহাগ্রন্থ যেখানে এসব সেনসেটিভ বিষয় আলোচনার সময় আল্লাহতায়ালা আবছা আবছা কোন বক্তব্য রাখেন নাই, বরং সরাসরি এবং বিস্তারিত বলেছেন যেন কামলিপসু মানুষ ছুতা খোঁজার সুযোগ না পায়।



ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে নাজিলকৃত মক্কি সূরাগুলোতে ইসলাম পূর্ব দাসীদের সাথে তাদের মালিক/ অভিভাবকদের যৌন সম্পর্কের স্পষ্ট অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়। প্রকৃত অর্থে এই সূরাগুলোতে এ বিষয়ে সরাসরি কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়নি।

…………………………………

কাকে বিয়ে করা যাবে বা যাবেনা এ বিষয়ে আল-কোরআনের নির্দেশ-

সূরা নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ- ক্রম ৯২)

(৪:২২) অর্থ- যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করোনা। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ।

(৪:২৩) অর্থ- তোমাদের (বিবাহের) জন্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তোমাদের মা, তোমাদের মেয়ে, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভাইয়ের মেয়ে; বোনের মেয়ে, তোমাদের সেই মায়েরা যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সেই স্ত্রীদের কন্যা- যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু।

(০৪:২৪) অর্থ- এবং স্বাধীন নারীদের মধ্যকার কোন সধবা (তোমাদের বিবাহের জন্য নিষিদ্ধ); তাদের ছাড়া- যারা (مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ/ ma malakat aymanukum/ মা- মালাকাত আইমানুকুম) তোমাদের ডান হাতের অধিকারভুক্ত রয়েছে, এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী বৈধ করা হয়েছে স্বীয় ধন-দৌলতের বিনিময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য- ব্যভিচারের জন্য নয়। অতএব তাদের মধ্যে যার থেকে তোমরা সুফল পেতে চাও- তাকে তার নির্ধারিত মোহরানা প্রদান কর। তোমাদের কোন দোষ হবে না- নির্ধারণের পর যাতে তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, পরমজ্ঞানী।

(০৪:২৫) অর্থ- আর তোমাদের মধ্যে কেউ ইমানদার সধবাদের বিয়ে করার সামর্থ্য না রাখলে, "তোমাদের ( مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ) ডান হাতের অধিকারভুক্ত" নারীকে (বিয়ে কর); এবং আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা (ইমানদাররা) পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের অভিভাবকের অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর- বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য, ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হিসিবে নয়। অতঃপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে, তবে তাদেরকে ইমানদার সধবাদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা পাপের ভয় করে। আর যদি ধৈর্য্য ধারণ কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম-করুণাময়।

……………………………………

{(০৪:২৪) নং আয়াত "এদেরকে ছাড়া" বলতে এর মধ্যে- "স্বাধীন (বিশ্বাসী/ অবিশ্বাসী) নারীদের মধ্যকার কোন সধবা নারী ও ৪:২৩ নং আয়াতে উল্লেখিত নারীরা ছাড়া" এবং "তোমাদের জন্যে সব নারী বৈধ করা হয়েছে" বলতে এর মধ্যে- "স্বাধীন বিশ্বাসী অবিবাহিতা, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারী (ইদ্দত পূর্ণ করার পর পবিত্র হলে, অার অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান প্রসবের পর), ইমান এনেছে এরূপ কোন ইসলাম পূর্ব দাসী, আর যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে ইমান এনেছে এরূপ কোন অবিবাহিতা, সধবা ও বিধবা (পবিত্র হওয়ার পর, অার অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান প্রসবের পর) নারীরা অন্তর্ভুক্ত।"}



(৪:২২ – ২৪) নং আয়াত নাজিলের আগে যাদেরকে বিবাহ করা নিষিদ্ধ তাদেরকেও স্ত্রী রূপে গ্রহণ করার রেওয়াজ ছিল। ইসলাম পূর্ব সমাজব্যবস্থায় দাসপ্রথার ব্যপক প্রচলন ছিল। তাই সেই সময় বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ও অনুমতি সাপেক্ষে ডান হাতের অধিকারভুক্তদের ক্ষেত্রেও কিছু সময়ের জন্য পূর্বের সেই রীতিকে সামাজিকভাবে অনুসরন করা হত। অতঃপর ৪:২৩ নং আয়াত নাজিলের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেল যে, যাদের সাথে বিয়ের অনুমতি আছে তাদেরকে বিয়ে করেই যৌন সম্পর্ক করতে হবে। বিয়ে না কোরে কারো সাথেই sexual relation করা জায়েজ না, বরং চরম গোনাহ্।



(০৪:২৪) নং আয়াতে আরও পরিষ্কার কোরে বলা হলো- স্বাধীন সধবা নারীকে বিয়ে করা চলবে না, তবে ডান হাতের অধিভুক্তরা সধবা হলে শর্ত সাপেক্ষে বিয়ে করায় কোন বাধা নেই- কিন্তু তাদের সাথে ব্যাভিচার করা বা রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করা আর চলবে না।



(০৪:২২) নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বিয়ে সম্পর্কে বক্তব্য শুরু করা হয়েছে। সুতরাং পরবর্তী আয়াত গুলোতে (০৪:২৩ ও ০৪:২৪) হারাম এবং হালাল বলতে কোন বিষয়টিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নিষিদ্ধের গন্ডির বহিরে রাখা হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। এখানে অবৈধ যৌন কর্মকে হালাল করার প্রশ্ন আসেনা, বরং কাকে বিয়ে করা যাবে বা যাবে না সে সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।



এখানে যেমন পূর্বের রীতিকে বাতিল করা হয়নি তেমনি সর্বকালের জন্য যুদ্ধবন্দীনিদের সাথে বিবাহ ছাড়াই (এমনকি সে যদি মুশরিকাও হয়) যৌন সম্পর্ককে জায়েজ রাখা হয়েছে বলে যে দাবি করা হয়, সেটাও সঠিক কি?



জাহেলি যুগে দাসপ্রথার ব্যাপক প্রচলন ছিল। শুধু তাই নয়, মালিকরা তাদের অধীনস্ত দাসীদের রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করত। ইসলামের আবির্ভাবের সাথে সাথে তাই হঠাৎ কোরে তা রহিত করা তখনকার প্রেক্ষাপটে যুক্তিযুক্ত ছিলনা। কারণ হঠাৎ কোরে একটা বিরাট সংখ্যক নারীকে বর্জনের বিধান জারি করলে তা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি দিক থেকে তো বটেই, বিশেষ কোরে সেই সহায় সম্বলহীন নারীদের ক্ষেত্রেও নানান জটিলতা সৃষ্টি হ্ওয়াই স্বাভাবিক ছিল। তাই ইসলামে দাসপ্রথাকে নিরুৎসাহিত করার মাধ্যমে তা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত করার জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছিল তা যে অত্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ ছিল- যে কোন বিবেকবান মাত্রই তা একবাক্যে স্বীকার করতে হবে।



মুসলমানের জন্য যেহাদ করা ফরজ। সুতরাং বর্তমানে কোন কারণে যদি যুদ্ধে নামতে হয়, তাহলে ডান হাতের অধিকাভুক্তদের (যুদ্ধবন্দীনিদের) সাথে তখন কি আচরন করতে হবে তা জানা ও মানাটা জরুরী নয় কি?



