নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৌভিকের চিন্তাচর্চা

চারিদিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি

সৌভিক ঘোষাল

পেশায় সাহিত্যের শিক্ষক। মতাদর্শে মার্কসবাদী। কোলকাতার বাসিন্দা

সৌভিক ঘোষাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শরণার্থী সঙ্কট এবং বিপন্ন মানবতার বিতত বিতংস

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮


সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম মানবিক সঙ্কট হিসেবে শরণার্থী সমস্যা গোটা পৃথিবীর মনযোগ আকর্ষণ করেছে। বিষয়টি এশিয়া আফ্রিকা ও ইউরোপের মত তিনটি মহাদেশের অনেকগুলি দেশ ও তার লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। এর মধ্যেই কয়েক হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন দুর্ঘটনা ও অন্যান্য নানা মর্মান্তিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে। লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবিকা বাসস্থান সহায় সম্বল পরিবার পরিজন হারিয়ে অসহায়ভাবে ঘটনার ঘূর্ণিপাকে আবর্তিত হয়ে চলেছেন। পশ্চিম এশিয়ার সিরিয়া ইরাক ইয়েমেন ছাড়াও আফ্রিকার অনেকগুলি দেশ – নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, সুদান জাম্বিয়া থেকে দলে দলে মানুষ ভূমধ্যসাগর পার হয়ে দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশগুলিতে ঢুকে পড়তে চাইছেন। এশিয়া আফ্রিকার উল্লিখিত দেশগুলোর পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এমনকী ডিঙি নৌকাতে করেও তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় প্রায়শই ঘটছে বড়সড় দুর্ঘটনা। শুধু এপ্রিল ২০১৫ তেই এরকম পাঁচটি দুর্ঘটনায় জলযান ডুবে অন্তত ১২০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। তারপরেও দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ঘটেই চলেছে এবং তার হৃদয় বিদারক সংবাদ ও চিত্রাবলী গণমনকে ব্যথিত করে তুলছে।
যে সব দেশ থেকে মানুষ বাধ্য হয়ে পালিয়ে আসছেন তার মধ্যে প্রধান নিঃসন্দেহে সিরিয়া এবং ইরাক। গৃহযুদ্ধ দীর্ণ সিরিয়া থেকে ২০১৪ সালে ঘরছাড়া হয়ে দেশান্তরী হয়েছেন ৩৯ লক্ষ এবং এ বছরেও লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। তুরস্ক, জর্ডন, লেবাননের মত দেশে আশ্রয় নেওয়া ছাড়াও তাদের অনেকে চলে আসছেন ইউরোপে। ইসলামিক স্টেট এবং ক্ষমতাসীন আসাদ সরকারের মধ্যে চলমান দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটেই এই দেশত্যাগ। ইরাকের পরিস্থিতিও খুব আলাদা কিছু নয়। শরণার্থী সঙ্কতকে বুঝতে গেলে আমাদের অবশ্যই সিরিয়া এবং ইরাকের জটিল গৃহযুদ্ধ দীর্ণ পরিস্থিতিকে ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
সিরিয়ায় অনেকদিন ধরেই গৃহযুদ্ধ চলছিল। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে ইরাকে। এই যুদ্ধকে শিয়া সুন্নি দ্বন্দ্ব হিসেবেই মূলত দেখা হচ্ছে। যে সংগঠনটি এই গৃহযুদ্ধে সিরিয়া এবং ইরাকে অধিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরোভাগে রয়েছে তার সংক্ষিপ্ত নাম ‘আই এস আই এস’। পুরো কথাটি হল ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া/আল সাম। পরে এরা নিজেদের নাম পরিবর্তিত করে নেয় আই এস বা ‘ইসলামিক স্টেট’ এ। এরা মূলত সুন্নি মুসলিম মতবাদে বিশ্বাসী এক জঙ্গী গোষ্ঠী। সিরিয়া ও ইরাক - দু দেশেই এরা যে শাসকদের বিরুদ্ধে লড়ছে তারা শিয়া গোষ্ঠীর। প্রসঙ্গত মনে রাখার ইরাকে শিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সিরিয়াতে সুন্নিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
