নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবণ আহমেদ (নিরব)\nট্রেইনার অব \"উই আর স্টুডেন্টস\" ঢাকা।

শ্রাবণ আহমেদ

শ্রাবণ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রবীণের আর্তনাদ

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৫৭

প্রবীণের আর্তনাদ
লেখক: Srabon Ahmed (অদৃশ্য ছায়া)
.
পাবনা "লাকসাম শান্তা" হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত এক প্রবীণ ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। জরাজীর্ণ শরীর, গায়ে মলিন কাপড়। দেখে মনে হচ্ছে যেন কয়েকদিন যাবত পেটে দানা পানি কিছু পড়েনি। সেখানকার লোকজন অজ্ঞাত লোকটিকে তার নাম ধাম জিজ্ঞেস করলে লোকটি শুধু বললেন "তার বাড়ি পাবনা, সুইসগেট। জনাব, সেলিম চেয়ারম্যান তার চাচাতো ভাই।"

সেখানকার কিছু বিজ্ঞ ব্যক্তিদ্বয় লোকটিকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ছুটাছুটি করতে লাগলেন। কিছু যুবক ছেলে প্রবীণ লোকটির ছবি তুলে পাবনার বড় বড় বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটা গ্রুপে শেয়ার করলো। যেন লোকটির বাড়ির কেউ কিংবা বাড়ির আশেপাশে থাকা কেউ সংবাদটা পেলে লোকটিকে নিতে আসে।

সকাল গড়িয়ে দুপুর। আবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। সংবাদটি সামাজিক মাধ্যমে প্রত্যাশামূলক কোনো সাড়া পেল না। তবে যা পেয়েছে, সেটাও মন্দ না। লোকটিকে ততক্ষণে একটা টং দোকানে বসিয়ে প্রাতরাশ ও মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকটি অন্য সবার মতো অতোটা স্পষ্ট করে কথাও বলতে পারেন না। আসলে বয়সের ভার বলে একটা কথা আছে তো!
.
রাত্রি ন'টা নাগাদ সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক থেকে লোকটির পরিচয় পাওয়া গেল। কেউ একজন লোকটির ভাই "জনাব সেলিম চেয়ারম্যানের" ফোন নাম্বার পাঠালো। রাতে ঐ যুবক ছেলেগুলো একত্রিত হয়ে লোকটিকে সামনে বসিয়ে তার ভাইকে কল করলো। কিছুক্ষণ বাদে কল রিসিভ হলে ছেলেগুলো 'জনাব সেলিম সাহেব'কে তার ভাইয়ের ব্যাপারে জানালো। প্রত্যুত্তরে তিনি ছেলেগুলোর সাথে বাজে ব্যবহার করলেন এবং তাদের সামনে থাকা প্রবীণ ব্যক্তি তথা তার ভাইকেও বেশ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করলেন।

জনাব সেলিম সাহেবের সাথে কথা বলে ছেলেগুলো জানতে পারলো, এই লোকটিকে তিনি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।
.
লোকটি নিঃসন্তান। কোনো ছেলেপুলে নেই। আপন বলতে শুধু চাচাতো ভাইটাই ছিল। বাপের জমিজমা যা ছিল, তার সবই এই লোকের নামেই উইল করা। সেলিম সাহেব যখন এটা জানতে পারলেন, তখন তিনি একটা ফন্দি আঁটতে শুরু করলেন, যেমন করেই হোক লোকটির জায়গা-জমি নিজের করে নিতে হবে। দিনের পর দিন তিনি এই লোকটিকে ক্রমাগতভাবে প্রেসার দিয়ে আসছিলেন। তার একটাই কথা, তোর তো কোনো ছেলেপুলে নেই। আবার ভরণ-পোষণও আমার ঘরে। তো, আমাকে তোর জমিজমা লিখে দিতে সমস্যা কোথায়?

কিন্তু এই লোকটি জানতেন তার ভাই এখনই যেমন তার দেখাশুনা করেন, না জানি জমিজমা লিখে দেওয়ার পরে কেমন করবেন! আপন ভাই হলে না হয় একটা কথা ছিল।

এদিকে লোকটির শরীরে কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। কোনো সন্তানাদিও নেই যে, যারা তাকে দু'বেলা খেতে দেবে। এই একটা চাচাতো ভাই আছে, সেও স্বার্থলোভী। হয়তো তার নামে এই জমিগুলো না থাকলে সেই কবেই বাড়ি থেকে বের করে দিতো।

জনাব সেলিম সাহেব যখন দেখলেন এই লোকটির থেকে কিছুতেই তিনি তার জমিগুলো কব্জা করতে পারছেন না। ঠিক তখনই তিনি তার খাবার বন্ধ করে দিলেন। সাথে কয়েকদিনের মাথায় বাড়ি থেকে বের করে দিলেন। লোকটির বিষয়-আশয় থাকা সত্তেও লোকটি বাড়িতে টিকতে পারলেন না। গৃহ বৈরী তথা ঘরের শত্রুই বড় শত্রু। কেউ বা প্রকাশ্যে, কেউ বা নিভৃতে।
.
যুবক ছেলেগুলোর মধ্যে থেকে একটি ছেলে লোকটির দায়িত্ব নিলো। সে লোকটিকে "লাকসাম শান্তা" হাসপাতালে ভর্তি করলো।

সম্প্রতি লোকটি ঐ যুবক ছেলেটির তত্ত্বাবধানে "শান্তা" হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পরবর্তীতে কী হয়, সে সম্বন্ধে অবগত হলে লোকটিকে নিয়ে আরো কিছু লিখবো ইনশাল্লাহ। ততক্ষণ অপেক্ষা করুন।

"এই সংসারে হইলো নারে আপন মানুষ কেউ।
সবাই কেবল স্বার্থলোভী, ভাইটা ছিল সেও।"
.
(সত্য-ঘটনা অবলম্বনে)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৩:০৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


হাসপাতালটি কি সরকারী, নাকি প্রাইভেট?

০৫ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: সঠিকভাবে বলতে পারছি না। তবে প্রাইভেট হবে মেবি।

২| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: আহারে---
বড় দুঃখজনক।

০৫ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: জ্বী দাদা।

৩| ০৫ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দুঃখজনক :((

০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৫৯

শ্রাবণ আহমেদ বলেছেন: খারাপ লেগেছিল খুব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.