একটি হাদিছের (পরিচ্ছেদ: ১৩৮৬, বুখারী শরীফ, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন্স বাংলাদেশ) ব্যাখ্যায় পরিচ্ছদে জুড়ে দেয়া অংশে অপরের দ্বারা অন্তঃসত্বা দাসীকে ভোগ করা জায়েজ বলা হয়েছে। অথচ হাদিছের মূল অংশে এই সম্পর্কে কোন ইংগিত পর্যন্ত নেই।





শুধুমাত্র "ডান হাতের অধিকারভূক্ত" হওয়ার কারণেই কোন মুশরিকা/ মুসলিম যুদ্ধবন্দীনির সাথে তার মনিব/ অভিভাবককে কি যৌন ক্রিয়া করার অনুমতি দেয়া জায়েজ হতে পারে?



কিংবা অপরের দ্বারা অন্তঃসত্বা হলেও কি কোন যুদ্ধবন্দীনি/ দাসী/ বাদীকে অন্য আরেকজন চুম্বন করতে পারবে?



আল-কোরআন কি সেই পারমিশন দেয়? নাকি এরও একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে?



এখন লক্ষ করুন- (২৩: ৫-৭) ও (৭০:২৯, ৩০, ৩১) আয়াতের অনুবাদ আরবী শব্দের মূল অর্থ অনুযায়ী করলে কি দাঁড়ায়-

সূরা আল মু'মিনুন ২৩: ৫-৭ ও সূরা আল মাআ'রিজ ৭০: ২৯-৩১(মক্কায় অবতীর্ণ)

(২৩: ০৫) ও (৭০:২৯) অর্থ- এবং যারা তাদের লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজতকারী

(২৩: ০৬) ও (৭০:২৯) অর্থ- তবে তাদের স্ত্রী অথবা তাদের (مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ) 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত' ব্যতীত, তখন বাস্তবিকই তারা তিরস্কৃত হবে না।

(২৩: ০৭) ও (৭০:২৯) অর্থ- এরপর যারা এর বাহিরে অন্য কিছু অন্বেষণ করে, তারাই সীমা-লঙ্ঘনকারী।



(২৩: ০৫) ও (৭০:২৯) আয়াতে (لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ) “লজ্জাস্থান গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজতকারী” বলাতেই “যৌন কর্মকে হেফাজত করা বা দমন রাখার কথাই বলা হয়েছে”- এমটি ভেবে নেয়া কি ঠিক?



যদি অবৈধ যৌনকর্ম থেকে হেফাজত করার অর্থাৎ দূরে থাকার বিষয়ে আলোকপাত করা হত তাহলে মহান আল্লাতায়ালা কি তা সরাসরি বলে দিতে ভয় বা লজ্জা পেতেন? না, কখনই না। বরং আল-কোরআনের বিধানে এসব বিষয়ের নির্দেশ খুবই স্পষ্ট (১৭ নং সূরা বণী ইসরাঈল, আয়াত নং ৩২- আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না।)।



সতরের অংশটুকু ঢেকেঢুকেও তো লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অঙ্গ/অংশ হেফাজত করার কথা ভাববার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে এবং ইমানদার মানুষ মাত্রই সেটাই ভাবা উচিত। গৃহে অবস্থানরত স্ত্রী ও ডান হাতের অধিকারভুক্তদের (যুদ্ধবন্দী/দাস-দাসীদের) সামনে প্রাত্যহিক গোসল, ঘুম এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ায় ঘরে অবস্থানের সময় তো এই ঢেকে রাখার ক্ষেত্রে শিথিলতা অর্থাৎ অন্যথা হতেই পারে- আর এটুকুর জন্য কোন সমস্যা নেই। কিন্তু তাই বলে এর দ্বারা যৌন কামনা বাসনা চরিতার্থ করার কিংবা বেহায়ার মত যখন তখন একেবারে উলঙ্গ হয়ে থাকার পারমিশন দেয়া হয়েছে, এমনটি ভাবা মোটেই ঠিক নয়। মহান আল্লাহতায়ালা তো আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যই এত খুটিনাটি বিস্তারিত বলে দেন যেন তার বান্দা অযথা কষ্ট না পায়। কিন্তু হায়! আমাদের মধ্যে কারও কারও মন এতই বক্র যে তারা স্রষ্টার সরল কথা বাঁকিয়ে কোথায় নিয়ে যায়। প্রকৃত ইমানদারের অন্তর কেনা-বেচা করা এত সহজ নয়, তারা ঠিকই বোঝে- বোঝেনা শুধু অন্ধদের অন্তর।



মানুষের মধ্যে অনেকের চাওয়া পাওয়া এমনই যে সে নিজেকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ না করলেও উন্মুক্ত করে প্রদর্শন করতে চায়। অনেকে তো লজ্জা-শরমের ধারই ধারেনা। অথচ আল্লাহতায়ালা মুসলিম পুরুষ ও নারীদের জন্য এ ধরনের কোন রূপ বেহায়াপনাকে হারাম করে দিয়েছেন। আবার শুধু নারীই নয়, পুরুষদের মধ্যেও অনেকে অযথা এমন ভাবে চলাফেরা করে যে অনেক ক্ষেত্রে তাদের গোপন অঙ্গ প্রদর্শনের সামিল হয়ে পড়ে। যেমন পশ্চিমাদেশ, এমনকি আজকাল আমাদের দেশেও যুবকেরা এমন সব টাইট-ফিটিংস জামা-কাপড় পরিধান করছে যে, মনে হয় তারা তাদের গোপন অঙ্গের স্থানগুলোকে হাইলাইট করছে। এ ধরনের কু-রুচিপূর্ণ চালচলন যে সীমালংঘনের পর্যায়ে পড়ে- তা হয়ত তারা জানেই না। একজন প্রকৃত মুসলমানের যে এভাবে চলা ঠিক নয় তা মহান সষ্টা অনেক আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।



এবার 'লজ্জাস্থানের হেফাযত' করা বলতে যে আল্লাহতায়ালা পর্দা করার কথাই বোঝাতে চেয়েছেন তার প্রমান দেখুন-



