নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌভিকের চিন্তাচর্চা

চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি

সৌভিক ঘোষাল

পেশায় সাহিত্যের শিক্ষক। মতাদর্শে মার্কসবাদী। কোলকাতার বাসিন্দা

সৌভিক ঘোষাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে মুক্তমনাদের ওপর হামলা খুন অব্যাহত আছে কেন ?

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:২১


বাংলাদেশে মুক্তমনাদের ওপর হামলা অব্যাহত আছে। ১২ মে মঙ্গলবার দিনের আলোয় আবারো এক ব্লগার তথা মুক্ত চিন্তার আন্দোলনের সংগঠক, অনন্ত বিজয় দাস খুন হয়ে গেলেন। কিছুদিন আগে সংগঠিত অভিজিৎ আর ওয়াশিকুর বাবুর হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দেওয়া এই খুনের ঘটনাস্থল অবশ্য ঢাকা শহর নয়। দেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তের দূরবর্তী জেলা সিলেটে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ মুখোশ পড়া কয়েকজন দুষ্কৃতি চপার নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. রহমতউল্লাহ জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে সিলেট নগরীর সুবিদ বাজার এলাকার ১৩/১২, নুরানী বনকলা পাড়া এলাকায় বাসা থেকে বের হবার সাথে সাথে অনন্ত বিজয়কে চারজন মুখোশধারী ব্যক্তি কোপায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু বলেন, অনন্ত বিজয় দাস সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক। তিনি মুক্তমনা ব্লগে লেখালেখি করতেন। এর আগেও তাকে উগ্রবাদীরা হত্যার হুমকি দিয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পরেই সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী সংগঠন এর তরফে এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনার কিছু পরে টুইটার বার্তায় আনসার আল-ইসলাম উল্লাস প্রকাশ করে বলে তাদের অপারেশন সফল হয়েছে ।নিজেদের টুইটারে আনসার আল-ইসলাম পোস্ট করে, আলহামদুলিল্লাহ! আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে আল-কায়েদা উপমহাদেশ এর ভাইরা আরও এক ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগারকে জাহান্নামে পাঠিয়েছেন! সে নাস্তিকদের আখড়া মুক্তমনার এডমিন এবং নিয়মিত বিভিন্ন নামে আল্লাহ ও তার রাসুল (সাঃ) এবং ইসলাম নিয়ে ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ করত। তবে হত্যার দায় স্বীকারের এ বিষয়ে আল-কায়েদা উপমহাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
বাংলাদেশ সরকার মুক্তমনা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নটিকে নস্যাৎ করে মৌলবাদী শক্তির কাছে আত্মসমর্পণের প্রবণতা দেখাচ্ছে এটা নতুন কোনও কথা নয়। সম্প্রতি বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদের বক্তব্য থেকে। তিনি খোলাখুলি বলেছেন,"বাংলাদেশের বর্তমানের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে খোলাখুলিভাবে কোনও নাস্তিকের পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভবপর নয়। আমরা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী,নাস্তিকতায় নয়। যেখানে প্রধান বিরোধী পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ধর্মীয় তাস খেলছে, সেখানে আমাদের পক্ষে সরাসরি কোনও নাস্তিককে সমর্থন করা সম্ভব নয়।" এই মনোভাব স্বাভাবিকভাবেই মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎসাহ দিচ্ছে এবং তারা ভাবছে নাস্তিকদের হত্যা করলেও শাস্তিদান থেকে সরকার বিরত থাকতে বাধ্য হবে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সমাজ অবশ্য খুনের পরেই প্রতিবাদ সংগঠিত করেছেন, রাস্তায় নেমেছেন। সরকার ও রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায়ই ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস খুন হয়েছে বলে দাবি করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সিলেটে ব্লগার ও বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাস হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘একদিকে ব্লগারদের খুনিরা গ্রেফতার হচ্ছে না অন্যদিকে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজিব হত্যার খুনিদের রাতের আঁধারে জামিন দিয়ে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। এসব হত্যাকারীদের রাষ্ট্র ও সরকারই পৃষ্ঠপোষকতা করছে।’ ডা. ইমরান এইচ সরকার অভিযোগ করেন, ‘সরকারের ভেতরের লোকেরাই পাহারা দিয়ে এসব খুন করাচ্ছে এটা এখন স্পষ্ট। তা না হলে এত খুন সম্ভব নয়। সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকাদের পৃষ্ঠপোষকতাই খুনিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’ইমরান আরো বলেন, নতুন নতুন ইস্যু সৃষ্টি করা হচ্ছে এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য। হয়তো আরেকটা নতুন নাটক সাজিয়ে খুনিদের ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এবং সেটা ২ দিন পরেই করা হতে পারে।’তিনি বলেন, ‘হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার হলে ব্লগার রাজীব হত্যা হতো না। রাজীব হত্যার বিচার হলে অভিজিৎ, বাবু ও বিজয় হত্যা হতো না। এভাবেই সবাইকে হত্যা করা হচ্ছে রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য।’ ইমরান বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে হয়তো এমন একদিন আসবে যেদিন নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের সবাইকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নাগরিকদের মতো অস্ত্র হাতে নিতে হবে। রাষ্ট্র এখন ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।’ ইমরান এইচ সরকার ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস হত্যার বিচারের দাবিতে বুধবার বিকেলে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিণী, নারী নেত্রী খুশি কবির, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের শম্পা বসু, ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা প্রদক্ষিণ করে আবারো শাহবাগে এসে শেষ করে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৫

আটলান্টিকের প্রবাল বলেছেন: বিএনপি এবং অন্যান্য ইসলামিক দলগুলোর পক্ষে ক্রমাগত প্রচারণা চালিয়ে একসময় ক্লান্ত হয়ে যাই। হতাশ চোখে কেমন অন্ধকার লাগে। তারপর উজ্জীবিত হই আপনাদের মত লোকদের লেখা পড়ে। মিথ্যার ওপর দাড়িয়ে আপনারা কখনোও ক্লান্ত হন না। তবে আমরা কেন হব?

২| ১৬ ই জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:০৯

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: খুন অব্যাহত আছে কারণ খুন না হলে মূত্রমনাদের জন্য বাংলাদেশ যে কতটা বিপজ্জনক রাষ্ট্র, সেই মেসেজ আমেরিকা-ব্রিটেনের কাছে পৌঁছেনা। আওয়ামী লীগ সরকারের টিকে থাকার জন্য এবং আমেরিকা-ব্রিটেনের সমর্থনের জন্য নিয়মিত বিরতিতে একজন একজন করে ব্লগার খুন হওয়া খুব জরুরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.