শিয়া সুন্নি বিরোধের বহু শতাব্দী ব্যাপী ইতিহাস আছে এবং বিভিন্ন সময়ে তা নতুন নতুন প্রেক্ষাপটে আত্মপ্রকাশ করে। সাম্প্রতিক সময়ের গৃহযুদ্ধে মার্কিন আগ্রাসন, সুন্নি শাসক সাদ্দামের পতন, অতঃপর আমেরিকাপন্থী নয়া শিয়া শাসকের জমানার সূত্রপাত যেমন প্রভাব ফেলেছে, তেমনি আরব বসন্ত, বিশেষত সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ প্রত্যক্ষভাবে ইরাকের ঘটনাবলীকে প্রভাবিত করেছে।
২০০১ এ মার্কিন মুলুকে বিমান হানার পর তার একদা সোভিয়েত বিরোধী লড়াই এর সঙ্গী আল কায়দা ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। প্রথম আক্রমণ হয় আফগানিস্থানে তালিবান শাসকদের ওপর। দু বছর পরেই রাসায়নিক অস্ত্র রাখার মিথ্যা অভিযোগে সে হামলা চালায় সাদ্দাম হোসেন এর শাসনাধীন ইরাকে। মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ বশংবদ শাসকদের মত সাদ্দাম আমেরিকার হুকুম তামিল করতে রাজি হচ্ছিলেন না। বিশেষত কেবলমাত্র ডলারেই তেলের বাণিজ্য করতে হবে এ ফতোয়ার বিরুদ্ধে যাওয়াই একদা মিত্র সাদ্দামের বিরুদ্ধে আমেরিকাকে যুদ্ধে প্রবৃত্ত করে। আফগানিস্থান বা ইরাক কোনও যুদ্ধই আমেরিকা সহজে জিততে পারে নি, বরং কোটি কোটি ডলার অর্থব্যয় করে শেষমেষ সে সেখান থেকে তার সেনা নিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়। তার বসানো এবং অনুগত পুতুল সরকারেরা দেশের বৃহৎ সংখ্যক মানুষের আস্থাশীল হয় নি এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর পরও সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন পুরো মাত্রায় বিদ্যমান। দেশ দুটি আক্ষরিক অর্থেই বারুদের স্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
মার্কিন আগ্রাসন ছাড়া সাম্প্রতিক ইরাক পরিঘটনার পেছনে সুগভীর প্রভাব ফেলেছে আরব বসন্ত। ২০১১র শুরু থেকে ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে বহু বছরের একনায়ক স্বৈরতন্ত্রী শাসকদের বিরুদ্ধে জনগণের সোচ্চার সক্রিয় প্রতিবাদের ঢেউ ওঠে। তিউনিশিয়া, মিশর, ইয়েমেন, জর্ডন, আলজেরিয়া ইত্যাদির মতো এর শরিক হয় সিরিয়াও। এখানেই পরিস্থিতি সবচেয়ে অস্থির, সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী, সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সংকটের জন্ম দেয়। দীর্ঘদিন ধরেই সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধ চলছে, যাতে কম করে তিরিশ হাজার মানুষ নিহত এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের আঁচই ক্রমশ ছড়িয়েছে ইরাকে।
ইরাকে গৃহযুদ্ধের প্রধান শক্তি ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আই এস আই এস) তার শক্তি সংহত করে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। তাদের প্রধান নেতা আবু বকর আল বাগদাদি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়েই সংগঠনের নেতার আসনে চলে আসেন। অনেকগুলো শক্তি মিলিত হয়ে আই এস আই এস এর জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুজাহিদিন সুরা কাউন্সিল, ইসলামিক স্টেট অব ইরাক, আল কায়দা ইন ইরাক, জেইস আল তাইফা আল মানসুরা এবং বিভিন্ন সুন্নি মতাবলম্বী উপজাতি। সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকে সে দেশে সুন্নি মতাবলম্বীদের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়েছে। শিয়া শাসক বিরোধী লড়াইয়ে সুন্নি মতাবলম্বীদের মধ্যকার এই ক্ষোভকে আই এস আই এস ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে।