সূরা আন-নূর (মদীনায় অবতীর্ণ) এর (২৪:৩০) ও (২৪:৩১) নং আয়াতের দিকে লক্ষ করুন-

(২৪:৩০) মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জা-স্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাযত (لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ) করে, এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

(২৪:৩১) ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের (لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ) লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাযত করে, তারা যেন যা আপাত প্রতীয়মান হয় তা ছাড়া তাদের ('জীনাতাহুন্না') দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, নিজেদের স্ত্রীলোক, নিজেদের (مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ) 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত' (যুদ্ধবন্দী-বন্দিনী/দাস-দাসী), যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক- যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তারা যেন গোপন করে রাখা বা ঢেকে রাখা দেহের গঠনগত বিশেষ সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।



দেখা যাচ্ছে (২৪:৩০) ও (২৪:৩১) নং আয়াতে উল্লেখিত (لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ) “লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজত করে”- এই বক্তব্যটি পর্দা রক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট। নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই একই শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং কিভাবে পর্দা রক্ষা করতে হবে তা উভয়কেই বিষদভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এই একই বক্তব্য (২৩: ৫-৭) ও (৭০:২৯, ৩০, ৩১) নং আয়াতেও ব্যবহার করা হয়েছে।



এখন প্রশ্ন আসতে পারে- লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ বলতে এখানে কি বোঝানো হয়েছে? এখানে কি শুধু সেক্স অর্গানকেই নির্দেশ করা হয়েছে? তাহলে তো আরবী শব্দ (قضيب বা المهبل) ব্যবহার করার কথা। আমার জানামতে লজ্জাস্থান বলতে আরও অনেক কিছুকেই বোঝায়। যেমন, পরুষদের জন্য পেটের নাভি থেকে হাটু পর্যন্ত ঠিকমত ঢেকে রাখাকে লজ্জাস্থানের হেফাজত করা বোঝানো যেতে পারে। আর নারীদের ক্ষেত্রে তো মুখমণ্ডল, হাত ও পা বাদে সম্পূর্ণ শরীরই গোপনীয় অংশের অন্তর্ভূক্ত।



সুতরাং (৭০:২৯-৩১) ও (২৩:৫-৭) নং আয়াতে 'লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজত' এর অন্যথা অর্থাৎ পর্দার অন্যথা করা বলাতেই 'মা- মালাকাত-আইমানুকুম'-দের সাথে কাম-লালসা চরিতার্থ করার জন্য ব্যভিচার করার ইংগিত বহন করতে পারে না।



এবার নিচের আয়াতের দিকে লক্ষ্য করুন-

(২৪:৫৮) হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের (মা-মালাকাত-আইমানুকুম) ডান হাতের অধিকারভূক্তরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র শিথিল কর এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।



এ আয়াতে পর্দা রক্ষার ক্ষেত্রে ডান হাতের অধিকারভূক্তদের পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্কদের অনুমতি গ্রহণের বিষয়টিও এসেছে। যাদের সাথে সেক্স করায় অসুবিধা নেই তাদেরকে অনুমতি গ্রহনের ক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের স্তরে রেখে দেয়া হয়েছে কেন?



(এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়) - এখানে খুব সোজা ভাবে দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মের জন্য স্বাভাবিক যাতায়াতের বিষয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু এই 'যতায়াত' কথাটাকেও কাম-চরিতার্থ করার জন্য যাতায়াত ভাবলে তো করার কিছু নাই। বক্র মানষিকতা সম্পন্নরা ছাড়া তো এমনটি ভাববার কথা নয়।



নিশ্চয় এর মাধ্যমে যারা সত্যকে উপলব্ধি করতে ও বুঝতে চায় আল্লাহতায়ালা তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, 'মা-মালাকাত-আইমানুকুম'-অর্থাৎ "ডান হাতের অধিকারভূক্ত"/ যুদ্ধবন্দীনিদের সাথে বিবাহবহির্ভূত সেক্স করার তো প্রশ্নই আসেনা, বরং তাদের থেকেও পর্দা করা জরুরী।



আল-কোরআনে মক্কায় অবতীর্ণ সমসাময়িক আরেকটি ষুরায় স্পষ্ট-ভাষায় ব্যভিচারের ধারে কাছে যেতেও যেখানে নিষেধ করা হয়েছে, এটাকে অশ্লীল ও মন্দ পথ বলা হয়েছে। [সূরা বণী ইসরাঈল (মক্কায় অবতীর্ণ)-(১৭ : ৩২) অর্থ- আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল ও মন্দ পথ।] তাছাড়া ব্যভিচারী-কে শাস্তি প্রদানের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।



তাই এমন একটি অবৈধ কর্মকে বৈধ বানাতে চাইলে তো এক্ষেত্রেও লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজতের কথা না বলে বরং স্পষ্ট-ভাবেই সহবাস করার পারমিশনটা দিয়ে দেবার কথা। কারন বৈধ বা অবৈধ বিধান দেবার সময় মহান আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবেই তা প্রকাশ করেন। তাছাড়া লজ্জাস্থান বা গোপনীয় অংশ/ অঙ্গ হেফাজতের অন্যথা বলতে যদি অবৈধ যৌন কর্মের পারমিশন বোঝায়, তাহলে তো 'ক' কইতে শুধু 'কলিকাতা'- বোঝার মত দশা হলো। সুতরাং (৭০: ২৯-৩১) ও (২৩: ৫-৭) নং আয়াতের বক্তব্যে পুরুষদের (মালিকদের)-কে ডান হাতের অধিকারভূক্তদের সাথে অবৈধ যৌন ক্রিয়া করার সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে- এমনটি ভাবার আদৌ কোন সুযোগ নেই।



আমরা জানি যে, সেই জাহেলি যুগের রীতি অনুসারে উলঙ্গ হয়ে উন্মুক্ত আকাশের নীচে সবার সামনে কাবাঘর তাওয়াফ করাটা কোন ব্যপার ছিলনা এবং বেহায়াপনা তাদের মজ্জাগত কালচারে পরিণত হয়েছিল। বহুদিনের সেই নির্লজ্জ বেহায়াপনা থেকে মুসলিমরা যেন সরে আসে, তার প্রথম পদক্ষেপ স্বরূপ এই নির্দেশ দেয়া হলো। মাঠে-ঘাটে, ক্ষেতে- খামারে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনের সময় পুরুষরা যেন তাদের শরীরের লজ্জাস্থান ঢেকেঢুকে রাখে, প্রথমত সেই শিক্ষাই দেয়া হয়েছে। তবে গৃহে তাদের স্বামী-স্ত্রীর সামনে বা দাস-দাসীদের সামনে অসাবধানতা বসত যেমন ঘুম, বিশ্রাম বা গোসলের সময় একটু অন্যথা হয়ে গেলে তাতে উদ্বিঘ্ন হবার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। সুতরাং সচেতনভাবে চিন্তা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, (৭০: ২৯-৩১) ও (২৩: ৫-৭) নং আয়াতে পর্দার বিধানের প্রাথমিক ধাপ সম্পর্কে প্রথমত পুরুষদেরকে অবহিত করা হয়েছে। কারন কোন সমাজে পুরুষরা যদি সংযত হয়ে চলা শুরু করে তাহলে সেই প্রভাব নারীদের উপরেও পড়ে। এভাবে একটি জাহেলি সমাজকে ধীরে ধীরে পর্দা সম্পর্কে সচেতন ও আইন প্রণয়নের মাধমে সেই বিধানটিকে কার্যকর করার ধরাটি যে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।



এরপর (৭০: ২৯-৩১) ও (২৩: ৫-৭) নং আয়াতে পর্দার বিধান সম্পর্কে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, বেশ কিছু সময়ের ব্যবধানে তারই রেশ ধরে (২৪:৩০) ও (২৪:৩১) নং আয়াতে পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রে একই ভাষায় বক্তব্য দেয়ার পর নারীদের পর্দা সম্পর্কে বিষদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে পুরুষ এবং নারী উভয়কেই দৃষ্টি নত রাখতে বলা হয়েছে। কারন সরাসরি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলে তাতে যেমন নিজের ব্যক্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, তেমনি পুরুষ বা নারী যার দিকেই তাকিয়ে থাকা হোক না কেন এটি যে খুবই অস্বস্থিকর ব্যাপার তা বিবেক সম্পন্ন মানুষ মাত্রই বুঝতে পারার কথা। মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে শালীন ভাবে মেলামেশা, কথাবার্তার সময় পুরুষ-নারী উভয়ের দিকে চোখ পরতেই পারে। কিন্তু এই চোখে চোখ রাখাটা যেন মাত্রা না ছাড়ায় অর্থাৎ শালীনতার পর্যায়ে থাকে সেই জন্য পরস্পরের প্রতি একনাগারে না তাকিয়ে থেকে দৃষ্টি নত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া রাস্তা ঘাটে অশালীন কিছু থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে দৃষ্টি নত/সংযত করলেই তো তার কু-প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে লজ্জাস্থানের হেফাজত করা অর্থাৎ ঢেকে রাথাটাও খুবই জরুরী। তাই আগে লজ্জাস্থানের হেফাজত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এমন কোন স্থানে যেতে হলো যে, সেখানকার মানুষেরা লজ্জাস্থান ঢাকার প্রতি যত্নশীল নয়। এ ক্ষেত্রে দৃষ্টি নত করার অর্থাৎ সেদিকে তাকিয়ে না থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।



এভাবে একটি জাহেলি সমাজকে ধীরে ধীরে পর্দা সম্পর্কে সচেতন ও আইন প্রণয়নের মাধমে সেই বিধানটিকে বাস্তবায়ন করার ধরাটি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ বলেই আমি বিশ্বাস করি। এই আয়াতগুলোর ধরাবাহিকতা ও বক্তব্য থেকে এটাও বোঝা যায় যে, পর্দার বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়কেই সচেতন হতে হবে, তবে পুরুষদেরকেই অগ্রনী ভুমিকা পালন করতে হবে।



যেহেতু (৭০: ২৯-৩১) ও (২৩: ৫-৭) নং আয়াতে অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে জায়েজ করা হয়নি, তাই (০৪:২৪) নং আয়াতে তা রহিত করার প্রশ্ন আসেনা। আর (০৪:২৪),নং আয়াতে তো আরও পরিষ্কার কোরে বলা হলো- "স্বাধীন সধবা নারীকে বিয়ে করা চলবে না, তবে ডান হাতের অধিকারভুক্তরা সধবা হলে শর্ত সাপেক্ষে বিয়ে করায় কোন বাধা নেই, কিন্তু তাদের সাথে ব্যাভিচার করা বা রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করা আর চলবে না।" এখানে কোন আয়াতের নির্দেশকে রহিত নয়, বরং পূর্বের প্রচলিত প্রথাকে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।



কোন কোন হাদিছে ক্রীতদাসীর সাথে মালিকের সহবাস সংক্রান্ত কিছু বক্তব্য এসেছে। কিন্তু সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করলে সেগুলোকে (০৪:২৪) নং আয়াত নাযিলের পূর্বেকার অর্থাৎ মক্কি জীবনের সাথে সম্পৃক্ত হাদিছ বলেই মনে হয়। যেহেতু (০৪:২৪) নং আয়াত নাযিলের আগে পর্যন্ত ইসলাম পূর্ব রীতি অনুসারে 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত'/ ক্রীতদাসীর সাথে মালিকের যৌন সম্পর্কের বিষয়টিকে নাকচ করার মত কোন ওয়াহী আসে নাই। তাই আল-কোরআনে সে বিষয়ে নির্দেশনা আসার পূর্ব পর্যন্ত 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত/ক্রীতদাসী ও মালিকের সম্পর্কের বিষয়টিকে তখনকার রীতির মধ্যে রেখেই কিছুটা মর্যাদা দেবার অভিপ্রায়ে রাসূল (সাঃ) এর পক্ষ থেকে সাময়িকভাবে কিছু সদুপোদেশ দেয়া হয়েছিল মাত্র। পরবর্তীতে কোন হাদিছ দ্বারা যদি অন্য কোন ভাব প্রকাশ পেয়েও থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে তথ্য আদান-প্রদান জনিত ঘাটতি বা বর্ণনা ভঙ্গির দূর্বলতার কারনেই এমনটি হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। আর আল-কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক হলে সেই হাদিছগুলো অবশ্যই বর্জন করা চাই।



এবার নিচের হাদিছটি লক্ষ করুন-

Narrated 'Abdullah (Radi-Allahu 'anhu): Bukhari Vol. 7: No. 4

We were with the Prophet (Sallallahu 'Alaihi Wa Sallam) while we were young and had no wealth whatever. So Allah's Apostle (Sallallahu 'Alaihi Wa Sallam) said, "O young people! Whoever among you can marry, should marry, because it helps him lower his gaze and guard his modesty (i.e. his private parts from committing illegal sexual intercourse etc.), and whoever is not able to marry, should fast, as fasting diminishes his sexual power."

[Modesty= (অর্থ) বিনয়, বিনয়শীলা, নিরাভিমান, অভিম্নশুণ্যতা, নিরহঙ্কারিতা, সংযম, পরিমিতিবোধ, মিতাচার, শালীনতাবোধ]



মূল হাদিছে ব্যবহার করা হলো guard his modesty, ব্রাকেটে বলা হলো (i.e. his private parts from committing illegal sexual intercourse etc.)- এভাবে (৭০: ২৯) ও (২৩: ০৫) নং আয়াতের অনুবাদের মতই মূল হাদিসের সাথে এ ধরনের বক্তব্য (from committing illegal sexual intercourse etc.) যুক্ত করে দিয়ে সহজ, সরল ও স্পষ্ট বাণীকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা কি ঠিক হয়েছে?



সময় মত বিয়ে সাদির ব্যবস্থা নিলে যে একজন মানুষের শুধুমাত্র অবৈধ যৌন আকাঙ্খাই নিবৃত হয়না, বরং তার বিনয়, বিনয়শীলা, নিরাভিমান, অভিম্নশুণ্যতা, নিরহঙ্কারিতা, সংযম, পরিমিতিবোধ, মিতাচার, শালীনতাবোধও রক্ষিত হয়- সেই ব্যাপক বক্তব্যটি এর ফলে উহ্যই থেকে গেল।



কিন্তু আশ্চর্য লাগে যখন এও বলা হয় যে, মুশরীক যুদ্ধবন্দীনিদের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক করায় নাকি কোন সমস্যা নেই। অথচ পবিত্র কোরআনে কোথাও একটি বারও মুশরীক ডান হাতের অধিভুক্তরা/ যুদ্ধবন্দীনিরা ইমান না আনলেও তার সাথে বিবাহ/ যৌন সম্পর্ক জায়েজ হতে পারে (নাউযুবিল্লাহ) তার সামান্যতম ইংগিতও নেই। পবিত্র কোরআনের সাথে এমনতর অদ্ভুত অপবিত্র বিরোধীতা!! জ্ঞাতসারে নাকি অজ্ঞতা বসত করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার অবকাশ রাখে।



কাদের সাথে কতটুকু খোলামেলা হতে হবে তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে আল্লাহতায়ালা দ্বিধা করেন না। আর যাদের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ এইরূপ স্পষ্টভাবে খোলামেলা মেলামেশা করার অর্থাৎ সহবাস করার পারমিশন দেন সেটাকে আমি অবশ্যই স্বীকার করি এবং সেক্ষেত্রে আমার কোনরূপ দ্বিধা-দন্দ নেই। নিচে দেখুন-



সূরা বাকারা (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-৮৭)

(০২:১৮৭) অর্থ- রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরণ কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।

(০২:২২৩) অর্থ- তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য কর্ষণকারী উর্বর শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যখন খুশি তোমাদের কর্ষণকারী উর্বর শস্য ক্ষেত্রে গমন কর। আর তোমাদের নিজেদের জন্য উৎপাদন (অগ্রীম/ আগামী দিনের ব্যবস্থা গ্রহণ) কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।



২৪৯- (ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহিত যৌনজীবন অত্যন্ত পবিত্র। এই জীবন সম্বন্ধে লজ্জিত হওয়ারও কিছু নাই বা একে হালকাভাবে গ্রহণ করা উচিত নয় বা এ নিয়ে অত্যাধিক বাড়াবাড়ি করারও প্রয়োজন নাই। মানব জীবন চক্রের এ এক অপরিহার্য অংশ। এই জীবনকে আল্লাহ্ এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, বিবাহিত স্ত্রীরা হচ্ছে শস্যক্ষেত্র স্বরূপ। স্বামীরা সেই শস্যক্ষেত্রে বীজ বপন (শুক্র) করবে এবং ফসল ঘরে তুলবে, এখানে সন্তান তার ফসলস্বরূপ। সুতরাং স্বীয় জমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ কৃষিকাজে যেমন জমি চাষ করা এবং ফসল বোনার নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম আছে; সেইরূপ আল্লাহ্ মানুষকে বলেছেন তার সময়, সুযোগ ও ইচ্ছা অনুযায়ী তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে। সে এমনভাবে তার ফসল বুনবে না যাতে তার জমির ক্ষতি হয় বা তার ফসল পরিপক্কতা লাভ করতে না পারে। এই উক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অল্প বয়সে ঘন ঘন সন্তান ধারণের ফলে বহু নারীই অকালে বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং ফলে স্বামী দ্বারা পরিত্যক্ত হয়। স্ত্রীকে বলা হচ্ছে 'ফসলের জমি' যা আল্লাহ্ তাকে ইচ্ছা বা বিবেক অনুযায়ী কর্ষণ করার অনুমতি দিয়েছেন, তার অপব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। যেন 'ভূমি' অর্থাৎ স্ত্রীর কোনও ক্ষতি না হয়। শুধু যে স্ত্রীর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তাই নয়, ঘন ঘন সন্তান জন্মের ফলে তারা উপযুক্ত যত্ন পায় না, ফলে ভগ্ন স্বাস্থ্য এবং যত্নের অভাবে দেশের উপযুক্ত নাগরিকরূপে গড়ে উঠতে পারে না। সুতরাং ভুল কর্ষণ ও ভুল বপনের ফলে শুধু যে জমিরই ক্ষতি হয় তাই নয় উপযুক্ত পরিপুষ্ঠ ফসল লাভ থেকেও জমির মালিক বঞ্চিত হয়। এখানে ইচ্ছামত কর্ষণ করার অর্থ এই যে, স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের ব্যাপারে সহানুভূতি সম্পন্ন হবে এবং নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহার করবে। নিজের বিবেক ও বুদ্ধির ব্যবহারকেই আল্লাহ্ বলেছেন 'তোমাদের শস্য ক্ষেত্রে যখন যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার'। অর্থাৎ বিবেকের স্বাধীনতা দেওয়া হলো। বৈবাহিক সম্পর্ক শুধুমাত্র ভোগ-উপভোগের জন্য নয়। সুন্দর শান্তিপূর্ণ জীবন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, সৎ সন্তানের জন্ম দেওয়া ও তাদের সুষ্ঠু লালন পালন এর অন্যতম উদ্দেশ্য।)



(০২:২২৩) নং আয়াতে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে নিকট সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর কিতাবের কোথাও কি সকল মুসলিম পুরুষদের জন্যই তাদের “মা-মালাকাত আইমানুকুম/ ডান হাতের অধিকারভুক্ত”-দের' সাথে এমনকি মুশরিকদের সাথেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মত খোলামেলা মেলামেশার পারমিশন আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন?