ইরাকে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ২০১৩ র ডিসেম্বর মাস থেকে। ২০১৪ র জানুয়ারী মাসে আই এস আই এস মিলিশিয়া ফাল্লুজা আর রামাদি দখল করে নেয়। প্রথমদিকে পশ্চিমদিকে আবদ্ধ থাকলেও ক্রমশ আই এস আই এস ইরাকের মধ্য ও উত্তর অংশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। জুনের প্রথম থেকেই আই এস আই এস তাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটাতে থাকে। ৫ জুন তারা সামাররা শহর দখল করে নেয়। ৬ জুন তারা মুসৌল আক্রমণ করে। ইতোমধ্যেই আই এস আই এস এর সাথে কুর্দ স্বায়ত্ত শাসনাধীন অঞ্চল ও তার সেনাবাহিনীর লড়াই শুরু হয়ে যায়। ১১ জুন আই এস আই এস তেল সংশোধনাগারের শহর বাইজি আক্রমণ করে। সেদিনই তারা তিরকিত দখল করে নেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য তিরকিত ছিল সাদ্দাম হুসেনের জন্মস্থান ও বিকাশের এলাকা। ১২ জুন তারা উধাইম নামক একটি ছোট শহরের দখল নিয়ে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ৯০ কিমির মধ্যে চলে আসে। ১৩ জুন থেকে ইরাকি সেনাবাহিনী, কুর্দদের বাহিনী এবং ইরানের ‘রিভোলিউশনারি গার্ড’ রা মিলিতভাবে আই এস আই এস বিরুদ্ধে অস্ত্র শানাতে থাকে। বাগদাদ থেকে অতিরিক্ত সেনাবাহিনী এসে সামাররা পুনরুদ্ধার করে। সালাউদ্দিন প্রদেশ পুনরুদ্ধারের দাবিও তারা করেছে। ওইদিনই ইরাকের সর্বোচ্চ শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলি সিসতানি যুদ্ধের ডাক দিলে একদিনের মধ্যেই তৈরি হয় বিরাট মিলিশিয়া। ইরাকের সেনার পাশাপাশি তারাও আই এস আই এস এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
আই এস আই এস এই সময় থেকে চোরাগোপ্তা অসংখ্য ছোটখাট হামলা ও অপহরণের রাস্তা গ্রহণ করে। মুসৌলের এক তুর্কি কোম্পানীতে কর্মরত চল্লিশজন ভারতীয় নাগরিককে তারা অপহরণ করে। অনেক ভারতীয় নার্সকেও অপহরণ করা হয়। ২৩ জুন আই এস আই এস বড় ধরণের সাফল্য পায়। ওইদিন তারা তাল আফার বিমানবন্দরের দখল নিয়ে নেয়। ২৯ জুন আই এস আই এস এর নাম পরিবর্তন করে শুধু ইসলামিক স্টেট বা আই এস করে নেয়। ঘোষনা করে নয়া খিলাফৎ এর। আবু বকর আল বাগদাদিকে খলিফা হিসেবে ঘোষণা করে তারা বিশ্বের সমস্ত মুসলিমের কাছে এর স্বীকৃতির জন্য বার্তা পাঠায়। তারা শুধু সিরিয়া বা ইরাকেই নয়, এক বিস্তৃত ভূখণ্ড জুড়ে তাদের শাসন কায়েম করতে চায়। সমগ্র মুসলিম সমাজ তাদের খিলাফৎ এর ঘোষিত লক্ষ্য হলেও আপাতত ইরাক, সিরিয়া ও তার সংলগ্ন অঞ্চলই তাদের নিশানার মধ্যে আছে, যার মধ্যে পড়ে সমগ্র লেভান্ট অঞ্চল অর্থাৎ জর্ডন, ইসরায়েল, প্যালেস্টাইন, লেবানন, দক্ষিণ তুর্কি এবং সাইপ্রাস।
ইরাকের গৃহযুদ্ধ কোনদিকে গড়াবে তা বলা শক্ত। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতা এবং ইরাকের ঘটনার গতিপ্রকৃতি থেকে আশঙ্কা হয় এই রক্তক্ষয়ও দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। বিশেষত আন্তর্জাতিক মহলও যখন ইরাক ও সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে কোনও ঐক্যমত্যে পৌঁছতে পারে নি। মুসলিম বিশ্ব গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে। সুন্নিপ্রধান সৌদি আরব, তুর্কি এবং কাতার বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছে। অন্যদিকে ইরাণ এবং লেবাননের হিজবুল্লা গোষ্ঠী সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি আরব লিগ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাষ্ট্রসংঘ সিরিয়ার শাসকদের আক্রমণ করলেও চীন এবং রাশিয়া সিরিয়া সরকারের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইরাক সিরিয়া ছেড়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর ভীড় তুরস্ক জর্ডন এবং লেবানন ছাড়িয়ে ইউরোপের দিকেও চলে আসতে শুরু করে। ইউরোপ সাম্প্রতিক সময়ে আর্থিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত এবং সেখানেও সমাজ রাজনীতির জগতে উথাল পাতাল চলছে। ফলে দু একটি দেশ ব্যতীত বাকী ইউরোপীয় দেশগুলির পক্ষে বিপুল পরিমাণ শরণার্থীর পুনর্বাসনের আর্থিক সঙ্গতি কতটা আছে, সেটা গুরূত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে সামনে চলে এসেছে। অনেক দেশই সাবেক রীতিনীতি মেনে আর শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত নয়। জার্মানী অনেক লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দিলেও তা মোট শরণার্থীর এক ভগ্নাংশ মাত্র। অন্যদিকে পশ্চিম এশিয়ার শরণার্থী সঙ্কটে সে অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী ও সম্পন্ন দেশ সৌদি আরব একজন শরণার্থীকেও আশ্রয় দেয় নি। হজে আগত মানুষদের থাকার জন্য থাকা খালি দেড় লক্ষাধিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুকে শরণার্থীদের ব্যবহারে ছেড়ে দেবার পরিবর্তে তারা নিজেদের অর্থে জার্মানীর মাটিতে মসজিদ তৈরি করে সেখানে শরণার্থীদের আশ্রয় দেবার কথা বলে বিতর্ক তৈরি করেছে।
কোন নীতিতে শরণার্থী সঙ্কটের মোকাবিলা করা যাবে তা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোনও ঐক্যমত্যে এখনো অবধি পৌঁছতে পারে নি। শরণার্থীর এই স্রোত সামাল দিতে ধনী দেশগুলোর অভিবাসন আইন ঢেলে সাজানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে জাতিসংঘ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোন দেশ কতজন শরণার্থীকে জায়গা দেবে, তার একটি খসড়া পরিকল্পনাও সামনে এসেছে। দেশগুলোর মধ্যে এক লাখ ২০ হাজার শরণার্থীর দায়িত্ব ভাগ করে নেবার কথা এতে জানানো হয়েছে। খসড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইটালি, গ্রিস ও হাঙ্গেরিতে অবস্থানরত শরণার্থীদের ৬০ শতাংশ জার্মানি, স্পেন ও ফ্রান্সে জায়গা পাবে। সংখ্যা ঠিক করা হবে জিডিপি, জনসংখ্যা ও বেকারত্বের হারের ভিত্তিতে। যেসব দেশ এই কোটা মানতে অস্বীকার করবে, তাদের আর্থিক জরিমানা করার কথাও খসড়ায় রাখা হয়েছে। কিন্তু জোটের দেশগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। চেক রিপাবলিক,স্লোভাকিয়া,পোল্যান্ড ও রোমানিয়া শরণার্থী নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কোটা বেঁধে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে। সিরিয়ায় এর মধ্যেই নতুন করে ইসলামিক স্টেটের ঘাঁটিগুলি ধ্বংসের জন্য রাশিয়া বিমান হানা শুরু করেছে। তাই নিয়ে রুশ মার্কিন দ্বন্দ্ব নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে যা এই অঞ্চলের ভূ রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে, বাড়িয়ে দিতে পারে উদ্বাস্তু মানুষের মিছিল। সব মিলিয়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে অসহায় করুণ অবস্থায় এক বিতত বিতংস – সুবিস্তৃত ফাঁদের মধ্যে গ্রস্থ হতে দেখছি আমরা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মানবতার জয় হোক। শরনার্থীর এখনকার সমস্যা ধনীদেশগুলোরই সৃষ্টি তবু দায় নেয়ার বেলায় তাদের গরিমসি, স্বীকারই করে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.