অথচ আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবে বলেছেন-

(২:২২১) অর্থ- আর তোমরা মুশরেক /অংশীবাদীনারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য (وَلأَمَةٌ مُّؤْمِنَةٌ) মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।



আল-কোরআনে একটিও স্পষ্ট বাণী কেউ দেখাতে পারবেনা, যেখানে স্পষ্টভাবে 'মা-মালাকাত আইমানুকুম-দের' সাথে এবং মুশরিক মহিলাদের সাথে (যাদেরকে বিয়ে করারই হুকুম নেই) ব্যভিচার টাইপ সব করার পারমিশন মুসলিম পুরুষদেরকে দেয়া হয়েছে। না, কেউ কখনই পারবে না। এ ধরনের কন্ট্রডিক্টরি হুকুম মহান স্রষ্টা দিতেই পারেন না।



কিন্তু এরপরও কেউ যদি 'মা-মালাকাত আইমানুকুম-দের' সাথে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে দৈহিক সম্পর্ক করার পক্ষে থাকতে চায়- তবে সে কখনই প্রকৃত মুসলিম হতে পারে না। বরং সে কাম-লালসার অনুগামী হিসেবেই গণ্য হবে।



সুতরাং (৭০: ২৯-৩১) ও (২৩: ৫-৭) নং আয়াতে 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত' অর্থাৎ যুদ্ধবন্দীনিদের সাথে পুরুষদের অবৈধ যৌন বাসনা পূরণের ফ্রি-পারমিট সর্বকালের জন্য দেয়া হয়েছে বলে যদি কেউ দাবি করে- তাহলে তাদের এই দাবি সম্পূর্ণরূপে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ডাহা মিথ্যা। শুধুমাত্র লজ্জাস্থানের হেফাজতের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের কথা বলার কারনেই কে কি মত দিল সেটা নিজে ভালভাবে না বুঝে তাদের উপর ভর করে এমন জঘন্য পাপ ও অনাচারে কথা ভাবা মোটেই উচিত নয়। কারণ আল্লহতায়ালা এতটা বে-শরম হবার জন্য পারমিশন দিতে পারেন বলে যারা মনে করেন, তাদের সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন-

(৪:২৭) অর্থ- আল্লাহ তোমাদের প্রতি ফিরতে (ক্ষমা করতে) চান; কিন্তু যারা কাম-লালসার অনুগামী, তারা চায় তোমরাও যেন (তাঁর কাছ থেকে) অনেক দূরে বিচ্যুত হয়ে পড়।



আমাদের স্মরণ রাখা উচিত যে, পবিত্র কোরআনই রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ ও পবিত্র চরিত্রের বাস্তব প্রতিফলনের প্রকৃত রূপকে তুলে ধরে। তাই একজন ইমানদার হিসেবে রসূল (সাঃ) এর জীবনকে আলে-কোরআনের বাস্তব প্রতিফলন হিসেবেই বিশ্বাস করতে হবে এবং এটাও বিশ্বাস করতে হবে যে, রসূল (সোঃ) এর জীবনে এমন কিছু বিষয় ঘটেছে যা আল-কোরআনের নির্দেশ অনুসারেই ঘটেছে এবং এমন কিছু নির্দেশ আছে যেগুলো একান্তভাবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল।



অনেকে সূরা আল আহযাব (৩৩:৫০) নং আয়াতের উদাহরণ দিয়ে ডান হাতের অধিকারভূক্তদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করাকে সব মুসলিমদের জন্যই জায়েজ ভাবে। কিন্তু তাদের এই ভাবনা ও কর্ম সম্পূর্ণরূপে ভুল।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:১০

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
মার্ক করে গেলাম। পরে পড়ব।


সুন্দর টপিক

০১ লা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:২০

সত্য৭৮৬ বলেছেন: ধন্যবাদ-
পড়ে মন্তব্য দিতে ভুলবেন না আশাকরি।

২| ০১ লা জুন, ২০১৪ রাত ১:২৮

বাংলার ঈগল বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট +++++++++++++++++++++

০১ লা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২০

সত্য৭৮৬ বলেছেন: পড়ার ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৩| ০১ লা জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৪১

মাথা ঠান্ডা বলেছেন: ভাল পোস্ট । সময়োপযোগী।

০১ লা জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:২৪

সত্য৭৮৬ বলেছেন: পড়ার ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৪| ০২ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

মাইরালা বলেছেন: নিচের এই সব হাদিস সম্পর্কে কি বলবেন-------

"কোন স্ত্রীলোককে দেখে কারো মনে যৌন আকান্খা জাগলে সে যেন তার স্ত্রী বা দাসীর সাথে মিলিত হয়"
সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩২৭১, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৫

"কোন কিছুর মধ্যে যদি অপয়া থাকে তা হল বাড়ীঘর, স্ত্রীলোক এবং ঘোড়া"
সহীহ বুখারি, হাদীস ৪৭২৪, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০১

"পুরুষের জন্য মেয়েলোক অপেক্ষা অন্য কোন বড় ফিতনা আমি রেখে গেলাম না"
সহীহ বুখারি, হাদীস ৪৭২৫, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০১

সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৪২৬, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৮৫
"যুদ্ধে বন্দিনী গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের সাথে সহবাস করা হারাম"
(বাকিরা হালাল!)

"আবু সাঈদ খুদরী(রা:) বলেন, আমরা যুদ্ধকালিন সময়ে গনীমত হিসেবে কিছু দাসী পেয়েছিলাম। আমরা তাদের সাথে মিলিত হতাম, কিন্তু বীর্য বাইরে ফেলতাম। এরপর আমরা রাসুলূল্লাহ(সা:) কে এ প্রসন্গে জিগ্গেস করলাম। তিনি বললেন, কিয়ামত পর্যন্ত যে রূহ পয়দা হবার, তা অবশ্যই পয়দা হবে। "
তিনি কিন্তু একাজ করতে মানা করেননি! পাকিস্তানী যোদ্ধারা তাহলে বাংগালী নারীর সাথে ঠিক ইসলামের আদেশ অনুযায়ীই কাজ করেছিলো!

সহীহ বুখারি, হাদীস ২৯০২, ৫ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩০১
"জাবির ইবন আবদুল্লাহ বলেন, রাসুলূল্লাহ(সা:) বলেছেন, তোমাদের জন্য গনীমতের মাল হালাল করা হয়েছে।"
উল্লেখ করা নিশ্প্রয়োজন যে গনীমতের মালের মধ্যে নারীও অন্যতম!

০২ রা জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪

সত্য৭৮৬ বলেছেন: ভাই, এই ধরণের হাদিছ যে আমি পারতপক্ষে এড়িয়ে চলি তা আপনি আমার এই পোষ্ট এবং অন্যান্য পোষ্টগুলো পড়লেই আশাকরি বুঝতে পারবেন। বিশেষ কোরে আমি নারীকে কখনই গনিমতের মাল হিসেবে গণ্য করি না। কারণ আল-কোরআন আমাকে সেই শিক্ষা দেয় না।
ধন্যবাদ-

৫| ০২ রা জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মাইরালা বলেছেন: হাদিস এড়িয়ে চলেন বলতে কি বুঝাচ্ছেন? কিছু হাদিস মানেন আর কিছু হাদিস মানেন না , এরকম কিছু? আবার বলছেন কুরআন মানেন। এই আয়াতটা কি জানেন না?-------

""তবে কি তোমরা কিতাবের এক অংশের উপর ঈমান রাখ আর বাকি অংশকে অবিশ্বাস কর? তোমাদের মধ্যে যারাই এরুপ করবে তাদের জন্য এছাড়া আর কী শাস্তি হতে পারে যে, তারা দুনিয়ার জীবনে অপমান ও লাঞ্ছনা ভোগ করবে এবং আখিরাতে তাদেরকে কঠন আযাবের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আর তোমরা যা কিছু করছ, সে বিষয়ে আল্লাহ বেখবর নন। (সূরা বাকারা-৮৫).""



নাকি সম্পূর্ণ হাদিসকেই বাদ দিয়ে কুরআন অনলি হয়ে গেছেন ?

আপনি যদি শুধু মাত্র কোরআনকে মেনে থাকেন তাহলেও প্রশ্ন থাকে। নামাজ পড়েন কয় ওয়াক্ত ? কুরআনে নামাজের ৩ ওয়াক্তের কথা বলে হয়েছে।
১)সালাতুল ফজর
২)সালাতুল উস্তা
৩)সালাতুল ইশা
আর কিছু নেই। অথচ হাদিসে ৫ ওয়াক্তের কথা বলা হয়েছে । প্রশ্ন হল আপনি নামাজ পড়েন কয় বার?
;) ;) ;) ;)

০৩ রা জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:১০

সত্য৭৮৬ বলেছেন: আপনি হয়ত ভাবছেন, আমি আপনার প্রশ্নটা এড়িযে গেলাম কিনা- :) :)
না ভাই, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন এড়িয়ে যাই কেমনে?

আর আল-কোরআন অনুসারে বুঝে শুনে হাদিছ মানার কথা বলায় আমাকে প্রায়ই এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেই সাথে আল-কুরানি ফেরকার অনুসারী, হাদিছ অস্বীকারকারী, কাফির ও নাস্তিকদের দোসর হিসেবেও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়ে থাকে। তাই এক কথায় এর উত্তর দেয়া ঠিক হবেনা বিধায় এ বিষয়ে একটি পোষ্ট দিয়ে দিলাম- আল-কোরআন অনুসারে সালাতের ওয়াক্ত?

এর পরেও কোন সন্দেহ থাকলে তো অন্তর্যামী মহান আল্লাহতায়ালাই সর্বজ্ঞ।

৬| ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:১৫

কয়েস সামী বলেছেন: ভাই সুন্দর এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। আচ্ছা ডান হাতের অধিকার ভুক্ত মানে যদি যুদ্ধ বন্দিনীদের বুঝায় অার মোহরানা প্রদানের দ্বারা তাদের বিয়ে করে তাদের সাথে যদি যৌনকাজ করা যায় বলে যে কথাগুলো বলা হয়েছে কোরআনে সেটিকেই শিয়ারা সাময়িক বিয়ে বা মুতাহ বিয়ে বলে থাকে। মানে যৌন প্রয়োজনে তাদের সাময়িকভাবে বিয়ে করা যাবে। এটা কি ঠিক ব্যাখ্যা? তবে কি এটা একরকমের পতিতাবৃত্তি নয়? আরেক টা বিষয়ে একটু ক্লিয়ার হতে চাচ্ছিলাম, সুরা বাকারার ১৮৭ নম্বর অায়াতে যে বলা হয়েছে ‌‌-এবং রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত -এটার মানে কি ইফতার রাত হয়ে গেলে পরে করা?

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

সত্য৭৮৬ বলেছেন: কোরআনে ডান হাতের অধিকার ভুক্তদেরকে মোহরানা প্রদানের দ্বারা শুধুমাত্র যৌন কাজের জন্য সাময়িক বিয়ে করার কথা বলা হয় নাই। স্বাভাবিকভাবে অন্যদেরকে যেভাবে মোহরানা প্রদান করে বিয়ে করতে হয়, তাদেরকেও সেভাবেই বিয়ে কোরে তবেই যৌনকর্ম করার কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে (০৪:২৫) রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করতে স্পষ্টভাবে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।

সুতরাং শিয়ারা সাময়িক বিয়ে বা মুতাহ বিয়ের নামে যা করে থাকে তা এখন আর বৈধ নয়। তারা যা করে তা পতিতাবৃত্তি এবং গোনাহ।

আপনি জানতে চেয়েছেন- //আরেক টা বিষয়ে একটু ক্লিয়ার হতে চাচ্ছিলাম, সুরা বাকারার ১৮৭ নম্বর অায়াতে যে বলা হয়েছে ‌‌-এবং রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত -এটার মানে কি ইফতার রাত হয়ে গেলে পরে করা?//

আপনার জন্য এই পোষ্টে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি- রমজানে রোজা রাখা, সেহেরি ও ইফতারের বিধান

পড়ার ও মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ-


৭| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৩

মইনুল হাসান মুক্ত বলেছেন: মাইরালা সাহেবের জন্য
"কোন কিছুর মধ্যে যদি অপয়া থাকে তা হল বাড়ীঘর, স্ত্রীলোক এবং ঘোড়া"

সহীহ বুখারি, হাদীস ৪৭২৪, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৪০১


জবাব ঃ

আমরা প্রথমে এ বিষয়ক হাদীসগুলো দেখে নেই।

ইমাম বুখারী রহঃ তার বুখারীতে শিরোনাম কায়েম করেছেন

بَابُ مَا يُتَّقَى مِنْ شُؤْمِ المَرْأَةِ

তথা অশুভ স্ত্রীলোকদের থেকে দূরে থাকা।

তারপর কুরআনে কারীমের আয়াত এনেছেন-

وَقَوْلِهِ تَعَالَى: {إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ} [التغابن: 14]

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই তোমাদের স্ত্রীগণ এবং সন্তান সন্তুতিদের মাঝে তোমাদের শত্রু রয়েছে। {সূরা তাগাবুন-১৪}

এরপর তিনি হাদীস এনেছেন-



عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الشُّؤْمُ فِي المَرْأَةِ، وَالدَّارِ، وَالفَرَسِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের স্ত্রী, বাড়িঘর এবং ঘোড়ার মাঝে অশুভের লক্ষণ আছে। {বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৩}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: ذَكَرُوا الشُّؤْمَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ كَانَ الشُّؤْمُ فِي شَيْءٍ فَفِي الدَّارِ، وَالمَرْأَةِ، وَالفَرَسِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে লোকেরা অশুভ স্ত্রীলোক সম্পর্কে আলোচনা করলে তিনি বলেন, কোন কিছুর মধ্যে যদি অপয়া থাকে, তা হলো বাড়ি ঘর, স্ত্রীলোক এবং ঘোড়া। {বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৪}

عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ»

হযরত উসামা বিন জায়েদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেন, পুরুষের উপরে মেয়েলোকের অপেক্ষা অন্য কোন বড় ফিতনা আমি রেখে গেলাম না।{বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৬}



বুখারীর শিরোনাম তারপর কুরআনের আয়াত এবং উপরে দেয়া তিনটি হাদীস একত্রে দেখলে পরিস্কার হয়ে যায় আসলে মহিলাদের অপয়া এবং অশুভ লক্ষণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

শেষ হাদীসটিতে দেখুন। রাসূল সাঃ বলেছেন, পুরুষদের উপর সবচে’ বড় ফিতনা হল নারী।

এ নারীর কারণেই মানুষ খুনের মত ঘটনা ঘটায়। বাড়ি ঘর ছেড়ে দেয়। পিতা-মাতার অবাধ্য হয়। অনেকে অবৈধ উপায়ে উপার্জন করে। মিথ্যা বলে। গোনাহে লিপ্ত হয়। জিনায় লিপ্ত হয়।

তাহলে যে নারীর কারণে মানুষ গোনাহে প্রলুব্ধ হয় কেবল সেই নারীই অপয়া এবং অলুক্ষুণে। সকল নারী নয়।

ঘোড়াকেও অলুক্ষুণে বলা হয়েছে। অথচ ঘোড়া দিয়ে জিহাদ করা হয়। রাসূল সাঃ নিজেও ঘোড়ার পিঠে চড়েছেন। তাহলে এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য হল যে ঘোড়া দিয়ে দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোন কাজ করা যায় না, তাই অপয়া এবং অলুক্ষূনে ঘোড়া।

ঘরবাড়িকেও অলুক্ষুনে বলা হয়েছে। এর মানে হল, যে ঘর নির্মানের লোভ মানুষকে অসৎ পথে উপার্জন করতে প্রলুব্ধ করে সেটিই অপয়া এবং অলুক্ষুনে ঘর।

মোটকথা, আমাদের সমাজে প্রচলিত অলুক্ষনে বা অপয়া পরিভাষা হাদীসে উদ্দিষ্ট নয়। আমাদের সামাজিক পরিভাষায় অপয়া বা অলুক্ষুনে বলা হয় এমন ব্যক্তিকে, যার দ্বারা মানুষের ক্ষতি হয়। যাকে দেখলে মানুষের ধ্বংস নেমে আসে। এমন আকিদা রাখা জায়েজ নেই। কোন ব্যক্তিই আমাদের পরিভাষায় যে অপয়া বা অলুক্ষুনে বলা হয় সেই অপয়া বা অলুক্ষুনে নয়।

হাদীসে যে অপয়া বা অলুক্ষুনের কথা বলা হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল যার মাধ্যমে গোনাহে লিপ্ত হয় মানুষ। যার কারণে মানুষ গোনাহ করতে প্রলুব্ধ হয়।

হাদীসের দ্বারা কোন নারী অপয়া প্রমাণিত?

যে নারী স্বামীকে গোনাহ করতে প্রলুব্ধ করে। দ্বীন পালন করতে বাঁধা দেয়। হারাম উপার্জন করতে বাধ্য করে। স্বামীর হক আদায় করে না। স্বামী ও পরিবারের হক আদায় করে না।

এমন নাফরমান ও অবাধ্য নারী হল হাদীসের বক্তব্য অনুপাতে অপয়া বা অলুক্ষুনে।

এমন নাফরমান ও অবাধ্য নারী না হয়ে ভাল ও সাধ্বী নারী কিছুতেই অপয়া বা অলুক্ষুনে নয়।

রাসূল সাঃ অনেক স্থানে নারী জাতির প্রশংসা করেছেন। নারীর পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত বলেছেন। যার পায়ের নিচে বেহেশত সে কি করে অপয়া হতে পারে?

তাছাড়া স্ত্রীদের সাথে ভাল ব্যবহার, উত্তম আচরণ করতে রাসূল সাঃ পরিস্কার ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কোন মুমিন পুরুষ যেন কোন মুমিন নারীকে শত্রু মনে না করে। কেননা, যদি সে তার এক কাজকে নাপছন্দ করে, তার অপর কাজকে পছন্দ করবে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৬৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৩৬৩}

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ مِنْ أَكْمَلِ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا، أَحْسَنَهُمْ خُلُقًا، وَأَلْطَفَهُمْ بِأَهْلِهِ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিকতর পূর্ণ মুমিন, যে ব্যক্তি সদাচারী এবং নিজ পরিবারের জন্য কোমল এবং অনুগ্রহশীল। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬১২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২০৪}

আমাদের সমাজে যাকে অলুক্ষুনে বা অপয়া বলা হয়। সেই বিশ্বাস জায়েজ নয়। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস দেখা যেতে পারে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا عَدْوَى، وَلَا طَيْرَةَ،

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, সংক্রামক ব্যাধি এবং কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই। {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১১৫০, বুখারী, হাদীস নং-৫৭০৭}

عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الطِّيَرَةُ شِرْكٌ وَمَا مِنَّا إِلَّا، وَلَكِنَّ اللهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, অলক্ষী বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক। এটি আমাদের আকিদা নয়। তবে কারো মনে এরূপ দুর্ভাবনার উদয় হলে আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করলে তা দূরিভূত হয়ে যাবে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৬৮৭, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৫৩৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৯১০}

এ সকল হাদীস একথাই প্রমাণ করছে যে, আসলে নারীদের মাঝে মূলত আমাদের সমাজের প্রচলিত কুলক্ষণ বিশ্বাস করা জায়েজ নয়। হাদীসে কুলক্ষণ বলতে বুঝানো হয়েছে। যে নারীর কারণে সংসারে অশান্তি আসে। যার কারণে পরিবারে ধর্মপালন কষ্টকর হয়ে যায়। যার কারণে স্বামী গোনাহের কাজ করতে বাধ্য হয়। যার কারণে সমাজের যুবকরা খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। লম্পট হয়। স্বামী হারাম উপার্জন করতে বাধ্য হয়। এমন নারীকে হাদীসে অপয়া এবং অলুক্ষুনে বলা হয়েছে। সকল নারীকে নয়।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.